Ajker Patrika

আকাশ থেকে পড়ল মাছ, ব্যাঙ, টাকা

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১২: ৫৯
আকাশ থেকে পড়ল মাছ, ব্যাঙ, টাকা

আকাশ থেকে কী পড়তে পারে? ভাবছেন বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, শীতের দেশ হলে তুষার—এই তো, আর কীই বা পড়ার আছে! আজও যেমন বৃষ্টি হয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু যদি বলি মাছ, মাকড়সা, টাকা এমনকি রক্তের মতো টকটকে লাল পদার্থও পড়তে পারে, তাহলে নিশ্চয় চোখ কপালে উঠবে। শুধু এগুলোই নয়, আকাশ থেকে পড়ার তালিকায় আছে আরও অনেক অদ্ভুত বস্তুও। তাহলে বরং লেখাটি পড়ুন আর অবাক হতে থাকুন।

মাছ
আকাশ থেকে মাছ পড়ার দৃশ্যটা দেখতে যতই অদ্ভুত লাগুক, এটা কিন্তু একেবারে অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। এমনকি এর পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। টর্নেডোর মতো একধরনের ঝড় সাগর, হ্রদের মতো জায়গা থেকে মাছসহ জলজ প্রাণী উঠিয়ে নেয়। তারপর ঝোড়ো বাতাসে ভাসিয়ে বেশ কিছুটা দূরে মাটিতে নিয়ে ফেলে। দৃশ্যটা দেখলে যে কারো মনে হবে আকাশ থেকে মাছবৃষ্টি হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশেই এভাবে আকাশ থেকে মাছ পড়ার রেকর্ড আছে। কখনো কখনো এভাবে পড়া মাছ খাওয়ার উপযোগী হলে যে এলাকায় ঘটনা ঘটে, সেখানকার মানুষ রীতিমতো ডাঙায় মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠে। হন্ডুরাসের ছোট্ট গ্রাম ইয়রোতে এ ধরনের মাছবৃষ্টির ঘটনা এত বেশি যে, প্রতি বছর একবার ‘লুভিয়া দ্য পেসেস’ বা মৎস্যবৃষ্টি উৎসব পালন করতে পারেন এখানকার বাসিন্দারা।

ব্যাঙ
মাছের মতো ঝড়ে ব্যাঙ উড়িয়ে এনে ফেলার ঘটনাও ঘটে। আধুনিক কালে তো বটেই, প্রাচীন কালেও এমন কাণ্ডের নজির আছে। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক হেরাক্লিডস লেমবাস লেখেন, আকাশ থেকে ব্যাঙ পড়ে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি-ঘর এই প্রাণীতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ২০০৫ সালে সার্বায়ার ওডজাসির বাসিন্দারা ঝড় ও মেঘের মধ্য থেকে হাজার হাজার ছোট ছোট ব্যাঙ পড়তে দেখেন তাঁদের শহরে। কখনো অনেক ওপর থেকে পড়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও অনেক সময়ই এদের নতুন বাসস্থানে লাফিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। সার্বিয়ার গ্রামবাসী জানান, পতনের সঙ্গে সঙ্গে কোনো জলাধারের খোঁজে লাফিয়ে লাফিয়ে সরে পড়ে ব্যাঙের দল।

টাকা
শুনতে যতই অদ্ভুত লাগুক, ইতিহাসে টাকার বৃষ্টির ঘটনা একেবারে কম নয়। এর মধ্যে কয়েকটি আবার সাম্প্রতিক।

১৯৫৭ সালে ফ্রান্সের ছোট্ট শহর বোর্গেসে এক হাজার ফ্রাংকের কয়েক হাজার নোট আকাশ থেকে পড়তে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর শিকাগোতে এভাবে এক ডালারের  কয়েক শ নোট আকাশ থেকে পড়তে দেখা যায়।

১৯৬৮ সালের ৩ ডিসেম্বর। ইংল্যান্ডের রামসগেটের এক দোকানের সামনে হঠাৎ ওপর থেকে স্থানীয় মুদ্রা পেনি পড়তে থাকে। দোকানের এক ক্যাশিয়ার দাবি করেন, প্রায় পনেরো মিনিট ধরে একটা-দুটো করে এমন পেনির পতন অব্যাহত ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার, আশপাশে কোনো উঁচু দালান ছিল না, তেমনি উড়ে যেতে দেখা যায়নি কোনো বিমানকেও।

খোলা মাঠে ওপর থেকে মাকড়সা পড়তে দেখলে অবাক হবেন না

২০১৫ সালে কয়েক লাখ ডলারের সমমূল্যের আরব আমিরাতের দিরহাম পড়তে দেখা যায় কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটিতে। তবে এই টাকা পড়ার কোনো ঘটনারই সে রকম কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

মাকড়সা
মাকড়সা বৃষ্টির ঘটনাও আছে। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এবং আরও সাম্প্রতিক সময়ে বিবেচনা করলে ২০১৯ সালে ব্রাজিলে এমন কাণ্ড ঘটেছে। তবে মাছ বা ব্যাঙের মতো মাকড়সাদের বাড়িছাড়া হওয়ার পেছনে দায়ী প্রবল ঝড় নয়। মাকড়সা বৃষ্টির কারণ ‘বেলুনিং’ নামের এক বিশেষ প্রক্রিয়া। মাকড়সারা জাল তৈরি করে বাতাসে। আসলে তারা এভাবে ঝোড়ো বাতাসের নাগাল পেয়ে নতুন জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করে। সেক্ষেত্রে মাকড়সা বৃষ্টি আরও বেশি সাধারণ ঘটনা হওয়ার কথা ছিল, তাই তো ভাবছেন? তবে ঘটনা হলো, একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে মাকড়সা ‘বেলুনিং’ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় না। যখন একসঙ্গে অনেক মাকড়সা এভাবে জাল তৈরি করে বাতাসের সাহায্য পেতে, তখনই কেবল মাকড়সা বৃষ্টির দেখা মেলে। 

ইগুয়ানা
আকাশ থেকে ইগুয়ানা পতনকে মাছ ও ব্যাঙ পড়ার সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। এটা আসলে আরও অনেক বেশি অদ্ভুত এক ব্যাপার। দক্ষিণ ফ্লোরিডায় ২০১৮ সালের শীতে যে বম্ব সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় (সাধারণত শীতকালেই এ ঝড় হয়) হয়, সেটার একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ওই সময় ইগুয়ানা বৃষ্টি হয়। ব্যাপারটা হলো, এ সময় তাপমাত্রা এতটা কমে যায় যে, শীতল রক্তের প্রাণীগুলো বেঁচে থাকলেও শরীরের কল-কবজাগুলো সাময়িকভাবে কর্মক্ষমতা হারায়। অর্থাৎ কোনোভাবেই আর যে গাছে ছিল তার ডালপালা আঁকড়ে ধরে আটকে থাকতে পারেনি। গাছের ওপর থেকে টপ টপ করে মাটিতে পড়তে থাকে।

গাছের ওপর ইগুয়ানামাংস
১৮৭৬ সালের মার্চের ৩ তারিখ আমেরিকার কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের অলিম্পিয়া স্প্রিংসে মাংসবৃষ্টির ঘটনা ঘটে। দুই থেকে চার বর্গ ইঞ্চির মাংসের টুকরোগুলো অ্যালেন ক্রাউচ নামের এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনের উঠানে পড়ে। ওই সময় ঘটনাস্থলে যেসব মানুষ জড়ো হন, তাঁদের দুজন সাহস করে ওই মাংস চেখেও দেখেন। অনেকটা ছাগলের মাংসের মতো লেগেছিল এর স্বাদ তাঁদের কাছে। তবে পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধারণা করা হয়, এগুলো ঘোড়ার মাংস। এ ঘটনার ব্যাখ্যা হিসেবে যেসব তত্ত্ব সামনে আসে, এর মধ্যে সবচেয়ে যুক্তিসংগত হলো বাজ পাখিদের একটা দল এ ঘটনার ঠিক আগেই মরা ঘোড়ার মাংস খেয়েছিল। পরে উড়ে যাওয়ার সময় একটা বাজ সদ্য খাওয়া মাংস উগড়ে দেয়, বাকিগুলো অনুসরণ করে তাকে।

গলফ বল
গলফ বলের আকারের শিলাবৃষ্টির কথা শুনে থাকতে পারেন, তাই বলে সত্যি সত্যি গলফ বল? ১৯৬৯ সালে ফ্লোরিডার পান্টা গর্ডায় এভাবে কয়েক ডজন গলফ বল ওপর থেকে পড়ার খবর আসে সংবাদমাধ্যমে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, স্থানীয় কোনো গলফ কোর্স থেকেই গলফ বল হারায়নি এ সময়। ওই ঘটনার পুরোপুরি রহস্যভেদ করা সম্ভব হয়নি। তবে বেশির ভাগের ধারণা কোনো এক জায়গায় খেলার সময় গলফারদের এলোমেলো শটে বেশ কিছু বল পানিতে গিয়ে পড়ে। এগুলোই ঝড়ে এনে ফেলে ডাঙায়, মানে মাছ আর ব্যাঙকে যেভাবে ফেলেছে আরকি!

ওপর থেকে গলফ বল পড়ার ঘটনাও ঘটেরক্ত নয়!
উত্তর-পশ্চিম স্পেনের জামোরা শহরে রক্তবৃষ্টির একটা ঘটনা ঘটেছিল। অন্তত আকাশ থেকে পড়া লাল রঙের ওই তরল রক্তের মতোই ছিল। বিষয়টি জামোরার বাসিন্দাদের রীতিমতো হতভম্ব করে দেয়। অবশ্য পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণায় বেরিয়ে আসে, লাল রঙের ওই তরল রক্ত নয়, বরং প্রাকৃতিক এক উপাদান। লাল রং এসেছে আণুবীক্ষনিক একধরনের উদ্ভিদ থেকে। এর রেনু বাতাসে ভেসে মেঘের স্পর্শ পায়। পরে লাল বৃষ্টি হয়ে ঝরে। তবে এই ব্যাখ্যায় একটা ঝামেলা ছিল, সেটি হলো, এই উদ্ভিদ মোটেই স্পেনের এই অঞ্চলের নয়। জামোরার ওপরে কীভাবে এগুলো এলো, সেই রহস্য অবশ্য সমাধান করা সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানীদের পক্ষে।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট, লিস্টভার্স, লাইভসায়েন্স, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অফিসে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ায় চাকরি হারালেন প্রকৌশলী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৯
প্রতীকী ছবি। ছবি: পিক্সাবে
প্রতীকী ছবি। ছবি: পিক্সাবে

কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।

হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে জিয়াংসু প্রদেশের লি নামক ওই ব্যক্তি গত বছর এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এক মাসে ১৪ বার টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নেন। এর মধ্যে একবার তিনি চার ঘণ্টা টয়লেটে কাটান। এর জেরে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়।

এই খবর সম্প্রতি সাংহাই ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

ওই ব্যক্তি বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের জন্য কোম্পানির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে বিষয়টি সামনে আসে। লি প্রমাণ হিসেবে গত বছর মে ও জুন মাসে তাঁর সঙ্গীর কেনা অর্শের ওষুধ এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর হাসপাতালে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের নথিও পেশ করেন।

এরপর লি ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের দায়ে ৩ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্যদিকে কোম্পানি লি-এর ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিরতিতে থাকার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা দেয়।

আদালতের বিশ্বাস, লি টয়লেটে যে সময় ব্যয় করেছেন, তা তাঁর ‘শারীরিক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি’ ছিল। এ ছাড়া লি যে ডাক্তারি নথি জমা দিয়েছেন, তা তাঁর বহুবার দীর্ঘ পানির বিরতি নেওয়ার পরের সময়ের। চুক্তিতে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও লি তাঁর অসুস্থতার কথা কোম্পানিকে আগে জানাননি বা অসুস্থতাজনিত ছুটির জন্য আবেদনও করেননি।

কোম্পানি লি-কে তাঁর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করে প্রথমে একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে, কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি। লি-এর পদে কাজ করার জন্য তাঁকে সব সময় কাজের অনুরোধে সাড়া দিতে হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার পর কোম্পানি তাঁকে বরখাস্ত করে।

লি ২০১০ সালে কোম্পানিতে যোগ দেন এবং ২০১৪ সালে একটি উন্মুক্ত-মেয়াদি চুক্তি নবায়ন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজের কর্মস্থল ত্যাগ করাকে অনুপস্থিতি বলে গণ্য করা হবে এবং ১৮০ দিনের মধ্যে মোট তিন কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে চুক্তি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে।

বরখাস্ত করার আগে কোম্পানি ট্রেড ইউনিয়নের অনুমতিও নিয়েছিল। দুই দফা বিচার পর্বের পর আদালত অবশেষে দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন এবং লি-এর কোম্পানিতে অবদানের কথা এবং বেকারত্বের পর তাঁর অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কোম্পানিকে ৩০ হাজার ইউয়ান ভাতা দিয়ে মামলাটি মিটিয়ে নিতে রাজি করান।

চীনে এ ধরনের বিরতি নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। এর আগে ২০২৩ সালেও জিয়াংসু প্রদেশের আরেক ব্যক্তিকে একই অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাঁর দীর্ঘতম বিরতি ছিল এক দিনে ছয় ঘণ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যর্থ ব্যবসায়ী ফুড ডেলিভারি করে লাখপতি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১১
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

সাধারণত অস্থায়ী পেশা হিসেবে ফুড ডেলিভারির চাকরি অনেকেই করেন। কেউ আবার মূল চাকরির ফাঁকে ফুড ডেলিভারি দেন অতিরিক্ত আয়ের জন্য। কিন্তু এ কাজ করেও যে লাখ টাকার মালিক হওয়া যায়, তা দেখিয়ে দিলেন চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং নামের এক তরুণ।

ফুড ডেলিভারি করতে করতে মাত্র পাঁচ বছরে ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান সঞ্চয় করেছেন তিনি, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান। প্রতিদিন গড়ে ১৪ ঘণ্টা কাজ আর কঠোর মিতব্যয়িতাই তাঁকে লাখপতি বানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

ব্যর্থ ব্যবসা, তারপর নতুন শুরু

ঝাংয়ের বাড়ি ফুজিয়ান প্রদেশের ঝাংঝো শহরে। ২০১৯ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে তিনি একটি নাশতার দোকান চালু করেন। শুরুতে কিছুটা আশাব্যঞ্জক হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই ব্যবসার অবস্থা হয়ে যায় টালমাটাল। লোকসান দিন দিন বাড়তে থাকে, ক্রেতা কমে যায় এবং প্রতিদিনের খরচ টানতে গিয়ে তিনি চাপের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত দোকানটি বন্ধ করতে বাধ্য হন এবং তাঁর কাঁধে চাপে প্রায় ৫০ হাজার ইউয়ানের ঋণ।

চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন
চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন

এ ব্যর্থতা তরুণ ঝাংকে মানসিকভাবে দমিয়ে দেয়। কিন্তু তিনি পরিবারকে বিষয়টি বুঝতে দিতে চাননি। তাই সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে একাই রওনা দেন সাংহাইয়ের পথে। বড় শহরে গিয়ে নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত তাঁর জন্য সহজ ছিল না। তবুও লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব ঋণ শোধ করা, আবার উঠে দাঁড়ানোর মতো মূলধন জোগাড় করা এবং নিজের জন্য একটি নতুন পথ তৈরি করা।

১৪ ঘণ্টার কর্মদিবস এবং অবিশ্বাস্য পরিশ্রম

সাংহাইয়ের মিনহাং জেলায় উঝং রোডের একটি ডেলিভারি স্টেশনে তিনি কাজ শুরু করেন। সকাল ১০টা ৪০ থেকে রাত ১টা পর্যন্ত বৃষ্টি, ঠান্ডা কিংবা গরম—সব পরিস্থিতিতেই তিনি মাঠে থাকেন ডেলিভারির কাজে। সবার আগে অর্ডার ধরতে এবং দ্রুত ডেলিভারি দিতে তিনি সব সময় ছুটে চলেন। ডেলিভারি স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ান বলেন, ‘ছেলেটা খুব কম কথা বলে, কিন্তু কাজ করে অবিশ্বাস্য পরিশ্রম দিয়ে। প্রতিদিনই দেখি সে সময় বাঁচাতে দৌড়াচ্ছে।’

কাজের দক্ষতার কারণে সহকর্মীরা তাঁকে ডাকেন ‘অর্ডারের রাজা’ নামে। টানা দীর্ঘ শিফটের পরও তিনি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুম নিশ্চিত করেন, যাতে পরদিন আবার পুরো শক্তিতে কাজ করতে পারেন।

কঠোর মিতব্যয়িতা

ঝাংয়ের সঞ্চয়ের সবচেয়ে বড় রহস্য তাঁর মিতব্যয়ী জীবনযাপন। প্রয়োজন ছাড়া তিনি কোনো খরচ করেন না। বাইরে খাওয়া, বিনোদন, ভ্রমণ—কোনো কিছুতেই ব্যয় করেন না তিনি। এমনকি চন্দ্র নববর্ষেও তিনি বাড়ি যান না। তখন শহরে থেকে উচ্চমূল্যের অর্ডার ডেলিভারি করেন। এই কঠোর জীবনযাপন ও পরিশ্রম মিলিয়ে পাঁচ বছরে তাঁর মোট আয় দাঁড়ায় প্রায় ১৪ লাখ ইউয়ান। প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে সঞ্চয় হয় ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান।

ঝাং জানান, তাঁর পরিবার এখনো জানে না যে তিনি ঋণ শোধ করে বড় অঙ্কের সঞ্চয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘একবার ব্যর্থ হয়েছি বলে থেমে থাকব না। ভবিষ্যতে আবার ব্যবসা শুরু করার পুঁজি হিসেবেই এ টাকা জমাচ্ছি।’

চীনের তরুণদের নতুন পেশা হিসেবে ডেলিভারি

অর্থনৈতিক ধাক্কা ও চাকরির বাজারের পরিবর্তনের মধ্যে চীনে ডেলিভারি পেশা দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। নিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ঝাওপিনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশটিতে ডেলিভারি কর্মীদের মধ্যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিধারীর হার দুই বছরে ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ শতাংশে। আয়ও অনেক অফিসকর্মীর চেয়ে বেশি। বেইজিং বা সাংহাইয়ের মতো বড় শহরে যেখানে সাধারণ একজন অফিসকর্মী মাসে গড়ে আয় করেন ৬ হাজার ইউয়ান, সেখানে ডেলিভারি ড্রাইভারদের গড় আয় মাসে ৭ হাজার ৩৫০ ইউয়ান পর্যন্ত। ব্যস্ত দিনে ঝাংয়ের মতো পরিশ্রমী ডেলিভারি কর্মীরা দিনে হাজার ইউয়ানের বেশি আয় করতে পারেন।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিমানের ডানায় আটকে গেল প্যারাস্যুট, অলৌকিকভাবে বাঁচলেন স্কাইডাইভার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৯
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডে গত ২০ সেপ্টেম্বর ঘটে বিস্ময়কর সেই দুর্ঘটনাটি। সেদিন প্রায় ৪ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন এক স্কাইডাইভার। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরোর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটির বিস্তারিত উঠে এসেছে।

এই বিষয়ে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডের টুলি এয়ারপোর্টের আকাশে ১৭ জন প্যারাস্যুটার একটি ‘সিক্সটিন-ওয়ে ফরমেশন জাম্পে’ অংশ নিচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথমজন যখন বিমান থেকে বের হচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর রিজার্ভ প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেলটি বিমানের উইং ফ্ল্যাপে আটকে যায়। এর ফলে মুহূর্তের মধ্যেই রিজার্ভ প্যারাস্যুট খুলে যায় এবং বাতাসের হঠাৎ টানে পেছনের দিকে ছিটকে গিয়ে বিমানের ডানায় ধাক্কা খান এবং আটকে যান ওই স্কাইডাইভার। এতে বিমানের ডানায় ও স্ট্যাবিলাইজারে গুরুতর ক্ষতি হয়।

প্যারাস্যুটের দড়ি স্ট্যাবিলাইজারের চারপাশে পেঁচিয়ে যাওয়ায় স্কাইডাইভার ঝুলন্ত অবস্থায় অচল হয়ে পড়েন। অন্য প্যারাস্যুটারেরা জাম্প সম্পন্ন করলেও দুজন দরজায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি দেখছিলেন। ঝুলে থাকা প্যারাস্যুটার জীবন বাঁচাতে তাঁর হুক নাইফ বের করে রিজার্ভ প্যারাস্যুটের ১১টি লাইন কেটে নিজেকে মুক্ত করেন। এরপর তিনি মূল প্যারাস্যুট খুলতে সক্ষম হন, যদিও রিজার্ভ প্যারাস্যুটের কিছু লাইন তখনো তাঁকে জড়িয়ে ছিল।

এদিকে পাইলট হঠাৎ বিমানটিকে ওপরের দিকে ঢলে যেতে এবং গতি কমে যেতে দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন বিমানটিতে ত্রুটি হয়েছে। পরে তাঁকে জানানো হয়, একজন স্কাইডাইভার বিমানের পেছনে ডানায় ঝুলে আছেন। এ অবস্থায় পাইলট জরুরি ‘মে ডে’ বার্তা পাঠান এবং প্রয়োজনে নিজেও বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।

অবশেষে ২,৫০০ ফুট উচ্চতায় এসে পাইলট বুঝতে পারেন, বিমানটি তাঁর নিয়ন্ত্রণেই আছে। ছোট-খাটো আঘাত নিয়ে নিরাপদেই অবতরণ করেন ওই স্কাইডাইভার এবং পাইলটও ক্ষতিগ্রস্ত বিমানটিকে নিরাপদে অবতরণ করাতে সক্ষম হন।

এই ঘটনার পর স্কাইডাইভারদের প্রতি এক সতর্কবার্তায় ‘অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরো’ বলেছে—বিমানের দরজার কাছে প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেল সম্পর্কে অতিরিক্ত সতর্ক হতে হবে এবং জরুরি অবস্থার জন্য হুক নাইফ অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। ব্যুরো আরও জানিয়েছে, বিমানের ওজন ও ভারসাম্য নির্ণয় স্কাইডাইভিং অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অতীতে এসব কারণে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সময়ের আগে অফিসে যাওয়ায় চাকরিচ্যুত নারী

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৯
কর্মক্ষেত্রে আস্থা ও প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
কর্মক্ষেত্রে আস্থা ও প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

নিয়ম শৃঙ্খলা বড়ই আজব জিনিস। যেমন, সময় মতো অফিসে উপস্থিত হওয়া নিয়মের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সময়ের আগে যদি নিয়মিত নিয়ম নেমে অফিস করতে শুরু করেন, আর তাতে যদি অফিস আপত্তি জানায়, সেটা আবার শৃঙ্খলা ভঙ্গের মধ্যে পড়তে পারবে! অন্তত স্পেনের একটি আদালত তাই বলছেন। নির্দিষ্ট সময়ে বা আগে অফিসে উপস্থিত হয়ে চাকরি হারিয়েছেন সে দেশের এক নারী কর্মী! চাকরি ফিরে পেতে তিনি গিয়েছিলেন আদালতে। আদালত জানিয়েছেন, তিনিই আসলে দোষ করেছেন!

স্পেনের আলিকান্তে অঞ্চলের একটি লজিস্টিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২২ বছর বয়সী এক নারী কর্মীর চাকরিচ্যুতি দেশটিতে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ, তিনি নিয়মিত নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিসে পৌঁছাতেন। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, এই আচরণ বরং কাজের প্রবাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল।

চাকরিচ্যুত হওয়ার পর সেই নারী আদালতে মামলা করেছেন। তথ্য অনুযায়ী, তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিনা অনুমতিতে সময়ের আগে অফিসে হাজিরা দেওয়ার এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত গাড়ি বিক্রি করার অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করে। তিনি এই বরখাস্তের বিরুদ্ধে ভ্যালেন্সিয়ার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আদালতে তাঁর যুক্তি, অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে আগে আসা প্রমাণসাপেক্ষ না হওয়ায় গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। ফলে প্রাথমিকভাবে বরখাস্তের রায় শ্রম আইন অনুযায়ী বৈধ ধরা হয়েছে।

নিয়মিত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট আগে অফিসে পৌঁছানো

নারী কর্মীর চাকরির চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল, তাঁর কর্মঘণ্টা শুরু হবে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে। কিন্তু তিনি প্রায় প্রতিদিনই নির্ধারিত সময়ের ৪৫ মিনিট আগে, অর্থাৎ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে অফিসে পৌঁছাতেন। এই অভ্যাস দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে। এতে তাঁর সুপারভাইজারদের মধ্যে ধীরে ধীরে বিরক্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি হতে থাকে। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি তাঁকে সতর্ক করার জন্য একাধিকবার মৌখিকভাবে এবং লিখিত নোটিশ জারি করে। নোটিশে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল, কর্মীকে অবশ্যই চুক্তিভিত্তিক সময় মেনে অফিসে উপস্থিত হতে হবে। তবে এসব সতর্কতা উপেক্ষা করে তিনি আগেভাগে অফিসে আসা চালিয়ে যান, যা কর্মক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়।

সতর্কতার পরও অভ্যাস না বদলানো

প্রতিষ্ঠানের একাধিক সতর্কতা অগ্রাহ্য করে তিনি আরও ১৯ বার সময়ের আগে অফিসে এসে হাজিরা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এমনকি তিনি ডিউটি শুরুর আগেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা অ্যাপ্লিকেশনে লগইন করতেও উদ্যোগ নেন, যা প্রতিষ্ঠানটির নিয়ম বিরোধী।

প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগ

আদালতে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তি দিয়েছে, আগেভাগে আসাকে ইতিবাচক মনে হলেও বাস্তবে তা দলগত কাজে কোনো সুফল আনছিল না। প্রতিষ্ঠানটি জানায়—

  • ওই সময় সহকর্মীদের প্রস্তুতি ছাড়া তাঁকে কোনো কাজ দেওয়া যেত না।
  • কাজের প্রবাহ নির্দিষ্ট সমন্বয়ের ওপর নির্ভরশীল।
  • তাঁর আগাম উপস্থিতি কর্মপ্রবাহের ভারসাম্য নষ্ট করছিল।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে আগাম কাজ শুরুর চেষ্টা দলগত সহযোগিতা ব্যাহত করছিল।

কর্মীর যুক্তি আদালতে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি

কর্মী দাবি করেন, অতিরিক্ত কাজের চাপ সামলাতে তাঁর বেশি সময় প্রয়োজন ছিল। তবে আদালতে এই দাবি প্রমাণ করার মতো কোনো নথি তিনি দিতে পারেননি। সময়ের আগে অফিসে আসার বাইরে তাঁর বিরুদ্ধে অফিসের অনুমতি ছাড়া প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত একটি গাড়ি বিক্রি করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে।

বিচারকের সিদ্ধান্ত

বিচারক রায়ে বলেন, কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য, নিয়মভঙ্গ এবং একই আচরণ বারবার পুনরাবৃত্তি স্প্যানিশ শ্রম আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়াই তাঁকে বরখাস্ত করা আইনসম্মত।

শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ আলবের্তো পায়া মন্তব্য করেন, এই রায় প্রমাণ করে, কর্মক্ষেত্রে আস্থা ও প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক

ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসার পর স্প্যানিশ সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘দেরি করলে শাস্তি, আগে এলে বরখাস্ত। তাহলে কর্মীর মূল্যায়ন কোথায়!’ অন্যদিকে কেউ কেউ প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলছেন, নির্ধারিত নিয়ম ভাঙা কোনোভাবেই প্রশংসনীয় নয়।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত