নিজের খেলাটা খেললে জয় কঠিন হবে না

শাহরিয়ার নাফীস
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৮: ৫৮
Thumbnail image

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব উতরে সুপার টুয়েলভসে যেতে হবে বাংলাদেশকে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশের খেলার যে ধরন, আমরা সব মিলিয়ে যে ফর্মে আছি, সেই চিন্তা করলে বাছাইপর্বটা খুব একটা কঠিন হওয়ার কথা নয়। অনেকে হয়তো প্রস্তুতি ম্যাচের ফল দেখে একটু আশাহত হয়েছেন। আমি অবশ্য এ নিয়ে খুব একটা ভাবছি না। প্রস্তুতি ম্যাচে আমাদের মূল দলের চার-পাঁচজন ক্রিকেটারই খেলেনি। তবে এটা ঠিক, টুর্নামেন্টটা বিশ্বকাপ, আবার টি-টোয়েন্টি সংস্করণ। সেদিক দিয়ে কোনো ম্যাচকেই সহজভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।

বাছাইপর্বের তিনটা ম্যাচই আমাদের কাছে নানা বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচগুলো জিতলে সুপার টুয়েলভসে যাওয়ার পথ পরিষ্কার হবে যেমন, তেমনি তিনটি ম্যাচ জিততে আমরা তিন ম্যাচের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হব। অন্যদিকে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াও হয়ে যাবে অনেকটাই। আর সুপার টুয়েলভসে ওঠার আগে এই ম্যাচগুলো খেলে আমাদের খেলোয়াড়দের দারুণ একটা সেটআপের মধ্যে চলে আসার বিষয় তো আছেই।

বাছাইপর্বে তাই হেলাফেলা করার সুযোগ একেবারেই নেই। আমাদের অনেক গুরুত্ব দিয়ে খেলতে হবে। সেটা হবে এমন–আমরা যে মনোযোগ দিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছি, সেই মনোযোগ এখানেও চাই। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ যদি নিজের খেলাটা ঠিকভাবে খেলে, তাহলে বাছাইপর্বের খেলাগুলো খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে একটা সমস্যা হলেও হতে পারে। সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশ খুব একটা খেলেনি, অচেনা প্রতিপক্ষ একটা সমস্যা তো বটেই। আবার সহযোগী দেশগুলো আরব আমিরাত-ওমানের পরিবেশে নিয়মিত খেলে। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা একটু কম। তবে সেই হিসাব মাথায় নেওয়ার সুযোগ নেই। অস্ট্রেলিয়া-ভারতের মতো দেশগুলোয় বাংলাদেশ সেভাবে খেলেনি, তাই বলে কি এই দলগুলোর বিপক্ষে মাঠে দাপট দেখাই না আমরা? সে জন্য বলছি, বাংলাদেশ যদি নিজের খেলাটা ঠিকঠাক খেলে, তাহলে জয় পাওয়ার কাজটা কঠিন হবে না।

এটা ঠিক–স্কটল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি কিংবা ওমানের মতো দলগুলোকে আসলে হারানোর কিছু থাকে না। যদি হারানোর কিছু থাকে, সেটি বড় দলগুলোরই থাকে। এ কারণেই বড় দলগুলোর ওপর কিছুটা চাপ তৈরি হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। সেদিক দিয়েও এবার দলের ওপর ভক্ত-সমর্থকদের একটা চাওয়া তৈরি হয়েছে। আমিও যথেষ্ট আশাবাদী—এবার বিশ্বকাপের সেই ধারা পরিবর্তন হবে।

দলের অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের গত কয়েকটা ম্যাচ খুব একটা ভালো না হওয়ায় হয়তো অনেকেই চিন্তা করছেন। আমি তাঁদের আশ্বস্ত করতে চাই, এটা নিয়ে ভাবার কোনো কারণ নেই। মুশফিকের মতো ক্রিকেটাররা বড় আসরে যখন দলের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়, তখন একটু বেশিই জ্বলে ওঠে। আর মুশফিক ব্যক্তিগতভাবে একজন খুব সচেতন ও দায়িত্বশীল ক্রিকেটার। ওর পারফরম্যান্স নিয়ে আমাদের যত চিন্তা, তার চেয়ে অনেক বেশি চিন্তিত সে নিজেই।

টপঅর্ডারের ধারাবাহিকতা নিয়েও হয়তো অনেকে কথা তুলেছেন। আসলে তামিম ইকবালের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের বিকল্প পাওয়া খুব কঠিন। কিন্তু যারা দলের সঙ্গে আছে; যেমন, মোহাম্মদ নাঈমের কথা চিন্তা করুন, টি-টোয়েন্টিতে ওপেনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ গড় এখন ওর। লিটন দাসের সামর্থ্য নিয়ে কারও প্রশ্নই নেই। তামিম নেই—এটা ধরে বসে থাকলে আমাদের চলবে না। তার জায়গায় যারা খেলতে গিয়েছে, তারা খুবই সক্ষম। আশা করছি, তারা সময়মতো জ্বলে উঠবে।

এসব ভাবনার উল্টো পিঠে আমাদের আরও একটা ইতিবাচক দিক আছে। সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের দলের মূল খেলোয়াড়। তাদের পারফরম্যান্সের ওপর বাংলাদেশের পারফরম্যান্স অনেকখানি নির্ভর করবে। সেই দুজন কিন্তু বেশ আগেভাগে আইপিএল খেলেছে ওই কন্ডিশনে। এই অভিজ্ঞতা দিয়ে তারা পারফরম্যান্স করে দলকে সহযোগিতা করতে পারবে। আবার অন্যদের পরামর্শ দিয়েও সহায়তা করতে পারবে।

শাহরিয়ার নাফীস, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত