ইশতিয়াক হাসান
আকাশ থেকে কী পড়তে পারে? ভাবছেন বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, শীতের দেশ হলে তুষার—এই তো, আর কীই বা পড়ার আছে! আজও যেমন বৃষ্টি হয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু যদি বলি মাছ, মাকড়সা, টাকা এমনকি রক্তের মতো টকটকে লাল পদার্থও পড়তে পারে, তাহলে নিশ্চয় চোখ কপালে উঠবে। শুধু এগুলোই নয়, আকাশ থেকে পড়ার তালিকায় আছে আরও অনেক অদ্ভুত বস্তুও। তাহলে বরং লেখাটি পড়ুন আর অবাক হতে থাকুন।
মাছ
আকাশ থেকে মাছ পড়ার দৃশ্যটা দেখতে যতই অদ্ভুত লাগুক, এটা কিন্তু একেবারে অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। এমনকি এর পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। টর্নেডোর মতো একধরনের ঝড় সাগর, হ্রদের মতো জায়গা থেকে মাছসহ জলজ প্রাণী উঠিয়ে নেয়। তারপর ঝোড়ো বাতাসে ভাসিয়ে বেশ কিছুটা দূরে মাটিতে নিয়ে ফেলে। দৃশ্যটা দেখলে যে কারো মনে হবে আকাশ থেকে মাছবৃষ্টি হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশেই এভাবে আকাশ থেকে মাছ পড়ার রেকর্ড আছে। কখনো কখনো এভাবে পড়া মাছ খাওয়ার উপযোগী হলে যে এলাকায় ঘটনা ঘটে, সেখানকার মানুষ রীতিমতো ডাঙায় মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠে। হন্ডুরাসের ছোট্ট গ্রাম ইয়রোতে এ ধরনের মাছবৃষ্টির ঘটনা এত বেশি যে, প্রতি বছর একবার ‘লুভিয়া দ্য পেসেস’ বা মৎস্যবৃষ্টি উৎসব পালন করতে পারেন এখানকার বাসিন্দারা।
ব্যাঙ
মাছের মতো ঝড়ে ব্যাঙ উড়িয়ে এনে ফেলার ঘটনাও ঘটে। আধুনিক কালে তো বটেই, প্রাচীন কালেও এমন কাণ্ডের নজির আছে। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক হেরাক্লিডস লেমবাস লেখেন, আকাশ থেকে ব্যাঙ পড়ে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি-ঘর এই প্রাণীতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ২০০৫ সালে সার্বায়ার ওডজাসির বাসিন্দারা ঝড় ও মেঘের মধ্য থেকে হাজার হাজার ছোট ছোট ব্যাঙ পড়তে দেখেন তাঁদের শহরে। কখনো অনেক ওপর থেকে পড়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও অনেক সময়ই এদের নতুন বাসস্থানে লাফিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। সার্বিয়ার গ্রামবাসী জানান, পতনের সঙ্গে সঙ্গে কোনো জলাধারের খোঁজে লাফিয়ে লাফিয়ে সরে পড়ে ব্যাঙের দল।
টাকা
শুনতে যতই অদ্ভুত লাগুক, ইতিহাসে টাকার বৃষ্টির ঘটনা একেবারে কম নয়। এর মধ্যে কয়েকটি আবার সাম্প্রতিক।
১৯৫৭ সালে ফ্রান্সের ছোট্ট শহর বোর্গেসে এক হাজার ফ্রাংকের কয়েক হাজার নোট আকাশ থেকে পড়তে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর শিকাগোতে এভাবে এক ডালারের কয়েক শ নোট আকাশ থেকে পড়তে দেখা যায়।
১৯৬৮ সালের ৩ ডিসেম্বর। ইংল্যান্ডের রামসগেটের এক দোকানের সামনে হঠাৎ ওপর থেকে স্থানীয় মুদ্রা পেনি পড়তে থাকে। দোকানের এক ক্যাশিয়ার দাবি করেন, প্রায় পনেরো মিনিট ধরে একটা-দুটো করে এমন পেনির পতন অব্যাহত ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার, আশপাশে কোনো উঁচু দালান ছিল না, তেমনি উড়ে যেতে দেখা যায়নি কোনো বিমানকেও।
২০১৫ সালে কয়েক লাখ ডলারের সমমূল্যের আরব আমিরাতের দিরহাম পড়তে দেখা যায় কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটিতে। তবে এই টাকা পড়ার কোনো ঘটনারই সে রকম কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
মাকড়সা
মাকড়সা বৃষ্টির ঘটনাও আছে। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এবং আরও সাম্প্রতিক সময়ে বিবেচনা করলে ২০১৯ সালে ব্রাজিলে এমন কাণ্ড ঘটেছে। তবে মাছ বা ব্যাঙের মতো মাকড়সাদের বাড়িছাড়া হওয়ার পেছনে দায়ী প্রবল ঝড় নয়। মাকড়সা বৃষ্টির কারণ ‘বেলুনিং’ নামের এক বিশেষ প্রক্রিয়া। মাকড়সারা জাল তৈরি করে বাতাসে। আসলে তারা এভাবে ঝোড়ো বাতাসের নাগাল পেয়ে নতুন জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করে। সেক্ষেত্রে মাকড়সা বৃষ্টি আরও বেশি সাধারণ ঘটনা হওয়ার কথা ছিল, তাই তো ভাবছেন? তবে ঘটনা হলো, একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে মাকড়সা ‘বেলুনিং’ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় না। যখন একসঙ্গে অনেক মাকড়সা এভাবে জাল তৈরি করে বাতাসের সাহায্য পেতে, তখনই কেবল মাকড়সা বৃষ্টির দেখা মেলে।
ইগুয়ানা
আকাশ থেকে ইগুয়ানা পতনকে মাছ ও ব্যাঙ পড়ার সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। এটা আসলে আরও অনেক বেশি অদ্ভুত এক ব্যাপার। দক্ষিণ ফ্লোরিডায় ২০১৮ সালের শীতে যে বম্ব সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় (সাধারণত শীতকালেই এ ঝড় হয়) হয়, সেটার একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ওই সময় ইগুয়ানা বৃষ্টি হয়। ব্যাপারটা হলো, এ সময় তাপমাত্রা এতটা কমে যায় যে, শীতল রক্তের প্রাণীগুলো বেঁচে থাকলেও শরীরের কল-কবজাগুলো সাময়িকভাবে কর্মক্ষমতা হারায়। অর্থাৎ কোনোভাবেই আর যে গাছে ছিল তার ডালপালা আঁকড়ে ধরে আটকে থাকতে পারেনি। গাছের ওপর থেকে টপ টপ করে মাটিতে পড়তে থাকে।
মাংস
১৮৭৬ সালের মার্চের ৩ তারিখ আমেরিকার কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের অলিম্পিয়া স্প্রিংসে মাংসবৃষ্টির ঘটনা ঘটে। দুই থেকে চার বর্গ ইঞ্চির মাংসের টুকরোগুলো অ্যালেন ক্রাউচ নামের এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনের উঠানে পড়ে। ওই সময় ঘটনাস্থলে যেসব মানুষ জড়ো হন, তাঁদের দুজন সাহস করে ওই মাংস চেখেও দেখেন। অনেকটা ছাগলের মাংসের মতো লেগেছিল এর স্বাদ তাঁদের কাছে। তবে পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধারণা করা হয়, এগুলো ঘোড়ার মাংস। এ ঘটনার ব্যাখ্যা হিসেবে যেসব তত্ত্ব সামনে আসে, এর মধ্যে সবচেয়ে যুক্তিসংগত হলো বাজ পাখিদের একটা দল এ ঘটনার ঠিক আগেই মরা ঘোড়ার মাংস খেয়েছিল। পরে উড়ে যাওয়ার সময় একটা বাজ সদ্য খাওয়া মাংস উগড়ে দেয়, বাকিগুলো অনুসরণ করে তাকে।
গলফ বল
গলফ বলের আকারের শিলাবৃষ্টির কথা শুনে থাকতে পারেন, তাই বলে সত্যি সত্যি গলফ বল? ১৯৬৯ সালে ফ্লোরিডার পান্টা গর্ডায় এভাবে কয়েক ডজন গলফ বল ওপর থেকে পড়ার খবর আসে সংবাদমাধ্যমে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, স্থানীয় কোনো গলফ কোর্স থেকেই গলফ বল হারায়নি এ সময়। ওই ঘটনার পুরোপুরি রহস্যভেদ করা সম্ভব হয়নি। তবে বেশির ভাগের ধারণা কোনো এক জায়গায় খেলার সময় গলফারদের এলোমেলো শটে বেশ কিছু বল পানিতে গিয়ে পড়ে। এগুলোই ঝড়ে এনে ফেলে ডাঙায়, মানে মাছ আর ব্যাঙকে যেভাবে ফেলেছে আরকি!
রক্ত নয়!
উত্তর-পশ্চিম স্পেনের জামোরা শহরে রক্তবৃষ্টির একটা ঘটনা ঘটেছিল। অন্তত আকাশ থেকে পড়া লাল রঙের ওই তরল রক্তের মতোই ছিল। বিষয়টি জামোরার বাসিন্দাদের রীতিমতো হতভম্ব করে দেয়। অবশ্য পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণায় বেরিয়ে আসে, লাল রঙের ওই তরল রক্ত নয়, বরং প্রাকৃতিক এক উপাদান। লাল রং এসেছে আণুবীক্ষনিক একধরনের উদ্ভিদ থেকে। এর রেনু বাতাসে ভেসে মেঘের স্পর্শ পায়। পরে লাল বৃষ্টি হয়ে ঝরে। তবে এই ব্যাখ্যায় একটা ঝামেলা ছিল, সেটি হলো, এই উদ্ভিদ মোটেই স্পেনের এই অঞ্চলের নয়। জামোরার ওপরে কীভাবে এগুলো এলো, সেই রহস্য অবশ্য সমাধান করা সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানীদের পক্ষে।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট, লিস্টভার্স, লাইভসায়েন্স, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন
আকাশ থেকে কী পড়তে পারে? ভাবছেন বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, শীতের দেশ হলে তুষার—এই তো, আর কীই বা পড়ার আছে! আজও যেমন বৃষ্টি হয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু যদি বলি মাছ, মাকড়সা, টাকা এমনকি রক্তের মতো টকটকে লাল পদার্থও পড়তে পারে, তাহলে নিশ্চয় চোখ কপালে উঠবে। শুধু এগুলোই নয়, আকাশ থেকে পড়ার তালিকায় আছে আরও অনেক অদ্ভুত বস্তুও। তাহলে বরং লেখাটি পড়ুন আর অবাক হতে থাকুন।
মাছ
আকাশ থেকে মাছ পড়ার দৃশ্যটা দেখতে যতই অদ্ভুত লাগুক, এটা কিন্তু একেবারে অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। এমনকি এর পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। টর্নেডোর মতো একধরনের ঝড় সাগর, হ্রদের মতো জায়গা থেকে মাছসহ জলজ প্রাণী উঠিয়ে নেয়। তারপর ঝোড়ো বাতাসে ভাসিয়ে বেশ কিছুটা দূরে মাটিতে নিয়ে ফেলে। দৃশ্যটা দেখলে যে কারো মনে হবে আকাশ থেকে মাছবৃষ্টি হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশেই এভাবে আকাশ থেকে মাছ পড়ার রেকর্ড আছে। কখনো কখনো এভাবে পড়া মাছ খাওয়ার উপযোগী হলে যে এলাকায় ঘটনা ঘটে, সেখানকার মানুষ রীতিমতো ডাঙায় মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠে। হন্ডুরাসের ছোট্ট গ্রাম ইয়রোতে এ ধরনের মাছবৃষ্টির ঘটনা এত বেশি যে, প্রতি বছর একবার ‘লুভিয়া দ্য পেসেস’ বা মৎস্যবৃষ্টি উৎসব পালন করতে পারেন এখানকার বাসিন্দারা।
ব্যাঙ
মাছের মতো ঝড়ে ব্যাঙ উড়িয়ে এনে ফেলার ঘটনাও ঘটে। আধুনিক কালে তো বটেই, প্রাচীন কালেও এমন কাণ্ডের নজির আছে। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক হেরাক্লিডস লেমবাস লেখেন, আকাশ থেকে ব্যাঙ পড়ে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি-ঘর এই প্রাণীতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ২০০৫ সালে সার্বায়ার ওডজাসির বাসিন্দারা ঝড় ও মেঘের মধ্য থেকে হাজার হাজার ছোট ছোট ব্যাঙ পড়তে দেখেন তাঁদের শহরে। কখনো অনেক ওপর থেকে পড়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও অনেক সময়ই এদের নতুন বাসস্থানে লাফিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। সার্বিয়ার গ্রামবাসী জানান, পতনের সঙ্গে সঙ্গে কোনো জলাধারের খোঁজে লাফিয়ে লাফিয়ে সরে পড়ে ব্যাঙের দল।
টাকা
শুনতে যতই অদ্ভুত লাগুক, ইতিহাসে টাকার বৃষ্টির ঘটনা একেবারে কম নয়। এর মধ্যে কয়েকটি আবার সাম্প্রতিক।
১৯৫৭ সালে ফ্রান্সের ছোট্ট শহর বোর্গেসে এক হাজার ফ্রাংকের কয়েক হাজার নোট আকাশ থেকে পড়তে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর শিকাগোতে এভাবে এক ডালারের কয়েক শ নোট আকাশ থেকে পড়তে দেখা যায়।
১৯৬৮ সালের ৩ ডিসেম্বর। ইংল্যান্ডের রামসগেটের এক দোকানের সামনে হঠাৎ ওপর থেকে স্থানীয় মুদ্রা পেনি পড়তে থাকে। দোকানের এক ক্যাশিয়ার দাবি করেন, প্রায় পনেরো মিনিট ধরে একটা-দুটো করে এমন পেনির পতন অব্যাহত ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার, আশপাশে কোনো উঁচু দালান ছিল না, তেমনি উড়ে যেতে দেখা যায়নি কোনো বিমানকেও।
২০১৫ সালে কয়েক লাখ ডলারের সমমূল্যের আরব আমিরাতের দিরহাম পড়তে দেখা যায় কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটিতে। তবে এই টাকা পড়ার কোনো ঘটনারই সে রকম কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
মাকড়সা
মাকড়সা বৃষ্টির ঘটনাও আছে। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এবং আরও সাম্প্রতিক সময়ে বিবেচনা করলে ২০১৯ সালে ব্রাজিলে এমন কাণ্ড ঘটেছে। তবে মাছ বা ব্যাঙের মতো মাকড়সাদের বাড়িছাড়া হওয়ার পেছনে দায়ী প্রবল ঝড় নয়। মাকড়সা বৃষ্টির কারণ ‘বেলুনিং’ নামের এক বিশেষ প্রক্রিয়া। মাকড়সারা জাল তৈরি করে বাতাসে। আসলে তারা এভাবে ঝোড়ো বাতাসের নাগাল পেয়ে নতুন জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করে। সেক্ষেত্রে মাকড়সা বৃষ্টি আরও বেশি সাধারণ ঘটনা হওয়ার কথা ছিল, তাই তো ভাবছেন? তবে ঘটনা হলো, একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে মাকড়সা ‘বেলুনিং’ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় না। যখন একসঙ্গে অনেক মাকড়সা এভাবে জাল তৈরি করে বাতাসের সাহায্য পেতে, তখনই কেবল মাকড়সা বৃষ্টির দেখা মেলে।
ইগুয়ানা
আকাশ থেকে ইগুয়ানা পতনকে মাছ ও ব্যাঙ পড়ার সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। এটা আসলে আরও অনেক বেশি অদ্ভুত এক ব্যাপার। দক্ষিণ ফ্লোরিডায় ২০১৮ সালের শীতে যে বম্ব সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় (সাধারণত শীতকালেই এ ঝড় হয়) হয়, সেটার একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ওই সময় ইগুয়ানা বৃষ্টি হয়। ব্যাপারটা হলো, এ সময় তাপমাত্রা এতটা কমে যায় যে, শীতল রক্তের প্রাণীগুলো বেঁচে থাকলেও শরীরের কল-কবজাগুলো সাময়িকভাবে কর্মক্ষমতা হারায়। অর্থাৎ কোনোভাবেই আর যে গাছে ছিল তার ডালপালা আঁকড়ে ধরে আটকে থাকতে পারেনি। গাছের ওপর থেকে টপ টপ করে মাটিতে পড়তে থাকে।
মাংস
১৮৭৬ সালের মার্চের ৩ তারিখ আমেরিকার কেনটাকি অঙ্গরাজ্যের অলিম্পিয়া স্প্রিংসে মাংসবৃষ্টির ঘটনা ঘটে। দুই থেকে চার বর্গ ইঞ্চির মাংসের টুকরোগুলো অ্যালেন ক্রাউচ নামের এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনের উঠানে পড়ে। ওই সময় ঘটনাস্থলে যেসব মানুষ জড়ো হন, তাঁদের দুজন সাহস করে ওই মাংস চেখেও দেখেন। অনেকটা ছাগলের মাংসের মতো লেগেছিল এর স্বাদ তাঁদের কাছে। তবে পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধারণা করা হয়, এগুলো ঘোড়ার মাংস। এ ঘটনার ব্যাখ্যা হিসেবে যেসব তত্ত্ব সামনে আসে, এর মধ্যে সবচেয়ে যুক্তিসংগত হলো বাজ পাখিদের একটা দল এ ঘটনার ঠিক আগেই মরা ঘোড়ার মাংস খেয়েছিল। পরে উড়ে যাওয়ার সময় একটা বাজ সদ্য খাওয়া মাংস উগড়ে দেয়, বাকিগুলো অনুসরণ করে তাকে।
গলফ বল
গলফ বলের আকারের শিলাবৃষ্টির কথা শুনে থাকতে পারেন, তাই বলে সত্যি সত্যি গলফ বল? ১৯৬৯ সালে ফ্লোরিডার পান্টা গর্ডায় এভাবে কয়েক ডজন গলফ বল ওপর থেকে পড়ার খবর আসে সংবাদমাধ্যমে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, স্থানীয় কোনো গলফ কোর্স থেকেই গলফ বল হারায়নি এ সময়। ওই ঘটনার পুরোপুরি রহস্যভেদ করা সম্ভব হয়নি। তবে বেশির ভাগের ধারণা কোনো এক জায়গায় খেলার সময় গলফারদের এলোমেলো শটে বেশ কিছু বল পানিতে গিয়ে পড়ে। এগুলোই ঝড়ে এনে ফেলে ডাঙায়, মানে মাছ আর ব্যাঙকে যেভাবে ফেলেছে আরকি!
রক্ত নয়!
উত্তর-পশ্চিম স্পেনের জামোরা শহরে রক্তবৃষ্টির একটা ঘটনা ঘটেছিল। অন্তত আকাশ থেকে পড়া লাল রঙের ওই তরল রক্তের মতোই ছিল। বিষয়টি জামোরার বাসিন্দাদের রীতিমতো হতভম্ব করে দেয়। অবশ্য পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণায় বেরিয়ে আসে, লাল রঙের ওই তরল রক্ত নয়, বরং প্রাকৃতিক এক উপাদান। লাল রং এসেছে আণুবীক্ষনিক একধরনের উদ্ভিদ থেকে। এর রেনু বাতাসে ভেসে মেঘের স্পর্শ পায়। পরে লাল বৃষ্টি হয়ে ঝরে। তবে এই ব্যাখ্যায় একটা ঝামেলা ছিল, সেটি হলো, এই উদ্ভিদ মোটেই স্পেনের এই অঞ্চলের নয়। জামোরার ওপরে কীভাবে এগুলো এলো, সেই রহস্য অবশ্য সমাধান করা সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানীদের পক্ষে।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট, লিস্টভার্স, লাইভসায়েন্স, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন
ওনলিফ্যানস মডেল বনি ব্লু’র চাঞ্চল্যকর দাবি ইন্টারনেটে আলোচনার ঝড় তুলেছে। ২৫ বছর বয়সী এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর জানিয়েছেন, তিনি ১২ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৭ জন পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।
৩ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বসবাসকারী এক নারী সম্প্রতি ৫০ হাজার ডলারের একটি লটারি জিতেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থ ৬০ লাখ টাকার বেশি। মজার বিষয় হলো, যে সংখ্যা ব্যবহার করে এই লটারি বিজয়, সেই সংখ্যা স্বপ্নে পেয়েছিলেন ওই নারী!
৭ দিন আগেদক্ষিণ আফ্রিকান একটি নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান সেখানকার একটি বাড়ি থেকে বিপৎসংকেত বা সতর্কতামূলক অ্যালার্ম পায়। প্রতিষ্ঠানটি দেরি না করে সেখানে একটি দল পাঠায়। তখনই ফাঁস হয় রহস্য। এই অ্যালার্ম বাজিয়েছিল ওই বাড়ির বাসিন্দারা নয়, বরং একটি বানর।
২০ দিন আগেমাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে বাসা। রাত হয়ে যাওয়ায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবারই ভরসা। ২০ মিনিটেই চলে যাওয়া যায়। তবে যানজটে সময় লাগল ২ ঘণ্টা। গন্তব্যে পৌঁছে সোফি দেখলেন ৫ কিলোমিটার রাস্তার জন্য তাঁর বিল এসেছে ৩২১ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮১৯৭ টাকা)। উবার বুক করার সময় দেখানো প্রাথমিক বিলের প্রায় চার গুণ!
২২ ডিসেম্বর ২০২৪