বাংলাদেশের একমাত্র দল হিসেবে এএফসি কাপের ইন্টার-জোনাল সেমিফাইনাল খেলার কৃতিত্ব আবাহনীর। ২০১৮ সালে গড়া আবাহনীর সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল বসুন্ধরার। লক্ষ্য ছিল এএফসি কাপের জোনাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। স্বপ্নপূরণে এটিকে মোহনবাগানের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও ওমানি রেফারির এক কঠিন সিদ্ধান্তে এএফসি কাপের গ্রুপপর্ব থেকেও বিদায় ঘটল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নদের।

মালের জাতীয় স্টেডিয়ামে এটিকে মোহনবাগানের বিপক্ষে একটাই সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বসুন্ধরা কিংস। জিততে হবে যেকোনোভাবে। জোনাথন ফার্নান্দেজের গোলে এগিয়েও ছিল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ সময়ে সুশান্ত ত্রিপুরার লাল কার্ড দেখা আর ৬১ মিনিটে মোহনবাগানের সমতা ফেরানো গোলে ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছে বসুন্ধরা।

তিন ম্যাচে এক জয় ও দুই ড্রয়ে শেষে বসুন্ধরার পয়েন্ট ৫। সমান ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে মোহনবাগানের পয়েন্ট ৭। 

জিততেই হবে এমন সমীকরণে ৪-১-৪-১ ফরমেশনে দুই পরিবর্তন এনে মোহনবাগানের বিপক্ষে দল সাজিয়েছিলেন বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজেন। উইঙ্গার মাহবুবুর রহমান সুফিল ও অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বিপলু আহমেদের পরিবর্তে সুশান্ত ত্রিপুরা ও আতিকুর রহমান ফাহাদ ছিলেন খেলেছেন একাদশে। 

একাদশ পরিবর্তন করে ১৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ পেয়েছিল বসুন্ধরা। ডি-বক্স থেকে ইরানি ডিফেন্ডার খালেদ শাফেঈর হেড থেকে পাওয়া বল থেকে তপু বর্মণের আরেক হেড ঠেকিয়ে দেন মোহনবাগানের এক খেলোয়াড়। পরের মিনিটে রাউল বেসেরার দূরপাল্লার শট আরেকবার ফিরে আসে মোহনবাগান রক্ষণ থেকে। 

১৮ মিনিটে অল্পের জন্য বেঁচে যায় বসুন্ধরাও। মোহনবাগানের অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড ডেভিড উইলিয়াম ভয়ংকরভাবে ঢুকে পড়েছিলেন বসুন্ধরা রক্ষণে। তাঁর নেওয়া পাস থেকে গোলবার ফাঁকা পেয়েও বল বাইরে পাঠিয়েছেন লিস্টন কোলাকু। ২৩ মিনিটে ফিজিয়ান ফরোয়ার্ড রয় কৃষ্ণার বাইসাইকেল কিকে বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে।

মোহনবাগানের সব আক্রমণ ফিরিয়ে ২৮ মিনিটে বসুন্ধরাকে এগিয়ে নেন ব্রাজিলিয়ান জোনাথন ফার্নান্দেজ। স্বদেশি রবসন রবিনহোর সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সের বাম প্রান্ত ধরে জোরের সঙ্গে কোনাকুনি শট নেন জোনাথন। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের আগুনে গোলার মতো শটে ঝাঁপানোর জন্য সময় পর্যন্ত পাননি মোহনবাগান গোলরক্ষক অমৃন্দর সিং। 

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বড় ধাক্কা খায় বসুন্ধরা। সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। পরের ৪৫ মিনিট একজন কম খেলোয়াড় নিয়ে খেলতে গিয়েই বিপদ বাংলাদেশ সেরাদের। 

৬০ মিনিটে বাম প্রান্ত দিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েন শুভাশিস বসু, কোনো সময় না নিয়ে বাম পায়ের জোরালো শট নিলেও গোল পোস্টের সামনে পা লাগানো মতো কেউ ছিলেন না। দশ জনের বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে ৬১ মিনিটে ম্যাচে সমতায় ফেরে মোহনবাগান। বাম পাস থেকে লিস্টন কোলাকুর কাট ব্যাক থেকে পাওয়া বল সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন ডেভিড উইলিয়ামস। 

ম্যাচ জয়ের শেষ চেষ্টা হিসেবে ৮৪ মিনিটে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন রবসন রবিনহো। তাঁর বাঁকানো শট বারে লেগে ফিরলে জয় নিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব হয়নি বসুন্ধরার।