আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন শিশু। তারা আফগানিস্তানের এক কাঁচা মাটির বাড়িতে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক লাইভের মাধ্যমে।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টিকটকের ভার্চুয়াল ‘গিফট’ চেয়ে যাচ্ছে তারা, যা পরবর্তীকালে অর্থে রূপান্তর করা যাবে। একবার একটি গিফট পাওয়ার পর তারা খুশি হয়ে হাততালি দেয়। অন্য একটি লাইভ স্ট্রিমে ডিজিটাল গোলাপ পাওয়ার পর এক মেয়ে আনন্দিত হয়ে চিৎকার করে বলছে, ‘ধন্যবাদ, আমরা আপনাকে ভালোবাসি!’ এই গোলাপের মূল্য ছিল মাত্র ১ পেনি। তবে টিকটক থেকে নগদে পরিণত হলে এর মূল্য এক-তৃতীয়াংশের কম হতে পারে।
এদিকে টিকটক দাবি করে, এটি শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তি এবং অন্য ধরনের ভিক্ষাবৃত্তির জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং লাইভে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তবে ব্রিটিশ গণমাধ্যম অবসার্ভারের তদন্তে দেখা গেছে, এই ধরনের লাইভ স্ট্রিম প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে টিকটক। অর্থাৎ এসব কনটেন্ট থেকে কমিশন এবং ফি কাটছে টিকটক। এসব কমিশন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অলিভিয়ে দে শুটার একে ‘চমকপ্রদ ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ‘মানুষের দুর্দশা থেকে লাভ করার’ জন্য টিকটক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট থেকে মুনাফা নেওয়া ডিজিটাল ডাকাতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি টিকটককে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাদের নিজেদের নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে এবং “কমিশন” (ফি) নেওয়ার যৌক্তিকতা পুনর্বিবেচনা করতে।’
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ডিজিটাল হানিকর বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডি মারকো বলেছেন, এই ধরনের অভ্যাস গুরুতর অপব্যবহার। এই ধরনের কনটেন্ট থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো যেন আর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভবান না হয়, এ জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিসর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এই ধরনের লাইভ ভিক্ষাবৃত্তির ঘটনা দেখা গেছে।
তদন্তে দেখা যায়, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় প্রতিদিন লাইভ স্ট্রিম হয়, যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন শিশুকে দেখানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে লাইভে এসে ডিজিটাল গিফটের জন্য ভিক্ষা চাইছিল সাতজন তরুণ ছেলে। পরদিন একই স্থানে অন্য ছেলেরা উপস্থিত হয়, তাদের পাশে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলেন। ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে অবজারভার জানানোর পর টিকটক দুই ঘণ্টার মধ্যে সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ইন-অ্যাপ রিপোর্টিং টুলের মাধ্যমে আগের একটি রিপোর্টের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে ৫ হাজার ৩০০ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্টে লাইভ স্ট্রিমে চেয়ারে বসে থাকা বৃদ্ধ এক পুরুষের সম্প্রচার দেখানো হচ্ছিল। অ্যাকাউন্টটি তৃতীয় পক্ষ পরিচালনা করছিল বলে মনে হচ্ছিল। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই অ্যাকাউন্টের বায়োতে লেখা ছিল ‘গরিব মানুষ’ এবং তার পাশে কান্নার ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিছু লাইভ স্ট্রিমে মানুষের নিকৃষ্ট এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক স্টান্ট করতে দেখা গেছে। তারা ভার্চুয়াল গিফটের বিনিময়ে এসব স্টান্ট করে থাকে। যেমন নিজেদের আঘাত করা, দীর্ঘ সময় জেগে থাকা, মাটিতে ঢেকে ফেলা বা ক্যামেরার সামনে ঘুমানো। ইন্দোনেশিয়ার এক লাইভ স্ট্রিমে দেখা গেছে, দুটি ছোট মেয়ে জানালাবিহীন, সাদা দেয়ালবিশিষ্ট স্টুডিওর টাইলযুক্ত মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। এরপর একই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাইলযুক্ত মেঝেতে ঘুমানো এক পুরুষের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
পাকিস্তানের আরেকটি সম্প্রচারে দেখা গেছে, তিনজন পুরুষ অন্ধকারে বসে আছেন, তাঁদের মাথায় প্লাস্টিকের বালতি ও পার্টি হ্যাট। তাঁরা ক্যামেরার সামনে ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন একটি গিফট পাচ্ছিলেন, তখনই তাঁরা জেগে উঠেছিলেন এবং নাচ পরিবেশন করছিলেন।
২০২০ সালে আগস্টে টিকটিকে লাইভ ফিচার চালু হয়। এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
টিকটকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১০০ মিলিয়ন মানুষ লাইভ করে, যা ‘বিলিয়ন’ সংখ্যক ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছেছে। দর্শকেরা সরাসরি মন্তব্য বা গিফট পাঠিয়ে নির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল দাতব্য সংস্থায় কর্মরত এবং ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ নোভিতা আংগ্রেইনি বলেন, অনেক নির্মাতা টিকটক লাইভ ব্যবহার করেন, তাঁদের ‘প্রতিভা প্রদর্শন’ বা ‘মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন’ করার জন্য। সাধারণত এটি ব্যবহার করেন, যাঁরা নিজেদের গান গাওয়া, নাচ, ভিডিও গেম খেলা, ছবি আঁকা বা রান্না করার ভিডিও ধারণ করেন। তবে এখন ক্রমবর্ধমানভাবে ভুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। বিশেষ করে তাঁরা, যাঁরা এটিকে ‘অর্থ উপার্জনের সহজ পথ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও যোগ করেন, এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ভিডিও অত্যন্ত দ্রুত বাড়ছে। এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শোষণ।
তিনি আরও বলেন, এসব লাইভ স্ট্রিমের পেছনে মূলত দারিদ্র্য এবং ডিজিটাল শিক্ষা-দক্ষতার অভাব কাজ করছে। এ ছাড়া মানুষগুলোকে এগুলো জোর করে করানো হচ্ছে কি না, তা সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের শোষিত হওয়ার কথা অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, ‘এটি একটি সহযোগিতা, যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে জানান, সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি নেটওয়ার্কগুলোর মাধ্যমে শোষণের ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে। যেগুলো আয় প্রবাহের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একাধিক পরিবারকে লাইভ স্ট্রিমের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে।
টিকটক জানিয়েছে, তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ছিল—অবজারভার কর্তৃক চিহ্নিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে ফেলা। তারা বলেছে, তাদের নীতিমালায় লাইভ স্ট্রিমে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু বা দুর্বল ব্যক্তিদের শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি অন্তর্ভুক্ত। টিকটকের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যেকোনো লাইভ কনটেন্ট, যেখানে শিশুদের গিফটের জন্য ভিক্ষা চায়, তা টিকটক অনুমোদন করে না।’
যেসব ক্ষেত্রে শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশু শোষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে, সেখানে তারা ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নিয়েছে। তারা সেসব লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করেছে এবং স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তারা জানায়, ‘প্রতিরোধমূলক শনাক্তকরণ এবং নিবেদিত টিম ও প্রযুক্তির মাধ্যমে’ তারা প্রতি মাসে চার মিলিয়ন লাইভ স্ট্রিম বন্ধ করে ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ রাখতে’ সাহায্য করছে। লাইভ স্ট্রিম হোস্ট করার জন্য এক হাজার ফলোয়ার এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। তবে শিশুরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে উপস্থিত থাকলে লাইভে আসতে পারবে।
টিকটক জানায়, তারা যে কমিশন এবং ফি গ্রহণ করে, তা পরিবর্তনশীল। লাইভ স্ট্রিমাররা গিফটের পূর্ণ মূল্য পায় না, বরং তারা ‘ডায়মন্ড’ নামে পয়েন্ট পায়। এই পয়েন্ট গিফট এবং তাদের স্ট্রিমের জনপ্রিয়তা ও সময়কাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। কমিশন এবং ফি পরিশোধের পর, সাধারণত তারা মূল গিফটের অর্ধেক পায়, তবে কখনো কখনো মাত্র ৩০ শতাংশ। টিকটক দাবি করেছে, ৩০ শতাংশ আয় ‘অ্যাপ স্টোর ফি এবং পেমেন্ট প্রোভাইডার খরচে’ চলে যায়। টিকটকে ১০০টির বেশি ডিজিটাল গিফট রয়েছে, যার মধ্যে একটি রোজ (১ পেনি) থেকে শুরু করে, টিকটক ইউনিভার্স (প্রায় ৪৫০ পাউন্ড) রয়েছে।
শোষণমূলক কনটেন্ট থেকে লাভ নেওয়ার জন্য আগে সমালোচনার মুখে পড়েছিল টিকটক। বিশেষ করে ২০২২ সালে যৌন নির্যাতন লাইভ স্ট্রিমের ঘটনায়।
২০২৩ সালে আল জাজিরা জানায়, ইন্দোনেশিয়ার অনাথ আশ্রমগুলো লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করছে। এসব লাইভ স্ট্রিমে শিশুদের ঘুমাতে দেখা যায়। টিকটক বলেছে, তারা এমন শোষণমূলক ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করেছে। তবে অনাথ আশ্রমের লাইভ স্ট্রিমটি তাদের নিয়ম ভঙ্গ করেনি।
টিকটক লাইভে ভিক্ষাবৃত্তি-সম্পর্কিত ঝুঁকি থাকলেও অনেক দাতব্য সংস্থা বলছে, এটি সংকটে থাকা মানুষকে সাহায্য পেতে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলিপাইনের এক পরিবার তাদের যমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য অনুদান সংগ্রহে সফল হয়েছিল। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট নয় যে এর মাধ্যমে আসলেই কারা উপকৃত হচ্ছে।
অ্যান্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনালের ক্যাথরিন টার্নার বলেন, কিছু শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষা করে, তবে অন্যরা তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ‘শারীরিক বা মানসিকভাবে শোষিত’ হয়ে থাকে। এই তৃতীয় পক্ষ আয়প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
লাইভ স্ট্রিমারদের পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার জন্য সরকারি ইস্যুকৃত আইডি চায় টিকটক। তবে দর্শকদের জন্য এটি জানার উপায় নেই যে যারা লাইভে থাকছে, তারা বাস্তবে উপকৃত হচ্ছে কি না। অক্সফোর্ডের ক্রিমিনোলজি কেন্দ্রের গবেষক ‘মায়া লাহাভ’ বলেন, লাইভ স্ট্রিম নিয়ন্ত্রণ করা বা নজরদারিতে রাখার জন্য অনেক তথ্য প্রয়োজন, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি উল্লেখ করেন, এসব কনটেন্ট সরানো উচিত কি না, তা নিয়ে নৈতিক প্রশ্ন রয়েছে।
তবে তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ এবং শিশু বা অসুস্থদের সম্মতির বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। ‘এখানে মূল প্রশ্ন, কখন এটি শোষণ হয়ে ওঠে! এই সঠিক ভারসাম্যই তাদের মানতে হবে।’
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৫ ঘণ্টা আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
১১ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
১ দিন আগে
অনলাইন ক্লাস, গাইডবুক আর মক টেস্টের পরেও বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ নিয়মিত অনুশীলনের অভাবে পিছিয়ে পড়েন। পড়া থাকলেও কোথায় দুর্বলতা, কীভাবে নিজের অগ্রগতি যাচাই করবেন—সে প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় মেলে না।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
১১ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
১ দিন আগে
অনলাইন ক্লাস, গাইডবুক আর মক টেস্টের পরেও বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ নিয়মিত অনুশীলনের অভাবে পিছিয়ে পড়েন। পড়া থাকলেও কোথায় দুর্বলতা, কীভাবে নিজের অগ্রগতি যাচাই করবেন—সে প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় মেলে না।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।
ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।
রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।
ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।
রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৫ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
১ দিন আগে
অনলাইন ক্লাস, গাইডবুক আর মক টেস্টের পরেও বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ নিয়মিত অনুশীলনের অভাবে পিছিয়ে পড়েন। পড়া থাকলেও কোথায় দুর্বলতা, কীভাবে নিজের অগ্রগতি যাচাই করবেন—সে প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় মেলে না।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এরই একটি উদাহরণ কানাডার অন্টারিওভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা তাকি ওং।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী তাকি ওং ব্যস্ত পেশাজীবীদের জন্য এআই টুল তৈরি করেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনায়ও তিনি এআইয়ের ওপর ভরসা রাখেন। গুগলের জেমিনি এআই মডেলকে তিনি নিজের ‘২৪ ঘণ্টার ব্যক্তিগত আর্থিক উপদেষ্টা’ বলে মনে করেন।
ওং জানান, প্রতি মাসে তিনি নিজের ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য খরচের হিসাব নিজে হাতে এআইয়ে ইনপুট দেন। এরপর এআই সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানায় কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচ হচ্ছে।
ওংয়ের ভাষায়, এআই কখনো বলে দেয়—‘তুমি হয়তো রেস্তোরাঁয় বেশি খাচ্ছ’, আবার কখনো সতর্ক করে—‘এই সাবস্ক্রিপশনগুলো অপ্রয়োজনীয়।’ এই ধরনের বিশ্লেষণের ফলেই তিনি বাইরে খাওয়ার খরচ মাসে ৬০০ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলারে নামাতে পেরেছেন। একইভাবে টিভি ও অন্যান্য সাবস্ক্রিপশনের খরচ ৩০০ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০ ডলারে।
তবে সুবিধার পাশাপাশি সতর্কতাও অবলম্বন করছেন তিনি। ওং স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কখনোই এআইয়ের সঙ্গে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন না। শুধুমাত্র মোট খরচের সংখ্যা বা সামগ্রিক তথ্যই তিনি শেয়ার করেন, যাতে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত থাকে।
এই প্রবণতা শুধু ওংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই ব্যবহারকারী আমেরিকানদের একটি বড় অংশ আর্থিক পরামর্শ নিতে এআইয়ের ওপর নির্ভর করছে। এঁদের মধ্যে জেন জি ও মিলেনিয়ালদের হার ৮২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যেও প্রায় তিনজনের একজন নিয়মিত ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই সময় বাঁচাতে ও খরচের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করতে সহায়ক হলেও সব পরামর্শ যাচাই করে নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এরই একটি উদাহরণ কানাডার অন্টারিওভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা তাকি ওং।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ২৭ বছর বয়সী তাকি ওং ব্যস্ত পেশাজীবীদের জন্য এআই টুল তৈরি করেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনায়ও তিনি এআইয়ের ওপর ভরসা রাখেন। গুগলের জেমিনি এআই মডেলকে তিনি নিজের ‘২৪ ঘণ্টার ব্যক্তিগত আর্থিক উপদেষ্টা’ বলে মনে করেন।
ওং জানান, প্রতি মাসে তিনি নিজের ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য খরচের হিসাব নিজে হাতে এআইয়ে ইনপুট দেন। এরপর এআই সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানায় কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচ হচ্ছে।
ওংয়ের ভাষায়, এআই কখনো বলে দেয়—‘তুমি হয়তো রেস্তোরাঁয় বেশি খাচ্ছ’, আবার কখনো সতর্ক করে—‘এই সাবস্ক্রিপশনগুলো অপ্রয়োজনীয়।’ এই ধরনের বিশ্লেষণের ফলেই তিনি বাইরে খাওয়ার খরচ মাসে ৬০০ ডলার থেকে কমিয়ে ২০০ ডলারে নামাতে পেরেছেন। একইভাবে টিভি ও অন্যান্য সাবস্ক্রিপশনের খরচ ৩০০ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫০ ডলারে।
তবে সুবিধার পাশাপাশি সতর্কতাও অবলম্বন করছেন তিনি। ওং স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কখনোই এআইয়ের সঙ্গে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন না। শুধুমাত্র মোট খরচের সংখ্যা বা সামগ্রিক তথ্যই তিনি শেয়ার করেন, যাতে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত থাকে।
এই প্রবণতা শুধু ওংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই ব্যবহারকারী আমেরিকানদের একটি বড় অংশ আর্থিক পরামর্শ নিতে এআইয়ের ওপর নির্ভর করছে। এঁদের মধ্যে জেন জি ও মিলেনিয়ালদের হার ৮২ শতাংশ। যুক্তরাজ্যেও প্রায় তিনজনের একজন নিয়মিত ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহার করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই সময় বাঁচাতে ও খরচের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করতে সহায়ক হলেও সব পরামর্শ যাচাই করে নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৫ ঘণ্টা আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
১১ ঘণ্টা আগে
অনলাইন ক্লাস, গাইডবুক আর মক টেস্টের পরেও বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ নিয়মিত অনুশীলনের অভাবে পিছিয়ে পড়েন। পড়া থাকলেও কোথায় দুর্বলতা, কীভাবে নিজের অগ্রগতি যাচাই করবেন—সে প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় মেলে না।
২ দিন আগে
অনলাইন ক্লাস, গাইডবুক আর মক টেস্টের পরেও বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ নিয়মিত অনুশীলনের অভাবে পিছিয়ে পড়েন। পড়া থাকলেও কোথায় দুর্বলতা, কীভাবে নিজের অগ্রগতি যাচাই করবেন—সে প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় মেলে না। এই প্রেক্ষাপটে ‘চর্চা’ নিজেকে উপস্থাপন করছে একটি অনুশীলনকেন্দ্রিক লার্নিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। দেশের এডটেক খাতে এই উদ্যোগের ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কথা বলেছেন চর্চার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান উল ইসলাম সানজিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. আশিকুর রহমান।
আশিকুর রহমান

চর্চার শুরুটা কীভাবে?
চর্চার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালে। তখন আমি নিজেই ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। প্রতিদিন ক্লাস, লেকচার, গাইডবুক আর প্রশ্নব্যাংকের চাপ—সব মিলিয়ে নিজের মতো করে প্র্যাকটিস করার সময় খুব কম পাওয়া যেত। এই জায়গায় সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। ভাবলাম, যদি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম থাকে, যেখানে গৎবাঁধা নিয়মে আটকে না থেকে নিয়মিত ও সহজভাবে প্র্যাকটিস করা যায়, তাহলে শেখাটা অনেক বেশি আনন্দের হতে পারে। সেই ভাবনা থেকে চর্চার জন্ম। রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির পর কাজটি আরও গতি পায়। ক্লাসরুম থেকেই আমার কো-ফাউন্ডার ও সিএমও নাফিসের সঙ্গে পরিচয়। পরে গালিব কো-ফাউন্ডার ও সিওও হিসেবে যুক্ত হন। শুরু থেকেই মার্কেটিং ও অপারেশনের দায়িত্ব মূলত তাঁরা দুজনই সামলাচ্ছেন।
চর্চা অ্যাপ তৈরির পেছনে মূল অনুপ্রেরণা কী ছিল?
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় পড়াশোনা আর পরীক্ষাকে প্রায় সব সময় ভয়ের বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। অথচ শেখার প্রক্রিয়াটা হওয়া উচিত আনন্দদায়ক, যেখানে একজন শিক্ষার্থী সমস্যা সমাধান করতে করতেই শিখবেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, পড়ার উপকরণ অনেক থাকলেও নিয়মিত প্র্যাকটিসের সুযোগ খুব সীমিত। এই বাস্তবতা থেকে চর্চার ভাবনা। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাকে ভয় না পেয়ে প্র্যাকটিসের মাধ্যমে শেখার আনন্দ খুঁজে পাক। শেখার প্রতিটি ধাপ যেন চাপ না হয়ে আগ্রহ তৈরি করে—এটিই ছিল চর্চার মূল অনুপ্রেরণা।
শুরুতে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল?
নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা ‘চর্চা’র বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যেটি একসঙ্গে হাজার হাজার ব্যবহারকারী সামলাতে পারবে এবং সবার জন্য অভিজ্ঞতাটি হবে নিরবচ্ছিন্ন। এর পাশাপাশি বাস্তব চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত ও উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করা। অষ্টম শ্রেণি থেকে বিসিএস—প্রতিটি স্তরের জন্য আলাদা চাহিদা রয়েছে। সেই কনটেন্ট যেন একদিকে নির্ভুল হয়, অন্যদিকে আকর্ষণীয় ও গেমিফাইড হয়। এই ভারসাম্য বজায় রাখাটা ছিল কঠিন। তবে ধাপে ধাপে এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে আজ চর্চা একটি গ্রহণযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
‘চর্চা এআই’-এর ধারণা কীভাবে এল?
এটি মূলত এআই এজেন্ট, যা এনসিটিবি পাঠ্যবই এবং আমাদের ১০ লক্ষাধিক প্রশ্নের ডেটাবেইসের ওপর প্রশিক্ষিত। শিক্ষার্থীরা টেক্সট বা ছবি আকারে যেকোনো প্রশ্ন দিতে পারেন, আর চর্চা এআই বইভিত্তিক রেফারেন্সসহ উত্তর দেয়। এটি শুধু ডাউট সলভিং নয়, বরং একটি পার্সোনালাইজড লার্নিং সলিউশন। শিক্ষার্থী বুঝতে পারেন—কোন টপিকে তিনি দুর্বল, কোথায় আরও প্র্যাকটিস দরকার। মাত্র তিন মাসে চর্চা এআই-এ ৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি চ্যাটরুম তৈরি হয়েছে।
প্রশ্নভান্ডারের মান কীভাবে নিশ্চিত করেন?
চর্চার কনটেন্ট মান নিশ্চিত করতে আমাদের একটি আলাদা কনটেন্ট টিম রয়েছে। অষ্টম শ্রেণি, এসএসসি, এইচএসসি ও বিসিএস—প্রতিটি সেগমেন্টে আলাদা টিম কাজ করে। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এই তিন ধারার জন্য রয়েছে বিষয়ভিত্তিক এক্সপার্টরা। নিয়মিত আপডেট, রিভিউ এবং গবেষণার মাধ্যমে কনটেন্টের মান ধরে রাখাই আমাদের মূল অগ্রাধিকার।
স্ট্রিক, লিডার বোর্ড ও রিপোর্ট কতটা কার্যকর?
চর্চা ‘লার্নিং থ্রো প্র্যাকটিস’ ধারণাটিকে প্রাধান্য দেয়। স্ট্রিক শিক্ষার্থীদের দৈনিক অভ্যাস গড়তে সাহায্য করে। আমাদের এমন ব্যবহারকারীও আছেন, যাঁদের স্ট্রিক এক বছরের বেশি। লিডার বোর্ড শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি করে। আর মাসিক রিপোর্ট শিক্ষার্থীকে নিজের অগ্রগতি বুঝতে সাহায্য করে। কোথায় উন্নতি হচ্ছে বা কোথায় আরও মনোযোগ দরকার, সেসব বোঝা যায় এ থেকে।
ডেটা প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করছেন?
ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহারকারীরা যেকোনো সময় নিজেদের তথ্য বা অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে পারেন। কোনো তথ্য ব্যবহারকারীর সম্মতি ছাড়া সংগ্রহ করা হয় না। সব ডেটা এনক্রিপটেড থাকে এবং অ্যাপ সার্ভার যোগাযোগ এইচটিটিপিএস সিকিউরিটির মাধ্যমে সুরক্ষিত। এই ব্যবস্থাগুলো ব্যবহারকারীদের নিশ্চিন্ত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আগামী পাঁচ বছরে আমরা চর্চাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত লার্নিং অ্যাপে পরিণত করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ১০ কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে সেবা দেওয়া। একই সঙ্গে আমরা বিশ্বাস করি, শেখার কোনো সীমানা নেই। তাই চর্চাকে একটি গ্লোবাল লার্নিং অ্যান্ড প্র্যাকটিস ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাও আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ থেকে জন্ম নেওয়া একটি প্ল্যাটফর্ম যেন বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদের শেখার সঙ্গী হয়ে ওঠে, এই স্বপ্ন নিয়েই আমরা এগোচ্ছি।
চর্চার শুরুটা কীভাবে?
চর্চার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালে। তখন আমি নিজেই ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। প্রতিদিন ক্লাস, লেকচার, গাইডবুক আর প্রশ্নব্যাংকের চাপ—সব মিলিয়ে নিজের মতো করে প্র্যাকটিস করার সময় খুব কম পাওয়া যেত। এই জায়গায় সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। ভাবলাম, যদি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম থাকে, যেখানে গৎবাঁধা নিয়মে আটকে না থেকে নিয়মিত ও সহজভাবে প্র্যাকটিস করা যায়, তাহলে শেখাটা অনেক বেশি আনন্দের হতে পারে। সেই ভাবনা থেকে চর্চার জন্ম। রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির পর কাজটি আরও গতি পায়। ক্লাসরুম থেকেই আমার কো-ফাউন্ডার ও সিএমও নাফিসের সঙ্গে পরিচয়। পরে গালিব কো-ফাউন্ডার ও সিওও হিসেবে যুক্ত হন। শুরু থেকেই মার্কেটিং ও অপারেশনের দায়িত্ব মূলত তাঁরা দুজনই সামলাচ্ছেন।
চর্চা অ্যাপ তৈরির পেছনে মূল অনুপ্রেরণা কী ছিল?
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় পড়াশোনা আর পরীক্ষাকে প্রায় সব সময় ভয়ের বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। অথচ শেখার প্রক্রিয়াটা হওয়া উচিত আনন্দদায়ক, যেখানে একজন শিক্ষার্থী সমস্যা সমাধান করতে করতেই শিখবেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, পড়ার উপকরণ অনেক থাকলেও নিয়মিত প্র্যাকটিসের সুযোগ খুব সীমিত। এই বাস্তবতা থেকে চর্চার ভাবনা। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাকে ভয় না পেয়ে প্র্যাকটিসের মাধ্যমে শেখার আনন্দ খুঁজে পাক। শেখার প্রতিটি ধাপ যেন চাপ না হয়ে আগ্রহ তৈরি করে—এটিই ছিল চর্চার মূল অনুপ্রেরণা।
শুরুতে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল?
নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা ‘চর্চা’র বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যেটি একসঙ্গে হাজার হাজার ব্যবহারকারী সামলাতে পারবে এবং সবার জন্য অভিজ্ঞতাটি হবে নিরবচ্ছিন্ন। এর পাশাপাশি বাস্তব চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত ও উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করা। অষ্টম শ্রেণি থেকে বিসিএস—প্রতিটি স্তরের জন্য আলাদা চাহিদা রয়েছে। সেই কনটেন্ট যেন একদিকে নির্ভুল হয়, অন্যদিকে আকর্ষণীয় ও গেমিফাইড হয়। এই ভারসাম্য বজায় রাখাটা ছিল কঠিন। তবে ধাপে ধাপে এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে আজ চর্চা একটি গ্রহণযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
‘চর্চা এআই’-এর ধারণা কীভাবে এল?
এটি মূলত এআই এজেন্ট, যা এনসিটিবি পাঠ্যবই এবং আমাদের ১০ লক্ষাধিক প্রশ্নের ডেটাবেইসের ওপর প্রশিক্ষিত। শিক্ষার্থীরা টেক্সট বা ছবি আকারে যেকোনো প্রশ্ন দিতে পারেন, আর চর্চা এআই বইভিত্তিক রেফারেন্সসহ উত্তর দেয়। এটি শুধু ডাউট সলভিং নয়, বরং একটি পার্সোনালাইজড লার্নিং সলিউশন। শিক্ষার্থী বুঝতে পারেন—কোন টপিকে তিনি দুর্বল, কোথায় আরও প্র্যাকটিস দরকার। মাত্র তিন মাসে চর্চা এআই-এ ৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি চ্যাটরুম তৈরি হয়েছে।
প্রশ্নভান্ডারের মান কীভাবে নিশ্চিত করেন?
চর্চার কনটেন্ট মান নিশ্চিত করতে আমাদের একটি আলাদা কনটেন্ট টিম রয়েছে। অষ্টম শ্রেণি, এসএসসি, এইচএসসি ও বিসিএস—প্রতিটি সেগমেন্টে আলাদা টিম কাজ করে। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এই তিন ধারার জন্য রয়েছে বিষয়ভিত্তিক এক্সপার্টরা। নিয়মিত আপডেট, রিভিউ এবং গবেষণার মাধ্যমে কনটেন্টের মান ধরে রাখাই আমাদের মূল অগ্রাধিকার।
স্ট্রিক, লিডার বোর্ড ও রিপোর্ট কতটা কার্যকর?
চর্চা ‘লার্নিং থ্রো প্র্যাকটিস’ ধারণাটিকে প্রাধান্য দেয়। স্ট্রিক শিক্ষার্থীদের দৈনিক অভ্যাস গড়তে সাহায্য করে। আমাদের এমন ব্যবহারকারীও আছেন, যাঁদের স্ট্রিক এক বছরের বেশি। লিডার বোর্ড শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি করে। আর মাসিক রিপোর্ট শিক্ষার্থীকে নিজের অগ্রগতি বুঝতে সাহায্য করে। কোথায় উন্নতি হচ্ছে বা কোথায় আরও মনোযোগ দরকার, সেসব বোঝা যায় এ থেকে।
ডেটা প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করছেন?
ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহারকারীরা যেকোনো সময় নিজেদের তথ্য বা অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে পারেন। কোনো তথ্য ব্যবহারকারীর সম্মতি ছাড়া সংগ্রহ করা হয় না। সব ডেটা এনক্রিপটেড থাকে এবং অ্যাপ সার্ভার যোগাযোগ এইচটিটিপিএস সিকিউরিটির মাধ্যমে সুরক্ষিত। এই ব্যবস্থাগুলো ব্যবহারকারীদের নিশ্চিন্ত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আগামী পাঁচ বছরে আমরা চর্চাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত লার্নিং অ্যাপে পরিণত করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ১০ কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে সেবা দেওয়া। একই সঙ্গে আমরা বিশ্বাস করি, শেখার কোনো সীমানা নেই। তাই চর্চাকে একটি গ্লোবাল লার্নিং অ্যান্ড প্র্যাকটিস ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাও আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ থেকে জন্ম নেওয়া একটি প্ল্যাটফর্ম যেন বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদের শেখার সঙ্গী হয়ে ওঠে, এই স্বপ্ন নিয়েই আমরা এগোচ্ছি।

ক্যামেরার সামনে একত্র হয়ে বসে আছে তিন ছোট্ট শিশু। তারা আফগানিস্তানের একটি কাঁচা মাটির বাড়িতে বসে রয়েছে। তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর মধ্যে একটি ছেলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আমরা খুব গরিব, দয়া করে সাহায্য করুন।’ তাদের লাইভ স্ট্রিমটি ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হচ্ছে টিকটক...
০৭ এপ্রিল ২০২৫
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৫ ঘণ্টা আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
১১ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন আর শুধু প্রযুক্তি খাতেই সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত অর্থ ব্যবস্থাপনাতেও এটি হয়ে উঠছে নতুন ভরসা। বিশেষ করে জেন-জি ও মিলেনিয়াল প্রজন্মের মধ্যে এআই ব্যবহার করে খরচ নিয়ন্ত্রণ ও সঞ্চয় বাড়ানোর প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।
১ দিন আগে