Ajker Patrika

সব ঠিক থাকলে আজ ফিরছেন সুনিতা

ফিচার ডেস্ক
সুনিতা উইলিয়ামস। ছবি: সংগৃহীত
সুনিতা উইলিয়ামস। ছবি: সংগৃহীত

মাত্র কয়েক দিনের মিশনে গিয়ে গুনে গুনে ২৮৬ দিন মহাকাশে কাটাতে হয়েছে দুই মহাকাশচারীকে। এই দীর্ঘ দিন মহাকাশে কাটানো কোনো পরিকল্পিত বিষয় ছিল না। ফলে পুরো সময় মহাকাশচারীদের ভয়াবহ ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ দুজন মহাকাশচারী হলেন সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর।

গত জুন মাস থেকে মহাকাশে আটকে থাকা এই দুই মহাকাশচারীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে নাসা এবং স্পেসএক্স আইএসএসে একটি ক্রু-১০ মিশন চালু করে। ১৪ মার্চ স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযানটি ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি মহাকাশকেন্দ্র থেকে যাত্রা শুরু করে নতুন চার নভোচারী নিয়ে। ১৬ মার্চ তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে পৌঁছান। নভোচারী অদলবদলের মাধ্যমে ক্রু-১০-এর ওই ফ্লাইটে করে ১৮ মার্চ ফেরার যাত্রা শুরু করেন সুনিতা ও বুচ। নাসা জানিয়েছে, আজ ভোরে স্প্ল্যাশডাউন পদ্ধতির মাধ্যমে প্যারাসুটের সাহায্যে ফ্লোরিডার গালফ অব মেক্সিকোয় অবতরণ করবেন সুনিতা উইলিয়ামসরা।

কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে সেপ্টেম্বরেই সুনিতা ও বুচকে রেখে স্টার লাইনার পৃথিবীতে চলে আসতে বাধ্য হয়। এদিকে দুই নভোচারীকে সেখানে নতুন অভিযানের অংশ হিসেবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পূর্ববর্তী দুটি মহাকাশ মিশনের অভিজ্ঞতা ছিল মহাকাশচারী সুনিতার। তিনি স্টেশনটির কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এদিকে নাসা ও স্পেসএক্স আলোচনা করতে থাকে কীভাবে তাঁদের ফিরিয়ে আনা যায়। এদিকে মাঝে মাঝেই গণমাধ্যমে তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। তাঁরা কেমন আছেন, কেমন লাগছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে সেখান থেকেই সুনিতা বলেন, ‘মনে করি না যে আমি আবদ্ধ। মনে করি না আমরা এখানে আটকে আছি।’ সুনিতা আরও জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে খাবার আছে, কাপড় আছে। মহাকাশ স্টেশনের ক্ষতি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ভালো থাকবেন। সুনিতাদের ফেরার প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। মহাকাশচারীরা জানিয়েছেন, ভারতীয় সময় ঠিক রাত ২টা বেজে ১৫ মিনিটে শুরু হবে স্প্ল্যাশডাউন প্রক্রিয়া। টানা ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শুরু হলে বিশ্রাম শুরু করেন সুনিতাসহ বাকি মহাকাশচারীরা। এ সময় তাঁরা খান এবং ঘুমান। কারণ, পৃথিবীতে পৌঁছানোর আগে ঠিকমতো হাইড্রেটেড হতে হবে তাঁদের।

১৯৯৮ সালে অ্যাস্ট্রোনট কর্পসে সদস্যপদ লাভ করেন সুনিতা উইলিয়ামস। প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন শেষ হওয়ার পর মস্কোতে কাজ করেন রুশ স্পেস এজেন্সির সঙ্গে। ২০০৬ সালে সুনিতা নাসার ২০তম শাটল স্টেশন সমন্বয় এসটিএস-১১৬ মিশনে যোগ দেন। এর ছয় বছর পর ২০১২ সালে তিনি এক্সপেডিশন ৩২-এর ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এবং এক্সপেডিশন ৩৩-এর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সুনিতা যখন নাসায় কাজ শুরু করেন, স্পেস স্টেশনের কাজ তখন শুরু হচ্ছিল। এক সাক্ষাৎকারে সুনিতা বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, শুরু থেকেই আমাদের সবারই একরকম ইচ্ছা ছিল যে আমরা কোনো না কোনোভাবে এই নির্মাণের সঙ্গে জড়িত হতে চাই। সেখানে গিয়ে থাকতে চাই, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চাই বা কিছু একটা করতে চাই, যা স্পেস স্টেশনের সঙ্গে সম্পর্কিত।’

সুনিতা দেখেছেন রাশিয়া ও আমেরিকার স্পেস স্টেশন নিয়ে কাজ করার বিষয়টি। তাই তিনি রাশিয়ার ভাষা শেখায় আগ্রহী হন। ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করেন। এই অভিযানে যাওয়ার আগে গণমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সুনিতা বলেন, ‘আমাদের সবার মধ্যে কৌতূহল আছে; আমরা এটা নিয়ে জন্ম নিই। হয়তো সমাজ এবং আমাদের চারপাশে ঘটে চলা বিষয়গুলো তার কিছুটা দমন করে ফেলে। কিন্তু সবাই কৌতূহলী এবং আমরা অনুসন্ধান করতে চাই।’

এই অনুসন্ধানী ইচ্ছাই সুনিতাকে নিয়ে গেছে মহাকাশ পর্যন্ত। তাঁকে টিকিয়ে রেখেছে এবং প্রতিকূল অবস্থায় মনোবল ধরে রেখে কাজ করার সাহস জুগিয়েছে। সুনিতা উইলিয়ামসের সঙ্গে ফিরছেন বুচ উইলমোর, নিক হেগ ও রাশিয়ান নভোচারী আলেকজান্ডার গোরবুনভ।

সূত্র: নাসা, সিবিএস নিউজ, ফরচুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ মার্কিন ফেডারেল সংস্থার

ভারত নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রিকশাচালকের সঙ্গে তর্ক, বাংলাদেশিকে ফেরত

আকরামদের প্রথম খবর দেওয়া হয়েছিল, তামিম আর নেই

‘মদের বোতল’ হাতে বৈষম্যবিরোধী নেতা-নেত্রীর ভিডিও, সদস্যপদ স্থগিত

চীনের আগে ভারত সফরে যেতে চেয়েছিলেন ড. ইউনূস: দ্য হিন্দুকে প্রেস সচিব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত