নেপালে সাফ জয়ের পর একের পর এক সংবর্ধনা পেয়েছিলেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। পেয়েছিলেন আর্থিক পুরস্কারের প্রতিশ্রুতিও। সাফজয়ী নারীদের ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। 

সেই ঘোষণার পাঁচ মাস পার হয়ে গেছে। বিসিবির প্রতিশ্রুত এখনো পাননি নারী ফুটবলাররা। বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ক্রীড়া সংগঠন হয়েও বিসিবি কেন নারীদের প্রতিশ্রুত অর্থ দিতে পারল না তা নিয়ে নিয়ে আছে আলোচনা-সমালোচনা। হচ্ছে বিতর্কও। 

বিসিবির অর্থের প্রসঙ্গটি আসছে, অর্থের অভাবে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাইপর্বে নারী ফুটবলারদের না পাঠানোর বিষয়টি থেকে। কেন মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠানো গেল না সেই বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য গত পরশু সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সেই সংবাদ সম্মেলনে উঠেছিল বিসিবির প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও। 

বিসিবি কেন টাকা দিচ্ছে না সেই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছিল সালাউদ্দিনের কাছে। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘বিসিবির খবর জানি না। অনেকে টিভি পর্দায় বলছে। তাদের বলছি ২৪ তারিখ দল যাবে, সেখানে টাকা দেন।’ 

সালাউদ্দিনের দাবি বিষয়টি আজ জানতে চাওয়া হয়েছিল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে। বাফুফে সভাপতির দাবি সঠিক নয় বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মিথ্যা কথা। ওরা (বাফুফে) নেয় না। বারবার বলা হচ্ছে তো। সুজনের (বিসিবির প্রধান নির্বাহী) সঙ্গে কথা বলেন, বলতে পারবে। আমাদের অক্টোবর মাসে চেক সই করা একদম নামে, নামে। ৮–৯ দিন আগেও ফোন দিয়ে বলা হয়েছিল, ভাই একটা তারিখ জানান। আসেন, কিছু নেন। ওরা তো নেয় না। কী বলব?’ 

এ প্রসঙ্গে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বোর্ড সভাপতির একটা প্রতিশ্রুতি ছিল ৫০ লাখ টাকা খেলোয়াড়দের দেওয়ার ব্যাপারে। সেভাবেই বাফুফের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আসলে খেলোয়াড়দের উপস্থিতি এবং তাদের কাছে চেক তুলে দেওয়ার যে ইচ্ছে আমাদের ছিল। সেটা মিলছিল না বলেই হয়তো দেরিটা হচ্ছিল।’ 

কেন টাকা দেওয়া হলো না সেই দায়টা বাফুফেকেই দিয়েছেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী, ‘আমরা প্রস্তুত ছিলাম তিন-চার মাস আগে থেকেই এবং চেকও প্রস্তুত ছিল। সেটা আমরা যোগাযোগ করেছি এবং সাম্প্রতিক সময়েও আমরা কথা বলেছি। তাঁরা সুবিধাজনক একটা সময় দিলে আমরা চেকগুলো হস্তান্তর করে দেব। অথবা যদি তাও না হয়, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা চেকগুলো পৌঁছে দেব।’ 

বিসিবির মতো ৫০ লাখ করে টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাফুফের দুই সহসভাপতি আতাউর রহমান মানিক ও আবদুস সালাম মুর্শেদী। সালাম মুর্শেদীর টাকা না পাওয়া গেলেও মেয়েদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়ে দিয়েছেন আতাউর রহমান মানিক।