Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

পাঁচ-ছয়জন ক্লিক করলেই ভালো ফল হবে

পাঁচ-ছয়জন ক্লিক করলেই ভালো ফল হবে

দারুণ একটা আইপিএল গেল মোস্তাফিজুর রহমানের। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ১৪ ম্যাচে নিয়েছেন ১৪ উইকেট। বোলিং, ফিল্ডিং—টুর্নামেন্টে তাঁর উপস্থিতি ছিল নজর কাড়ার মতোই। দল টুর্নামেন্টের শেষ চারে না উঠতে পারায় মোস্তাফিজের আইপিএল-পর্ব শেষ হয়েছে দুই দিন আগে। বাঁহাতি পেসার এরই মধ্যে বাংলাদেশ দলের নির্ধারিত হোটেলেও উঠে পড়েছেন। এখন তাঁর চোখ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সেখান থেকেই গত পরশু মোস্তাফিজ ফোনে জানালেন আইপিএলে তাঁর অভিজ্ঞতা এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আশা ও লক্ষ্যের কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

রানা আব্বাস
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৩: ০০

প্রশ্ন: আরব আমিরাতে প্রথমবারের মতো আইপিএল খেললেন। সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন হয়েছে?

মোস্তাফিজুর রহমান: উইকেট-কন্ডিশন সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়েছি। সাকিব (আল হাসান) ভাইও খেলছেন। যা দেখছি, যা ভাবনায় আসছে, তা দলের বোলারদের সঙ্গে শেয়ার করব।

প্রশ্ন: এবার আইপিএলের আমিরাত-পর্বে খুব বেশি বড় স্কোরের ম্যাচ দেখা যায়নি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কি এমনই দেখার সম্ভাবনা বেশি?

মোস্তাফিজ: না, না...আইপিএলের চেয়ে বিশ্বকাপে উইকেট ভালো হবে। আইপিএলের উইকেটও খুব বেশি খারাপ বলা যাবে না। যে উইকেটগুলোয় বিশ্বকাপের খেলা হবে, সেগুলো ঢেকে দেওয়া দেখলাম। মাঝের এই উইকেটগুলো ভালো হতে পারে। আমার মনে হয় না... (আইপিএলের মতো উইকেট হবে)। বিশ্বকাপ বড় ইভেন্ট। ধরুন, ছয়টা উইকেট আছে। তিনটা ব্যবহার করা হয়েছে (আইপিএলে)। তিনটা রেখে দিয়েছে বিশ্বকাপের জন্য। বিশ্বকাপের উইকেটে আইপিএলের ম্যাচ তেমন একটা হয়নি। আমার যেটা মনে হয়, শারজা বাদে আবুধাবি আর দুবাইয়ের উইকেট ভালো হবে।

প্রশ্ন: এই ধরনের কন্ডিশনে আপনার কোন ডেলিভারি বেশি কার্যকর মনে হয়েছে?

মোস্তাফিজ: এখানে অত বেশি হয় না (কাটার)। একটু মাথা খাটিয়ে বোলিং করতে হবে। একটা জিনিস মনে হয়েছে, ব্যাটাররা দ্রুত উইকেট না দিলেই রান বেশি হচ্ছে। যে দলের আগেভাগে উইকেট যায়নি, সেই দলই রান করেছে। বোলিংয়ে এখানে মিশ্রণ রাখতে হবে। একই বল (বারবার) করা যাবে না। ভেরিয়েশন রাখতে হবে।

প্রশ্ন: আপনার দলের ব্যাটিং বিভাগ প্রত্যাশামতো ভালো করতে পারেনি। বোলিং বিভাগ ভালো করলেও প্রত্যাশিত ফল আপনারা পাননি। তাই না?

মোস্তাফিজ: হ্যাঁ। সাঞ্জু (স্যামসন) রান না করলে দলের স্কোর বড় হয়নি।

প্রশ্ন: ক্রিকেট পরিচালক হিসেবে রাজস্থান দলে কাজ করেছেন কুমার সাঙ্গাকারা। তাঁর সঙ্গে কি বিশেষ কোনো কথা হয়েছে?

মোস্তাফিজ: শেখার তো শেষ নেই। সবার কাছ থেকেই শিখছি। তিনি তো বড় লিজেন্ড, তাই না?

প্রশ্ন: রাজস্থানের যে চার ক্রিকেটার নিজেদের প্রতিটি ম্যাচ খেলেছেন, আপনি তাঁদের একজন (বাকি তিনজনই ভারতীয়)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনাকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দেখে মনে হলো রাজস্থান আপনাকে অনেক গুরুত্ব দিয়েছে। দেশে থাকা আপনার বিরাট ভক্ত-সমর্থককে লক্ষ্য করেই শুধু নয়, পারফরম্যান্সও নিশ্চয়ই একটা বড় কারণ?

মোস্তাফিজ: আমি তাদের ব্যাপারে খুবই খুশি। আমাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেই নয়, তারা আমার কোনো চাওয়া অপূর্ণ রাখেনি। আমার খুব খুব ভালো লাগছে।

প্রশ্ন: কলকাতাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাকিবকে অনেক গুরুত্ব দিয়েছে দেখি। অথচ তাঁর মতো খেলোয়াড়কে টানা কয়েকটি ম্যাচে একাদশের বাইরে থাকতে হয়েছে।

মোস্তাফিজ: ওদের (কলকাতা) দুই-তিনটা স্পিনার আছে তো, এ কারণেই ভাইয়ের (সাকিব) একাদশে জায়গা পেতে একটু সময় লেগেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে অনেক বিষয় থাকে। দলের সমন্বয়ের ব্যাপার থাকে। যারা খেলতে এসেছে, তারা সবাই ভালো, তাই না?

প্রশ্ন: যে দলেই খেলুন, স্ট্রাইক বোলারের ভূমিকা থাকে আপনার। দলের গুরুত্বপূর্ণ বোলার হলে কঠিন পরিস্থিতিতে বেশি বোলিং করার দায়িত্বও পড়ে আপনার কাঁধে। এই চ্যালেঞ্জ কেমন উপভোগ করেন?

মোস্তাফিজ: এটা তো ভালো। বারবার চ্যালেঞ্জ নেওয়ার বিষয় থাকে। এখান থেকেও আমি শিখছি। আমি যদি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলিং করি, কিছু কিছু জায়গায় হয়তো ব্যাটাররা চড়াও হয়। তখন বুঝতে পারি, যেখানে সফল হতে পারিনি, সেখানে আর কী করলে আরও ভালো ফল পাব। দেশের হয়ে এ রকম পরিস্থিতি এলে আমি আরও কী করে ভালো করতে পারব, বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে পারি।

প্রশ্ন: যত দূর আপনাকে জানি, ব্যক্তিগতভাবে আপনি নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করেন। গ্রামের পরিবেশে থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সেই আপনি যখন বিভিন্ন দেশের টুর্নামেন্ট খেলতে যান অনেকটা একা একা, তখন কীভাবে সেই বিচিত্র সংস্কৃতি, বিচিত্র পরিবেশে তাল মিলিয়ে চলেন?

মোস্তাফিজ: সত্যি বলতে মানুষের সঙ্গে সাধারণত আমার একটু মেশা হয় কম। এখানে যারা আসে, আমাদের সবার মূল কাজ হলো খেলা। সবার কমবেশি অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে। দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অবশ্য সেভাবে অংশও নিই না। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে অনেক কিছু থাকে। আমি সে সবে যাই না। যেগুলোতে না গেলে হয় না, সেগুলোয় যাই। এখানে মানিয়ে নিতে হয়। সবাই তো পেশাদার। দল বলুন, ম্যানেজমেন্ট বলুন, খেলোয়াড় বলুন–এখানে কেউ একেবারে নতুন নয়। সবাই বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলে আসছে। সবাই পেশাদার। মানিয়ে নিতে তাই সমস্যা হয় না।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে ফিরি, আরেকটি আইসিসি টুর্নামেন্ট সামনে। নিজেদের কেমন সুযোগ দেখছেন?

মোস্তাফিজ: এশিয়ার কন্ডিশনে খেলা। চেষ্টা তো থাকবে ভালো কিছু করার। দেশকে কিছু দেওয়ার। শুধু আমি না, আমার পুরো দলের। আমরা সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। সবার দোয়াও তো থাকবে আমাদের সঙ্গে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কখনো শেষ চারে ওঠেনি। এবার কতটা আশাবাদী আপনারা?

মোস্তাফিজ: আশা করতে পারি। যদি সবার ভালো সময় যায়। আমরা যে ১৫-১৭ জন আছি, এখান থেকে যদি পাঁচ-ছয়জন ক্লিক করে যাই, আশা করছি একটা ভালো ফল হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত ম্যাচে দেরি করায় বাফুফেকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করে আরও একবার জরিমানার মুখে পড়ল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড দেরিতে শুরু হওয়ায় বাফুফেকে ১২৫০ ডলার জরিমানা করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। গত ১৭ ডিসেম্বর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএফসির শৃঙ্খলা ও নীতি কমিটি।

গত ১৮ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও উন্মাদনার কমতি ছিল না। ২২ বছর পর ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ম্যাচের প্রথমার্ধে শেখ মোরসালিনের পা থেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সময়মতো খেলা মাঠে গড়াতে পারেননি রেফারি।

একই কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেও এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এই অপরাধ দুবার করায় বাংলাদেশের জরিমানার অঙ্ক বেশি ধরা হয়েছে। এর আগে গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে দুই মিনিট বিলম্ব হওয়ায় দেড় হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।

এএফসির শৃঙ্খলা নীতিমালার ১১.৩ ধারা অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে দুই ফেডারেশনের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান তিনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোস্তাফিজদের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ে তাসকিনের ৩ উইকেট

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টি যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ—বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন এখন আমিরাতের এই লিগে। কদিন আগে সাকিব-মোস্তাফিজের একটি ছবি ‘দ্য বাংলা’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছিল সাকিবের দল এমআই এমিরেটস। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের তিন তারকা সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ এবারই প্রথমবারের মতো আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন। এই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মোস্তাফিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিচ্ছেন। এদিকে তাসকিন উইকেট তেমন পাচ্ছেন না। উপরন্তু মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন। দুবাইয়ে আজ মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন ৩ উইকেট হলেও ১০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।

দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যায় দুবাই ক্যাপিটালসের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে দুবাইয়ের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীরকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজা। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন জর্ডান কক্স ও সেদিকউল্লাহ আতাল। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কক্সকে (২৮) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

দুবাই ক্যাপিটালসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন কক্স ও আতাল। আরেকটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের জুটিতেও অবদান রয়েছে আতালের। চতুর্থ উইকেটে আফগানিস্তান দলের সতীর্থ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ২৬ বলে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন আতাল। ওপেনিংয়ে নামা আতাল আউট হয়েছেন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আতালের উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এই ব্যাটার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান করে দুবাই ক্যাপিটালস। দুবাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ রান এসেছে আতালের ব্যাট থেকে।

শারজা ওয়ারিয়র্সের তাসকিন ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ রান খরচ করে পেয়েছেন ১ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাজা, মাথিসা পাতিরানা ও আদিল রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনালের জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা এল কলোম্বিয়ানোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র ও আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজির বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদ্‌যাপন—কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত