মেজবাহ নূর
প্রতিটি আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের পেছনে থাকে একেক একজন জিনিয়াসের মেধা আর অক্লান্ত পরিশ্রম। তবে এমন কিছু আবিষ্কার রয়েছে যেগুলোর নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কোনো বিজ্ঞানীর নাম, কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হলো সেই আবিষ্কারের লক্ষ্যই তাঁর ছিল না! সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। তবে পরবর্তীতে সেসব আবিষ্কারই মানব সভ্যতার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
পেনিসিলিন
এমন একটি আবিষ্কার হলো—পেনিসিলিন। এটি এখন একটি অ্যান্টিবায়োটিক গ্রুপ হিসেবেই বেশি পরিচিত। বেশির ভাগ পেনিসিলিনই সাধারণত প্রাকৃতিক উপায়ে আহরণ করা হয়। তবে শুধু দুটি প্রাকৃতিক পেনিসিলিনকে পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়: পেনিসিলিন জি ও পেনিসিলিন ভি। পেনিসিলিন ছিল ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করা প্রথম ওষুধ। তবে এই পিনিসিলিনই আবিষ্কৃত হয়েছিল অপ্রত্যাশিতভাবে।
১৯২৮ সালে লন্ডনের এক ল্যাবরেটরিতে স্টেফাইলোককাস ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করছিলেন আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং। মাঝে গবেষণা স্থগিত রেখে তিনি স্কটল্যান্ডে বেড়াতে যান। যাওয়ার সময় স্টেফাইলোককাসের একটি নমুনা কাচের পাত্রে রেখে যান। ভুল করে গবেষণাগারের জানালা খুলে রেখে যান। তবে এই ভুলের ফলেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের সবচেয়ে বিস্ময়কর আবিষ্কারটি করে বসেন ফ্লেমিং।
গবেষণাগারে ফিরে ফ্লেমিং দেখতে পান খোলা জানালা দিয়ে ল্যাবরেটরির বাগান থেকে কিছু ঘাস পাতা উড়ে এসে জীবাণু ভর্তি প্লেটের ওপর পড়েছে। জীবাণুর কালচারের মধ্যে স্পষ্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তিনি। ফ্লেমিং বুঝতে পারলেন, এই আগাছাগুলোর মধ্যে এমন কিছু আছে যার জন্য এই পরিবর্তন ঘটেছে। ফ্লেমিং পরীক্ষা করে দেখেন, আগাছাগুলোর ওপর একরকম ছত্রাক জন্ম নিয়েছে।
সেই ছত্রাকগুলো বেছে বেছে জীবাণুর ওপর দিতেই ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। ছত্রাকগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম ছিল পেনিসিলিয়াম নোটেটাম। তাই তিনি এর নাম দিলেন ‘পেনিসিলিন’।
সুপার গ্লু
বিশ্বজুড়ে তখন চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ড. হ্যারি কুভার মিত্র বাহিনীর হয়ে কাজ করছিলেন। মিত্র বাহিনীর জন্য প্লাস্টিক গান সাইট (বন্দুকের যে অংশ দিয়ে নিশানা ঠিক করা হয়) বানাতে কাজ করছিলেন। কাজ করতে গিয়ে তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে এমন এক ধরনের আঠালো রাসায়নিক (সাইয়ানোঅ্যাক্রিলেট) উদ্ভাবন করে ফেলেন যা খুব দ্রুত কোনো কিছুর সঙ্গে সেঁটে যেতে পারে। তবে তখনকার উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় তিনি তখন সেই রাসায়নিক নিয়ে আর মাথা ঘামাননি।
এর প্রায় নয় বছর পর, ১৯৫১ সালে ড. কুভার কাজ করছিলেন ইস্টম্যান কোডাক কোম্পানিতে। সেখানে জেট প্লেনের ককপিটের ওপরের আচ্ছাদনের জন্য তাপ প্রতিরোধী এক্রিলেট পলিমার বানানোর এক প্রকল্পের সুপারভাইজর ছিলেন। সেখানে কাজ করতে করতে একদিন ফ্রেড জয়নার নামক আরেক গবেষকের সঙ্গে সেই নয় বছর আগেকার আঠালো রাসায়নিকটি আবার উদ্ভাবন করেন।
তাঁরা এটি একজোড়া রিফ্র্যাক্টোমিটার প্রিজমের মাঝে এটি লাগিয়ে দেখলেন, ওগুলো অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে একে অপরের সঙ্গে জোড়া লেগেছে। এভাবেই উদ্ভাবিত হয় ‘সুপার গ্লু’।
১৯৫৮ সালে সুপার গ্লু বাজারে আনে ইস্টম্যান কোডাক কোম্পানি। নাম দেওয়া হয় ইস্টম্যান #৯১০। পরবর্তীতে অবশ্য এর নাম ‘সুপার গ্লু’ দেওয়া হয়। মূলত এখান থেকেই নামটির প্রচলন হয়।
এক্স-রে
এক্স-রে বা রঞ্জন রশ্মি হচ্ছে এক ধরনের তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ। সাধারণ আলোর সঙ্গে এক্স-রের পার্থক্য হলো তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে। মানব শরীরের ত্বকের মতো পাতলা প্রাচীর ভেদ করতে পারে। এক্স–রে শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশের ছবি তোলার কাজে এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এক্স-রের কাজের পরিধি আরও অনেক বেশি বাড়ানো হয়েছে। ক্যানসার কোষ ধ্বংসের কাজেও বর্তমানে সফলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এক্স-রে। তবে এই এক্স-রে কিনা আবিষ্কৃত হয়েছিল ভুলে!
জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের উরজবার্গ শহরের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক উইলহেম রন্টজেন ক্যাথোড রশ্মি কাচের মধ্য দিয়ে যেতে পারে কি না পরীক্ষা করছিলেন। তাঁর ক্যাথোড টিউবটি ভারী কালো কাগজে আচ্ছাদিত হওয়া সত্ত্বেও একটি ভাস্বর সবুজ আলো একটি ফ্লুরোসেন্ট স্ক্রিনে প্রক্ষেপিত হয়েছিল।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তিনি দেখতে পেলেন, রহস্যময় এই আলো বেশির ভাগ পদার্থ ভেদ করে গেলেও একটি ছায়া রেখে যায়। রশ্মিটি কী তা তিনি জানতেন না বলে এটির নাম দেন ‘এক্স’। অর্থাৎ, একে ‘অজানা’ রশ্মি বলে ডাকেন রন্টজেন।
একদিন রন্টজেন তাঁর স্ত্রীকে ডাকলেন। স্ত্রীকে বললেন পর্দার সামনে হাত মেলে ধরতে। স্ত্রীর হাতের আঙুলে ছিল বিয়ের আংটি। টিউবের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে রন্টজেন দেখতে পেলেন পর্দায় তাঁর স্ত্রীর হাতের হাড়ের ছবি ভেসে উঠেছে এবং আংটির স্থানে কালো রঙের ছায়া দেখা যাচ্ছে। রন্টজেন আবিষ্কার করেন, এক্স-রে মানুষের ত্বক ভেদ করে হাড় এবং টিস্যুকে দৃশ্যমান রেখে পার হতে পারে। এই আবিষ্কারের খবর দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এক বছরের মধ্যে, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকেরা শরীরে বন্দুকের গুলি, হাড়ের ফাটল, কিডনিতে পাথর এবং গিলে ফেলা বস্তু শনাক্ত করতে এক্স-রে ব্যবহার শুরু করেন। এই আবিষ্কারের জন্য রন্টজেন ১৯০১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পান।
১৮৯৫ সালের ৮ নভেম্বর যখন রন্টজেন নিজের অজান্তেই এই এক্স-রে আবিষ্কার করেন তখনো পদার্থবিজ্ঞানের অনেক মৌলিক বিষয় আবিষ্কৃত হয়নি। এক্স-রে আবিষ্কারের তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে অল্প সময়ের মধ্যেই পদার্থবিজ্ঞানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আবিষ্কৃত হয়। বলা যায়, এক্স-রে আবিষ্কারের ফলেই দাঁড়িয়ে গেছে পুরো বিশ শতকের পদার্থবিজ্ঞান।
অবশ্য উইলহেমের আবিষ্কৃত এক্স-রের ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে এক্স-রে এনেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। বিজ্ঞানী উইলহেম যেভাবে বায়ুশূন্য টিউবে বিদ্যুৎপ্রবাহের মাধ্যমে এক্স-রে উৎপন্ন করেছিলেন, আজও একই কৌশলে এক্স-রে উৎপন্ন করা হয়।
উইলহেম রন্টজেনের সম্মানার্থে রঞ্জনরশ্মির এককের নামও রাখা হয়েছে রন্টজেন। এক রন্টজেন বলতে সেই পরিমাণ বিকিরণ বোঝায় যা স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় এক মিলিমিটার বায়ুতে এক স্থির বৈদ্যুতিক আধানের সমান আধান উৎপন্ন করতে পারে।
প্রতিটি আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের পেছনে থাকে একেক একজন জিনিয়াসের মেধা আর অক্লান্ত পরিশ্রম। তবে এমন কিছু আবিষ্কার রয়েছে যেগুলোর নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কোনো বিজ্ঞানীর নাম, কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হলো সেই আবিষ্কারের লক্ষ্যই তাঁর ছিল না! সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। তবে পরবর্তীতে সেসব আবিষ্কারই মানব সভ্যতার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
পেনিসিলিন
এমন একটি আবিষ্কার হলো—পেনিসিলিন। এটি এখন একটি অ্যান্টিবায়োটিক গ্রুপ হিসেবেই বেশি পরিচিত। বেশির ভাগ পেনিসিলিনই সাধারণত প্রাকৃতিক উপায়ে আহরণ করা হয়। তবে শুধু দুটি প্রাকৃতিক পেনিসিলিনকে পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়: পেনিসিলিন জি ও পেনিসিলিন ভি। পেনিসিলিন ছিল ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করা প্রথম ওষুধ। তবে এই পিনিসিলিনই আবিষ্কৃত হয়েছিল অপ্রত্যাশিতভাবে।
১৯২৮ সালে লন্ডনের এক ল্যাবরেটরিতে স্টেফাইলোককাস ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করছিলেন আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং। মাঝে গবেষণা স্থগিত রেখে তিনি স্কটল্যান্ডে বেড়াতে যান। যাওয়ার সময় স্টেফাইলোককাসের একটি নমুনা কাচের পাত্রে রেখে যান। ভুল করে গবেষণাগারের জানালা খুলে রেখে যান। তবে এই ভুলের ফলেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের সবচেয়ে বিস্ময়কর আবিষ্কারটি করে বসেন ফ্লেমিং।
গবেষণাগারে ফিরে ফ্লেমিং দেখতে পান খোলা জানালা দিয়ে ল্যাবরেটরির বাগান থেকে কিছু ঘাস পাতা উড়ে এসে জীবাণু ভর্তি প্লেটের ওপর পড়েছে। জীবাণুর কালচারের মধ্যে স্পষ্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তিনি। ফ্লেমিং বুঝতে পারলেন, এই আগাছাগুলোর মধ্যে এমন কিছু আছে যার জন্য এই পরিবর্তন ঘটেছে। ফ্লেমিং পরীক্ষা করে দেখেন, আগাছাগুলোর ওপর একরকম ছত্রাক জন্ম নিয়েছে।
সেই ছত্রাকগুলো বেছে বেছে জীবাণুর ওপর দিতেই ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। ছত্রাকগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম ছিল পেনিসিলিয়াম নোটেটাম। তাই তিনি এর নাম দিলেন ‘পেনিসিলিন’।
সুপার গ্লু
বিশ্বজুড়ে তখন চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ড. হ্যারি কুভার মিত্র বাহিনীর হয়ে কাজ করছিলেন। মিত্র বাহিনীর জন্য প্লাস্টিক গান সাইট (বন্দুকের যে অংশ দিয়ে নিশানা ঠিক করা হয়) বানাতে কাজ করছিলেন। কাজ করতে গিয়ে তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে এমন এক ধরনের আঠালো রাসায়নিক (সাইয়ানোঅ্যাক্রিলেট) উদ্ভাবন করে ফেলেন যা খুব দ্রুত কোনো কিছুর সঙ্গে সেঁটে যেতে পারে। তবে তখনকার উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় তিনি তখন সেই রাসায়নিক নিয়ে আর মাথা ঘামাননি।
এর প্রায় নয় বছর পর, ১৯৫১ সালে ড. কুভার কাজ করছিলেন ইস্টম্যান কোডাক কোম্পানিতে। সেখানে জেট প্লেনের ককপিটের ওপরের আচ্ছাদনের জন্য তাপ প্রতিরোধী এক্রিলেট পলিমার বানানোর এক প্রকল্পের সুপারভাইজর ছিলেন। সেখানে কাজ করতে করতে একদিন ফ্রেড জয়নার নামক আরেক গবেষকের সঙ্গে সেই নয় বছর আগেকার আঠালো রাসায়নিকটি আবার উদ্ভাবন করেন।
তাঁরা এটি একজোড়া রিফ্র্যাক্টোমিটার প্রিজমের মাঝে এটি লাগিয়ে দেখলেন, ওগুলো অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে একে অপরের সঙ্গে জোড়া লেগেছে। এভাবেই উদ্ভাবিত হয় ‘সুপার গ্লু’।
১৯৫৮ সালে সুপার গ্লু বাজারে আনে ইস্টম্যান কোডাক কোম্পানি। নাম দেওয়া হয় ইস্টম্যান #৯১০। পরবর্তীতে অবশ্য এর নাম ‘সুপার গ্লু’ দেওয়া হয়। মূলত এখান থেকেই নামটির প্রচলন হয়।
এক্স-রে
এক্স-রে বা রঞ্জন রশ্মি হচ্ছে এক ধরনের তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ। সাধারণ আলোর সঙ্গে এক্স-রের পার্থক্য হলো তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে। মানব শরীরের ত্বকের মতো পাতলা প্রাচীর ভেদ করতে পারে। এক্স–রে শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশের ছবি তোলার কাজে এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এক্স-রের কাজের পরিধি আরও অনেক বেশি বাড়ানো হয়েছে। ক্যানসার কোষ ধ্বংসের কাজেও বর্তমানে সফলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এক্স-রে। তবে এই এক্স-রে কিনা আবিষ্কৃত হয়েছিল ভুলে!
জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের উরজবার্গ শহরের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক উইলহেম রন্টজেন ক্যাথোড রশ্মি কাচের মধ্য দিয়ে যেতে পারে কি না পরীক্ষা করছিলেন। তাঁর ক্যাথোড টিউবটি ভারী কালো কাগজে আচ্ছাদিত হওয়া সত্ত্বেও একটি ভাস্বর সবুজ আলো একটি ফ্লুরোসেন্ট স্ক্রিনে প্রক্ষেপিত হয়েছিল।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তিনি দেখতে পেলেন, রহস্যময় এই আলো বেশির ভাগ পদার্থ ভেদ করে গেলেও একটি ছায়া রেখে যায়। রশ্মিটি কী তা তিনি জানতেন না বলে এটির নাম দেন ‘এক্স’। অর্থাৎ, একে ‘অজানা’ রশ্মি বলে ডাকেন রন্টজেন।
একদিন রন্টজেন তাঁর স্ত্রীকে ডাকলেন। স্ত্রীকে বললেন পর্দার সামনে হাত মেলে ধরতে। স্ত্রীর হাতের আঙুলে ছিল বিয়ের আংটি। টিউবের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে রন্টজেন দেখতে পেলেন পর্দায় তাঁর স্ত্রীর হাতের হাড়ের ছবি ভেসে উঠেছে এবং আংটির স্থানে কালো রঙের ছায়া দেখা যাচ্ছে। রন্টজেন আবিষ্কার করেন, এক্স-রে মানুষের ত্বক ভেদ করে হাড় এবং টিস্যুকে দৃশ্যমান রেখে পার হতে পারে। এই আবিষ্কারের খবর দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এক বছরের মধ্যে, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকেরা শরীরে বন্দুকের গুলি, হাড়ের ফাটল, কিডনিতে পাথর এবং গিলে ফেলা বস্তু শনাক্ত করতে এক্স-রে ব্যবহার শুরু করেন। এই আবিষ্কারের জন্য রন্টজেন ১৯০১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পান।
১৮৯৫ সালের ৮ নভেম্বর যখন রন্টজেন নিজের অজান্তেই এই এক্স-রে আবিষ্কার করেন তখনো পদার্থবিজ্ঞানের অনেক মৌলিক বিষয় আবিষ্কৃত হয়নি। এক্স-রে আবিষ্কারের তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে অল্প সময়ের মধ্যেই পদার্থবিজ্ঞানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আবিষ্কৃত হয়। বলা যায়, এক্স-রে আবিষ্কারের ফলেই দাঁড়িয়ে গেছে পুরো বিশ শতকের পদার্থবিজ্ঞান।
অবশ্য উইলহেমের আবিষ্কৃত এক্স-রের ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে এক্স-রে এনেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। বিজ্ঞানী উইলহেম যেভাবে বায়ুশূন্য টিউবে বিদ্যুৎপ্রবাহের মাধ্যমে এক্স-রে উৎপন্ন করেছিলেন, আজও একই কৌশলে এক্স-রে উৎপন্ন করা হয়।
উইলহেম রন্টজেনের সম্মানার্থে রঞ্জনরশ্মির এককের নামও রাখা হয়েছে রন্টজেন। এক রন্টজেন বলতে সেই পরিমাণ বিকিরণ বোঝায় যা স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় এক মিলিমিটার বায়ুতে এক স্থির বৈদ্যুতিক আধানের সমান আধান উৎপন্ন করতে পারে।
আমাদের অনেকেরই অফিসে কাজ করতে গিয়ে দীর্ঘসময় বসে থাকতে হয়। আর দিনের একটা বড় সময় বসে থাকাটা বাড়ায় হৃৎপিণ্ডের রোগের ঝুঁকি। এমনকি অবসর সময়ে শরীরচর্চা করেও এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রেহাই মিলবে না। এসব তথ্য উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
৩ দিন আগেবিজ্ঞানীরা বলছেন, জিপিএসের সাহায্য ছাড়াই এআই ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া থেকে কোনো ব্যক্তির সাম্প্রতিক অবস্থান চিহ্নিত করা যাবে।
৮ দিন আগেটয়লেটে ফোন নিয়ে যাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। এমনও হতে আপনি হয়তো টয়লেটে বসেই মোবাইলে লেখাটি পড়ছেন। শৌচাগারে যে কাজটি ৩ মিনিটে করা সম্ভব সেটি কিছু পড়া, স্ক্রল এবং পোস্ট করে অন্তত ১৫ মিনিট পার করে দিচ্ছেন অনায়াসে। আপাতদৃষ্টিতে এটি সময় কাটানোর নির্দোষ উপায় মনে হলেও চিকিৎসকেরা বলছেন, এটি আপনার স্বাস্থ্যের
৯ দিন আগেসৌরজগতের সপ্তম গ্রহ ইউরেনাস ও এর পাঁচটি চাঁদ সম্পর্কে নতুন তথ্য জানাল বিজ্ঞানীরা। এই গ্রহ ও এর চাঁদগুলো একেবারে নিষ্প্রাণ নয়, বরং ইউরেনাসের চাঁদগুলোতে সমুদ্র থাকতে পারে। ফলে চাঁদগুলোয় জীবন ধারণের উপযোগী পরিবেশ থাকতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
১০ দিন আগে