আশা আছে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২২, ১২: ০২
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২২, ১৪: ১৩

সাংবাদিকদের সঙ্গে কবীর সুমনের বিরোধ বহু আগে থেকেই। মাঝে মাঝেই সাংবাদিকদের লেখা পড়ে চটে ওঠেন। তিনি নিশ্চিত হয়ে একবার বলেছিলেন, ‘মনে হয় ঠিক লোকেরা সাংবাদিকতা করছে না।’ কেন তাঁর এমন মনে হয়? কবীর সুমন গুছিয়ে বললেন, ‘একজন সংগীতকারকে তো সংগীত নিয়েই প্রশ্ন করবে। তা নয়, তার বিয়ে, তার বাথরুম—এসব নিয়েই তার আগ্রহ। মূর্খ, বেরসিক! বদমাইশি করে ওরা।’

এ তো মহা ঝামেলা। তাহলে কি সাংবাদিকেরা শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু লিখবে না? এ প্রশ্নেও রেগে আগুন তিনি। বললেন, ‘বিচ্ছিরি, বিশ্রী। কই, আমার লেখাপড়া, আমার রেওয়াজ নিয়ে তো কেউ কথা বলে না। সেটা তো কেউ জানতে চাইছে না। শিল্পীকে শিল্পী হিসেবেই দেখতে হবে। শিল্পী কার সঙ্গে ঘুরছে, কার সঙ্গে শুচ্ছে, সেটা সাংবাদিকের দেখার বিষয় নয়।’

নব্বই শতকের অনেকটা সময় সাংবাদিকেরা সুমনকে জ্বালিয়েছেন বলায় তিনি শুধরে দিয়েছিলেন, ‘ঠিক বলেননি। নব্বই দশকে কেন, সাংবাদিকেরা আমাকে এখনো ছাড়েনি। এই বাংলায় আমাকে কেউ পাত্তা দেয় না। আমিও পাত্তা দিই না। খোঁজ রাখি না। এ রাজ্যের সরকার, প্রতিষ্ঠান সবাই আমাকে এড়িয়ে চলে।’

একটা অভিমান কাজ করে সুমনের ভেতরে। আর মনে করেন, রুচিসম্মত কিছু করার ক্ষেত্রে আমরা অভিভাবকহীন হয়ে গেছি, সে কারণেই এত সমস্যা। রাগি মানুষটি কি তাহলে নতুন কিছুই মেনে নিতে পারছেন না? কই, তা তো নয়, তিনি ক্যাসেট বা সিডির পর এখন তো নিজে গান করে ওয়েবসাইটে ছেড়ে দিচ্ছেন। তবে?

নিজেই বললেন সুমন, ‘পরিবর্তন আসতে বাধ্য। আসবে। মানুষ তার মতো করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে। প্রযুক্তি-বিজ্ঞান সবকিছুই এগিয়ে গেছে। ভাবনার পরিধিও বেড়েছে। তাই আশাও টিকে আছে।’

যাক! তাহলে আশা আছে। 

সূত্র: জাহীদ রেজা নূর, চোখের আলোয় ২, পৃষ্ঠা ৬১-৬৪

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত