ফিরোজ সাঁই

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭: ৫৯
ফিরোজ সাঁই। ছবি: সংগৃহীত

‘ইস্কুল খুইলাছে রে মাওলা ইস্কুল খুইলাছে’—আর কদিন পর নতুন বছর শুরু হলে কিংবা স্কুলের ছুটি শেষ হলে হয়তো অনেকের মনে পড়বে জনপ্রিয় এই গানের কথা। গানটি গেয়েছিলেন ফিরোজ সাঁই। বাংলা লোকসংগীত ও আধ্যাত্মিক ধারার গানকে পপসংগীতের আদল দিয়ে তিনি সত্তর ও আশির দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তারিখ জানা না গেলেও তথ্য পাওয়া যায়, ফিরোজ সাঁই জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫২ সালে।

তিনি শুধু গানই গাইতেন না, গানের মাধ্যমে জীবনবোধ, শিকড় এবং মানুষের মধ্যে প্রেম ও মানবতার মর্মার্থ স্মরণ করিয়ে দিতেন। তাঁর গানগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো গভীর ভাব ও সহজ-সরল উপস্থাপনা। এসব গানের সুরে যেমন থাকে এক গভীর আধ্যাত্মিকতা, তেমনি বাণীতে থাকে গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রার প্রতিচ্ছবি। তিনি প্রকৃতি, প্রেম ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে শিল্পের মিশ্রণে এক নতুন মাত্রা যোগ করেন। আত্মার মুক্তি, মানবের সঙ্গে চিরন্তন সত্তার সম্পর্ক এবং জীবন-মৃত্যুর চক্র—এসব ছিল তাঁর গানের উপাদান—একাধারে দর্শন ও বিনোদনের এক দুর্লভ মেলবন্ধন।

‘বাপের কামাই খাইয়া কর

কতই বাহাদুরি।

নিজের ঘরে সিঁদ কাটিয়া

নিজেই কর চুরি।’

তাঁর লেখা ‘গন্ডগোলে পইড়া গেলে’ শিরোনামের গানটি যেন যে কোনো সময়ের দুর্নীতিবাজদের টনক নাড়া দেওয়ার জন্যই লিখেছেন। ‘স্বাদের লাউ বানাইল মোরে বৈরাগী’, ‘মন তুই দেখলি না রে’, ‘আইছি একা যাইমু একা’, ‘ইঞ্জিন যদি চইলা যায়’ ইত্যাদি গান বাংলাদেশি শ্রোতাদের কাছে কম জনপ্রিয় নয়। সব গানই ফিরোজ সাঁইয়ের লেখা, সুর করা এবং গাওয়া।

১৯৯৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর। শিল্পকলা একাডেমির এক অনুষ্ঠানে বহু দর্শক-শ্রোতা-ভক্তের সামনে সেদিন ফিরোজ সাঁই গাইছিলেন তাঁর বহুলশ্রুত গান—‘এক সেকেন্ডের নাই ভরসা/বন্ধ হইবে রং-তামাশা/চক্ষু মুদিলে/হায়রে দম ফুরাইলে’। এই গান গাইতে গাইতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। যেন গানটির সত্যতা প্রমাণ করে দিলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলের ‘হৃৎপিণ্ড’ তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সাগরে নিম্নচাপ, কত দিন বৃষ্টি হতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর

শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান যার যার স্থানে শ্রেষ্ঠ: গয়েশ্বর

র‌্যাব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি: নূর খান লিটন

হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়াল টিউলিপের নামও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত