Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

খুব ভালো মুডে আছি

খুব ভালো মুডে আছি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে এক মাসও নেই। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই বিশ্বকাপের কন্ডিশনিং ক্যাম্প করতে বাংলাদেশ দল চলে যাবে ওমানে। বিশ্বকাপের মঞ্চে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা এখন আছেন ছুটিতে। এ অবসরে মাহমুদউল্লাহ সময় দিলেন আজকের পত্রিকাকে। দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বললেন নিজের অধিনায়কত্ব, ব্যাটিং, সর্বশেষ সিরিজ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস।      

রানা আব্বাস
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ১৪

প্রশ্ন: বাংলাদেশের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০ ম্যাচ খেলেছেন। একই সঙ্গে এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক আপনি। দুটি অর্জন কীভাবে দেখেন? 
মাহমুদউল্লাহ: আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, বাংলাদেশের হয়ে ১০০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সৌভাগ্য হয়েছে। আর অধিনায়ক হিসেবে যে কটা ম্যাচ জিতেছি, পুরোটাই দলের কৃতিত্ব। দল ভালো করেছে, আমরা ম্যাচ জিতেছি। সেটা আমার অধিনায়কত্বে এসেছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, দল হিসেবে এই সংস্করণে আমাদের আরও ভালো কিছু করার বাকি। আশা করি, দল হিসেবে আরও ভালো কিছু অর্জন করব আমরা। আমাদের সব সময় এই সংস্করণে সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি ম্যাচই খুব গুরুত্বপূর্ণ। অবহেলা কিংবা নির্ভার হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। এটা আমরা সবাই জানি। দল হিসেবে আমরা খুব ভালো অবস্থায় আছি। এটা ভাবতে আমার ভালো লাগে। 

প্রশ্ন: ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রথম বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর শুধু আপৎকালীন দায়িত্বই পেয়েছেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারত সফরের আগে অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন এমনই এক পরিস্থিতিতে (সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞায়)। গত দুই বছরে অধিনায়ক হিসেবে আপনাকে সবচেয়ে বেশি কী ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়েছে? 
মাহমুদউল্লাহ: সব সময়ই এই চ্যালেঞ্জ উপভোগ করি। বিশ্বাস করি, এই চ্যালেঞ্জ বা এই দায়িত্বটা আমার খেলায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। দায়িত্ব আমি নিতেও পছন্দ করি। এটা একেকজন একেকভাবে চিন্তা করে। এটা ইতিবাচকভাবে নিই। এবং সেভাবেই দায়িত্ব পালন করতে ভালোবাসি। 

প্রশ্ন: ওয়ানডেতে ওপরে খেলে অনেক সফল হয়েছেন। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ফিনিশিং ভূমিকাটাই কি আপনার জন্য যথার্থ হিসেবে ধরে নিয়েছেন? আরেকভাবে বললে, চাপ নিয়ে খেলাই কি বেশি উপভোগ করেন? 
মাহমুদউল্লাহ: ওয়ানডেতে এর আগে চার-পাঁচে ব্যাটিং করেছি। তার আগে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সাত-আটে ব্যাটিং করতাম। সব সময়ই দলের জন্য খেলার চিন্তা করি। দলে অবদান রাখার চেষ্টা করি। প্রায়ই বলি, যেকোনো পরিস্থিতিতে দলের জয়ে অবদান রাখতে পারলেই খুশি। আর যেকোনো খেলায় চাপ থাকবে। চাপ নিয়েই খেলতে হবে। সেভাবে আপনার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে, যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো পারফরমার হতে চান। বাইরের বিষয়গুলো না ভেবে যদি নিজের খেলা বা প্রক্রিয়ার প্রতি মনোযোগী থাকেন বাকিগুলো এমনি ঠিক হয়ে যাবে। 

প্রশ্ন: তীব্র চাপের মুহূর্তে আপনার সঙ্গে যখন একজন তরুণ খেলোয়াড় যেমন আফিফ-সোহান-শামীমের জুটি হয়, তখন তাদের উদ্বুদ্ধ করেন কোন উপায়ে?
মাহমুদউল্লাহ: আফিফ (হোসেন) ও সোহান (নুরুল হাসান) ম্যাচ শেষ করে আসার সামর্থ্য রাখে। ঘরোয়া ক্রিকেটে আমরা অনেক ম্যাচে তাদের দেখেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কথা বললে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সোহান বেশ ভালোভাবে একটা ম্যাচ শেষ করেছে, যেখানে আমরা একটু সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম। আফিফেরও ফিনিশিং সামর্থ্য ভালো। শামীমেরও ম্যাচ শেষ করার ভালো সামর্থ্য আছে। চাপের মুখে আমরা স্নায়ুচাপ কীভাবে সামলাচ্ছি, সেটার ওপর এটা নির্ভর করছে। আমার মনে হয় ওরা ব্যাপারটা বোঝে। যখন আমরা একসঙ্গে ব্যাটিং করি ওদের সঙ্গে আমার বোঝাপড়াও খুব ভালো হয়। দায়িত্বটা আমরা বুঝি এবং সেটা আমরা ভাগাভাগি করে নিই। আর তখন ফিনিশিংয়ের কাজটা সহজ হয়ে যায়।

প্রশ্ন: গত দুটি সিরিজ প্রসঙ্গে আসি। ঘরের মাঠে দুটি জেতার পরও উইকেট-কন্ডিশন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, হচ্ছে। এসব কীভাবে দেখছেন?  
মাহমুদউল্লাহ: আমরা এটা নিয়ে একবারেই বিচলিত নই। দলের পরিবেশ এখন খুব ভালো আছে। আমরা খুব ভালো মুডে আছি। আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলে জিতেছি। যারা বিষয়গুলো নেতিবাচকভাবে দেখছেন, তাঁদের ইতিবাচক বিষয়গুলোও দেখা উচিত। যে কন্ডিশনে আমরা খেলেছি, সেটা প্রতিপক্ষের জন্যও কঠিন ছিল। ওদের জন্য কঠিন, আমাদের জন্য ব্যাটিংস্বর্গ ছিল, বিষয়টা তা নয়। এখানে আমাদের বোলিং বিভাগকে কৃতিত্ব দিতে হবে। এই কঠিন কন্ডিশনে আমরা যেভাবে ব্যাটিং করে ম্যাচ জিতেছি, সেটিরও কৃতিত্ব দিতে হবে। 

প্রশ্ন: আপনাদের কি এ ধরনের পরিকল্পনা ছিল যে কোন কন্ডিশন-উইকেট খেলছি, সেটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বড় দলকে হারিয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ে আগে উন্নতি করতে হবে। আপনাকেই কিন্তু এই দুইটা সিরিজের আগে অনেকবার বলতে হয়েছে, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ কতটা ভালো দল, সেটা র‍্যাঙ্কিং প্রমাণ করে না!
মাহমুদউল্লাহ: আসলে র‍্যাঙ্কিং নিয়ে আমরা খুব একটা মাথা ঘামাই না। আমরা আমাদের খেলা নিয়ে মনোযোগী। দল জিতলে আমরা খুশি। যদি ভালো ক্রিকেট খেলতে থাকি, দল যদি জিততে থাকে, আমাদের উন্নতির গ্রাফ যদি ইতিবাচকভাবে ওপরের দিকে যেতে থাকে, র‍্যাঙ্কিংয়ের বাকি বিষয় এমনি ঠিক হয়ে যাবে। 

প্রশ্ন: বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে সাধারণত হাই স্কোরিং উইকেটে খেলা হয়। এ ধরনের উইকেটে লিটন-সৌম্যর মতো টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা দুর্দান্ত খেলবে, আপনি কতটা আশাবাদী? আর তামিম ইকবালের মতো অভিজ্ঞ ওপেনার টুর্নামেন্টে কতটা মিস করবেন? 
মাহমুদউল্লাহ: আমাদের ওপেনিংয়ে যারা আছে, তাদের নিয়ে খুবই আশাবাদী। তারা ভালো করতে যথেষ্ট সক্ষম। আশা করি, তারা বড় মঞ্চ দুর্দান্ত খেলবে। 

প্রশ্ন: ওমানে বাংলাদেশ আগে কখনো খেলেনি। যদিও সেখানে আপনারা টুর্নামেন্টের আগে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করবেন। তবু প্রথমবারের মতো ওমানের কন্ডিশনে বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে? 
মাহমুদউল্লাহ: আমার মনে হয় ওমান ও আরব আমিরাতের কন্ডিশন প্রায় একই হবে। যদিও ওমানে আমরা খেলিনি। তবে আমাদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতির বড় অংশ যেহেতু সেখানে হবে, আমরা জানতে পারব কোন ধরনের উইকেটে সেখানে খেলতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট আমাদের সঙ্গে সেভাবে কথা বলবে। আশা করি, ভালো ধারণা পাব, এটা বড় কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের প্রস্তুতি যেন ভালোভাবে সারতে পারি, সেটার দিকে খেয়াল করতে হবে। প্রস্তুতি ম্যাচে যদি আমরা ভালো খেলে জয় দিয়ে শুরু করতে পারি, সেটা ভালো কাজে দেবে। আমরা ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে টুর্নামেন্টে যেতে পারব। 

প্রশ্ন: গত পরশু তামিম এক ফেসবুক লাইভ আড্ডায় বলছিলেন, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনি যদি অধিনায়ক থাকেন, তবে বিশ্বকাপে খেলতে যাবেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘোষণা দিয়ে। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ কি ঘোষণা দিয়ে যেতে চান এই বিশ্বকাপে? 
মাহমুদউল্লাহ: টি-টোয়েন্টিতে ওভাবে ঘোষণা দিয়ে কোনো কিছু অর্জন করা কঠিন। এই সংস্করণে নির্দিষ্ট দিনে যেকোনো দল যে কাউকে হারাতে পারে। একজন ব্যাটসম্যান যদি ৭০-৮০ রানের বড় স্কোর করে। একজন বোলার যদি কম রান দিয়ে ৪-৫ উইকেটের দুর্দান্ত একটা স্পেল করে, সঙ্গে দুই-একজন যদি ছোট অবদান রাখতে পারে, জয়ের জন্য এটাই যথেষ্ট। আমাদের একটা দল হয়ে খেলতে হবে। যার যেদিন সুযোগ আসে, সেটা বোলিং কিংবা ব্যাটিং হোক, নিশ্চিত করতে হবে সে যেন ওই দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করতে পারে। এই দায়িত্ববোধ সবার মধ্যেই থাকতে হবে। 

প্রশ্ন: এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে ফেবারিট মনে হয় কোন দলকে?
মাহমুদউল্লাহ: আমার কাছে সবাইকেই ফেবারিট মনে হয়। এটা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবাই ভালো খেলার চেষ্টা করবে। এটা সময়ই বলে দেবে। 
 
প্রশ্ন: কখনো কখনো নানা ঘটনার ঘনঘটায় চারদিকে দলের অনেক বিষয় নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয় বাইরে। তখন ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কোন উপায়ে স্বাভাবিক রাখেন? 
মাহমুদউল্লাহ: আমরা বাইরের বিষয় নিয়ে খুব একটা আলোচনা করি না। নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকি। নিজেদের কাজ নিয়ে চিন্তা করি। নিজেদের খেলা নিয়ে চিন্তা করি। বাইরের ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। বরং নিজেদের প্রক্রিয়াটা আমরা কীভাবে ধরে রাখতে পারি আর দল কী চাচ্ছে, সে ব্যাপারগুলো নিয়ে বেশি মনোযোগী। যাতে আমরা ম্যাচ জিততে পারি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত ম্যাচে দেরি করায় বাফুফেকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করে আরও একবার জরিমানার মুখে পড়ল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড দেরিতে শুরু হওয়ায় বাফুফেকে ১২৫০ ডলার জরিমানা করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। গত ১৭ ডিসেম্বর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএফসির শৃঙ্খলা ও নীতি কমিটি।

গত ১৮ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও উন্মাদনার কমতি ছিল না। ২২ বছর পর ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ম্যাচের প্রথমার্ধে শেখ মোরসালিনের পা থেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সময়মতো খেলা মাঠে গড়াতে পারেননি রেফারি।

একই কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেও এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এই অপরাধ দুবার করায় বাংলাদেশের জরিমানার অঙ্ক বেশি ধরা হয়েছে। এর আগে গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে দুই মিনিট বিলম্ব হওয়ায় দেড় হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।

এএফসির শৃঙ্খলা নীতিমালার ১১.৩ ধারা অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে দুই ফেডারেশনের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান তিনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোস্তাফিজদের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ে তাসকিনের ৩ উইকেট

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টি যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ—বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন এখন আমিরাতের এই লিগে। কদিন আগে সাকিব-মোস্তাফিজের একটি ছবি ‘দ্য বাংলা’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছিল সাকিবের দল এমআই এমিরেটস। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের তিন তারকা সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ এবারই প্রথমবারের মতো আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন। এই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মোস্তাফিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিচ্ছেন। এদিকে তাসকিন উইকেট তেমন পাচ্ছেন না। উপরন্তু মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন। দুবাইয়ে আজ মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন ৩ উইকেট হলেও ১০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।

দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যায় দুবাই ক্যাপিটালসের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে দুবাইয়ের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীরকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজা। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন জর্ডান কক্স ও সেদিকউল্লাহ আতাল। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কক্সকে (২৮) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

দুবাই ক্যাপিটালসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন কক্স ও আতাল। আরেকটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের জুটিতেও অবদান রয়েছে আতালের। চতুর্থ উইকেটে আফগানিস্তান দলের সতীর্থ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ২৬ বলে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন আতাল। ওপেনিংয়ে নামা আতাল আউট হয়েছেন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আতালের উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এই ব্যাটার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান করে দুবাই ক্যাপিটালস। দুবাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ রান এসেছে আতালের ব্যাট থেকে।

শারজা ওয়ারিয়র্সের তাসকিন ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ রান খরচ করে পেয়েছেন ১ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাজা, মাথিসা পাতিরানা ও আদিল রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনালের জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা এল কলোম্বিয়ানোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র ও আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজির বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদ্‌যাপন—কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত