মঙ্গলের বুকে মিলল জেব্রার মতো দেখতে পাথর, উচ্ছ্বসিত নাসার বিজ্ঞানীরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ০১
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪২

মঙ্গলের ‘জেজেরো ক্রাটারে’ (গর্তে) জেব্রার মতো সাদা–কালো ডোরাকাটা পাথর আবিষ্কার নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার (রোবটযান)। এই পাথরের নাম ‘ফ্রেয়া ক্যাসল’ রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। এই পাথরের মতো নকশা এবং আকার মঙ্গলে আগে কখনো দেখা যায়নি। ১৩ সেপ্টেম্বর মাসে রোভারের ওপরে স্থাপন করা ক্যামেরা পাথরটি খুঁজে পায়। 

রোভারটি ইতিমধ্যেই ওই এলাকা ত্যাগ করেছে। পারসিভিয়ারেন্স চলে যাওয়ার পর ছবিটি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই পাথরের উৎস এবং গঠন নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে । 

ফ্রেয়া ক্যাসল প্রস্থ প্রায় ২০ সেন্টিমিটার এবং এটি সম্ভবত আগ্নেয়গিরি কার্যকলাপ বা অন্যান্য প্রাকৃতিক রূপান্তরিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে। 

পাথরের ডোরাকাটা অংশগুলো সম্ভবত দুটি কারণে তৈরি হতে পারে বলে নাসার বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে একটি কারণ হলো—ম্যাগমার ক্রিস্টালাইজেশন। যখন ম্যাগমা (গলিত শিলা) ঠান্ডা হতে শুরু করে, তখন তার মধ্যে থাকা উপাদানগুলো ক্রিস্টাল বা ফটিক আকারে গঠন লাভ করে। এই প্রক্রিয়ার কারণে পাথরে ডোরাকাটা বা স্ট্রাইপড নকশা তৈরি হতে পারে। 

আর দ্বিতীয় কারণ হলো—উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপের পরিবর্তন। যখন পাথর উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপের মধ্যে থাকে, তখন এর গঠন পরিবর্তিত হতে পারে। যার ফলে স্ট্রাইপ বা ডোরাকাটা নকশা সৃষ্টি হয়। 

যেহেতু পাথরটি মঙ্গলের অন্যান্য পাথর থেকে ভিন্ন, তাই সম্ভবত এটি অন্য একটি স্থান থেকে এসেছে ও ক্রাটারে গড়িয়ে বর্তমান অবস্থানে রয়েছে। 

ফ্রেয়া ক্যাসল সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে চান নাসার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা আশা করছেন, রোভারটি যখন ওপরের দিকে উঠতে থাকবে তখন এই ধরনের আরও পাথরের দেখা পাবে। পারসিভিয়ারেন্স বর্তমানে জেজেরো ক্রাটারের ঢালে চলাফেরা করছে। 

২০২১ সালে ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো রোভারটি এই গর্তে পৌঁছায়। পারসিভিয়ারেন্স রোভারের মঙ্গলে পঞ্চম প্রধান অভিযান হলো ‘ক্রাটার রিম ক্যাম্পেইন’। প্রাচীন জীবনের চিহ্ন আবিষ্কার ও গ্রহটির প্রাথমিক ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য এই অভিযান শুরু হয়। 

মঙ্গলে বিভিন্ন অভিযানে পারসিভিয়ারেন্স অনেক চমকপ্রদ আবিষ্কার করেছে। প্রাচীন লেক থাকার প্রমাণ থেকে শুরু করে অন্যান্য অস্বাভাবিক পাথরের গঠনও আবিষ্কার করেছে।

নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির প্রকল্প ব্যবস্থাপক আর্ট থম্পসন বলেন, রোভারটি নতুন এলাকাগুলোকে ভ্রমণ করার পাশাপাশি এটি নতুন কী কিছু খুঁজে পেতে পারে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। 

তথ্যসূত্র: গ্যাজেটস ৩৬০

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত