Ajker Patrika

বাংলাদেশে আমার আর ফেরা হবে না

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৩, ১০: ৪৭
বাংলাদেশে আমার আর ফেরা হবে না

আজ ভোরে বাংলাদেশ ছেড়ে যাচ্ছেন পল স্মলি। তাঁর সম্ভাব্য গন্তব্য মালদ্বীপ। সাত বছরে দুই মেয়াদে কাজ করা বাফুফের এই ব্রিটিশ টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে নিয়ে আছে অনেক সমালোচনা আর বিতর্ক। বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার আগে সব প্রশ্নের জবাব দিতে গতকাল চারজন সাংবাদিককে ডেকেছিলেন স্মলি। সেখানে ছিলেন আজকের পত্রিকার নাজিম আল শমষেরও। স্মলির সঙ্গে কথোপকথন থাকল এখানে—

প্রশ্ন: বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের পদ থেকে আপনার সরে দাঁড়ানোর কারণ যদি ব্যাখ্যা করতেন। 
পল স্মলি: বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে তিন-চার সপ্তাহ ধরে এ বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। ফিফা থেকে বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করার পর আমি হতাশা থেকে বাফুফেকে কয়েকটি বিষয় পরিবর্তন করতে বলেছিলাম। যেমন সারা দেশে ফুটবলের উন্নয়ন নিয়ে ফেডারেশনের যে অবস্থান...আমার মতে কিছু কিছু বিষয়ে দ্রুত পরিবর্তন আনতেই হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সভাপতি সিদ্ধান্ত দিতে সময় নিচ্ছিলেন। তখন আমার মনে হলো, এখন সরে দাঁড়ানোই ভালো। গতকাল (পরশু) সভাপতিকে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। সভাপতি অবশ্যই আমাকে থেকে যেতে বলেছেন। এখানে অনেক ইতিবাচকতাই আছে। কিন্তু দিন শেষে সবকিছুই বৃথা যেত। যেমন টেকনিক্যাল বিভাগের পুরো কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। ফেডারেশনের সব কটি বিভাগের কাজের মানসিকতায় পরিবর্তন করতে হবে। লিগের দলগুলোকে একাডেমি করতে হবে। তরুণ ফুটবলার তুলে আনার দায়িত্বটা তাদেরই নিতে হবে। কোচ, খেলোয়াড়, জামাল-সাবিনা, ফেডারেশনের কর্মকর্তারা আমাকে যে সমর্থন দিয়েছেন, সবার কাছে কৃতজ্ঞতা। সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়েছে, এখন সরে দাঁড়ানোর সময়। 

প্রশ্ন: টেকনিক্যাল বিভাগে কী সমস্যা ছিল? 
স্মলি: আমাদের অনেক জনবলের দরকার ছিল, যারা ঢাকার বাইরে জেলা-বিভাগগুলোতে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করবে। বিষয়টি নিয়ে অনেক সমালোচনা আছে। কিন্তু পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় ইচ্ছা থাকার পরও আমরা ঢাকার বাইরে দেশজুড়ে ফুটবলের কারিগরি দিক ও অবকাঠামোতে পরিবর্তন আনতে পারিনি। সভাপতি আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন। বলেছেন, আমরা যা করতে পারিনি, ভবিষ্যতে সেটা অবশ্যই করার চেষ্টা করব। আর ফেডারেশন এই কাজটা করতে পারেনি মূলত প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায়। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত। কারণ, জাতীয় দল সাফল্য পাচ্ছে। একাডেমির মেয়েরা দেশকে সাফ এনে দিয়েছে। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, উন্নয়নের ইচ্ছাকে একটু ভিন্নভাবে পরিচালনা করতে হবে। 

প্রশ্ন: টেকনিক্যাল বিভাগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কি ঠিকঠাক কাজ করতেন না? 
স্মলি: আমাদের টেকনিক্যাল বিভাগে সঠিক কোনো কাঠামোই ছিল না। হ্যাঁ, আমি ছিলাম, আরও কয়েকজন ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় আমাদের বিশেষ কিছু পদের দরকার ছিল। আমার দায়িত্ব বৈচিত্র্যে ভরা ছিল। আমি একাডেমির সঙ্গে কাজ করেছি, মেয়েদের একাডেমির সঙ্গে ছিলাম। ছেলে-মেয়েদের বয়সভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন দলের সঙ্গেও কাজ করেছি। এখন যেখানে আছি, আমাদের সেখান থেকে এগোতে হবে। সেটা করতে হলে আমাদের পর্যাপ্ত মানবসম্পদের দরকার হবে। এসব ছাড়া এগোনো সম্ভবই হবে না। 

প্রশ্ন: বেতন-ভাতা নিয়ে কি কোনো সমস্যা ছিল? 
স্মলি: আমি বেতন-ভাতা নিয়ে কোনো কথাই বলিনি। আপনাদের কয়েকজন সাংবাদিক সহকর্মী প্রতিবেদন করেছেন যে আমি কৌশলে বেতন বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। এমনটা মোটেও ঘটেনি। আমি সভাপতির সঙ্গে যা নিয়ে সব সময় বলেছি, সেটা হলো কীভাবে ফেডারেশনের আরও উন্নতি করা যায়, কীভাবে নারী-পুরুষ জাতীয় দলকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়া যায়। কীভাবে আমরা একাডেমির উন্নয়ন করতে পারি, কীভাবে কোচদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে পারি। 

প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, নারী দলের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের সঙ্গে আপনার সংঘাতপূর্ণ সম্পর্ক। এটা নিয়ে কী বলবেন? 
স্মলি: অভিযোগ? এটা কিন্তু গুরুতর একটা শব্দ! মোটেও এমনটা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ ভুল ও অসত্য অভিযোগ। তাঁর (ছোটন) সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের মতো। সব দলের সঙ্গেই আমি সহায়ক একজন ব্যক্তির মতো কাজ করেছি। আপনারা সবাই জানেন, বয়সভিত্তিক ফুটবলে আমার ভূমিকা কেমন ছিল। আমি জানি না, তিনি আমার সম্পর্কে কী বলেছেন। তাঁর সঙ্গে আমার মোটেও এমন সম্পর্ক ছিল না। 

প্রশ্ন: আপনি নাকি বাফুফের পেশাদারি নিয়ে হতাশ ছিলেন? এটা কি আপনার সরে দাঁড়ানোর অন্যতম কারণ? 
স্মলি: আমি কোথাও অপেশাদার শব্দটা ব্যবহার করিনি। ফেডারেশনের কোথায় কোন পরিবর্তনটা প্রয়োজন, সেটা সব সময় বলার চেষ্টা করেছি। আমার কী কী চাহিদা ছিল, সেটা আপনাদের আগেই বলেছি। ফিফার প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছিল কোন কোন জায়গায় সমস্যা আছে। আমি সেসব বিষয় পরিবর্তন করে যেটা করণীয় দরকার ছিল, সেটাই করতে চেয়েছি। সভাপতি আমাকে বলেছেন, তোমার কথা ঠিক আছে, কিন্তু আমাদের পক্ষে এসব এখনই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তখনই আমি বলেছি, ঠিক আছে, আমি তাহলে সরে যাচ্ছি। 

প্রশ্ন: আবু নাঈম সোহাগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর সালাউদ্দিনকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন? 
স্মলি: ফিফা আর্থিক অনিয়ম নিয়ে যেসব অভিযোগ করেছে, সেসব নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি শুধু বলতে চেয়েছি, ফেডারেশনে পরিবর্তন আনতে হবে। ঢাকাভিত্তিক ফুটবল থেকে খেলাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। কীভাবে ভালো খেলোয়াড় নির্বাচন করতে হবে, সেটাও আমাদের চিন্তায় ছিল। 

প্রশ্ন: বাফুফের সদস্যরা কি কখনো আপনার কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে? তাঁদের সমালোচনা সম্পর্কে কী বলবেন? 
স্মলি: না, কোনো সমস্যা হয়নি। হয়তো কিছু সমালোচনা ছিল, তবে মেনে নিয়েই কাজ করেছি। যেসব সমালোচনা ইতিবাচক ছিল, সেসব আমি মাথা পেতেই নিয়েছি। এটা অনেক সময় উপকারই করেছে। এসব সমালোচনা থেকে অনেক কিছু শিক্ষণীয় ছিল। আমার চুক্তিতেই বলা ছিল, আমি সরাসরি সভাপতির অধীনে কাজ করব। কমিটির কাছে আমার কোনো জবাবদিহি ছিল না। 

প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, আপনি এএফসি প্রো লাইসেন্সে কোচিংয়ে মাত্র একজনকে উত্তীর্ণ করিয়েছেন। বড় কয়েকটি নাম এখন পর্যন্ত আটকে আছে। কয়েকজন উত্তীর্ণই হতে পারেননি। যাঁরা আটকে আছেন, আপনি চলে গেলে তাঁদের কী হবে? 
স্মলি: প্রথমে বলি, যা হয়েছে, সেটা পেশাদারিভাবেই হয়েছে। আরেকটি বিষয় বলি, এ বিষয়ে কিছু ভুল ও নেতিবাচক প্রতিবেদন হয়েছে। যাঁরা দুই বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন, তাঁদের সমান চোখেই দেখা হয়েছে। এএফসি-ফিফার নির্দেশনায় বলাই আছে, লাইসেন্স পেতে হলে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। আমি বা আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটা ফিফার নির্দেশনা মেনেই করেছি। 

প্রশ্ন: চলে যাওয়ার মুহূর্তে বাফুফের প্রতি আপনার কোনো পরামর্শ? 
স্মলি: আমি আমার পরিকল্পনাগুলো রেখে যাচ্ছি। কোথায় কোথায় পরিবর্তন করতে হবে, সেটা আমি সভাপতিকে বলে গেছি। যদি এসব বিষয়ে পরিবর্তন না ঘটে, তাহলে আপনারা যেমন ফুটবল দেখতে চান, তেমন ফুটবল দেখা সত্যিই কঠিন। জিততে হলে, উন্নতি করতে হলে এসব পরিবর্তন সত্যিকার অর্থে জরুরি। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশে কি আর ফেরার সম্ভাবনা আছে? 
স্মলি: কোথায় যাচ্ছি, সেটা এখনই বলতে চাইছি না। বাংলাদেশে দারুণ সময় কাটিয়েছি। তবে বলতেই হচ্ছে, বাংলাদেশে আমার আর ফেরা হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশকে হ্যাটট্রিক ফাইনাল খেলতে দিল না পাকিস্তান

ক্রীড়া ডেস্ক    
শুরুতে উইকেট ফেললেও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে হেরে সেমি থেকেই বিদায় বাংলাদেশের। ছবি: এসিসি
শুরুতে উইকেট ফেললেও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে হেরে সেমি থেকেই বিদায় বাংলাদেশের। ছবি: এসিসি

নকআউট পর্বে যেমন প্রত্যাশা ছিল, আজিজুল হাকিম তামিমের বাংলাদেশ সেটা পূরণ করতে পারেনি। দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। তামিম-জাওয়াদ আবরারদের হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছে পাকিস্তান।

২০২৩, ২০২৪ সালে টানা দুইবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপজয়ী বাংলাদেশ এবার নেমেছিল শিরোপা ধরে রাখার মিশনে। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল তামিমের দল। তবে বাংলাদেশকে হ্যাটট্রিক ফাইনাল খেলতে দিল না পাকিস্তান। ৮ উইকেটে জিতে চতুর্থবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল পাকিস্তান।

দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে আজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে চার ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল। ম্যাচের দৈর্ঘ্য ৫০ ওভার থেকে কমিয়ে ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। ২৭ ওভারে ১২২ রানের লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় ১ রানেই। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে ইকবাল হোসেন ইমনের অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বল খোঁচা দিতে যান পাকিস্তানি ওপেনার হামজা জহুর। বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সহজেই সেটা তালুবন্দী করেছেন। দুই বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি হামজা।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির কারণে সময়মতো শুরু হয়নি। বিকেল ৩টার দিকে শুরু হলে ম্যাচটা ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১২১ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সামিউন বশির রাতুল। ৩৭ বলের ইনিংসে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন তিনি।

পাকিস্তানের সুবহান ৬ ওভারে ২০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এক ওভার মেডেন দিয়েছেন তিনি। হুজাইফা আহসান নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সায়েম, আহমেদ হুসেইন ও আলী রাজা। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে রাতুল রানআউট হওয়াতেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানের বিপক্ষে এলোমেলো ব্যাটিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৯
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ছবি: এসিসি

গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে ওঠা বাংলাদেশকে আজ বড্ড অচেনা লেগেছে। পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়ল আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। বলের লাইন না বুঝে খেলতে গিয়েই বেশির ভাগ উইকেট হারিয়েছে তামিমের দল।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির কারণে সময়মতো শুরু হয়নি। বিকেল ৩টার দিকে যখন ম্যাচ শুরু হয়, তখন দৈর্ঘ্য ২৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১২১ রানে।

পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫.১ ওভারে ২ উইকেটে ২৪ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। দুই ওপেনারই দ্রুত ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছেন। রিফাত বেগ ১৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেছেন ১৪ রান। ওপেনিংয়ে তাঁর আরেক সঙ্গী জাওয়াদ আবরার করেছেন ৯ রান। দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক তামিম ও কালাম সিদ্দিকী। ৪৩ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন তাঁরা (তামিম-কালাম)। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে তামিমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আব্দুল সুবহান। ২৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২০ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

তামিমের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। বড় শট খেলতে গিয়েই আকাশে বল তুলে দেন আবরার-শেখ পারভেজ জীবনরা। পাকিস্তানি ফিল্ডাররা সেই ক্যাচগুলো তালুবন্দী করেছেন। ২৬.৩ ওভারে ১২১ রানে গুটিয়ে গেছে তামিমের বাংলাদেশ। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সামিউন বশির রাতুল। ৩৭ বলের ইনিংসে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন তিনি।

পাকিস্তানের সুবহান ৬ ওভারে ২০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এক ওভার মেডেন দিয়েছেন তিনি। হুজাইফা নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সায়েম, আহমেদ হুসেইন ও আলী রাজা। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে রাতুল রানআউট হওয়াতেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেয়েদের বিসিএলে রোমাঞ্চের এক দিন

ক্রীড়া ডেস্ক    
আজ তিনটি ফিফটি এসেছে। ছবি: বিসিবি
আজ তিনটি ফিফটি এসেছে। ছবি: বিসিবি

মেয়েদের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) আজ তিনটি ফিফটি হয়েছে। অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন দিলারা দোলা, সোবহানা মোস্তারি ও রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক। এর মধ্যে বৃথা গেছে ঝিলিকের ফিফটি। তবে ঠিকই জিতেছে দোলা ও মোস্তারির দল। তিন ফিফটি ছাপিয়ে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে আলোচনায় এসেছে দুটি ম্যাচ।

টানটান উত্তেজনার পর শেষ বলে মীমাংসা হয়েছে সেন্ট্রাল জোন এবং ইস্ট জোনের ম্যাচ। রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে ১ রানে জিতেছে সেন্ট্রাল জোন। তাদের করা ১৫৬ রানের জবাবে ১৫৫ রানে থামে ইস্ট জোন। জয়ের জন্য শেষ ওভারে তাদের সামনে ১২ রানের সমীকরণ ছিল। জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনার করা সে ওভারে ১০ রানের বেশি নিতে পারেননি ইস্ট জোনের দুই ব্যাটার ফাহিমা খাতুন ও মুরশিদা খাতুন।

প্রথম ৪ বলে সমান রান দেন সুমনা। তাঁর করা পঞ্চম বল থেকে বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন ফাহিমা। জেতার জন্য শেষ বলে করতে হতো ৪ রান। এ যাত্রায় ২ রানের বেশি নিতে পারেননি ফাহিমা। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সেন্ট্রাল জোন। এর আগে দোলা ও নিগার সুলতানা জ্যোতির ব্যাটে চড়ে এই পুঁজি পায় তারা। ৫৫ বলে ১৩ চারে ৮৫ রান করেন দোলা। জ্যোতির অবদান ৪৬ রান।

একই ভেন্যুতে সাউথ জোনকে ৪ রানে হারিয়েছে নর্থ জোন। মোস্তারির ৬৯ রানের ইনিংসে ভর করে ১৩১ রানের সংগ্রহ পায় তারা। শারমিন সুলতানার অবদান ৩৭ রান। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি সাউথ জোন। ৬ উইকেট হাতে রেখে শেষ ওভারে তাদের করতে হতো ১৩ রান। উইকেটে লতা মন্ডল ও সুলতানা খাতুনের মতো দুই সেট ব্যাটার থাকায় জেতার স্বপ্ন বুনছিল সাউথ জোন।

সানজিদা আক্তার মেঘলার প্রথম বলে চার মেরে দারুণ শুরু করেন সুলতানা। দ্বিতীয় বলে নেন ২ রান। শেষ ৪ বলে তাদের সামনে সমীকরণ ছিল ৭ রানের। এমন সময়ই ছন্দপতন। তৃতীয় বলে রান আউট হন ১৬ বলে ২৬ রান করা সুলতানা। পরের বলে মারুফা আক্তারকে ফেরান মেঘলা। পঞ্চম বলে ২ রান নেন আয়শা আক্তার। শেষ বলে তাঁকেও আউট করেন মেঘলা। শেষ ওভারে ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মেঘলা। ৪ ওভারে ২২ রান দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইরানে ম্যাচ না খেলে দুই বছর নিষিদ্ধ ভারতের মোহনবাগান

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৫
মোহনবাগানকে শাস্তি দিল এএফসি। ছবি: সংগৃহীত
মোহনবাগানকে শাস্তি দিল এএফসি। ছবি: সংগৃহীত

সেপ্টেম্বরে ইরানে ম্যাচ খেলার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু তিন মাস আগে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের টুর্নামেন্টের ম্যাচ খেলতে যায়নি ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। সেই ঘটনার কঠিন শাস্তি পেল মোহনবাগান। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা গুনতে হবে তাদের।

এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা কমিটি পরশু মোহনবাগানকে কঠিন শাস্তি দিয়েছে। ২০২৭-২৮ মৌসুম পর্যন্ত কোনো এশিয়ান প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবে না। একই সঙ্গে তাদের ১ লাখ ৭২৯ ডলার জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এই ১ লাখ ডলারের মধ্যে ৫০ হাজার ডলারের (৬১ লাখ টাকা) জরিমানার শাস্তিটা মূলত সেপ্টেম্বরে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে। এএফসি ও ইরানি ক্লাব সেপাহান এসসি’র যে ক্ষতিপূরণ হয়েছে, সেক্ষেত্রে আরও বেশি ৫০৭২৯ ডলার দিতে হবে বলে এএফসির নির্দেশ। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ৬২ লাখ টাকা।

সেপাহানের বিপক্ষে সেপ্টেম্বরে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় গ্রুপের ম্যাচ খেলতে ইরানে যাওয়ার কথা ছিল মোহনবাগানের। কিন্তু ইরানে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও চিকিৎসা বিমা কভারেজের সমস্যার কথা উল্লেখ করেছিল মোহনবাগান। এএফসি এরপর তাদের সব ম্যাচ বাতিল করেছে। এএফসির দ্বিতীয় স্তরের এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের ব্যাপারে কোনো ধরনের ভর্তুকিও পাবে না ভারতের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাব।

মোহনবাগান ক্রীড়া আদালতে (সিএএস) নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সেপাহান এসসির বিপক্ষে খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারতের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছিল সিএএস। গত বছর ইরানের আরেক ক্লাব ট্র্যাকটর এসসির বিপক্ষে খেলেনি মোহনবাগান। ট্র্যাকটর এসসি-মোহনবাগান ম্যাচটি ইরানেই হওয়ার কথা ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত