সাক্ষাৎকার

সাইবার হামলার আধঘণ্টা পরে সরাসরি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প-মাস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লাইভ বা সরাসরি সাক্ষাৎকার নিলেন ইলন মাস্ক। তবে নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) সাক্ষাৎকারটি সরাসরি প্রচার শুরু হয়। সাইবার হামলার জেরে এই বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি করেন মাস্ক। 

দুই ঘণ্টা ধরে এই সাক্ষাৎকার হয়েছে। সাক্ষাৎকারে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস, তাঁর রানিং মেট টিম ওয়ালজ, ক্যাপিটাল হিলে হামলা ও বিশেষ করে ট্রাম্পের ওপর হামলা নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে অভিবাসন সম্পর্কে ট্রাম্পের মতামতও জানতে চান ইলন মাস্ক। 

সাক্ষাৎকারে আধা ঘণ্টার বেশি সময় পরে হাজির হন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। কিন্তু তাঁদের কথা সরাসরি শুনতে পারেননি অনেকেই। এই পরিস্থিতি দুজনকেই বিব্রত করে। প্রযুক্তিগত গোলযোগ ঠিক করার পরেই সব শ্রোতার কাছে সাক্ষাৎকারটি পৌঁছায়। 

এক এক্স পোস্টে ইলন মাস্ক বলেন ‘এক্স প্ল্যাটফর্মে বড় ধরনের সাইবার (ডি-ডস) হামলা হয়েছে। তাই অনেক এক্স ব্যবহারকারী লাইভ সাক্ষাৎকার শুনতে পাচ্ছেন না। এটা ঠিকঠাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে লাইভে কম শ্রোতাকে নিয়ে শুরু করব। তারপর এই কথোপকথন কোনো সম্পাদনা ছাড়াই পোস্ট করে দেয়া হবে।’ 

হামলা নিয়ে ইলন মাস্ককে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি আমি মাথা না ঘুরিয়ে দিতাম, এখন তোমার সঙ্গে কথা বলতে পারতাম না। যতটাই না আমি তোমাকে পছন্দ করি।’ 

গত মাসে (জুনে) হত্যাচেষ্টার বিষয়ে ট্রাম্পের কঠোর প্রতিক্রিয়া জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেন, দেশের বাইরে অনেক শক্তিশালী চরিত্র রয়েছে। তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে শক্তিশালী মনে না করে, তাহলে তারা যা করতে চায় তাই করবে। 

সাক্ষাৎকারটি দেখতে পারছেন না বলে অনেক এক্স ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন। তবে এটি কোনো হামলার কারণে হয়েছে কিনা তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। কারণ এক্স এর বাকি অংশ ঠিকঠিকভাবে কাজ করছিল। বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী একই সঙ্গে সাক্ষাৎকারটি দেখার কারণেও এমন সমস্যা হতে পারে। 

এই সাক্ষাৎকারে দ্বিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রকাশ করে ট্রাম্প। সাম্প্রতিক হত্যা প্রচেষ্টা, অবৈধ অভিবাসন ও সরকারি বিধি-বিধান বাদ দিতে নিজস্ব পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করেছেন ট্রাম্প। 

 ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভবনে হামলার পর ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছিল। তবে প্ল্যাটফর্মটি অদিগ্রহনের এক মাসের মাথায় মাস্ক ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ২০২৩ সালে আগস্টে একবার ঢোকার পর অ্যাকাউন্টটি আর ব্যবহার করেননি ট্রাম্প। 

লক্ষাধিক ভোটারদের কাছে সরাসরি পৌঁছানোর জন্য এই সাক্ষাৎকারে রাজি হন ট্রাম্প। এটি এক্সের জন্যও বড় সুযোগ। কারণ প্ল্যাটফর্মটিতে রাজনীতি নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা হয়। এ ছাড়া ইলন মাস্ক অধিগ্রহণের পর নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা সম্মুখীন হয়েছে প্ল্যাটফর্মটি। এই সাক্ষাৎকারে মাধ্যমে ইতিবাচক প্রচারণার চেষ্টা করছে প্ল্যাটফর্মটি। 

সাক্ষাৎকারটির বিঘ্ন হওয়ার কারণে ট্রাম্পের অনেক সমর্থক বিরক্তি প্রকাশ করেছে। 

গ্লেন বেক নামের এক ব্যবহারকারী এক্সের পোস্টে বলেন, ‘সাক্ষাৎকারটি উপলব্ধ নয়? আমি দিনের সব কাছ একে ঘিরে পরিকল্পনা করেছিলাম।’ 

হেজ ফান্ডের ম্যানেজার বিলিয়নিয়ার বিল অ্যাকম্যান পোস্ট করেন, ‘দয়া করে ইলনকে জানান যে, আমরা সাক্ষাৎকারটি দেখতে পারছি না।’ 

 ২০২৩ সালের মে মাসে ইলন মাস্ক ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিসের আলোচনার সময়েও প্ল্যাটফর্মটিতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়াই করবেন বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার জন্য গভর্নর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি ব্যবহার করছিলেন। ৪ লাখ ব্যবহারকারী একই সঙ্গে সাক্ষাৎকারটি দেখার জন্য সেই সময় প্ল্যাটফর্মটিতে প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা যায়। 

ডি–ডস হামলা কি
ডিনায়াল অব সার্ভিস (DDoS) হামলা কে ডি–ডিস অ্যাটাক বলা হয়। এটি একটি সাইবার হামলা যেখানে হ্যাকাররা সাময়িক সময়ের জন্য অথবা নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য ওয়েব সার্ভারে অতিরিক্ত রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে সার্ভার ডাউন করে দেয়। 

একাধিক ডিভাইস এর সাহায্যে নির্দিষ্ট ওয়েব সাইট কিংবা সার্ভার কে সাময়িকভাবে বা অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়াই হলো ডি–ডস হামলা। হ্যাকাররা একই সঙ্গে একই সাইটকে লক্ষ্য করে হামলা করে। 

তথ্যসূত্র: দ্য হিন্দু ও হিন্দুস্তানি টাইমস

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত