রবসনের জোড়া গোলে মর্যাদার লড়াই জিতল বসুন্ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২২, ১৮: ৫৩
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২২, ১৯: ১০

মর্যাদার লড়াইটা হেসে খেলেই জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। নিজেদের মাঠ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আবাহনীকে ৩-২ গোলে হারিয়ে বসুন্ধরা শোধ নিল মৌসুমের শুরুতে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে হারেরও।

শিরোপার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে আগেই। আবাহনীর সঙ্গে বসুন্ধরা কিংসের লড়াইটা ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। তবে প্রতিপক্ষ আবাহনী বলেই কিনা আলাদা একটা হিসাব চুকানোর বাকি ছিল বসুন্ধরার।

বসুন্ধরাকে দর্শক বানিয়ে মৌসুমের দুই শিরোপাই ঘরে তুলেছিল আবাহনী। মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপের ফাইনালেও বসুন্ধরাকে শিরোপায় হাত দিতে দেয়নি আকাশি-নীলরা। দুই ম্যাচ আগেই লিগের শিরোপা জিতে আবাহনীর ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন যেমন ভেঙেছে বসুন্ধরা তেমনি আজ শোধ নিল স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে সেই হারেরও।

২১ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্টে যেমন লিগের সেরা বসুন্ধরা, তেমনি ৪৪ পয়েন্টে রানার্সআপ আবাহনী। শীর্ষ দুই দলের লড়াইটা যেমন হওয়ার কথা ছিল, হলো তেমনটাই। মাঠের খেলার সঙ্গে উত্তেজনা ছড়াল দুই দলের ফুটবলারদের হাতাহাতি। বসুন্ধরা-আবাহনীর লড়াই আলো ছড়িয়েছিল প্রথম লেগেও। সিলেটে দুই দলের প্রথম ম্যাচটা হয়েছিল ২-২ গোলে ড্র।

ম্যাচটা অবশ্য শুরু হয়েছিল আবাহনীর আক্রমণ দিয়েই। ২ মিনিটে সোহেল রানার ক্রস থেকে লম্বা পাস থেকে দানিয়েল কলিন্দ্রেসের বাঁ পায়ের শট ঠেকান বসুন্ধরা গোলরক্ষক জিকো। পরের মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল বসুন্ধরাও। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তৌহিদুল আলম সবুজের ক্রস থেকে নুহা মারং মাথায় বল ছোঁয়াতে পারলে গোল পেতে পারত বসুন্ধরা।

শীর্ষ দুই দলের খেলায় উত্তেজনা ছড়াল দুই দলের হাতাহাতিও। বসুন্ধরার ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার মিগেল দামাসিনার সঙ্গে আবাহনীর ইরানি ডিফেন্ডার মিলাদ শেখের হাতাহাতিতে খেলা বন্ধ ছিল তিন মিনিটের মতো। আবাহনী গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল বসুন্ধরার গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড নুহা মারংকে ধাক্কা দেওয়া পারদ ছড়ায় উত্তেজনা। পরে মিগেল ও সোহেলকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন রেফারি।

উত্তেজনা থামতেই প্রথম গোল বসুন্ধরার। ২০ মিনিটে মিগেল দামাসিনার ফ্রি-কিক থেকে ব্যাক হেডে আবাহনীর জালে বল জড়ান নুহা মারং। লিগে গাম্বিয়ান বংশোদ্ভূত স্প্যানিশের এটি তৃতীয় গোল। 

৩০ মিনিটে আবারও এগিয়ে যাওয়ার ভালো একটা সুযোগ পেয়েও নষ্ট করেছেন নুহা মারং। মিগেল দামাসিনার তড়িৎ ফ্রি-কিক থেকে আবাহনী গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি নুহা। 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে রাকিব হোসেনের গোলের সমতায় ফেরে আবাহনী। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দরিয়েলটন গোমেজের রক্ষণচেরা পাস থেকে রাকিবের কোনাকুনি শটে হার মানেন বসুন্ধরা গোলরক্ষক জিকো। 

বিরতির পর ৫২ মিনিটে বসুন্ধরাকে গোলবঞ্চিত করেছেন আবাহনী গোলরক্ষক সোহেল। মিগেল দামাসিনার পাস থেকে তৌহিদুল আলম সবুজের কোনাকুনি শট ঠেকান সোহেল।

৬৮ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল আবাহনীও। বক্সের ভেতর থেকে দরিয়েলটন গোমেজের শট ঠেকিয়ে বসুন্ধরাকে বাঁচান জিকো। ৭০ মিনিটে দরিয়েলটনকে হতাশ করেন জিকো। 

আবাহনী চোখ রাঙাচ্ছে ব্যবধান বাড়ানোর তখনই পাল্টা আক্রমণে আকাশি-নীল শিবিরকে হতাশায় ডোবান বদলি হিসেবে মাঠে নামা রবসন রবিনহো। স্বদেশি মিগেল দামাসিনার পাস থেকে কোনাকুনি শটে আবাহনীর জালে বল পাঠান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। 

দুর্দান্ত খেলেও আবাহনীর জালে বল পাঠাতে ব্যর্থ দরিয়েলটন। দানিয়েল কলিনদ্রেসের ক্রস থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের হেড এবার আটকেছে পোস্টে। 

আবাহনীর ম্যাচে ফেরার স্বপ্নটা শেষ হয়েছে রবসনের জোড়া গোলে। অতিরিক্ত সময়ে রিমন হোসেনের পাস থেকে সামনে এগোনো আবাহনী গোলরক্ষক সোহেলের মাথার ওপর চিপ করে বল জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। জোড়া গোলে লিগে রবসনের গোল সংখ্যা হলো ১৫। 

দুই গোলে এগিয়ে থেকে যখন মাঠ ছাড়ার অপেক্ষায় বসুন্ধরা তখন আবারও নাটক। কলিন্দ্রেসের কর্নার শট থেকে বল বসুন্ধরা মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া জনির হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে রাফায়েল অগুস্তোর শট প্রথম দফায় ফিরিয়েছিলেন জিকো, তবে ফিরতি বলে ঠিকই জালে জড়িয়ে ব্যবধান কমান রাফায়েল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত