Ajker Patrika

মিউজিক তৈরির ফিচার আনল মাইক্রোসফট চ্যাটবট কোপাইলট

মিউজিক তৈরির ফিচার আনল মাইক্রোসফট চ্যাটবট কোপাইলট

মিউজিক তৈরির ফিচার নিয়ে এল মাইক্রোসফটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) চ্যাটবট কোপাইলট। জেনারেটিভ এআইভিত্তিক মিউজিক অ্যাপ ‘সুনো’ এর সঙ্গে অংশীদারত্বে ফলে গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে পারবে মাইক্রোসফট। গ্রাহকেরা টেক্সটের মাধ্যমে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে পছন্দ অনুযায়ী গান তৈরি করতে পারবে।

ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন নির্দেশনা দিলে সুনোর প্লাগ ইনের সাহায্যে একটি সম্পূর্ণ গান বা মিউজিক তৈরি করে দিতে পারে কোপাইলট। সুনো গানের লিরিক, বাদ্যযন্ত্র এমনকি গানের ভয়েসেও যুক্ত করে দেবে।

মাইক্রোসফট বলেছে ,যারা কীভাবে গান গাইতে হয়, বাদ্যযন্ত্র বাজাতে হয় বা নোটেশন পড়তে জানে না, তারা মাইক্রোসফটের কোপাইলট ব্যবহার করে মিউজিক তৈরি করতে পারবে। টেক্সটের নির্দেশনা অনুযায়ী মিউজিক বানানোর জন্য সব কাজ করবে সুনো।

যেভাবে  ফিচারটি ব্যবহার করবেন

১. সুনো ব্যবহার করার জন্য কোপাইলট গ্রাহকদের যেকোনো ব্রাউজারে প্রবেশ করতে হবে।
২. এরপর এই ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে।
৩. মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করতে হবে।
৪. সুনো লোগোতে বা ‘মেক মিউজিক উইথ সুনো’ তে ক্লিক করতে হবে।
৫. পছন্দ অনুযায়ী নির্দশনাও দিলে কয়েক মিনিটের মধ্যে মিউজিক তৈরি করে দিবে কোপাইলট।

মাইক্রোসফট বিংয়ের এক ব্লগ পোস্টে কোম্পানিটি বলেছে, এই অংশীদারিত্ব সৃজনশীলতা ও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং সঙ্গীত সৃষ্টিকে সকলের কাছে সহজলভ্য করে তুলবে। আজকে (মঙ্গলবার) থেকে এই ফিচার কিছু গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্য চালু করা হয়েছে এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সব গ্রাহকেরা এটি ব্যবহার করতে পারবে।

টেক জায়ান্ট ও স্টার্টআপগুলো একইভাবে জেনারেটিভ এআইভিত্তিক মিউজিক তৈরির প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে। গত নভেম্বরে গুগলের এআই ল্যাব ডিপমাইন্ড ও ইউটিউবের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে। ইউটিউবের মিউজিকের জন্য জেনারেটিভ এআই মডেল লিরিয়া এবং ইউটিউব শর্টসে এআই টিউন তৈরির ড্রিম ট্র্যাক টুলের তৈরি করবে এই দুই কোম্পানি। মেটাও এআইভিত্তিক মিউজিক তৈরির টুল নিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছে। তবে এআইভিত্তিক কৃত্রিম গান তৈরি ক্ষেত্রে নৈতিক ও আইনী বিষয়গুলোর সমাধান এখনো করা হয়নি।

প্রচলিত মিউজিকের মাধ্যমে এআইয়ের অ্যালগরিদমগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহক ও শিল্পীরা স্বাছন্দ্যবোধ করছেন না। কারণ শিল্পীদের মিউজিক ব্যবহার করে এআইকে প্রশিক্ষণ দিলেও এজন্য তাদের কোনো অর্থ প্রদান করা হয়না।

বেশিরভাগ এআইভিত্তিক কোম্পানি দাবি করে, শিল্পীদের গানগুলো পাবলিক তাই এআই প্রশিক্ষণে এসব মিউজিক ব্যবহার করা ক্ষতির কোনো কিছু না।

এআই প্রশিক্ষণের ডেটা সুনো কোথা থেকে সংগ্রহ করে, সেই সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। সুনোতে ব্যবহারকারীরা জনপ্রিয় শিল্পীর স্টাইলে মিউজিক তৈরি করা সুযোগ দেয়।

তথ্যসূত্র: টেকক্রাঞ্চ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেটা সেন্টারের তাপে গরম হচ্ছে শোয়ার ঘর, কমছে গ্যাসের খরচ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাড়ির গ্যারেজে রাখা হয়েছে ডেটা সেন্টার। ছবি: এক্স
বাড়ির গ্যারেজে রাখা হয়েছে ডেটা সেন্টার। ছবি: এক্স

বাড়ির উঠানে বা গ্যারেজে রাখা একটি ছোট ডেটা সেন্টার (কম্পিউটার সার্ভার) ব্যবহার করে নিজেদের ঘর গরম রাখার এক যুগান্তকারী প্রকল্প শুরু হয়েছে যুক্তরাজ্যে। এসেক্সের এক দম্পতি এই প্রকল্পের প্রথম পরীক্ষামূলক ব্যবহারকারী। এভাবে তাঁরা মাসিক জ্বালানি বিল প্রায় ১০ গুণ কমাতে সক্ষম হয়েছেন।

ব্রেইন্ট্রির কাছে বসবাসকারী টরেন্স (৭৬) ও লেসলি ব্রিজেস (৭৫) দম্পতি তাঁদের পুরোনো গ্যাস বয়লারের পরিবর্তে ‘হিটহাব’ (নামের একটি ছোট ডেটা সেন্টার স্থাপন করেছেন। এই ডেটা সেন্টারে ৫০০ টিরও বেশি কম্পিউটার রয়েছে। এই নতুন ব্যবস্থা চালুর পর তাঁদের মাসিক জ্বালানি বিল ৩৭৫ পাউন্ড থেকে কমে মাত্র ৪০ থেকে ৬০ পাউন্ডে দাঁড়িয়েছে।

ডেটা সেন্টার হলো মূলত বিপুলসংখ্যক কম্পিউটারের সমষ্টি। কম্পিউটারগুলো ডেটা প্রক্রিয়া করার সময় প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন করে। ‘হিটহাব’ সেই তাপ ধারণ করে তেলে। সেই তেল একটি ক্লোজড-লুপ সিস্টেমের (চক্রাকার) মাধ্যমে ব্রিজেস দম্পতির গরম পানি ও ঘর গরম করার সিস্টেমে তাপ স্থানান্তর করে।

অবসরপ্রাপ্ত রয়্যাল এয়ার ফোর্স সার্জেন্ট টরেন্স ব্রিজেস বলেন, তাঁর স্ত্রী লেসলি মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভোগেন এবং ঠান্ডা লাগলে তাঁর প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তাই বাড়ি উষ্ণ রাখাটা তাঁদের জন্য জরুরি। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা সত্যিই দুর্দান্ত। আমরা এই ট্রায়ালের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় খুবই খুশি। হিটিং সিস্টেমে কোনো ত্রুটি নেই—আগের ব্যবস্থার তুলনায় এটি শতভাগ উন্নত।’

‘হিটহাব’ সিস্টেমটি তৈরি করেছে থার্মিফাই নামের একটি সংস্থা। এটি ইউকে পাওয়ার নেটওয়ার্কসের শিল্ড প্রকল্পের একটি অংশ। তাদের লক্ষ্য হলো স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোকে পরিবেশবান্ধব ‘নেট জিরো’ ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত করার উদ্ভাবনী উপায় খুঁজে বের করা। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ব্রিজেস দম্পতির বাড়িতে সোলার প্যানেল এবং একটি ব্যাটারিও স্থাপন করা হয়েছে। এতে তাঁদের আরও বেশি সাশ্রয় হচ্ছে।

থার্মিফাইয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ট্রেভিস থিউন বলেন, তাঁদের লক্ষ্য ছিল এমন একটি ব্যবস্থা ডিজাইন করা যা একই সঙ্গে ‘পরিবেশবান্ধব’ এবং ‘সাশ্রয়ী’ জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, এই পদ্ধতিতে ‘কম বা বিনা মূল্যে পরিবেশবান্ধব, কার্বনমুক্ত তাপ’ পাওয়া যায়, কারণ তাপ উৎপন্নকারী বিদ্যুতের বিল অন্য কেউ (ডেটা প্রক্রিয়াকরণ ক্লায়েন্ট) পরিশোধ করে।

এই প্রকল্পটি বর্তমানে পাইলট পর্যায়ে রয়েছে। থার্মিফাই আশা করছে, ভবিষ্যতে এটি একটি ‘রিমোট এবং ডিস্ট্রিবিউটেড’ ডেটা সেন্টারের অংশ হবে। এই ধরনের ডেটা সেন্টার বহু ইউনিটে বিভক্ত হয়ে গ্রাহকদের ডেটা প্রক্রিয়াকরণের কাজ করবে। যদিও এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জন্য প্রয়োজনীয় বিপুল ডেটা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ডিজাইন করা হয়নি, তবে এটি অ্যাপ বা বড় ডেটা বিশ্লেষণের মতো কাজ পরিচালনা করতে সক্ষম।

ব্রিজেস দম্পতির আবাসন সরবরাহকারী ইস্টলাইট কমিউনিটি হোমসও এই প্রকল্পের অংশ। ইস্টলাইটের ড্যানিয়েল গ্রিনউড আশা প্রকাশ করেছেন, প্রকল্পের পরবর্তী ধাপে আরও ৫০টি বাড়িতে ‘হিটহাব’ স্থাপন করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, আধুনিক বিশ্বে ডেটা সেন্টারগুলোর বিদ্যুৎ ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। অনুমান করা হয়, যুক্তরাজ্যের মোট বিদ্যুতের প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যবহার করে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ডেটা সেন্টারগুলো। ২০৩০ সালের মধ্যে এই চাহিদা চারগুণ বাড়তে পারে।

অবশ্য ডেটা সেন্টার থেকে উৎপন্ন তাপকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে, এমন প্রতিষ্ঠান থার্মিফাই একা নয়। ডেভনের একটি সুইমিং পুল বর্তমানে ওয়াশিং মেশিনের আকারের একটি ‘ডিজিটাল বয়লার’ দিয়ে গরম করা হচ্ছে। এ ছাড়া, ক্যামব্রিজশায়ারেও একটি সৌর বিদ্যুৎ চালিত ডেটা সেন্টার এবং ডিস্ট্রিক্ট হিট নেটওয়ার্ক তৈরির প্রস্তাব রয়েছে।

মাইক্রোসফটও একটি পরীক্ষামূলক আন্ডারওয়াটার ডেটা সেন্টার নিয়ে কাজ করেছে (প্রজেক্ট ন্যাটিক)। তারা ৮৫০ টিরও বেশি সার্ভার সমুদ্রের তলদেশে স্থাপন করেছে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) হিসাব অনুসারে, ডেটা সেন্টারগুলো তাদের মোট বিদ্যুৎ ব্যবহারের ৩০ শতাংশই ব্যয় করে কুলিং বা ঠান্ডা করার কাজে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআই শক্তিশালী করতে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে গুগল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গুগলের এসব পদক্ষেপ ক্যালিফোর্নিয়া সমান বেতন আইন লঙ্ঘন করেছে। ছবি: পাইমিন্টস ডট কম
গুগলের এসব পদক্ষেপ ক্যালিফোর্নিয়া সমান বেতন আইন লঙ্ঘন করেছে। ছবি: পাইমিন্টস ডট কম

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে নতুন ক্লাউড কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো নির্মাণে ২০২৭ সালের মধ্যে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে গুগল। যুক্তরাষ্ট্রের এই অঙ্গরাজ্যে প্রযুক্তি খাতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় বিনিয়োগের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখল কোম্পানিটি।

গত শুক্রবার গুগল জানায়, উত্তর টেক্সাসে নতুন ডেটা সেন্টার ক্যাম্পাস তৈরিতে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে টেক্সাসে তাদের কার্যক্রম থাকলেও এ বিনিয়োগের মাধ্যমে উপস্থিতি আরও ব্যাপক হবে।

এক বিবৃতিতে গুগল জানিয়েছে, ‘টেক্সাসে আমাদের নতুন বিনিয়োগ রাজ্যের কর্মশক্তি ও অবকাঠামোকে শক্তিশালী করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে এআই নেতৃত্ব ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ভিত্তি নিশ্চিত করবে।’

টেক্সাসের অনিয়ন্ত্রিত জ্বালানি বাজার এবং নবায়নযোগ্য শক্তির বিস্তৃত ব্যবহার ডেটা সেন্টার স্থাপনের জন্য রাজ্যটিকে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তবে ডেটা সেন্টারের বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদা স্থানীয় গ্রিডের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে—বিশেষ করে ২০২১ সালের ভয়াবহ শীতঝড়ে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের পর থেকে এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

টেক্সাসে বিশ্বের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে। ওপেনএআই তাদের উচ্চাভিলাষী ৫০০ বিলিয়ন ডলারের ‘স্টারগেট’ প্রকল্পের কেন্দ্র হিসেবে টেক্সাসের অ্যাবিলিনকে বেছে নিয়েছে। ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা ফোর্ট ওয়ার্থে ডেটা সেন্টার নির্মাণে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। টেসলা ২০২১ সালে সদর দপ্তর অস্টিনে সরিয়ে সেখানে বিশাল কারখানা তৈরি করেছে। ওরাকলও একইভাবে সদর দপ্তর অস্টিনে নিয়েছে। আর স্যামসাং টেক্সাসের টেলর শহরে ১৭ বিলিয়ন ডলারের সেমিকন্ডাক্টর কারখানা স্থাপন করছে।

ডেটা সেন্টারের বিদ্যুৎ চাপ মোকাবিলায় গুগল তার প্রতিশ্রুত ৩০ মিলিয়ন ডলারের ‘এনার্জি ইমপ্যাক্ট ফান্ড’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। এই তহবিল স্থানীয় জ্বালানি উদ্যোগকে সহায়তা করবে এবং সম্প্রদায়ের জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে কাজ করবে। গুগল আরও জানিয়েছে, তাদের প্রকল্পের কারণে গ্রিডে নতুন জ্বালানি সম্পদ যুক্ত করা ও সংশ্লিষ্ট ব্যয় কোম্পানিটিই বহন করবে।

সাম্প্রতিক আর্থিক প্রতিবেদনে গুগল জানিয়েছে, ২০২৫ সালে তাদের মূলধনি ব্যয় দাঁড়াতে পারে ৯১-৯৩ বিলিয়ন ডলার, যা ডেটা সেন্টার ও কম্পিউটিং শক্তিতে ব্যাপক বিনিয়োগের প্রতিফলন—এআই উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে যা প্রয়োজনীয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৮ হাজার টাকার আইফোন পকেট, এক দিনেই দোকান খালি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: ব্লুমবার্গের সৌজন্যে
ছবি: ব্লুমবার্গের সৌজন্যে

নিউইয়র্কের হিউস্টন স্ট্রিটের দক্ষিণে অবস্থিত একটি অ্যাপল স্টোরের সামনে শুক্রবার সকাল থেকে ক্রেতাদের সারি। উদ্দেশ্য, অ্যাপলের নতুন পণ্য ‘আইফোন পকেট’ কেনা। সীমিত সংস্করণের এই পণ্য বাজারে আসার পরই অ্যাপল স্টোরগুলোতে এমন ভিড় দেখা গেছে। ১৫০ থেকে ২৩‍০ ডলার মূল্যের এই পণ্য দেখতে মোজার মতো। অ্যাপল বলছে, ‘এক্সট্রা বা অতিরিক্ত পকেট তৈরির ধারণা’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছে।

আসলে আইফোন পকেট হলো একধরনের পরিধানযোগ্য স্মার্টফোন স্লিং বা ব্যাগ। ফিতার (স্ট্র্যাপ) কাপড়ে বোনা এই পণ্য দেখতে অনেকটা মোজার মতো। অ্যাপল জাপানের বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার ইসি মিয়াকের সঙ্গে যৌথভাবে এটি তৈরি করেছে।

মিয়াকে অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের আইকনিক কালো টার্টলনেক (লম্বা কলারওয়ালা সোয়েটার) তৈরির জন্য সুপরিচিত। এই ফ্যাশন ব্র্যান্ডের বিপুলসংখ্যক অনুরাগী থাকায় আইফোন পকেট বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ক্রেতাদের মধ্যে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে।

নিউইয়র্কের ২৬ বছর বয়সী ফ্যাশন ডিজাইনার লি আইজনার বলেন, ‘এটি খুবই চমৎকার ডিজাইনের। কারণ, এটি ইসি মিয়াকের তৈরি। আমি শুনলাম, এটি ইতিমধ্যেই সোল্ড আউট। এরপরই আমি সিদ্ধান্ত নিই, আমারও এই জিনিস চাই।’ লি জানান, তিনি কালো রঙের বড় আইফোন পকেটটি কিনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই স্টক শেষ হয়ে গেছে।

অ্যাপল দুটি সাইজ, বেশ কয়েকটি কালারে আইফোন পকেটটি বাজারে এনেছে। শর্ট বা ছোটটির দাম ১৫০ ডলার, লং বা বড়টির দাম ২৩‍০ ডলার।

এটি রংধনুর মতো নানা রঙে পাওয়া যায় এবং থ্রিডি-নিটেড বা ত্রিমাত্রিক বুনন প্রযুক্তির হওয়ায় যেকোনো সাইজের আইফোন এতে রাখা যায়। প্রয়োজন হলে এতে এয়ারপড বা লিপ বামও রাখা যাবে। এর আকৃতি এবং টেক্সচার অনেকটা কারাতে বেল্টের মতো। এটি শরীরে ঝুলিয়ে, ব্যাগে বেঁধে বা হাতে ধরে—বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়।

অ্যাপলের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, বিশ্বজুড়ে মাত্র ১০টি রিটেইলে এই পণ্য পাওয়া যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে শুধু নিউইয়র্কের হিউস্টন স্ট্রিটের দক্ষিণে অবস্থিত একটি অ্যাপল স্টোরে এটি পাওয়া যাবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে লন্ডন, মিলান, টোকিও, হংকং ও প্যারিসের মতো শহরগুলোর বিভিন্ন স্টোরে পাওয়া যাবে।

এদিকে পণ্যটি অনলাইনে কিনতে গেলেও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সব কালার ও সাইজ সোল্ড আউট দেখাচ্ছিল।

নিউইয়র্কের বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সী ওয়েন স্যান্ডার্স জানান, তিনি তাঁর স্ত্রীর জন্য হিউস্টন স্ট্রিটের স্টোর থেকে একটি ছোট গোলাপি রঙের আইফোন পকেট কিনতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ইসি মিয়াকের ডিজাইন ভীষণ পছন্দ করে। আজও যখন কেউ কালো টার্টলনেক পরে, মানুষ বলে—স্টিভ জবসের মতো লাগছে। আর সেটার কারণ এই মিয়াকে। এটাই আমার কাছে অর্থবহ।’

অ্যাপলের নতুন এই পণ্যের দাম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকেই লিখেছেন, এটি কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে ‘বেমানান’। অনেকে ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে, অ্যাপল মজা করে এটা বানিয়েছে।’

তবে ইসি মিয়াকে-ভক্তরা বলছেন, সবাই এর মূল্য বুঝবে না। কনটেন্ট ক্রিয়েটর মাইকেল জশ বলেন, ‘এটি শুধু অ্যাকসেসরিস নয়, এটি একটি শিল্পকর্ম বা সংগ্রহযোগ্য ফ্যাশন আইটেম।’

অ্যাপল অতীতেও এমন দামি অ্যাকসেসরিস তৈরি করেছিল। যেমন এর আগে অ্যাপল তৈরি করেছিল ১৯ ডলারের পলিশিং ক্লথ, ৯৯৯ ডলারের মনিটর স্ট্যান্ড।

সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি আইফোনকে ‘পরিধানযোগ্য’ (wearable) ডিভাইসে রূপান্তর করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বরে অ্যাপল একটি আইফোন ক্রসবডি স্ট্র্যাপ (ফোন কাভারের সঙ্গে যুক্ত করার ফিতা) বাজারে আনে, যা বহু বছর ধরে এশিয়ায় জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ড। এর দাম ছিল ৫৯ ডলার।

তথ্যসূত্র: ব্লুমবার্গ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোজার মতো দেখতে ‘আইফোন পকেট’, দাম ২২৯ ডলার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রযুক্তিনির্ভর ও আধুনিক ডিজাইনের পণ্য তৈরির জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত অ্যাপল। তবে তাদের সর্বশেষ পণ্যটি বেশ একটু ভিন্নধর্মী। অনেকের কাছেই অ্যাপলের এই পণ্যকে অদ্ভুত মনে হয়েছে।

অ্যাপল তাদের নতুন পণ্যটির নাম দিয়েছে ‘আইফোন পকেট’ (iPhone Pocket)। ফিতার (স্ট্র্যাপ) কাপড়ে বোনা এই পণ্য দেখতে অনেকটা মোজার মতো। অ্যাপল জাপানের বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার ইসি মিয়াকের সঙ্গে যৌথভাবে এটি তৈরি করেছে।

গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে অ্যাপল জানিয়েছে, ‘এক্সট্রা বা অতিরিক্ত পকেট তৈরির ধারণা’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাপলের যেকোনো মডেলের আইফোনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো করে তৈরি এই ‘পকেট’ আগামীকাল শুক্রবার বাজারে আসছে। এটি পাওয়া যাবে বিভিন্ন রঙে।

অ্যাপলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন মলি অ্যান্ডারসন বলেন, ‘অ্যাপল ও ইসি মিয়াকে কারুশিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে নকশা তৈরি করে। এই অভিনব পকেট সেই ভাবনারই প্রতিফলন। এটি আমাদের পণ্যের সঙ্গে প্রাকৃতিকভাবে মানিয়ে যায় এবং আইফোন, এয়ারপডসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস বহনের এক নতুন ও সুন্দর উপায়।’

তবে পণ্যটির দাম শুনে অনেকে বিস্মিত। অ্যাপল জানিয়েছে, এই পকেটের ছোট সংস্করণের দাম ১৪৯ দশমিক ৯৫ ডলার আর লম্বা বা বড় সংস্করণের দাম ২২৯ দশমিক ৯৫ ডলার (প্রায় ২৮ হাজার টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে এই পণ্যের দাম নিয়ে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একজন লিখেছেন, ‘একখানা কাটা মোজার দাম ২৩০ ডলার! অ্যাপলের ভক্তরা অ্যাপলের নাম থাকলেই সবকিছুর জন্য টাকা দেবে।’

আরও এক ব্যবহারকারী মজা করে আইফোন পকেটকে সাচা ব্যারন কোহেনের (জনপ্রিয় অভিনেতা ও কৌতুকাভিনেতা) চরিত্র বোরাটের নিয়ন-সবুজ ম্যানকিনি পোশাকের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি পাশাপাশি দুটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘একই রকম ভাইব।’

তবে কেউ কেউ অ্যাপলের এই পণ্যের ধারণাটিকে ভিন্নভাবে দেখছেন।

প্রযুক্তি বিশ্লেষক এমজি সিগলার তাঁর স্পাইগ্লাস নিউজলেটারে একে ‘অবিশ্বাস্য দামি মোজা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এর পেছনের চিন্তাধারাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

সিগলার লেখেন, ইসি মিয়াকে ছিলেন স্টিভ জবসের প্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনারদের একজন। এই পণ্য আসলে আইফোনকে ধীরে ধীরে ‘পরিধানযোগ্য’ (wearable) ডিভাইসে রূপান্তরিত করার চলমান প্রবণতার অংশ।

সিগলার আরও বলেন, যেখানে একসময় দৌড়বিদেরা হাতে ব্যান্ড বেঁধে ফোন রাখতেন, এখন অনেকেই প্রতিদিন আইফোন বহনের জন্য স্ট্র্যাপ (একধরনের ফিতা) ব্যবহার করছেন। এর আগে চলতি বছর অ্যাপল বাজারে এনেছিল আইফোন ক্রসবডি স্ট্র্যাপ (ফোন কাভারের সঙ্গে যুক্ত করার ফিতা), যার দাম ছিল ৫৯ ডলার।

সিগলার বলেন, ‘এটি আরও একটি অ্যাকসেসরিজ—আপনার পোশাকে একটু রঙ ও নতুনত্ব যোগ করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত