ভূতনাথ

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১: ৩৫
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯: ৩৮

বিমল মিত্রের লেখা ‘সাহেব বিবি গোলাম’ উপন্যাসটি তখন দেশ পত্রিকায় বের হচ্ছে। উত্তম সেটা পড়ছেন আগ্রহভরে। খুব পছন্দ ছিল তাঁর ভূতনাথ চরিত্রটি। উপন্যাসটি থেকে ছবি হলে তিনি ভূতনাথ চরিত্রে অভিনয় করবেন বলে ভাবতেন। সে সুযোগও এল। একদিন পরিচালক কার্তিক চ্যাটার্জি এলেন উত্তমের কাছে। তিনি বললেন, ‘সাহেব বিবি গোলাম ছবিটি করব। ভূতনাথ চরিত্রে আপনাকে চাই।’

ছবি তৈরি হলো। দর্শক সে ছবি গ্রহণ করল। এ রকম সময় একদিন উত্তমকুমারের ছোট ভাই তরুণ এসে বলল, ‘দাদা, একটা ছেলে তোমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। বিশু ওর নাম। কয়েকটি ছবিতে নেমেছে, থিয়েটার করে।’ 
উত্তম বললেন, ‘অমুক দিন ভবানীপুরের বাড়িতে দেখা করতে বলিস।’ 
কথামতো একটি সুশ্রী ছেলে এসে হাজির। বলল, ‘আমার নাম বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

উত্তমের মনে হলো, সেই অতীতকাল থেকে বুঝি সেই অরুণ, মানে আজকের উত্তমকুমার উঠে এসেছে। একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ক্লান্ত অরুণ যেন আজ উত্তমের মুখোমুখি!

উত্তম জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী ব্যাপার?’ 
বিশ্বজিৎ বললেন, ‘রঙমহলে সাহেব বিবি গোলাম হবে। ওঁরা আমাকে ভূতনাথ চরিত্রে সিলেক্ট করেছে। সিনেমায় ভূতনাথ রোলে আপনার অসাধারণ অভিনয় দেখেছি, কোনো দিন ভুলতে পারব না। আপনার কাছ থেকে ওই চরিত্রটা একটু ভালো করে বুঝে নিতে চাই।’

বিশ্বজিতের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলেন উত্তম। স্ক্রিন অ্যাকটিং আর স্টেজ অ্যাকটিংয়ের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে চাইছিল বিশ্বজিৎ। ওর আন্তরিকতার দাম দিয়ে নিজের ব্যস্ততার মাঝেও বিশ্বজিৎকে প্রতিদিন সময় দিতে লাগলেন উত্তম। মহড়ার সময় রোজ সকালে একবার করে বিশ্বজিৎ এসেছেন উত্তমের কাছে। 
উত্তম ভাবলেন, বিশ্বজিতের এই নিষ্ঠা ওকে একদিন পপুলার আর্টিস্টে পরিণত করবে।

উত্তম ভুল ভাবেননি। বিশ্বজিৎ চলচ্চিত্রপাড়ায়ও নাম করেছিলেন। আর তাঁর পুত্র প্রসেনজিৎ তো এখনো টলিউডে জনপ্রিয় নায়ক। 

সূত্র: উত্তমকুমার, আমার আমি, পৃষ্ঠা ৯৩-৯৪ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত