সুপ্রিয় সিকদার
আগামী বছরের জানুয়ারির ৭ তারিখে বিয়ের কথা ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক। কনেপক্ষ-বরপক্ষও দেখাদেখি শেষ। বাকি শুধু ঘটা করে ‘কবুল’ বলা। তবে...
৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ফাহিরের কুমিল্লার মুরাদনগরের বাড়িতে এসেছিল কনেপক্ষ। অফিসের বারণ সত্ত্বেও ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটে গিয়েছিল ডে অফের দিনে। ‘স্নো-পাউডার’ মাখিয়ে আমাদের ফাহিরকে পাত্র সাজিয়ে হাজির করা হয়েছিল কনেপক্ষের সামনে। সবই ফাহিরের মুখের গল্পে শোনা। আর এই গল্প শুনতে শুনতে খিলখিলিয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম আমরা অফিসের সহকর্মীরা।
যে ছেলে নিজে ঘুমালে দিনরাতের হুঁশ থাকে না, বাইক কোথাও রেখে গেলে চাবি নিতে মনে থাকে না, রাস্তার ওপর বাইক পার্ক করে বাসায় চলে আসার পরও মনে পড়ে না যে, বাইক তো আনিনি; সেই ছেলেকে যদি স্নো-পাউডার দিয়ে সাজিয়ে পাত্র হিসেবে উপস্থিত করা হয়, তাহলে কার না হাসি আসে!
শুক্রবারের (৩ ডিসেম্বর) পর থেকেই ফাহিরের মধ্যে একধরনের উচ্ছলতা দেখছিলাম। বিয়েতে এই করবে, সেই করবে; কত কী!
এরপর একদিন দুপুরে অফিসের ক্যানটিনে খাচ্ছি আমরা। ফাহির বলল, ‘ভাই, অনলাইনে চাকরি করি। জানি, সবাই বিয়েতে যেতে পারবে না; কিন্তু আপনি অবশ্যই বাইক নিয়ে চলে যাবেন। ইলিয়টগঞ্জ দিয়ে মুরাদনগরের রাস্তায় ঢুকবেন, প্রায় ৩০ কিলোমিটার জার্নি কমে যাবে আপনার।’ বললাম, ‘যাব। বাইকে না হলেও গাড়ি নিয়ে যাব; একা না, কয়েকজন নিয়েই যাব।’ বলেছিলাম, ‘আমি তো গরু খাই না, আমার জন্য কিন্তু আনলিমিটেড খাসির মাংস থাকতে হবে।’ থাকবে বলে কথা দিয়েছিল।
ডিসেম্বর মাসে ছুটির আমেজ থাকে সব অফিসেই। আমাদেরও বাদ যায়নি। কেউ প্রয়োজনে, আর কেউ-বা ঘুরতে ছুটিতে আছে। ফাহির এই নিয়ে কত চিন্তায়; কবে সবাই ফিরবে আর ও লম্বা ছুটিতে যাবে। একদিন বললাম, ‘বিয়ে করতে লম্বা ছুটি লাগে নাকি ব্যাডা? যাইবি আর কবুল কইয়া চলে আইবি।’ উত্তরে ফাহির বলল, ‘ভাই বিয়া কইরাই আগে ঘুরতে যাব। ছুটি লম্বা লাগবেই।’ লম্বা ছুটি ফাহির নিয়েছে ঠিকই তবে...
গতকাল শনিবার (১১ ডিসেম্বর) আমাকে অফিস টাইমের ঘণ্টাখানেক আগে আসতে বলেছিল ফাহির। বিয়ের কেনাকাটা করবে। আমি আড়াইটার দিকে অফিসে এলাম, নিচে নেমে ফাহির নিজের বাইক বের করে আমার বাইক পার্ক করে রাখল। বলল, ‘চলেন কফি খাই।’ কফি খেলাম, আড্ডা দিলাম। এর মধ্যে ওর বাগ্দত্তার ফোন—ঠিক হলো কখন কীভাবে তারা শপিংয়ে যাবে। ফাহির চলে গেল ওর বাসায়। আমি অফিসে।
ঘণ্টাখানেক পর চিফ রিপোর্টার রাশেদ ভাই ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল ভাইয়ের ফোন। ‘ফাহির নেই...’
অকস্মাৎ হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ফাহিরের মৃত্যু হয়। মোহাম্মদপুরের বাসায় ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ফাহিরকে ফেরানো যায়নি।
জলজ্যান্ত মানুষটা কয়েক মিনিটে ছবি হয়ে গেল। বিয়ের অছিলায় চিনিয়ে দেওয়া ওর রাস্তাতেই আজ রোববার বন্ধু, সহকর্মীরা মিলে ফাহিরকে কবর দিয়ে এলাম। শেষবারের মতো ওর মুখটা দেখে এলাম। আর কখনো দেখা হবে না, আড্ডা হবে না।
ফাহির কখনো বলবে না, ভাই টু-লেট দেখলে বইলেন, একটা পিৎজা বা ভালো চায়ের দোকান দেব।
ভালো থাকিস ফাহির, কোনো ভুল থাকলে মাফ করিস।
আগামী বছরের জানুয়ারির ৭ তারিখে বিয়ের কথা ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক। কনেপক্ষ-বরপক্ষও দেখাদেখি শেষ। বাকি শুধু ঘটা করে ‘কবুল’ বলা। তবে...
৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ফাহিরের কুমিল্লার মুরাদনগরের বাড়িতে এসেছিল কনেপক্ষ। অফিসের বারণ সত্ত্বেও ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটে গিয়েছিল ডে অফের দিনে। ‘স্নো-পাউডার’ মাখিয়ে আমাদের ফাহিরকে পাত্র সাজিয়ে হাজির করা হয়েছিল কনেপক্ষের সামনে। সবই ফাহিরের মুখের গল্পে শোনা। আর এই গল্প শুনতে শুনতে খিলখিলিয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম আমরা অফিসের সহকর্মীরা।
যে ছেলে নিজে ঘুমালে দিনরাতের হুঁশ থাকে না, বাইক কোথাও রেখে গেলে চাবি নিতে মনে থাকে না, রাস্তার ওপর বাইক পার্ক করে বাসায় চলে আসার পরও মনে পড়ে না যে, বাইক তো আনিনি; সেই ছেলেকে যদি স্নো-পাউডার দিয়ে সাজিয়ে পাত্র হিসেবে উপস্থিত করা হয়, তাহলে কার না হাসি আসে!
শুক্রবারের (৩ ডিসেম্বর) পর থেকেই ফাহিরের মধ্যে একধরনের উচ্ছলতা দেখছিলাম। বিয়েতে এই করবে, সেই করবে; কত কী!
এরপর একদিন দুপুরে অফিসের ক্যানটিনে খাচ্ছি আমরা। ফাহির বলল, ‘ভাই, অনলাইনে চাকরি করি। জানি, সবাই বিয়েতে যেতে পারবে না; কিন্তু আপনি অবশ্যই বাইক নিয়ে চলে যাবেন। ইলিয়টগঞ্জ দিয়ে মুরাদনগরের রাস্তায় ঢুকবেন, প্রায় ৩০ কিলোমিটার জার্নি কমে যাবে আপনার।’ বললাম, ‘যাব। বাইকে না হলেও গাড়ি নিয়ে যাব; একা না, কয়েকজন নিয়েই যাব।’ বলেছিলাম, ‘আমি তো গরু খাই না, আমার জন্য কিন্তু আনলিমিটেড খাসির মাংস থাকতে হবে।’ থাকবে বলে কথা দিয়েছিল।
ডিসেম্বর মাসে ছুটির আমেজ থাকে সব অফিসেই। আমাদেরও বাদ যায়নি। কেউ প্রয়োজনে, আর কেউ-বা ঘুরতে ছুটিতে আছে। ফাহির এই নিয়ে কত চিন্তায়; কবে সবাই ফিরবে আর ও লম্বা ছুটিতে যাবে। একদিন বললাম, ‘বিয়ে করতে লম্বা ছুটি লাগে নাকি ব্যাডা? যাইবি আর কবুল কইয়া চলে আইবি।’ উত্তরে ফাহির বলল, ‘ভাই বিয়া কইরাই আগে ঘুরতে যাব। ছুটি লম্বা লাগবেই।’ লম্বা ছুটি ফাহির নিয়েছে ঠিকই তবে...
গতকাল শনিবার (১১ ডিসেম্বর) আমাকে অফিস টাইমের ঘণ্টাখানেক আগে আসতে বলেছিল ফাহির। বিয়ের কেনাকাটা করবে। আমি আড়াইটার দিকে অফিসে এলাম, নিচে নেমে ফাহির নিজের বাইক বের করে আমার বাইক পার্ক করে রাখল। বলল, ‘চলেন কফি খাই।’ কফি খেলাম, আড্ডা দিলাম। এর মধ্যে ওর বাগ্দত্তার ফোন—ঠিক হলো কখন কীভাবে তারা শপিংয়ে যাবে। ফাহির চলে গেল ওর বাসায়। আমি অফিসে।
ঘণ্টাখানেক পর চিফ রিপোর্টার রাশেদ ভাই ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কামরুল ভাইয়ের ফোন। ‘ফাহির নেই...’
অকস্মাৎ হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ফাহিরের মৃত্যু হয়। মোহাম্মদপুরের বাসায় ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ফাহিরকে ফেরানো যায়নি।
জলজ্যান্ত মানুষটা কয়েক মিনিটে ছবি হয়ে গেল। বিয়ের অছিলায় চিনিয়ে দেওয়া ওর রাস্তাতেই আজ রোববার বন্ধু, সহকর্মীরা মিলে ফাহিরকে কবর দিয়ে এলাম। শেষবারের মতো ওর মুখটা দেখে এলাম। আর কখনো দেখা হবে না, আড্ডা হবে না।
ফাহির কখনো বলবে না, ভাই টু-লেট দেখলে বইলেন, একটা পিৎজা বা ভালো চায়ের দোকান দেব।
ভালো থাকিস ফাহির, কোনো ভুল থাকলে মাফ করিস।
ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম রোমান্টিক কবি ছিলেন জন কিটস। কবিতা ছাড়া কিটস কোনো গদ্য লেখার চেষ্টা করেননি। তাঁর কাব্যজীবন ছিল মাত্র ছয় বছরের। অর্থাৎ উনিশ থেকে চব্বিশ বছর বয়স পর্যন্ত। মৃত্যুর মাত্র চার বছর আগে তাঁর কবিতাগুলো প্রকাশিত হয়। তৎকালীন সমালোচকদের দ্বারা কিটসের কবিতা খুব একটা আলোচিত হয়নি। তবে মৃত্য
৬ ঘণ্টা আগেত্রিশের দশকের রবীন্দ্রকাব্যধারাবিরোধী পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে অন্যতম একজন কবি ছিলেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। তাঁর জন্ম ১৯০১ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতার হাতীবাগানে। তাঁর পিতা হীরেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন একজন দার্শনিক। আর স্ত্রী ছিলেন প্রসিদ্ধ গায়িকা রাজেশ্বরী বাসুদেব।
১ দিন আগেসিলভিয়া প্লাথ ছিলেন একজন মার্কিন কবি, ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার। তিনি নারীবাদী কবি হিসেবেও পরিচিত। পিতৃতান্ত্রিক ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে এবং নারীর পরিচয়-সংকট নিয়ে তিনি তাঁর কবিতায় সাজিয়েছেন স্পষ্টভাবে।
৪ দিন আগেবিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার। তিনি কৌতুকমিশ্রিত গল্পের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন। নামের মিল থাকলেও বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় আর তিনি কিন্তু আলাদা ব্যক্তি।
৭ দিন আগে