সম্পাদকীয়
সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৬৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়া আক্রমণ করেছিল। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙেনি, চেকোস্লোভাকিয়াও ছিল অক্ষত। সোভিয়েত আক্রমণের পর পৃথিবীর নানা দেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে আক্রমণের ন্যায়-অন্যায় নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। দেবেশ রায় তখন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ডাকসাইটে আঞ্চলিক নেতা। জলপাইগুড়িতে তখন তাঁর অবস্থান। তিনি চেকোস্লোভাকিয়ার পক্ষে, সোভিয়েত আক্রমণের বিপক্ষে। সে খবর কলকাতা অবধি পৌঁছে গেছে। এ ব্যাপারে পার্টির মিটিং হবে, তাই দেবেশ রায় এসেছেন কলকাতায়। তাঁর বন্ধু দীপেন বন্দ্যোপাধ্যায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশাল কর্মী। তিনি জানতে চাইছেন দেবেশের মনের কথা। দেবেশ বললেন, ‘যা বলার কাল পার্টির মিটিংয়ে বলব।’
দীপেন সতর্ক করে বললেন, ‘দেবা, তুই কমিউনিস্ট পার্টিকে চিনিস না!’
দেবেশ বললেন, ‘দীপু, আমি কমিউনিস্ট পার্টিই করি।’
দীপেন সভ্য নয়, তাই পাশের ঘরে বসে থাকলেন। দেবেশ ঢুকলেন সভায়। হীরেন মুখার্জি, ভবানী সেন বক্তৃতা দিলেন। কয়েকজন নেতা সোভিয়েত আক্রমণের পক্ষে যুক্তি দিলেন এই কথা বলে যে, চেকোস্লোভাকিয়ার দক্ষিণপন্থী বিচ্যুতি ঘটেছিল। কথা বলতে উঠে দেবেশ বললেন, ‘চেকোস্লোভাকিয়া কীভাবে চলবে, তা চেকোস্লোভাকিয়ার জনগণই স্থির করবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন কোনো সমাজতান্ত্রিক দেশের ফৌজি অভিভাবক নয়।’
এ যেন বোমা ফাটল ঘরে। পারলে সবাই ছিঁড়ে খায় দেবেশ রায়কে। চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যে সভাপতি আবার দেবেশ রায়কে বলতে বললেন।
‘চেকোস্লোভাকিয়ায় দক্ষিণপন্থী বিচ্যুতির যেসব উদাহরণ দেওয়া হলো, তার সব কটি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামাজিক জীবন সম্পর্কে সত্য। তাহলে সোভিয়েতকে ঠিক করার জন্য ফৌজ পাঠাবে কে?’
সে কথা শুনে একজন শ্রমিকনেতা লাফিয়ে এসে টুঁটি টিপে ধরলেন দেবেশের, টানতে টানতে নিয়ে গেলেন একেবারে দেয়ালের ধারে। ‘এ কী ব্যবহার, ওকে বলতে দিন’ বললেন সভাপতি।
দেবেশ কথা বললেন। কিন্তু বুঝলেন, ভিন্নমত সহ্য করা হয় না পার্টিতে। একা হয়ে যেতে হয়। সে অভিজ্ঞতা কমিউনিস্ট পার্টি করা অনেকেরই হয়েছে। দেবেশও একা হয়ে গেলেন।
সূত্র: আবুল হাসনাত, হারানো সিঁড়ির চাবির খোঁজে, পৃষ্ঠা ১১৮-১২০
সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৬৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়া আক্রমণ করেছিল। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙেনি, চেকোস্লোভাকিয়াও ছিল অক্ষত। সোভিয়েত আক্রমণের পর পৃথিবীর নানা দেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে আক্রমণের ন্যায়-অন্যায় নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। দেবেশ রায় তখন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ডাকসাইটে আঞ্চলিক নেতা। জলপাইগুড়িতে তখন তাঁর অবস্থান। তিনি চেকোস্লোভাকিয়ার পক্ষে, সোভিয়েত আক্রমণের বিপক্ষে। সে খবর কলকাতা অবধি পৌঁছে গেছে। এ ব্যাপারে পার্টির মিটিং হবে, তাই দেবেশ রায় এসেছেন কলকাতায়। তাঁর বন্ধু দীপেন বন্দ্যোপাধ্যায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশাল কর্মী। তিনি জানতে চাইছেন দেবেশের মনের কথা। দেবেশ বললেন, ‘যা বলার কাল পার্টির মিটিংয়ে বলব।’
দীপেন সতর্ক করে বললেন, ‘দেবা, তুই কমিউনিস্ট পার্টিকে চিনিস না!’
দেবেশ বললেন, ‘দীপু, আমি কমিউনিস্ট পার্টিই করি।’
দীপেন সভ্য নয়, তাই পাশের ঘরে বসে থাকলেন। দেবেশ ঢুকলেন সভায়। হীরেন মুখার্জি, ভবানী সেন বক্তৃতা দিলেন। কয়েকজন নেতা সোভিয়েত আক্রমণের পক্ষে যুক্তি দিলেন এই কথা বলে যে, চেকোস্লোভাকিয়ার দক্ষিণপন্থী বিচ্যুতি ঘটেছিল। কথা বলতে উঠে দেবেশ বললেন, ‘চেকোস্লোভাকিয়া কীভাবে চলবে, তা চেকোস্লোভাকিয়ার জনগণই স্থির করবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন কোনো সমাজতান্ত্রিক দেশের ফৌজি অভিভাবক নয়।’
এ যেন বোমা ফাটল ঘরে। পারলে সবাই ছিঁড়ে খায় দেবেশ রায়কে। চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যে সভাপতি আবার দেবেশ রায়কে বলতে বললেন।
‘চেকোস্লোভাকিয়ায় দক্ষিণপন্থী বিচ্যুতির যেসব উদাহরণ দেওয়া হলো, তার সব কটি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামাজিক জীবন সম্পর্কে সত্য। তাহলে সোভিয়েতকে ঠিক করার জন্য ফৌজ পাঠাবে কে?’
সে কথা শুনে একজন শ্রমিকনেতা লাফিয়ে এসে টুঁটি টিপে ধরলেন দেবেশের, টানতে টানতে নিয়ে গেলেন একেবারে দেয়ালের ধারে। ‘এ কী ব্যবহার, ওকে বলতে দিন’ বললেন সভাপতি।
দেবেশ কথা বললেন। কিন্তু বুঝলেন, ভিন্নমত সহ্য করা হয় না পার্টিতে। একা হয়ে যেতে হয়। সে অভিজ্ঞতা কমিউনিস্ট পার্টি করা অনেকেরই হয়েছে। দেবেশও একা হয়ে গেলেন।
সূত্র: আবুল হাসনাত, হারানো সিঁড়ির চাবির খোঁজে, পৃষ্ঠা ১১৮-১২০
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৩ সালের ২৫ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বহড়ু গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে। মাত্র চার বছর বয়সে পিতৃহারা হয়ে দাদামশায়ের কাছে বড় হন। গ্রামে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
১৪ ঘণ্টা আগেআহমদুল কবির রাজনীতিবিদ ও শিল্প-উদ্যোক্তা হলেও সাংবাদিক হিসেবে বেশি পরিচিত। তাঁর জন্ম ১৯২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল জমিদার পরিবারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক পাস করা আহমদুল কবির ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচিত ভিপি...
২ দিন আগেঅঁদ্রে মালরোর লেখা বিংশ শতাব্দীর সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বিরাট অবদান রেখেছে। তাঁর বড় পরিচয় তিনি বিখ্যাত ফরাসি ঔপন্যাসিক, প্রত্নতত্ত্ববিদ, নন্দনতাত্ত্বিক। তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।
৩ দিন আগেপ্রকৃত নাম জন গ্রিফিথ চেইনে হলেও জ্যাক লন্ডন নামে খ্যাতি পেয়েছেন এই বিখ্যাত মার্কিন লেখক। তাঁর জন্ম ১৮৭৬ সালের ১২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়।
৪ দিন আগে