Ajker Patrika

খরগোশের মাংস

জাহীদ রেজা নূর
খরগোশের মাংস

শংকরদা এসেছেন মস্কো থেকে, উঠেছেন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে। সেটা আমাদের ক্রাসনাদার শহর থেকে ২৫/৩০ কিলোমিটার দূরে। হলুদ রঙের বাসে করে যেতে হয় সেখানে। 

আমরা তখন প্রিপারেটরি ফ্যাকাল্টিতে রুশ ভাষা রপ্ত করছি। অর্থাৎ, সেটা ১৯৮৬ সালের শেষভাগ অথবা ১৯৮৭ সালের শুরু। মস্কোর তিমিরইয়াজিভ কৃষি ইনস্টিটিউটে যারা পড়াশোনা করেন, তাঁরা তাঁদের ব্যবহারিক কাজের একটা অংশ আমাদের শহরে এসে করেন। শংকরদাও একই কাজে সেখান থেকে এসেছেন। আগেও এসেছেন। সে সুবাদে আমাদের কুবান কৃষি ইনস্টিটিউটের বড় ভাইদের সঙ্গে পিএইচডির ছাত্র শংকরদার জানাশোনা। তিনিই ছুটির দিনে আমাদের নিয়ে যেতে বলেছেন তাঁর হোস্টেলে। দুপুরে রান্না করে খাওয়াবেন। সম্ভবত পঞ্চম বর্ষের মাসুদ ভাই, চতুর্থ বর্ষের শ্যামলদা আর তৃতীয় বর্ষের জয়নাল ভাই আর প্রথম বর্ষের দেবাশীষদার সঙ্গে প্রিপারেটরির আমি আর রিপন গিয়েছিলাম শংকরদার ওখানে। 

ক্রাসনাদার শহরে ধান হয় প্রচুর। অনেকটা ট্রপিক্যাল ও সাব ট্রপিক্যাল আবহাওয়া। মাছও পাওয়া যায় নদীতে। মিষ্টি পানির তাজা মাছ সোভিয়েত ইউনিয়নের সবখানে পাওয়া যেত না। আমরা তাই ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’র মতো টিকে থাকতে পারছিলাম বিদেশ-বিভুঁইয়ে। 

ক্রাসনাদার কৃষি ইনস্টিটিউটের (এখন তা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেছে) সামনের বাসস্ট্যান্ড থেকে সকাল এগারোটার দিকে বাসে উঠেছিলাম আমরা। সকালে নাশতা করেছি। শংকরদার ওখানে গিয়ে দুপুরে ভাত খাব। এখানে বলে রাখি, আমরা যখন পড়াশোনা করতাম, তখন দাওয়াত মানে বিশাল খাদ্যভান্ডার নয়। মাছ অথবা মাংস, সঙ্গে একটা সবজি কিংবা ডাল—তাতেই অভ্যস্ত ছিলাম আমরা। যে স্টাইপেন্ড পেতাম, সেটা দিয়ে চলতে হতো, বাড়তি আয়ের উপায় ছিল না। তাই বুঝেশুনে চলতাম। 

বাসটা যখন চলা শুরু করল, তখন পঞ্চম প্রসূতি হাসপাতাল পার হওয়ার পর থেকেই দুধারে দেখতে পেলাম বিস্তৃত ফসলের খেত। ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করা হয়েছে সে মাঠগুলো। একটু দূরেই কুবান নদী। এই নদীটি আমাদের কত যে আপন ছিল, তা বলে বোঝানো যাবে না; সেটা এখন শুধুই স্মৃতি। বাস যখন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছাকাছি আমাদের নামিয়ে দিল, তখন সামনের দিকে তর্জনী উঁচিয়ে মাসুদ ভাই অথবা জয়নাল ভাই বললেন, ‘স্মাৎরি, এতা দিন।’ 

মানে, ‘দ্যাখো, এগুলো বাঙ্গি!’ 

ছোট ছোট রসালো বাঙ্গি ছড়িয়ে আছে বিস্তৃত খেতে। মাসুদ ভাই বললেন, ‘যদি কেউ খেতে চাও, খেতে পারো।’ 

তখনই বাঙালির দল নেমে পড়ল খেতে। বাঙ্গিগুলো আকারে ছোট। ফাটিয়ে খাওয়া শুরু হলো। আর তখনই বোঝা গেল, এ এক অবিশ্বাস্য রসালো বাঙ্গি! বাংলাদেশে এ ধরনের মিষ্টি আর রসালো বাঙ্গি কখনো দেখিনি। ফলে যা হলো, সেই রসালো বাঙ্গিতে তৃষ্ণা নিবারণ হতে লাগল। যে চাষিরা এই জমি চাষ করেছেন, ফসল ফলিয়েছেন, তাঁরাও বাঙালিদের এই কাণ্ড-কারখানা দেখে হাসছিলেন মিটিমিটি। বলছিলেন, ‘কুশাইতে, রিবইয়াতা! (খাও, খাও, ছেলেরা)।’ 

তখনো বিদেশিদের খুব ভালোবাসত গ্রামের মানুষেরা। শহুরে সোভিয়েত নাগরিকদের সঙ্গে শহরের বাইরের নাগরিকদের মধ্যে পার্থক্য ছিল। যারা বিদেশিদের প্রতিদিন দেখত, তারা একভাবে জানত বিদেশিদের। তাদের চোখে এই বিদেশিদের ভালো-মন্দ ছিল বইয়ের খোলা পাতার মতো। অন্যদিকে যারা কালেভদ্রে বিদেশিদের সংস্পর্শে আসত, তাদের কাছে বিদেশিরা ছিল বিস্ময়! সে ব্যাপারে পরে একসময় লেখা যাবে। 

সরাসরি ফসলের মাঠ থেকে এভাবে বাঙ্গি তুলে খাওয়ার অভিজ্ঞতা এর আগে ছিল না। এটাই ছিল প্রথমবারের মতো। তাই সে আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। 

সে যুগে মোবাইল ফোন আসেনি। যোগাযোগ হতো ল্যান্ডফোনে। চিঠিপত্রেরও কদর ছিল। আমরা যে এসে পৌঁছেছি, সেটা তখনো শংকরদা জানেন না। জানবেন কী করে? পাগল হয়ে বাঙ্গি-ভক্ষণরত শিক্ষার্থীরা তো পিকনিকের আনন্দ পেয়ে গেছে ততক্ষণে! 

রোদটা প্রখর ছিল, নাকি মেঘ এসে ছায়া দিচ্ছিল মাথার ওপরে, সে কথা এখন আর মনে নেই। তবে মনে আছে, মাসুদ ভাই, শ্যামল দাসহ অন্যদের সঙ্গে আমরা কৃষিক্ষেত্রগুলো দেখছিলাম। কোন জমিতে কোন ধরনের ধান নিয়ে গবেষণা হচ্ছে, সেটা তাঁরা জেনে নিচ্ছিলেন। এভাবেই কেটে গেল আরও ঘণ্টা-দুই। আর তখনই কেবল মনে পড়ল পেটে দানাপানি পড়েনি অনেকক্ষণ। তখনই কেবল মনে পড়ল, আমরা তো শংকরদার ঘরে আজ খাব। 

এবার হোস্টেলে শংকরদার রুম খোঁজা শুরু হলো। খুব বেশি বেগ পেতে হলো না। আমরা পৌঁছে গেলাম তাঁর ঘরে। তিনি খুব খুশি হলেন। বললেন, ‘চা খাও, আমি সেই ফাঁকে ভাতটা চড়িয়ে আসি।’ 

এখন ভাত চড়াবেন! তার মানে তিনি কোনো প্রস্তুতি নেননি! আমাদের পেটে যে ছুঁচোর ডনবৈঠক শুরু হয়ে গেছে, সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না! একটু হতাশ হলাম। মনে হলো, ডিম ভাজি আর ডাল দিয়েই আজ আমাদের দুপুরের খাবার খেতে হবে। 

কিন্তু কিছুক্ষণ পরই বোঝা গেল, শংকরদার প্রস্তুতি ছিল। তিনি আগেই রান্না করে রেখেছেন। কজন আসবে, তা জেনে ভাত চড়াতে গেছেন। 

খাবারের তালিকায় ছিল বেগুন দিয়ে চিংড়ি, ডাল আর মাংস। 

‘কিসের মাংস এটা শংকর দা? মুরগি?’ 

‘না, খরগোশ। খুব টেস্টি। খেয়েছ আগে?’ 

‘না। আমি তো খাইনি আগে!’ আমতা-আমতা করি। 

‘খাবে তো? নাকি ডিম ভেজে দেব?’ 

ডিম ভাজা! খেয়ে দেয়ে কাজ নেই, ডিম ভাজা খাব! মাংসের হাঁড়ির দিকে তাকাই। বড় বড় মাংসের টুকরো, কষানো। তবে তার সঙ্গে গোল গোল আলু ভেজে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। লোভনীয় খাবার। 

কোনো রকম দ্বিধা না করে খরগোশের মাংস তুলে নিলাম প্লেটে। এবং তারপর মাংস ছিঁড়ে মুখে দিতেই মনে হলো—অমৃত! এত স্বাদের তরকারি বহুদিন খাইনি। সেদিন খরগোশের মাংসটা খুবই সুস্বাদু হয়েছিল, আজও মনে হয়, সেই তৃপ্তির অনুভূতিটা পাই। 

সেদিন জেনেছিলাম, খরগোশ দু রকম হয়। একরকম খরগোশের পা থাকে বাইরের দিকে, সেগুলো খাওয়া যায়। আরেক ধরনের খরগোশের পা থাকে ভেতরের দিকে গুটানো, সেগুলো খাওয়া যায় না। সেগুলো বাড়িতে পোষ মানায় অনেকে। উল্টো বললাম নাকি, সে সন্দেহ অবশ্য আছে আমার। হতে পারে গুটানো পায়ের খরগোশই খেতে হয়। 

শংকরদার রান্নার হাত ভালো নাকি খরগোশের মাংসটাই সুস্বাদু—এই প্রশ্ন আমাদের মনে ঘুরতে থাকে। আবার এ-ও মনে হয়, আমাদের পেটে এত খিদে ছিল বলে মাংসটাকে অমৃত বলে মনে হয়েছে! 

সে যাই হোক, সেই খরগোশের মাংস যে শুধু উদরপূর্তির জন্য খাইনি, বরং তা খাওয়ার সময় মনও হয়েছিল অংশীদার—সেটা মেনে নিলেই কেবল বোঝা যাবে, কেন এত দিন পরও সেই সুখস্মৃতিটা মনের কোনে লুকিয়ে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সম্পাদকীয়
সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।

অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।

তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।

কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।

সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।

পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমাদের অর্জন অনেক

সম্পাদকীয়
আমাদের অর্জন অনেক

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।

এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।

... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।

সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত