ইশতিয়াক হাসান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ছোট্ট এক মরু শহর বলতে পারেন একে। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে গাড়িতে চেপে গেলে সময় লাগবে ঘণ্টা দুয়েক। প্রথম দর্শনে আপনার মনে হতে পারে, সময় এখানে উনিশ শতকে থমকে গেছে। আর ওয়েস্টার্ন বই বা চলচ্চিত্রের কোনো দৃশ্যের অংশ হয়ে গেছেন আপনি। সত্যি বুনো পশ্চিমের ছবির সেট হিসেবেই শহরটির গোড়াপত্তন। তবে এখন স্থায়ীভাবেও বসবাস করছে মানুষ। বলা চলে একটি সত্যিকারের শহরে পরিণত হয়েছে এটি।
পাইওনিয়ার টাউন নামের শহরটিতে ঢুকলে পুরোনো সেই বুনো পশ্চিমে যেমন ছিল তেমন সেলুন, আস্তাবল, হোটেল, রেস্তোরাঁয় চোখ আটকে যাবে আপনার। ধুলো মলিন কেবিনগুলো অলংকৃত করছে গরুর খুলি। এখানে-সেখানে শোভা যাচ্ছে ক্যাকটাসগাছ। প্রতিটি বারান্দায় পুরোনো ব্যারেল এবং রকিং চেয়ার নজর কাড়বে।
এবার শহরটির গোড়াপত্তন হলো কীভাবে তা বরং জেনে নেই। ১৯৪৬ সালের ঘটনা। ওয়েস্টার্ন ঘরানার তথা বুনো পশ্চিমের সিনেমার তখন রমরমা। এদিকে রয় রজার্স, ডিক কার্টিস, রাসেল হেইডেনসহ হলিউডের কিংবদন্তিরা এ ধরনের চলচ্চিত্রের শুটিং করার জন্য দূর-দূরান্তে ভ্রমণ করতে করতে ক্লান্ত। হলিউড থেকে খুব দূরে নয় এমন একটি জায়গা দরকার ছিল তাঁদের।
কাজেই বুনো পশ্চিমের সিনেমার একটি সেট তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার মরুভূমিতে। যেখানে পরিচালকেরা সিনেমার শুটিং করার পাশাপাশি অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং ক্রুরা থাকতেও পারবেন। তাঁরা ইয়াকো ভ্যালি থেকে উত্তর-পশ্চিমে ৪ মাইল দূরত্বে এবং লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে গাড়িতে দুই ঘণ্টা মতো লাগে এমন একটি মনের মতো জায়গা খুঁজে পেয়ে গেলেন। এটিকে উনিশ শতকের পশ্চিমের শহরে রূপ দেওয়ার জন্য নানা ধরনের স্থাপনা তৈরি শুরু করলেন। শহরটির নাম ছিল পাইওনিয়ার টাউন।
প্রকল্পটি দারুণ সাফল্য পায়। বুনো পশ্চিম নিয়ে একের পর এক চলচ্চিত্র তৈরি হতে লাগল এখানে। বিভিন্ন টিভি শোর দৃশ্যায়নেও কাজে লাগল। তবে ধীরে ধীরে হলিউডের ছবির বাজারে ওয়েস্টার্ন ছবির চাহিদা কমে আসে। পাইওনিয়ার টাউনে ছবির শুটিংও সেই সঙ্গে কমতে থাকে। তবে শহরটি নতুন একটা দিক এ সময় বেরিয়ে আসে, সেটি পর্যটনকেন্দ্র। উনিশ শতকের সেই বুনো পশ্চিমকে নিজ চোখে দেখতে অনেকে পর্যটকই আসতে লাগলেন এখানে।
তবে ধীরে ধীরে আরেকটি ব্যাপার ঘটতে থাকে। আগে শুধু হলিউডের ছবির পরিচালক, অভিনেতারা এখানে শুটিংয়ের প্রয়োজনে থাকতেন। আর থাকতেন পর্যটকেরা। কিন্তু গত কয়েক বছরে আরেক ধরনের মানুষ এখানে আসতে শুরু করেছেন। তাঁরা বড় বড় শহরের শিল্পী, উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশা মানুষেরা। একঘেয়ে, ক্লান্তিকর জীবন থেকে বাঁচতে এখানে এসে কেউ কেউ পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন। সবাই যে ঠিক বুনো পশ্চিমের আদলে বানানো সেই শহরে থাকা শুরু করলেন তা নয়। কেউ কেউ আশপাশের জায়গাও বেছে নিলেন।
এখানে প্রথম বসতি স্থাপনকারীদের একজন কানাডার এক চিত্র পরিচালক জুলিয়ান টি. পিন্ডার। ২০১৪ সালে স্ত্রীসহ এখানে বসতি গাড়েন তিনি। এই তালিকায় আছেন নিউইয়র্কের বাড়ি ছেড়ে এখানে থাকা পরিবার সমেত শুরু করা বেলজিয়ামে জন্ম নেওয়া এক অলংকার নকশাকারীও। আর এভাবেই সিনেমার শুটিংয়ের এক সেট থেকে পাইওনিয়ার টাউন রূপ নিল সত্যিকারের শহরে। আর এতে এখানকার চারপাশের জমি হু হু করে বিক্রি হতে লাগল। বর্তমানে এই শহরটিতে পাঁচ শর বেশি মানুষের বাস বলে জানা যায়।
শহরটিতে আগের মতো না হলেও এখনো বিভিন্ন ছবির শুটিং হয়। এখন যে দুই শতাধিক চলচ্চিত্রের সেট হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়েছে এর মধ্যে আছে দ্য সিসকো কিড (১৯৫০-৫৬), সিলভার ক্যানিয়ন (১৯৫১), বাফেলো বিল, জুনিয়ার (১৯৫৫-৫৬), এনি ওকলি (১৯৫৪-৫৭), দ্য ট্র্যাপার (২০১৭), দ্য হার্ট অব দ্য ওয়াইল্ড বাঞ্চ (২০২২) প্রভৃতি।
এখন শহরটিতে রেকর্ডিং স্টুডিও পোশাকের দোকান, চমৎকার স্বাদের খাবারের রেস্তোরাঁসহ অনেক কিছুই পাবেন। সবার চেয়ে বড় কথা, বুনো পশ্চিমের মানে ওয়েস্টার্ন বই বা ছবির ভক্ত হলে এবং মার্কিন মুল্লুকে ভ্রমণে গেলে শহরটিতে যাওয়া আপনার জন্য অবশ্য কর্তব্য! আগেই বলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলস থেকে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় জায়গাটিতে পৌঁছাতে পারবেন। এ ছাড়া জশুয়া ট্রি জাতীয় উদ্যান থেকে গাড়িতে লাগবে মোটে পনেরো মিনিট।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, এটলাস অবসকিউরা, আইএমডিবি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ছোট্ট এক মরু শহর বলতে পারেন একে। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে গাড়িতে চেপে গেলে সময় লাগবে ঘণ্টা দুয়েক। প্রথম দর্শনে আপনার মনে হতে পারে, সময় এখানে উনিশ শতকে থমকে গেছে। আর ওয়েস্টার্ন বই বা চলচ্চিত্রের কোনো দৃশ্যের অংশ হয়ে গেছেন আপনি। সত্যি বুনো পশ্চিমের ছবির সেট হিসেবেই শহরটির গোড়াপত্তন। তবে এখন স্থায়ীভাবেও বসবাস করছে মানুষ। বলা চলে একটি সত্যিকারের শহরে পরিণত হয়েছে এটি।
পাইওনিয়ার টাউন নামের শহরটিতে ঢুকলে পুরোনো সেই বুনো পশ্চিমে যেমন ছিল তেমন সেলুন, আস্তাবল, হোটেল, রেস্তোরাঁয় চোখ আটকে যাবে আপনার। ধুলো মলিন কেবিনগুলো অলংকৃত করছে গরুর খুলি। এখানে-সেখানে শোভা যাচ্ছে ক্যাকটাসগাছ। প্রতিটি বারান্দায় পুরোনো ব্যারেল এবং রকিং চেয়ার নজর কাড়বে।
এবার শহরটির গোড়াপত্তন হলো কীভাবে তা বরং জেনে নেই। ১৯৪৬ সালের ঘটনা। ওয়েস্টার্ন ঘরানার তথা বুনো পশ্চিমের সিনেমার তখন রমরমা। এদিকে রয় রজার্স, ডিক কার্টিস, রাসেল হেইডেনসহ হলিউডের কিংবদন্তিরা এ ধরনের চলচ্চিত্রের শুটিং করার জন্য দূর-দূরান্তে ভ্রমণ করতে করতে ক্লান্ত। হলিউড থেকে খুব দূরে নয় এমন একটি জায়গা দরকার ছিল তাঁদের।
কাজেই বুনো পশ্চিমের সিনেমার একটি সেট তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার মরুভূমিতে। যেখানে পরিচালকেরা সিনেমার শুটিং করার পাশাপাশি অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং ক্রুরা থাকতেও পারবেন। তাঁরা ইয়াকো ভ্যালি থেকে উত্তর-পশ্চিমে ৪ মাইল দূরত্বে এবং লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে গাড়িতে দুই ঘণ্টা মতো লাগে এমন একটি মনের মতো জায়গা খুঁজে পেয়ে গেলেন। এটিকে উনিশ শতকের পশ্চিমের শহরে রূপ দেওয়ার জন্য নানা ধরনের স্থাপনা তৈরি শুরু করলেন। শহরটির নাম ছিল পাইওনিয়ার টাউন।
প্রকল্পটি দারুণ সাফল্য পায়। বুনো পশ্চিম নিয়ে একের পর এক চলচ্চিত্র তৈরি হতে লাগল এখানে। বিভিন্ন টিভি শোর দৃশ্যায়নেও কাজে লাগল। তবে ধীরে ধীরে হলিউডের ছবির বাজারে ওয়েস্টার্ন ছবির চাহিদা কমে আসে। পাইওনিয়ার টাউনে ছবির শুটিংও সেই সঙ্গে কমতে থাকে। তবে শহরটি নতুন একটা দিক এ সময় বেরিয়ে আসে, সেটি পর্যটনকেন্দ্র। উনিশ শতকের সেই বুনো পশ্চিমকে নিজ চোখে দেখতে অনেকে পর্যটকই আসতে লাগলেন এখানে।
তবে ধীরে ধীরে আরেকটি ব্যাপার ঘটতে থাকে। আগে শুধু হলিউডের ছবির পরিচালক, অভিনেতারা এখানে শুটিংয়ের প্রয়োজনে থাকতেন। আর থাকতেন পর্যটকেরা। কিন্তু গত কয়েক বছরে আরেক ধরনের মানুষ এখানে আসতে শুরু করেছেন। তাঁরা বড় বড় শহরের শিল্পী, উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশা মানুষেরা। একঘেয়ে, ক্লান্তিকর জীবন থেকে বাঁচতে এখানে এসে কেউ কেউ পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন। সবাই যে ঠিক বুনো পশ্চিমের আদলে বানানো সেই শহরে থাকা শুরু করলেন তা নয়। কেউ কেউ আশপাশের জায়গাও বেছে নিলেন।
এখানে প্রথম বসতি স্থাপনকারীদের একজন কানাডার এক চিত্র পরিচালক জুলিয়ান টি. পিন্ডার। ২০১৪ সালে স্ত্রীসহ এখানে বসতি গাড়েন তিনি। এই তালিকায় আছেন নিউইয়র্কের বাড়ি ছেড়ে এখানে থাকা পরিবার সমেত শুরু করা বেলজিয়ামে জন্ম নেওয়া এক অলংকার নকশাকারীও। আর এভাবেই সিনেমার শুটিংয়ের এক সেট থেকে পাইওনিয়ার টাউন রূপ নিল সত্যিকারের শহরে। আর এতে এখানকার চারপাশের জমি হু হু করে বিক্রি হতে লাগল। বর্তমানে এই শহরটিতে পাঁচ শর বেশি মানুষের বাস বলে জানা যায়।
শহরটিতে আগের মতো না হলেও এখনো বিভিন্ন ছবির শুটিং হয়। এখন যে দুই শতাধিক চলচ্চিত্রের সেট হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়েছে এর মধ্যে আছে দ্য সিসকো কিড (১৯৫০-৫৬), সিলভার ক্যানিয়ন (১৯৫১), বাফেলো বিল, জুনিয়ার (১৯৫৫-৫৬), এনি ওকলি (১৯৫৪-৫৭), দ্য ট্র্যাপার (২০১৭), দ্য হার্ট অব দ্য ওয়াইল্ড বাঞ্চ (২০২২) প্রভৃতি।
এখন শহরটিতে রেকর্ডিং স্টুডিও পোশাকের দোকান, চমৎকার স্বাদের খাবারের রেস্তোরাঁসহ অনেক কিছুই পাবেন। সবার চেয়ে বড় কথা, বুনো পশ্চিমের মানে ওয়েস্টার্ন বই বা ছবির ভক্ত হলে এবং মার্কিন মুল্লুকে ভ্রমণে গেলে শহরটিতে যাওয়া আপনার জন্য অবশ্য কর্তব্য! আগেই বলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলস থেকে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় জায়গাটিতে পৌঁছাতে পারবেন। এ ছাড়া জশুয়া ট্রি জাতীয় উদ্যান থেকে গাড়িতে লাগবে মোটে পনেরো মিনিট।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, এটলাস অবসকিউরা, আইএমডিবি
৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এক ফ্লাইটের যাত্রীরা অপর এক যাত্রীকে মাঝপথে চেপে ধরে হাত-পা টেপ দিয়ে আটকে দেন। অবশ্য ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি উড়োজাহাজটি ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
১ দিন আগেবিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
৩ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
৩ দিন আগে