ইশতিয়াক হাসান
সেতুর ওপরে দাঁড়িয়ে আছে একটি ট্রেন। তবে এই ট্রেন ছন্দময় শব্দ তুলে ছুটে চলে না। তাই বলে এর আকর্ষণ কম নয়। একে রূপান্তর করা হয়েছে বিলাসবহুল এক হোটেলে, যেখানে আরামদায়ক পরিবেশে সময় কাটানোর পাশাপাশি দেখার সুযোগ মিলবে সবুজ বনানী আর নানা ধরনের বন্যপ্রাণী। এমন আশ্চর্য অভিজ্ঞতা পেতে আপনাকে যেতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে।
আজব এই ট্রেন হোটেলের নাম ক্রুগার শালাতি। সেতুর ওপরে ট্রেনের ২৪টি বগিকে পর্যটকদের জন্য রূপান্তর করা হয়েছে চমৎকার ২৪টি স্যুইটে। এ ছাড়া সেতু লাগোয়া একটি বাগানে আছে সাতটি ব্রিজ হাউস। ট্রেনের ভেতরের কমরায়ই থাকুন কি বাগানের স্যুইটে—আরাম-আয়েশের সব উপকরণই পাবেন। সাধারণ বিলাসবহুল হোটেলগুলোর মতোই এখানকার কামরাগুলোও নানা ধরনের আসবাবে সুসজ্জিত। আছে হোটেলের শেফদের বানানো মুখরোচক সব খাবারের ব্যবস্থা।
একটা সময় ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণে চমৎকার একটি ট্রেনযাত্রার সুযোগ ছিল। অবশ্য সেটা কয়েক দশক আগের গল্প। দক্ষিণ আফ্রিকা-মোজাম্বিক সীমান্তের কোমাটিপুর থেকে চলা শুরু করে ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের মরুভূমি ও অরণ্যের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেত ট্রেন। যাত্রা শেষ হতো জাতীয় উদ্যানের বাইরে অবস্থিত বেশ বড় শহর জানিনে গিয়ে। পথে ট্রেনটি সাবি নদীর ওপর রেলওয়ে সেতুতে থামত, যেখানে অতিথিরা নেমে পড়তেন। তারপর সশস্ত্র পার্ক রেঞ্জাররা বন্যপ্রাণী দেখাতে নিয়ে যেতেন জঙ্গলে। ওই রেলট্র্যাকের জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে সড়কপথ। ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জনপ্রিয় ‘রাউন্ড ইন নাইন’ ট্যুর নামে পরিচিত ভ্রমণটিও তার শেষ দেখে।
তবে ওই ব্যবস্থা না থাকলেও থেবে ট্যুরিজম গ্রুপের এক উদ্যোগে একটু অন্য ধরনের রোমাঞ্চ উপভোগের সুযোগ হয় পর্যটকদের। একটি ট্রেনকে রূপান্তর করা হয়েছে বিলাসবহুল হোটেলে, যার উদ্বোধন হয় ২০২০ সালে। সাবি নদীর ওই রেলসেতুর ওপরেই বসানো হয়েছে ট্রেন হোটেলটি। এখনকার সুসজ্জিত ও বিলাসবহুল কামরাগুলোয় থেকেই আপনি উপভোগ করতে পারবেন চারপাশের দৃশ্য। শুধু তাই নয়, ওই রেল সেতুর ওপর নদীর দিকে মুখ করে থাকা একটি চমৎকার সুইমিংপুলও আছে।
‘ক্রুগার শালাতির মাধ্যমে আমরা এমন একটি পর্যটন গন্তব্য এবং আতিথেয়তার ব্যবস্থা করতে চাই, যাতে সারা বিশ্বের পর্যটকেরা ছুটিতে এখানে ভ্রমণ করতে চান। স্থানীয় ভ্রমণকারীরা এমন কিছু পেয়ে সত্যিই গর্বিত হতে পারেন, যা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই।’ হোটেলটি উদ্বোধনের আগে বলেছিলেন থেবে ট্যুরিজম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেরি মাবেনা।
এবার বরং এই রেললাইন বা রেলপথের ইতিহাস নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করা যাক। উত্তর-পূর্ব ট্রান্সভালে আবিষ্কৃত সোনার মজুত কাজে লাগাতে ১৮৯২ সালে প্রথম লাইনের কাজ শুরু হয়। পরিকল্পনাটি ছিল এমন—ট্রান্সভালের স্বর্ণখনি থেকে আকরিক ট্রেনে করে প্রথমে কোমাটিপুরে পৌঁছাবে। যেখান থেকে যাবে নতুন স্থাপিত হওয়া রেলপথের মাধ্যমে ডেলাগোয়া বে এলাকায়। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার বিভিন্ন রোগ ও বিপজ্জনক বন্যপ্রাণীর কারণে কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়। এই সূত্রে বলে রাখা যায়, উনিশ শতকের শেষের দিকে কেনিয়ার সাভোতে দুটি সিংহ রেলশ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তাই এই রেলপথ তৈরির কাজে যেসব শ্রমিক নিয়োগ করা হয়, তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন জোর করে কাজ করানো কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিক। এই কাজে জড়িত ছিলেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ছেড়ে চলে আসা বেশ কিছু সেনাও।
শ্রমিকদের কাজের গতি বাড়াতে তাঁদের জন্য শিকার করা হতো বনে চড়ে বেড়ানো অ্যান্টিলোপ। মাত্র দুই বছরে ৮০ কিলোমিটারের বেশি ট্র্যাক স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতিসহ নানা কারণে শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটি লাইনচ্যুত হয়। লাইনটি স্কুকুজার সাবি ব্রিজ পর্যন্ত পৌঁছেছে তখন। এই সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের খাওয়ানোর জন্য হাজার হাজার প্রাণীকে গুলি করে মারা হয়। ১৫ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার পর আবার প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ১৯১২ সালে লাইনটি জানিনে পৌঁছায়।
তারপর বেশ লম্বা সময় রেলপথটি ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু স্বর্ণখনি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সাবি গেম রিজার্ভের প্রথম ওয়ার্ডেন জেমস স্টিভেনসন-হ্যামিল্টন পর্যটকদের ব্যবহারের জন্য রেলপথকে ব্যবহারে উৎসাহিত করেন। সে সময় অবশ্য ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক গঠিত হয়নি। জায়গাটি শুধু একটি গেম রিজার্ভ ছিল। জেমস স্টিভেনসন-হ্যামিল্টন বন্যপ্রাণী সুরক্ষার জন্য একটি অভয়ারণ্যের জন্য চাপ দিয়েছিলেন। সাবি গেম রিজার্ভকে ১৯২৬ সালে ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে পরিণত করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম জাতীয় উদ্যান এটি। রেলপথটি ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত চালু থাকার পর পরিত্যক্ত হয়।
ট্রেন-হোটেলে সুইমিং পুল কিন্তু একটি নয়, তিনটি। একটি সুইমিং পুল সেতুতেই। বাকি দুটি সুইমিং পুল, অ্যারাইভেল লাউঞ্জ, অভ্যর্থনা এলাকা এবং ডাইনিংয়ের অবস্থান সেতুর ঠিক পাশে। বছরজুড়ে নদীতে পানি থাকায় এখানে তৃষ্ণা মেটাতে আসা প্রাণীদের অনায়াসে দেখতে পারবেন এই হোটেলের স্যুইটগুলো থেকে।
ক্রুগার শালাতি ‘ট্রেন অন দ্য ব্রিজ’ নামেও পরিচিত। এটি ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক এবং সম্ভবত সমগ্র দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বিচিত্র হোটেল। এর মাধ্যমে এই রেলপথে পর্যটকদের যে আকর্ষণীয় ভ্রমণ ছিল, ঠিক সেটা হয়তো ফিরিয়ে আনা যায়নি, তবে কোনো কোনো দিক থেকে এই ট্রেন হোটেল সেটাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখানে সময় কাটানো মানেই অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। সরাসরি হাতি, জলহস্তী এবং ক্রুগার জাতীয় উদ্যানের বিস্তৃত ঝোপ-জঙ্গল দেখতে পাবেন। বন্যপ্রাণীতে ভরপুর অরণ্যের ঠিক ওপরে ঘুমানো কিংবা সাঁতার কাটার রোমাঞ্চেরও কোনো তুলনা নেই।
ক্রুগার শালাতি অতিথিদের জন্য গাইড ও প্রহরীসহ চমৎকার একটি অরণ্য ভ্রমণের ব্যবস্থাও করে। এই ভ্রমণে হয়তো শাবকসহ হায়েনাদের দেখা পেয়ে যাবেন, কিংবা বিশ্রাম নিতে দেখবেন সিংহের কোনো দলকে। বুনো হাতি এত বেশি সংখ্যায় আছে যে একাকী মদ্দা হাতি থেকে শুরু করে বাচ্চাসহ হাতির পাল—সবকিছুরই দেখা পাবেন। বলা যায় না, বুনো কুকুরের দল কিংবা অসাধারণ সুন্দর প্রাণী চিতা বাঘের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে। সব মিলিয়ে গাঁটের পয়সা একটু বেশি খরচ হলেও এই ট্রেন-হোটেল যে প্রকৃতিপ্রেমীদের ভ্রমণ এবং আনন্দময় সময় কাটানোর জন্য চমৎকার এক জায়গা, তাতে সন্দেহ নেই!
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, থ্রিলিস্ট ডট কম, ক্রুগার শালাতি ডট কম
সেতুর ওপরে দাঁড়িয়ে আছে একটি ট্রেন। তবে এই ট্রেন ছন্দময় শব্দ তুলে ছুটে চলে না। তাই বলে এর আকর্ষণ কম নয়। একে রূপান্তর করা হয়েছে বিলাসবহুল এক হোটেলে, যেখানে আরামদায়ক পরিবেশে সময় কাটানোর পাশাপাশি দেখার সুযোগ মিলবে সবুজ বনানী আর নানা ধরনের বন্যপ্রাণী। এমন আশ্চর্য অভিজ্ঞতা পেতে আপনাকে যেতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে।
আজব এই ট্রেন হোটেলের নাম ক্রুগার শালাতি। সেতুর ওপরে ট্রেনের ২৪টি বগিকে পর্যটকদের জন্য রূপান্তর করা হয়েছে চমৎকার ২৪টি স্যুইটে। এ ছাড়া সেতু লাগোয়া একটি বাগানে আছে সাতটি ব্রিজ হাউস। ট্রেনের ভেতরের কমরায়ই থাকুন কি বাগানের স্যুইটে—আরাম-আয়েশের সব উপকরণই পাবেন। সাধারণ বিলাসবহুল হোটেলগুলোর মতোই এখানকার কামরাগুলোও নানা ধরনের আসবাবে সুসজ্জিত। আছে হোটেলের শেফদের বানানো মুখরোচক সব খাবারের ব্যবস্থা।
একটা সময় ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণে চমৎকার একটি ট্রেনযাত্রার সুযোগ ছিল। অবশ্য সেটা কয়েক দশক আগের গল্প। দক্ষিণ আফ্রিকা-মোজাম্বিক সীমান্তের কোমাটিপুর থেকে চলা শুরু করে ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কের মরুভূমি ও অরণ্যের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেত ট্রেন। যাত্রা শেষ হতো জাতীয় উদ্যানের বাইরে অবস্থিত বেশ বড় শহর জানিনে গিয়ে। পথে ট্রেনটি সাবি নদীর ওপর রেলওয়ে সেতুতে থামত, যেখানে অতিথিরা নেমে পড়তেন। তারপর সশস্ত্র পার্ক রেঞ্জাররা বন্যপ্রাণী দেখাতে নিয়ে যেতেন জঙ্গলে। ওই রেলট্র্যাকের জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে সড়কপথ। ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জনপ্রিয় ‘রাউন্ড ইন নাইন’ ট্যুর নামে পরিচিত ভ্রমণটিও তার শেষ দেখে।
তবে ওই ব্যবস্থা না থাকলেও থেবে ট্যুরিজম গ্রুপের এক উদ্যোগে একটু অন্য ধরনের রোমাঞ্চ উপভোগের সুযোগ হয় পর্যটকদের। একটি ট্রেনকে রূপান্তর করা হয়েছে বিলাসবহুল হোটেলে, যার উদ্বোধন হয় ২০২০ সালে। সাবি নদীর ওই রেলসেতুর ওপরেই বসানো হয়েছে ট্রেন হোটেলটি। এখনকার সুসজ্জিত ও বিলাসবহুল কামরাগুলোয় থেকেই আপনি উপভোগ করতে পারবেন চারপাশের দৃশ্য। শুধু তাই নয়, ওই রেল সেতুর ওপর নদীর দিকে মুখ করে থাকা একটি চমৎকার সুইমিংপুলও আছে।
‘ক্রুগার শালাতির মাধ্যমে আমরা এমন একটি পর্যটন গন্তব্য এবং আতিথেয়তার ব্যবস্থা করতে চাই, যাতে সারা বিশ্বের পর্যটকেরা ছুটিতে এখানে ভ্রমণ করতে চান। স্থানীয় ভ্রমণকারীরা এমন কিছু পেয়ে সত্যিই গর্বিত হতে পারেন, যা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই।’ হোটেলটি উদ্বোধনের আগে বলেছিলেন থেবে ট্যুরিজম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেরি মাবেনা।
এবার বরং এই রেললাইন বা রেলপথের ইতিহাস নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করা যাক। উত্তর-পূর্ব ট্রান্সভালে আবিষ্কৃত সোনার মজুত কাজে লাগাতে ১৮৯২ সালে প্রথম লাইনের কাজ শুরু হয়। পরিকল্পনাটি ছিল এমন—ট্রান্সভালের স্বর্ণখনি থেকে আকরিক ট্রেনে করে প্রথমে কোমাটিপুরে পৌঁছাবে। যেখান থেকে যাবে নতুন স্থাপিত হওয়া রেলপথের মাধ্যমে ডেলাগোয়া বে এলাকায়। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার বিভিন্ন রোগ ও বিপজ্জনক বন্যপ্রাণীর কারণে কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়। এই সূত্রে বলে রাখা যায়, উনিশ শতকের শেষের দিকে কেনিয়ার সাভোতে দুটি সিংহ রেলশ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তাই এই রেলপথ তৈরির কাজে যেসব শ্রমিক নিয়োগ করা হয়, তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন জোর করে কাজ করানো কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিক। এই কাজে জড়িত ছিলেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ছেড়ে চলে আসা বেশ কিছু সেনাও।
শ্রমিকদের কাজের গতি বাড়াতে তাঁদের জন্য শিকার করা হতো বনে চড়ে বেড়ানো অ্যান্টিলোপ। মাত্র দুই বছরে ৮০ কিলোমিটারের বেশি ট্র্যাক স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতিসহ নানা কারণে শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটি লাইনচ্যুত হয়। লাইনটি স্কুকুজার সাবি ব্রিজ পর্যন্ত পৌঁছেছে তখন। এই সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের খাওয়ানোর জন্য হাজার হাজার প্রাণীকে গুলি করে মারা হয়। ১৫ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার পর আবার প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ১৯১২ সালে লাইনটি জানিনে পৌঁছায়।
তারপর বেশ লম্বা সময় রেলপথটি ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু স্বর্ণখনি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সাবি গেম রিজার্ভের প্রথম ওয়ার্ডেন জেমস স্টিভেনসন-হ্যামিল্টন পর্যটকদের ব্যবহারের জন্য রেলপথকে ব্যবহারে উৎসাহিত করেন। সে সময় অবশ্য ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক গঠিত হয়নি। জায়গাটি শুধু একটি গেম রিজার্ভ ছিল। জেমস স্টিভেনসন-হ্যামিল্টন বন্যপ্রাণী সুরক্ষার জন্য একটি অভয়ারণ্যের জন্য চাপ দিয়েছিলেন। সাবি গেম রিজার্ভকে ১৯২৬ সালে ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে পরিণত করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম জাতীয় উদ্যান এটি। রেলপথটি ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত চালু থাকার পর পরিত্যক্ত হয়।
ট্রেন-হোটেলে সুইমিং পুল কিন্তু একটি নয়, তিনটি। একটি সুইমিং পুল সেতুতেই। বাকি দুটি সুইমিং পুল, অ্যারাইভেল লাউঞ্জ, অভ্যর্থনা এলাকা এবং ডাইনিংয়ের অবস্থান সেতুর ঠিক পাশে। বছরজুড়ে নদীতে পানি থাকায় এখানে তৃষ্ণা মেটাতে আসা প্রাণীদের অনায়াসে দেখতে পারবেন এই হোটেলের স্যুইটগুলো থেকে।
ক্রুগার শালাতি ‘ট্রেন অন দ্য ব্রিজ’ নামেও পরিচিত। এটি ক্রুগার ন্যাশনাল পার্ক এবং সম্ভবত সমগ্র দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বিচিত্র হোটেল। এর মাধ্যমে এই রেলপথে পর্যটকদের যে আকর্ষণীয় ভ্রমণ ছিল, ঠিক সেটা হয়তো ফিরিয়ে আনা যায়নি, তবে কোনো কোনো দিক থেকে এই ট্রেন হোটেল সেটাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখানে সময় কাটানো মানেই অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। সরাসরি হাতি, জলহস্তী এবং ক্রুগার জাতীয় উদ্যানের বিস্তৃত ঝোপ-জঙ্গল দেখতে পাবেন। বন্যপ্রাণীতে ভরপুর অরণ্যের ঠিক ওপরে ঘুমানো কিংবা সাঁতার কাটার রোমাঞ্চেরও কোনো তুলনা নেই।
ক্রুগার শালাতি অতিথিদের জন্য গাইড ও প্রহরীসহ চমৎকার একটি অরণ্য ভ্রমণের ব্যবস্থাও করে। এই ভ্রমণে হয়তো শাবকসহ হায়েনাদের দেখা পেয়ে যাবেন, কিংবা বিশ্রাম নিতে দেখবেন সিংহের কোনো দলকে। বুনো হাতি এত বেশি সংখ্যায় আছে যে একাকী মদ্দা হাতি থেকে শুরু করে বাচ্চাসহ হাতির পাল—সবকিছুরই দেখা পাবেন। বলা যায় না, বুনো কুকুরের দল কিংবা অসাধারণ সুন্দর প্রাণী চিতা বাঘের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে। সব মিলিয়ে গাঁটের পয়সা একটু বেশি খরচ হলেও এই ট্রেন-হোটেল যে প্রকৃতিপ্রেমীদের ভ্রমণ এবং আনন্দময় সময় কাটানোর জন্য চমৎকার এক জায়গা, তাতে সন্দেহ নেই!
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, থ্রিলিস্ট ডট কম, ক্রুগার শালাতি ডট কম
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
১ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
১ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৩ দিন আগে