Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজ ভাই আমাকে বেশি গাইড করেন

শরীফুল মনে করেন প্রতিযোগিতা যত কঠিন হবে, নিজের উন্নতির তাগিদ তত বাড়বে। ছবি: বিসিবি

এখন পর্যন্ত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শরীফুল ইসলাম ৬ ম্যাচে নিয়েছেন ১১ উইকেট। ২০২৫ বিপিএলের শেষ দিকে ছন্দে ফিরেছেন, ডিপিএলে সেটা ধরে রেখেছেন। খারাপ সময় কাটিয়ে ওঠা, তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কাল রাতে শরীফুল কথা বললেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন আহমেদ রিয়াদ

আহমেদ রিয়াদ
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২: ১৬

প্রশ্ন: চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে সুযোগ মেলেনি। এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) খেলছেন, ভালো করছেন। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে এখনো পর্যন্ত কতটা সন্তুষ্ট?

শরীফুল ইসলাম: আলহামদুলিল্লাহ, ভালো লাগছে। অনেক দিন পর ৫০ ওভারের ফরম্যাট খেললাম। ৬ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছি, ইকোনমি ৪.৮৮—এ ধরনের উইকেটে খারাপ নয়। উইকেট তো দেখতেই পাচ্ছেন, বোলারদের জন্য তেমন কিছু নেই। বিকেএসপির উইকেটগুলো খুবই ব্যাটিং-সহায়ক, যেখানে পেসারদের জন্য বোলিং করাটা কঠিন। মিরপুরের উইকেটও একই রকম।

প্রশ্ন: বিপিএলের শুরুটা ভালো যায়নি, তবে শেষ দিকে দারুণ ছন্দে ফিরলেন। কোচ শন টেইটের সঙ্গে কাজ করেছেন—তিনি আপনার কোন দিকগুলো নিয়ে বেশি কাজ করেছেন?

শরীফুল: শন টেইটের সঙ্গে পরিচয় আগেই ছিল। দুই বছর আগে তিনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কোচ ছিলেন। এবার চিটাগং কিংসের কোচ হিসেবে আসার পর দারুণভাবে সহায়তা করেছেন। প্রথম দুই ম্যাচ ভালো হয়নি, তখন তিনি বলেছিলেন, তুমি চোট থেকে ফিরেছ, পুরো ছন্দে আসতে সময় লাগবে। আমাকে ইতিবাচক থাকতে বলতেন, আগের ভালো পারফরম্যান্সের কথা মনে করিয়ে দিতেন। অনুশীলনে স্পট বোলিংয়ে ম্যাচের মতো পূর্ণ শক্তি ও স্কিল দিয়ে বল করার পরামর্শ দিতেন। এসব মেনে চলার চেষ্টা করেছি এবং এখনো করছি। আমাদের নাজমুল ভাইও (নাজমুল হোসেন) পাশে ছিলেন। বলের গ্রিপিং, গতি এবং সিম মুভমেন্ট নিয়ে কাজ করেছি—বিশেষ করে অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে বল বাতাসে ঘুরিয়ে স্ট্যাম্পে আনার দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, এখন এগুলো ধীরে ধীরে রপ্ত করতে পারছি, আর ম্যাচেও সেটার ফল পাচ্ছি।

প্রশ্ন: বিপিএলে আপনার পারিশ্রমিক কি পুরোপুরি পেয়েছেন?

শরীফুল: চিটাগাং কিংসের মালিক আমাদের জানিয়েছেন, বিসিবি পারিশ্রমিক দেবে। আমরাও বিসিবির কাছে খোঁজ নিয়েছি, তারা দ্রুতই জানাবে। এখনো বিসিবি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিপিএল শেষ হওয়ার পর ৪৫ দিনের মধ্যে পুরো পারিশ্রমিক পরিশোধের নিয়ম রয়েছে, যা কয়েক দিন আগেই পেরিয়ে গেছে। আমাদের জানানো হয়েছে, আজ-কালের মধ্যে তারা বিস্তারিত জানাবে। ঈদের ছুটি আসছে, তাই আমরা আশা করছি, ছুটির আগেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

প্রশ্ন: জাতীয় দলের বাইরে আছেন। ২০২৩ সালটা দারুণ গিয়েছিল আপনার। তিন সংস্করণে মিলিয়ে নিয়েছিলেন ৫২ উইকেট। দলে ফিরতে নিজেকে কীভাবে তৈরি করছেন?

শরীফুল: হ্যাঁ, ২০২৩ সাল আমার ক্যারিয়ারের সেরা সময়গুলোর একটি ছিল। সব সময় চেষ্টা করি সে রকম পারফরম্যান্স ধরে রাখার, আরও উন্নতি করার। লক্ষ্য একটাই, ২০২৩ সালের পারফরম্যান্সের চেয়ে ভালো করা এবং জাতীয় দলে ফিরে আরও ভালো সার্ভিস দেওয়া। ইনশা আল্লাহ, কঠোর পরিশ্রম করে আরও ভালোভাবে ফিরতে পারব।

প্রশ্ন: আপনার আর নাহিদ রানার শৈশবের কোচ আলমগীর কবির। তিনি আপনাকে কীভাবে সহায়তা করেন?

শরীফুল: যখনই খারাপ সময় যায়, স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি সব সময় দারুণভাবে গাইড করেন—আমাকে, নাহিদকেও। প্রত্যেক ক্রিকেটারের একজন ব্যক্তিগত কোচ থাকে, আমার ক্ষেত্রে আলমগীর স্যার সেই ব্যক্তি। আমরা নিয়মিত বোলিং নিয়ে আলোচনা করি। যখন তিনি আমার কাছে থাকেন না, তখন আমি ম্যাচের বোলিং ভিডিও পাঠাই, তাঁর পরামর্শ নিই। কাছাকাছি থাকলে তো সরাসরি গিয়ে কাজ করি। স্যার দিকনির্দেশনা দেন, কীভাবে আমার বোলিং আরও নিখুঁত করা যায়, কোন জায়গায় উন্নতি করা দরকার। ভালো সময় হোক বা খারাপ, আমি সব সময় স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি।

প্রশ্ন: একদিন নেটে নাহিদ রানার ব্যাটিংয়ের সময়ে হালকা স্লেজিং করছিলেন। নাহিদ কি ব্যাটিংয়েও আপনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়?

শরীফুল: (হাসি) ছোটবেলা থেকেই নাহিদের সঙ্গে পরিচয়, ও খুব ভালো মনের একজন মানুষ। গতি আছে ওর বোলিংয়ে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, দ্রুতগতির বোলার হয়েও নাহিদ দ্রুতগতির বল ভালোভাবে খেলতে পারে না! আমি তুলনামূলকভাবে পেস ভালো খেলতে পারি। তাই নেটে একসঙ্গে অনুশীলন করলে আমরা একে অন্যকে স্লেজিং করি, সেটা অবশ্যই মজা হিসেবেই।

প্রশ্ন: জাতীয় দলের বাইরে আছেন। এখন পেস বোলিং বিভাগে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা; এঁদের সঙ্গে লড়াইটা কেমন উপভোগ করছেন?

শরীফুল: জাতীয় দলে পেসারদের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা থাকা খুবই দরকার। বাংলাদেশে যত বেশি পেসার তৈরি হবে, ততই আমাদের ক্রিকেটের জন্য ভালো। এতে দল গড়তে সুবিধা হবে, একজন চোট পেলে সহজেই বিকল্প পাওয়া যাবে। সবাই দলে জায়গা পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিজেদের প্রস্তুত রাখবে। তাসকিন ভাই, সাকিব, নাহিদ রানাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা আছে, সেটাই স্বাভাবিক। এটাই একজন খেলোয়াড়ের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং অনুপ্রেরণাদায়ক। ওরা দেশের হয়ে খেলছে, আমিও ফিরতে চাই। প্রতিযোগিতা যত কঠিন হবে, নিজেকে উন্নত করার তাগিদও তত বাড়বে।

প্রশ্ন: লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ ও গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলেছেন। সামনে কি আরও কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সম্ভাবনা আছে?

শরীফুল: এখনো কোনো কথা হয়নি। বিসিবি আমাদের বছরে একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক।

প্রশ্ন: জাতীয় দলে খেলার সুবাদে অনেক গ্রেট ক্রিকেটারের সঙ্গে আপনার কথা বলার সুযোগ হয়েছে। বাঁহাতি পেসারদের মধ্যে ওয়াসিম আকরাম, চামিন্দা ভাসের মতো কিংবদন্তিদের সঙ্গে কি কখনো কথা হয়েছে? তাঁদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ পেয়েছেন?

শরীফুল: চামিন্দা ভাসের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তাঁর সঙ্গে বোলিং নিয়ে কাজ হয়েছে। খুবই ভালো মনের মানুষ। বিপিএলেও আমরা একই দলে (ঢাকা ডমিনেটরস) ছিলাম। তিনি আমাকে বোলিংয়ের সমস্যা নিয়ে সহায়তা করেছেন। গ্রেট বোলারদের কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: মোস্তাফিজুর রহমানের কাছ থেকে কি কোনো বিশেষ পরামর্শ পেয়েছেন, যা আপনার বোলিংয়ে কাজে এসেছে?

শরীফুল: মোস্তাফিজ ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা দারুণ। বোলারদের মধ্যে তিনি আমাকে সবচেয়ে বেশি গাইড করেন। কারণ, দলে আমি আর তিনি বাঁহাতি পেসার। যখন কোনো ওভারে খারাপ করি, তখন তিনি আমাকে গাইড করেন। তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা। ভাই তো আইপিএলে খেলেছেন বেশ কয়েকবার, তাই তাঁর শেয়ার করা অভিজ্ঞতাগুলো অনেক কিছু শিখতে সহায়তা করে।

প্রশ্ন: আপনার কি কাউন্টি খেলার কোনো ইচ্ছা আছে? কোনো ক্লাবের সঙ্গে কি এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে?

শরীফুল: কাউন্টি খেলার স্বপ্ন রয়েছে। কয়েক মাস আগে ইংলিশ কাউন্টি দল এসেক্স কর্তৃপক্ষ আমার এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, জানতে চেয়েছিল আসন্ন মৌসুমে আমি খেলতে পারব কি না। এখনো এসব আলোচনা চলছে। কাউন্টি খেলার ইচ্ছাটা বেশ পুরোনো। সেখানে খেলে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাই।

প্রশ্ন: সামনেই জিম্বাবুয়ে সিরিজ, যেখানে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ শুরু করবে। সবশেষ টেস্ট সিরিজেও আপনি ছিলেন দলে। এবার বছরজুড়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ রয়েছে। সামনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কী ভাবছেন?

শরীফুল: চ্যালেঞ্জের কিছু নেই, যদি দলে সুযোগ পাই। যেখান থেকে শেষ করেছি, সেখান থেকেই আবার শুরু করতে চাই। আমাদের কাজই হলো দলকে আমার পারফরম্যান্স দিয়ে ম্যাচ জেতানো। এ বছর আমাদের অনেক খেলা। আমাদের ফিটনেস ঠিক রেখেই খেলতে হবে। আমাদের ওয়ার্ক লোডের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ফিটনেসের কাজ আরও বেশি বেশি করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত ম্যাচে দেরি করায় বাফুফেকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করে আরও একবার জরিমানার মুখে পড়ল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড দেরিতে শুরু হওয়ায় বাফুফেকে ১২৫০ ডলার জরিমানা করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। গত ১৭ ডিসেম্বর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএফসির শৃঙ্খলা ও নীতি কমিটি।

গত ১৮ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও উন্মাদনার কমতি ছিল না। ২২ বছর পর ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ম্যাচের প্রথমার্ধে শেখ মোরসালিনের পা থেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সময়মতো খেলা মাঠে গড়াতে পারেননি রেফারি।

একই কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেও এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এই অপরাধ দুবার করায় বাংলাদেশের জরিমানার অঙ্ক বেশি ধরা হয়েছে। এর আগে গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে দুই মিনিট বিলম্ব হওয়ায় দেড় হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।

এএফসির শৃঙ্খলা নীতিমালার ১১.৩ ধারা অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে দুই ফেডারেশনের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান তিনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোস্তাফিজদের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ে তাসকিনের ৩ উইকেট

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টি যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ—বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন এখন আমিরাতের এই লিগে। কদিন আগে সাকিব-মোস্তাফিজের একটি ছবি ‘দ্য বাংলা’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছিল সাকিবের দল এমআই এমিরেটস। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের তিন তারকা সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ এবারই প্রথমবারের মতো আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন। এই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মোস্তাফিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিচ্ছেন। এদিকে তাসকিন উইকেট তেমন পাচ্ছেন না। উপরন্তু মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন। দুবাইয়ে আজ মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন ৩ উইকেট হলেও ১০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।

দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যায় দুবাই ক্যাপিটালসের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে দুবাইয়ের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীরকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজা। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন জর্ডান কক্স ও সেদিকউল্লাহ আতাল। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কক্সকে (২৮) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

দুবাই ক্যাপিটালসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন কক্স ও আতাল। আরেকটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের জুটিতেও অবদান রয়েছে আতালের। চতুর্থ উইকেটে আফগানিস্তান দলের সতীর্থ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ২৬ বলে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন আতাল। ওপেনিংয়ে নামা আতাল আউট হয়েছেন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আতালের উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এই ব্যাটার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান করে দুবাই ক্যাপিটালস। দুবাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ রান এসেছে আতালের ব্যাট থেকে।

শারজা ওয়ারিয়র্সের তাসকিন ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ রান খরচ করে পেয়েছেন ১ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাজা, মাথিসা পাতিরানা ও আদিল রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনালের জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা এল কলোম্বিয়ানোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র ও আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজির বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদ্‌যাপন—কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত