Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

কেউ আমার বল সহজে খেলবে, মানতে পারি না

২০২৫ সালটা দারুণভাবে রাঙাতে চান তানজিম সাকিব। ছবি: এএফপি

কেউ আমাকে সহজে খেলবে, মানতে পারি না বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণের অন্যতম ভরসা তানজিম হাসান সাকিব। আক্রমণাত্মক বোলিং ও মনোভাব দিয়ে আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছেন তানজিম। তবে সবশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তাঁর ভালো যায়নি, ছিলেন উইকেটশূন্য। চোট কাটিয়ে পুনর্বাসন এবং সামনের একাধিক সিরিজ খেলার চ্যালেঞ্জ নিয়ে দুই দিন আগে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ২২ বছর বয়সী পেসার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আহমেদ রিয়াদ

আহমেদ রিয়াদ

প্রশ্ন: ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ কেমন যাচ্ছে? লিগ শেষে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

তানজিম হাসান সাকিব: প্রিমিয়ার লিগে আমার লক্ষ্য যতটা সম্ভব নিখুঁত বোলিং করা। লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে, বাউন্সার, ইয়র্কার—সব দিক থেকেই চেষ্টা করছি নিখুঁত বোলিং করতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবার নিজেকে প্রমাণ করতে চাই নিখুঁত বোলিং দিয়েই। দীর্ঘ সময় জাতীয় দলে খেলতে চাই। প্রতিটি ম্যাচে নিজের কার্যকারিতা দেখানোর চেষ্টা করছি।

প্রশ্ন: গত বছর প্রথমবারের মতো গায়ানা ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলেছেন। ইংল্যান্ডের কাউন্টি লিগ, শ্রীলঙ্কার লিগ বা পিএসএলের মতো লিগে কোনো যোগাযোগ হচ্ছে আপনার?

তানজিম: গত বছর গায়ানা ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলেছি। এখনো আমাকে নিয়ে তাদের আগ্রহ রয়েছে। যদি জাতীয় দলের কোনো ব্যস্ততা না থাকে, আবারও গায়ানার হয়ে খেলব। আমি তাদের এ বিষয়ে নিশ্চিতও করেছি। ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট থেকেও কোনো অফার আসেনি। তবে একজন বোলার হিসেবে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার স্বপ্ন আছে। সেখানে খেলার অভিজ্ঞতা হয় অনন্য। কাউন্টিতে খেলে একজন ক্রিকেটার তার স্কিল উন্নত করতে পারে এবং নতুন কৌশল শিখতে পারে।

প্রশ্ন: এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশের ব্যস্ত সূচি। এই ব্যস্ত সূচিতে ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কী ভাবছেন? আপনাদের নিয়ে বিসিবির কী নির্দেশনা আছে?

তানজিম: টানা দুই ম্যাচ খেলার পর এক ম্যাচ বিশ্রাম নেব। তবে যদি কোনো ম্যাচে ওয়ার্কলোড কম থাকে, তাহলে হয়তো তৃতীয় ম্যাচেও খেলতে পারব। আর যদি পুরোপুরি ওয়ার্কলোড থাকে, তাহলে তৃতীয় ম্যাচে বিশ্রাম নেব।

প্রশ্ন: শুরু থেকেই আপনি নিয়মিত ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করেন। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আপনার বোলিং গতি কমতে দেখা গেল (১৩৩–১৩৫ কিলোমিটারের আশপাশে ছিল)। চোটে পড়ায় বোলিংয়ের ছন্দ পেতে কি সমস্যা হচ্ছে?

তানজিম: সব সময় সর্বোচ্চটা দিয়ে বল করার চেষ্টা করি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আমার কোচ নাজমুল ভাইয়ের সঙ্গে বাড়তি কাজ করছি এবং চেষ্টা করছি আগের গতিতে বল করতে। তিনি ছোটবেলা থেকে আমাকে ভালো বোঝেন এবং আমার বোলিং নিয়ে দারুণ কাজ করেন। বিপিএলে চোটের কারণে বেশ কিছু ম্যাচ খেলতে পারিনি। তবে এখন জিমে আরও মনোযোগী হয়ে নিজেকে ঠিক করছি এবং আগের মতো জোরে বল করার চেষ্টা করছি। আশা করি শিগগির আমার আগের ছন্দ ফিরে পাব।

প্রশ্ন: এ বছর নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

তানজিম: আমার লক্ষ্য হলো ২০২৫ সালে জাতীয় দলের হয়ে ধারাবাহিক ভালো সার্ভিস দেওয়া। সেটা হোক বোলার হিসেবে কিংবা লোয়ার অর্ডার ব্যাটার হিসেবে। আমি যে ম্যাচেই খেলি না কেন, দলকে জেতানোয় অবদান রাখতে চাই। যে দুই সংস্করণে আমার অভিষেক হয়েছে, দুটিতেই দল জিতেছে। ম্যাচে নিজেও ভালো ক্রিকেট খেলেছি। প্রতিটি ম্যাচ আমি অভিষেক ম্যাচ ভেবে খেলি এবং নিজের সর্বোচ্চটা উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করি। এখনো সেই চেষ্টাটাই করছি যেন প্রতিটি মুহূর্তে দলে অবদান রাখতে পারি।

প্রশ্ন: আক্রমণাত্মক মনোভাব আপনাকে বিশেষভাবে চিনিয়েছে। প্রতিপক্ষের ওপর সব সময় চড়াও হ পছন্দ করেন?

তানজিম: প্রতিপক্ষ আমার কাছে সব সময়ই প্রতিপক্ষ। কেউ আমার বল সহজে খেলবে, সেটা মেনে নিতে পারি না। মাঠে যদি কোনো চ্যালেঞ্জ না থাকে, তবে খেলার মজাও নেই। এটা আমার পেশা, তবে তার চেয়েও বেশি, এটি আমার আবেগ। মাঠে নামলে আমি সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করি। হার আমি একবারেই পছন্দ করি না। ম্যাচ শেষে যেন কোনো আক্ষেপ না থাকে, নিজের শতভাগ উজাড় করে দিই। প্রতিপক্ষ যাতে সহজে খেলতে না পারে, চাপে রাখতে আক্রমণাত্মক মনোভাব কাজ করে। বল করার সময় আমার প্রতিশ্রুতি থাকে, সহজে যেন আমার বল খেলতে না পারে। এই কারণেই আমার মধ্যে সেই আগ্রাসন চলে আসে। এটা আমাকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে রাখে, প্রতিপক্ষকেও চাপে ফেলে।

প্রশ্ন: খুব বেশি না হলেও বাংলাদেশের পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছেন। তাঁদের বেশিরভাগ মাঠ থেকে বিদায় নিতে দেখতে না পারাটা কতটা দুঃখজনক দেশের ক্রিকেটের জন্য?

তানজিম: তাঁদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ। তাঁরা দীর্ঘ সময় বাংলাদেশকে সার্ভিস দিয়েছেন। যদি মাঠ থেকে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিতে পারতেন, তাহলে আমাদের সবার ভালো লাগত। মাহমুদউল্লাহ ভাইয়ের টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার সময় আমরা মাঠেই ছিলাম, ওটা ছিল এক বিশেষ মুহূর্ত। তাঁকে মাঠে বিদায় দিতে পেরে আমাদের সবার মধ্যে দারুণ অনুভূতি হয়েছিল। প্রত্যেকের বিদায়ের ধরন আলাদা হয়। হয়তো এটাই ছিল তাঁদের নিয়তি। খুব বেশি সময় তাঁদের সঙ্গে খেলতে পারিনি, কিন্তু ড্রেসিংরুমে এবং মাঠে তাঁদের নির্দেশনা থেকে অনেক কিছু শিখেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত ম্যাচে দেরি করায় বাফুফেকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করে আরও একবার জরিমানার মুখে পড়ল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড দেরিতে শুরু হওয়ায় বাফুফেকে ১২৫০ ডলার জরিমানা করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। গত ১৭ ডিসেম্বর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএফসির শৃঙ্খলা ও নীতি কমিটি।

গত ১৮ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও উন্মাদনার কমতি ছিল না। ২২ বছর পর ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ম্যাচের প্রথমার্ধে শেখ মোরসালিনের পা থেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সময়মতো খেলা মাঠে গড়াতে পারেননি রেফারি।

একই কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেও এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এই অপরাধ দুবার করায় বাংলাদেশের জরিমানার অঙ্ক বেশি ধরা হয়েছে। এর আগে গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে দুই মিনিট বিলম্ব হওয়ায় দেড় হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।

এএফসির শৃঙ্খলা নীতিমালার ১১.৩ ধারা অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে দুই ফেডারেশনের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান তিনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোস্তাফিজদের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ে তাসকিনের ৩ উইকেট

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টি যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ—বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন এখন আমিরাতের এই লিগে। কদিন আগে সাকিব-মোস্তাফিজের একটি ছবি ‘দ্য বাংলা’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছিল সাকিবের দল এমআই এমিরেটস। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের তিন তারকা সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ এবারই প্রথমবারের মতো আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন। এই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মোস্তাফিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিচ্ছেন। এদিকে তাসকিন উইকেট তেমন পাচ্ছেন না। উপরন্তু মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন। দুবাইয়ে আজ মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন ৩ উইকেট হলেও ১০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।

দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যায় দুবাই ক্যাপিটালসের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে দুবাইয়ের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীরকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজা। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন জর্ডান কক্স ও সেদিকউল্লাহ আতাল। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কক্সকে (২৮) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

দুবাই ক্যাপিটালসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন কক্স ও আতাল। আরেকটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের জুটিতেও অবদান রয়েছে আতালের। চতুর্থ উইকেটে আফগানিস্তান দলের সতীর্থ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ২৬ বলে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন আতাল। ওপেনিংয়ে নামা আতাল আউট হয়েছেন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আতালের উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এই ব্যাটার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান করে দুবাই ক্যাপিটালস। দুবাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ রান এসেছে আতালের ব্যাট থেকে।

শারজা ওয়ারিয়র্সের তাসকিন ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ রান খরচ করে পেয়েছেন ১ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাজা, মাথিসা পাতিরানা ও আদিল রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনালের জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা এল কলোম্বিয়ানোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র ও আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজির বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদ্‌যাপন—কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত