মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেছিলেন ম্যারাডোনা!

ক্রীড়া ডেস্ক
Thumbnail image

ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে সবাই ‘ঈশ্বরের’ আসনে বসিয়েছেন। কিন্তু মাঠের বাইরের ম্যারাডোনা ছিলেন একদমই বিপরীত। ধর্ষণ, মাদকাসক্তি, ডোপ কেলেঙ্কারি—জীবনকে যতটা বেপরোয়া-বেখেয়ালি করে গড়ে তোলা যায়, সবই করেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। 

একগাদা বিতর্কের জন্ম দিয়েই গত বছর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ম্যারাডোনা। তাঁর মৃত্যুর প্রায় এক বছর হতে চললেও সেসব বিতর্ক এখনো পিছু ছাড়ছে না। সবাই যখন প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ম্যারাডোনাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই বোমা ফাটালেন তাঁর এক সময়ের বান্ধবী মাভিস আলভারেজ। কিউবান এই নারীর দাবি, ১৬ বছরে কিশোরী থাকতে তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন ম্যারাডোনা। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান আজ তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগের আদালতে সাক্ষ্য দেন বর্তমানে ৩৭ বছর বয়সী মাভিস। 

প্রায় দুই দশক আগে ম্যারাডোনার বান্ধবী ছিলেন মাভিস। তখন ম্যারাডোনার বয়স ছিল ৪০, মাভিসের ১৬। ২০০১ সালে তাদের পরিচয় হয়েছিল কিউবাতে। তখন দেশটির রাজধানী হাভানার একটি ক্লিনিকে মাদকাসক্তি থেকে নিরাময়ের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ম্যারাডোনা। সেখানেই ম্যারাডোনা তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন মাভিস। সেসময় মাভিসের মা ছিলেন পাশের ঘরে। 

আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে এক সংবাদ সম্মেলনে মাভিস দিয়েছেন দুঃসহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা, ‘সে (ম্যারাডোনা) আমার মুখ চেপে রেখে ধর্ষণ করেছিল, যাতে চিৎকার করতে না পারি। সেদিন থেকে আমি আর কিশোরী ছিলাম না। আমার কুমারীত্ব সেদিন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এটা ভীষণ কঠিন ছিল। ওই বয়সের একটা মেয়ের মধ্যে যে পবিত্রতা থাকে, সেই হারিয়েছিলাম।’ 

সংবাদ সম্মেলনে ম্যারাডোনার সঙ্গে নিজের ছবি দেখাচ্ছেন মাভিস আলভারেজবর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে বসবাস করছেন মাভিস। ম্যারাডোনার সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় অনেকবার শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের শিকার হওয়ার দাবিও করেছেন তিনি। ২০০১ সালে আর্জেন্টিনায় বেড়াতে গেলে তাঁকে কয়েক সপ্তাহ হোটেলে আটকে রাখা, একা একা বাইরে বের হতে বাধা দেওয়া এবং জোর করে কৃত্রিম স্তন প্রতিস্থাপনের অভিযোগও তুলেছেন তিনি। 

অবশ্য মাভিস নিজ থেকে কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। কদিন আগে আর্জেন্টিনার এনজিও সংস্থা ‘ফাউন্ডেশন ফর পিস’ তাঁর পক্ষে অভিযোগ দায়ের করে। এরপরই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মাভিস। 

তাহলে এত বছর কেন নিশ্চুপ ছিলেন মাভিস? সেটিরও বাখ্যা দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, ম্যারাডোনার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত টিভি সিরিজে আর্জেন্টাইন ফুটবল নক্ষত্রকে নিয়ে যেসব ইতিবাচক কথা বলা হয়েছে, তাতে ভারসাম্য আনতেই মুখ খুলেছেন তিনি, ‘আমার যা করার ছিল, করেছি। বাকিটা আদালত যাচাই করে দেখবে। আমার সঙ্গে যা ঘটেছে, সেটি যাতে বাকিদের সঙ্গে না ঘটে কিংবা বাকি মেয়েরা যাতে মুখ খোলার শক্তি ও সাহস পায়—সেটিই করতে চেয়েছি। আমার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত