সম্পাদকীয়
আনিসুজ্জামান সব সময়ই ছিলেন একাত্তরের মূলনীতির সঙ্গে একাত্ম। যে সংশোধনীগুলো এসেছে, সেগুলো তিনি মেনে নিতে পারেননি। তিনি বিশ্বাস করতেন, বাংলাদেশ রাখতে হলে ওই চারটা স্তম্ভ আমাদের ধরে রাখতে হবে। স্বাধীনতার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাতে মানুষের মনোভাবের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ধর্ম নিয়ে যে সম্প্রীতি গড়ে উঠেছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়, সেটা ক্ষয়ে গেছে। একটা সময় দাঙ্গা হচ্ছে শুনলে মানুষ এগিয়ে যেত তা প্রতিরোধ করার জন্য, এখন তো দাঙ্গা হয় না, হয় সংখ্যালঘু নির্যাতন। আনিসুজ্জামান বিশ্বাস করতেন, সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান—সবাই একটা অসাম্প্রদায়িক দেশের কথাই ভেবেছেন।
ধর্মটা যে এখন একটা দেখানোর বিষয় হয়ে গেছে, সেটাও আনিসুজ্জামানের চোখে পড়েছে। এখন হজ করেই মানুষ তৃপ্ত নয়, নামের পাশে আলহাজ লাগানোর প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। বক্তৃতা করার আগে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে নিচ্ছে মানুষ। আগে সেটা ছিল না। মওলানা ভাসানী কোনো দিনও বিসমিল্লাহ বলে বক্তৃতা শুরু করেননি। নামাজ পড়ার সময় হলে নামাজ পড়েছেন। নিজেকে অন্য কারও সামনে মুসলমান প্রমাণ করার চেষ্টা কেউ করেননি। এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের সময় রাষ্ট্রীয় মূলনীতিগুলোর জন্ম হতে পেরেছিল।
কিন্তু কেন এই চেতনা দেশব্যাপী ছড়িয়ে যেতে পারল না? আনিসুজ্জামান বলছেন, ‘আমাদের যে সংস্কৃতিচর্চা, সেটা মূলত নগর ও শিক্ষিত মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক। বৃহত্তর সাধারণ মানুষের কাছে আমরা একে নিয়ে যেতে পারিনি। আমরা যে গান গাইছি, তার কথা বা আমরা যে নাটক করছি, তার ব্যঞ্জনার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো মুশকিল। ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তারা সেটা পেরেছে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। সংস্কৃতির এই জনবিচ্ছিন্নতা কীভাবে দূর করা যাবে, তা বলা মুশকিল।’
শহুরে সংস্কৃতিচর্চা যে গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না, আর তা সেখানে পৌঁছাতে না পারলে যে মুক্তি নেই, সে কথাই তো জীবদ্দশায় বারবার বলেছেন আনিসুজ্জামান।
সূত্র: সাজ্জাদ শরিফ, আলাপে ঝালাতে, পৃষ্ঠা ১৭৩-১৮১
আনিসুজ্জামান সব সময়ই ছিলেন একাত্তরের মূলনীতির সঙ্গে একাত্ম। যে সংশোধনীগুলো এসেছে, সেগুলো তিনি মেনে নিতে পারেননি। তিনি বিশ্বাস করতেন, বাংলাদেশ রাখতে হলে ওই চারটা স্তম্ভ আমাদের ধরে রাখতে হবে। স্বাধীনতার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাতে মানুষের মনোভাবের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ধর্ম নিয়ে যে সম্প্রীতি গড়ে উঠেছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়, সেটা ক্ষয়ে গেছে। একটা সময় দাঙ্গা হচ্ছে শুনলে মানুষ এগিয়ে যেত তা প্রতিরোধ করার জন্য, এখন তো দাঙ্গা হয় না, হয় সংখ্যালঘু নির্যাতন। আনিসুজ্জামান বিশ্বাস করতেন, সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান—সবাই একটা অসাম্প্রদায়িক দেশের কথাই ভেবেছেন।
ধর্মটা যে এখন একটা দেখানোর বিষয় হয়ে গেছে, সেটাও আনিসুজ্জামানের চোখে পড়েছে। এখন হজ করেই মানুষ তৃপ্ত নয়, নামের পাশে আলহাজ লাগানোর প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। বক্তৃতা করার আগে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে নিচ্ছে মানুষ। আগে সেটা ছিল না। মওলানা ভাসানী কোনো দিনও বিসমিল্লাহ বলে বক্তৃতা শুরু করেননি। নামাজ পড়ার সময় হলে নামাজ পড়েছেন। নিজেকে অন্য কারও সামনে মুসলমান প্রমাণ করার চেষ্টা কেউ করেননি। এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের সময় রাষ্ট্রীয় মূলনীতিগুলোর জন্ম হতে পেরেছিল।
কিন্তু কেন এই চেতনা দেশব্যাপী ছড়িয়ে যেতে পারল না? আনিসুজ্জামান বলছেন, ‘আমাদের যে সংস্কৃতিচর্চা, সেটা মূলত নগর ও শিক্ষিত মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক। বৃহত্তর সাধারণ মানুষের কাছে আমরা একে নিয়ে যেতে পারিনি। আমরা যে গান গাইছি, তার কথা বা আমরা যে নাটক করছি, তার ব্যঞ্জনার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো মুশকিল। ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তারা সেটা পেরেছে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। সংস্কৃতির এই জনবিচ্ছিন্নতা কীভাবে দূর করা যাবে, তা বলা মুশকিল।’
শহুরে সংস্কৃতিচর্চা যে গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না, আর তা সেখানে পৌঁছাতে না পারলে যে মুক্তি নেই, সে কথাই তো জীবদ্দশায় বারবার বলেছেন আনিসুজ্জামান।
সূত্র: সাজ্জাদ শরিফ, আলাপে ঝালাতে, পৃষ্ঠা ১৭৩-১৮১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ গড়ার অন্যতম কারিগর বলা হয় মুহম্মদ আবদুল হাইকে। এ বিভাগের সিলেবাস তৈরি করা থেকে যোগ্য শিক্ষকদের তিনিই নিয়োগ দিয়েছেন। তাঁর দ্বিতীয় পরিচয়—তিনি বাংলা ভাষার প্রথম বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানী। তিনি কয়েকটি এলাকার উপভাষা ছাড়াও বাংলা ভাষার সংস্কার, বানানরীতি এবং প্রমিত ভাষা নিয়ে
২ ঘণ্টা আগেশক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৩ সালের ২৫ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বহড়ু গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে। মাত্র চার বছর বয়সে পিতৃহারা হয়ে দাদামশায়ের কাছে বড় হন। গ্রামে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
১ দিন আগেআহমদুল কবির রাজনীতিবিদ ও শিল্প-উদ্যোক্তা হলেও সাংবাদিক হিসেবে বেশি পরিচিত। তাঁর জন্ম ১৯২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল জমিদার পরিবারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক পাস করা আহমদুল কবির ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচিত ভিপি...
২ দিন আগেঅঁদ্রে মালরোর লেখা বিংশ শতাব্দীর সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বিরাট অবদান রেখেছে। তাঁর বড় পরিচয় তিনি বিখ্যাত ফরাসি ঔপন্যাসিক, প্রত্নতত্ত্ববিদ, নন্দনতাত্ত্বিক। তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।
৩ দিন আগে