ইশতিয়াক হাসান
প্রচণ্ড উষ্ণ কয়েকটি দিনের পর আবার বৃষ্টির দেখা মিলছে। আর বৃষ্টির হাতে হাত রেখেই আসে বিদ্যুচ্চমক, বজ্রপাত। আর এ সময়টাই বেছে নিয়েছি লেক মারাকাইবোর গল্পটি বলার জন্য। বছরে ৩০০ দিনের কাছাকাছি বজ্রপাত হওয়া এই হ্রদকে অনেকেই বিবেচনা করেন পৃথিবীর বজ্রপাতের রাজধানী বলে। প্রতি বর্গমাইলে সবচেয়ে বেশিবার বাজ আঘাত হানার রেকর্ডটিও এই জায়গার দখলে।
দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় হ্রদ লেক মারাকাইবো। উত্তর-পশ্চিম ভেনেজুয়েলায় আন্দিজ পর্বতমালার ধারেই এর অবস্থান। কাটাটামবো নদী যেখানে লেক মারাকাইবোতে পড়েছে, সেখানেই সবচেয়ে বেশি ঘটে বজ্রপাত ও বজ্রঝড়। পৃথিবীজুড়ে এটি পরিচিত কাটাটামবো বজ্রপাত বা বজ্রঝড় নামে।
এত বেশি বিদ্যুচ্চমক হয় এই হ্রদে যে নাবিকেরা তাঁদের জাহাজ সঠিক পথে পরিচালিত করতে এর সাহায্য নেন, এমনকি জায়গাটির নাম দিয়ে দিয়েছেন ‘মারাকাইবোর বাতিঘর’।
লেক মারাকাইবোতে হওয়া বজ্রপাতের পরিমাণ কত
বেশ কয়েক বছরের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে করা নাসার একটি জরিপে দেখা যায়, বছরে ২৯৭ দিন বজ্রঝড় হয় লেক মারাকাইবোতে। অবশ্য কোনো কোনো সূত্রে আবার বলা হয়েছে বছরে ১৪০ থেকে ১৬০ দিন বজ্রঝড় বা বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ ধরনের একেকটি ঝড়ের সময় মিনিটে ২৮ বার হ্রদে বিদ্যুচ্চমক হয়। এ ধরনের একেকটি ঝড় স্থায়ী হয় ৭ থেকে ১০ ঘণ্টা।
প্রতিবছর এখানে প্রতি বর্গমাইলে ৬০২ বার বিদ্যুৎ চমকায়। সব সময় এখানে প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত হয় তা নয়, বরং বিদ্যুচ্চমকের দেখা পাওয়া যায়। আর এখানে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুচ্চমক বা বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে সেপ্টেম্বরে।
এখানে অবশ্য দুই ধরনের বিদ্যুচ্চমক দেখবেন। কোনোটা মেঘ থেকে মেঘে। কখনো মেঘ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে বাজ। বজ্রঝড়ের রাজধানী হিসেবে এর স্বীকৃতিটা জোটে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে। যখন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত বা বিদ্যুচ্চমকের এলাকা হিসেবে লেক মারাকাইবোর নাম ঘোষণা করে।
কতটা শক্তিশালী কাটাটামবো বাজ
মারাকাইবোর বাজ এতটাই শক্তিশালী যে স্থানীয়রা একে উল্লেখ করে ‘আগুনের হ্রদ’ বা ‘চিরস্থায়ী ঝড়’ হিসেবে। আর এই ঝড়ের সময় আশপাশের এলাকা বিদ্যুচ্চমকে আলোকিত হয়ে এক আশ্চর্য পরিবেশ তৈরি হয়। এই আলো এতটাই তীব্র যে আশপাশে বেশ কয়েক মাইল দূর থেকেও এই বিদ্যুচ্চমক দেখতে পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, কাটাটামবোর ১০ মিনিটের বিদ্যুচ্চমক গোটা দক্ষিণ আমেরিকাকে একবার আলোকিত করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
তবে অসাধারণ এক পরিবেশের জন্ম হলেও বিপদও কম নয়। কারণ হ্রদের চারপাশে হাজার বিশেক জেলের বসবাস।
মারাকাইবোর ‘বাতিঘর’
শত শত বছর ধরেই নাবিক ও অভিযাত্রীদের কাছে প্রাকৃতিক এক বাতিঘর বা লাইট হাউস হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে লেক মারাকাইবো। কারণ আশপাশের বেশ কয়েক মাইলের মধ্যে চলাচল করা নৌযানগুলো এই বিদ্যুচ্চমকের আলো দেখে পথ চিনে নিতে পারতেন।
ইতালীয় ভৌগোলিক অগাস্টিন কোদাজ্জি ১৮৪১ সালে বিষয়টিকে বর্ণনা করেন এভাবে—‘মনে হচ্ছিল অনবরত বিদ্যুৎ চমকে যাচ্ছে, আর হ্রদের মুখেই এটা হচ্ছিল’।
কখন লেক মারাকাইবো ভ্রমণে যাবেন
এমনিতে বজ্রপাত বেশ আতঙ্কের ব্যাপার হলেও লেক মারাকাইবো এমন এক জায়গা, যেখানে পর্যটকেরা যান বিদ্যুচ্চমক দেখতে। এখানে বিদ্যুচ্চমক কিংবা বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে সাধারণত রাতে। সেপ্টেম্বরের পাশাপাশি অক্টোবরেও এটা বেশি চোখে পড়ে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে আবার এর প্রভাব থাকে কম।
বজ্রপাত কীভাবে হয়
বজ্রঝড় সৃষ্টি হতে দুটি জিনিসের প্রয়োজন—উষ্ণ বাতাস ও শীতল বাতাস। শীতল বাতাসে আছে বরফ স্ফটিক আর উষ্ণ বাতাসে পানির বিন্দু। উষ্ণ বাতাস ওপরে ওঠায় বরফ স্ফটিক ও পানির বিন্দুর সংঘর্ষ হয়। এতে স্থির বিদ্যুৎ তৈরি হয়। এ সময় মেঘের ওপরের অংশ ধনাত্মক ও নিচের অংশ ঋণাত্মক চার্জ পায়। যখন ঋণাত্মক চার্জের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন বিদ্যুচ্চমক বা বাজ হিসেবে অতিরিক্ত শক্তি ছেড়ে দেয় মেঘ। এদিকে চারপাশের বাতাস উষ্ণ হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, একেই বাজের শব্দ হিসেবে শুনি আমরা।
এবার মারাকাইবো হ্রদের এই মুহুর্মুহু বজ্রপাতের ব্যাপারটা একটু বোঝা যাক। ভৌগোলিকভাবে একটি উষ্ণ হ্রদ ও উঁচু পর্বত মিলে বিদ্যুচ্চমক বা বজ্রপাতের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। মারাকাইবো হ্রদের তিন পাশে আন্দিজ, পেরিজা ও মেরিদা’স কোরদিলেরা পর্বতের অবস্থান। ধারণা করা হয়, হ্রদের ওপরের উষ্ণ বাতাস এবং তিন পাশের পর্বতের শীতল বাতাস মিলেই এমন আশ্চর্য এক বজ্রপাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হয় এখানে।
সূত্র: স্টোরি টেলার ডট ট্রাভেল, বিবিসি, দ্য ট্রাভেল ডট কম
প্রচণ্ড উষ্ণ কয়েকটি দিনের পর আবার বৃষ্টির দেখা মিলছে। আর বৃষ্টির হাতে হাত রেখেই আসে বিদ্যুচ্চমক, বজ্রপাত। আর এ সময়টাই বেছে নিয়েছি লেক মারাকাইবোর গল্পটি বলার জন্য। বছরে ৩০০ দিনের কাছাকাছি বজ্রপাত হওয়া এই হ্রদকে অনেকেই বিবেচনা করেন পৃথিবীর বজ্রপাতের রাজধানী বলে। প্রতি বর্গমাইলে সবচেয়ে বেশিবার বাজ আঘাত হানার রেকর্ডটিও এই জায়গার দখলে।
দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় হ্রদ লেক মারাকাইবো। উত্তর-পশ্চিম ভেনেজুয়েলায় আন্দিজ পর্বতমালার ধারেই এর অবস্থান। কাটাটামবো নদী যেখানে লেক মারাকাইবোতে পড়েছে, সেখানেই সবচেয়ে বেশি ঘটে বজ্রপাত ও বজ্রঝড়। পৃথিবীজুড়ে এটি পরিচিত কাটাটামবো বজ্রপাত বা বজ্রঝড় নামে।
এত বেশি বিদ্যুচ্চমক হয় এই হ্রদে যে নাবিকেরা তাঁদের জাহাজ সঠিক পথে পরিচালিত করতে এর সাহায্য নেন, এমনকি জায়গাটির নাম দিয়ে দিয়েছেন ‘মারাকাইবোর বাতিঘর’।
লেক মারাকাইবোতে হওয়া বজ্রপাতের পরিমাণ কত
বেশ কয়েক বছরের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে করা নাসার একটি জরিপে দেখা যায়, বছরে ২৯৭ দিন বজ্রঝড় হয় লেক মারাকাইবোতে। অবশ্য কোনো কোনো সূত্রে আবার বলা হয়েছে বছরে ১৪০ থেকে ১৬০ দিন বজ্রঝড় বা বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ ধরনের একেকটি ঝড়ের সময় মিনিটে ২৮ বার হ্রদে বিদ্যুচ্চমক হয়। এ ধরনের একেকটি ঝড় স্থায়ী হয় ৭ থেকে ১০ ঘণ্টা।
প্রতিবছর এখানে প্রতি বর্গমাইলে ৬০২ বার বিদ্যুৎ চমকায়। সব সময় এখানে প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত হয় তা নয়, বরং বিদ্যুচ্চমকের দেখা পাওয়া যায়। আর এখানে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুচ্চমক বা বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে সেপ্টেম্বরে।
এখানে অবশ্য দুই ধরনের বিদ্যুচ্চমক দেখবেন। কোনোটা মেঘ থেকে মেঘে। কখনো মেঘ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে বাজ। বজ্রঝড়ের রাজধানী হিসেবে এর স্বীকৃতিটা জোটে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে। যখন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত বা বিদ্যুচ্চমকের এলাকা হিসেবে লেক মারাকাইবোর নাম ঘোষণা করে।
কতটা শক্তিশালী কাটাটামবো বাজ
মারাকাইবোর বাজ এতটাই শক্তিশালী যে স্থানীয়রা একে উল্লেখ করে ‘আগুনের হ্রদ’ বা ‘চিরস্থায়ী ঝড়’ হিসেবে। আর এই ঝড়ের সময় আশপাশের এলাকা বিদ্যুচ্চমকে আলোকিত হয়ে এক আশ্চর্য পরিবেশ তৈরি হয়। এই আলো এতটাই তীব্র যে আশপাশে বেশ কয়েক মাইল দূর থেকেও এই বিদ্যুচ্চমক দেখতে পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, কাটাটামবোর ১০ মিনিটের বিদ্যুচ্চমক গোটা দক্ষিণ আমেরিকাকে একবার আলোকিত করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
তবে অসাধারণ এক পরিবেশের জন্ম হলেও বিপদও কম নয়। কারণ হ্রদের চারপাশে হাজার বিশেক জেলের বসবাস।
মারাকাইবোর ‘বাতিঘর’
শত শত বছর ধরেই নাবিক ও অভিযাত্রীদের কাছে প্রাকৃতিক এক বাতিঘর বা লাইট হাউস হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে লেক মারাকাইবো। কারণ আশপাশের বেশ কয়েক মাইলের মধ্যে চলাচল করা নৌযানগুলো এই বিদ্যুচ্চমকের আলো দেখে পথ চিনে নিতে পারতেন।
ইতালীয় ভৌগোলিক অগাস্টিন কোদাজ্জি ১৮৪১ সালে বিষয়টিকে বর্ণনা করেন এভাবে—‘মনে হচ্ছিল অনবরত বিদ্যুৎ চমকে যাচ্ছে, আর হ্রদের মুখেই এটা হচ্ছিল’।
কখন লেক মারাকাইবো ভ্রমণে যাবেন
এমনিতে বজ্রপাত বেশ আতঙ্কের ব্যাপার হলেও লেক মারাকাইবো এমন এক জায়গা, যেখানে পর্যটকেরা যান বিদ্যুচ্চমক দেখতে। এখানে বিদ্যুচ্চমক কিংবা বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে সাধারণত রাতে। সেপ্টেম্বরের পাশাপাশি অক্টোবরেও এটা বেশি চোখে পড়ে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে আবার এর প্রভাব থাকে কম।
বজ্রপাত কীভাবে হয়
বজ্রঝড় সৃষ্টি হতে দুটি জিনিসের প্রয়োজন—উষ্ণ বাতাস ও শীতল বাতাস। শীতল বাতাসে আছে বরফ স্ফটিক আর উষ্ণ বাতাসে পানির বিন্দু। উষ্ণ বাতাস ওপরে ওঠায় বরফ স্ফটিক ও পানির বিন্দুর সংঘর্ষ হয়। এতে স্থির বিদ্যুৎ তৈরি হয়। এ সময় মেঘের ওপরের অংশ ধনাত্মক ও নিচের অংশ ঋণাত্মক চার্জ পায়। যখন ঋণাত্মক চার্জের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন বিদ্যুচ্চমক বা বাজ হিসেবে অতিরিক্ত শক্তি ছেড়ে দেয় মেঘ। এদিকে চারপাশের বাতাস উষ্ণ হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, একেই বাজের শব্দ হিসেবে শুনি আমরা।
এবার মারাকাইবো হ্রদের এই মুহুর্মুহু বজ্রপাতের ব্যাপারটা একটু বোঝা যাক। ভৌগোলিকভাবে একটি উষ্ণ হ্রদ ও উঁচু পর্বত মিলে বিদ্যুচ্চমক বা বজ্রপাতের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। মারাকাইবো হ্রদের তিন পাশে আন্দিজ, পেরিজা ও মেরিদা’স কোরদিলেরা পর্বতের অবস্থান। ধারণা করা হয়, হ্রদের ওপরের উষ্ণ বাতাস এবং তিন পাশের পর্বতের শীতল বাতাস মিলেই এমন আশ্চর্য এক বজ্রপাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হয় এখানে।
সূত্র: স্টোরি টেলার ডট ট্রাভেল, বিবিসি, দ্য ট্রাভেল ডট কম
মার্কিন নাগরিক জেরি হিকস গত মঙ্গলবার যখন দরকারি কিছু জিনিসপত্র কিনতে যাচ্ছিলেন তখন কল্পনাও করেননি তাঁর জীবনটা বদলে যেতে চলেছে। দোকানটির পার্কিংয়ে ২০ ডলারের একটি নোট পড়ে থাকতে দেখেন এ সময়। ওটা তুলে নিয়ে খরচ করলেন লটারির টিকিট কিনতে। তাতেই জিতলেন দশ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
২ দিন আগে২০১৯ সালে দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা এক লাখ ২০ হাজার ডলারে বিক্রি হয়। তখন এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। শিল্পকর্মটি দিয়ে আসলে কী বোঝানো হয়েছে সেটি নিয়েও শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
৩ দিন আগেপৃথিবীতে এমন কিছু প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যেগুলো দেখলে ওই সময় মানব নির্মিত কোনো স্থাপনা বলে বিশ্বাস করা কঠিন! কারণ, এসব স্থাপনার নির্মাণশৈলী একই সঙ্গে জটিল ও বিশাল।
৮ দিন আগেপ্যারা গ্লাইডাররা আকাশ থেকে মিসরের গিজা’র প্রাচীন পিরামিডগুলো দেখে আনন্দ পান। সেখানে কুকুর ঘুরে বেড়ানোটি যে মোটেই স্বাভাবিক বিষয় নয় এটা তাঁদের থেকে আর কে ভালো বুঝবে! যুক্তরাষ্ট্রের প্যারা গ্লাইডার মার্শাল মশার ও তাঁর সঙ্গী প্যারা গ্লাইডাররা গত সপ্তাহে এক সূর্যাস্তের সময় পিরামিডগুলোর ওপর দিয়ে ওড়ার সম
৯ দিন আগে