Ajker Patrika

শহীদুল্লা কায়সার

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ২৮
শহীদুল্লা কায়সার

শহীদুল্লা কায়সার একাধারে ভাষাসৈনিক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক,  ঔপন্যাসিক ও সাহিত্যিক। তবে তিনটি পরিচয় থেকে তাঁকে আলাদা করা যাবে না। একদিকে সাংবাদিকতা, অন্যদিকে রাজনীতি এবং অপর দিকে সাহিত্যকর্ম—এই ত্রিভুজ ফ্রেমে তিনি সমানভাবে সক্রিয় ছিলেন।   

তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল মাত্র ১৪ বছরে বয়সে,  মহাত্মা গান্ধীর ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তবে রাজনীতিতে পুরোদস্তুর প্রবেশ ভারত বিভক্তির পর,  তিনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। এ সময় তিনি সরাসরি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে এর সার্বক্ষণিক কর্মী হন। একাত্তরের পুরোটা সময় কলমকে অস্ত্র বানিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার জন্য তিনি ঢাকা ত্যাগ করেননি। 

তাঁর যৌবনের বড় একটা অংশ কেটেছে জেলে। ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হন তিনি। পরের ১০ বছরের মধ্যে ৮ বছরই ছিলেন কারাগারে। জেলে বসেই লেখেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম উপন্যাস ‘সারেং বউ’। এরপর ১৯৫৮ সালে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয় জননিরাপত্তা আইনে। আটক ছিলেন ১৯৬২ সাল পর্যন্ত।

সাংবাদিকতা ছিল তাঁর রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সাংবাদিকতার শুরু মাত্র ২২ বছর বয়সে ইত্তেফাকের মাধ্যমে। ১৯৬২ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আবার যোগ দেন সংবাদ পত্রিকায়। এখানে কাজ করার সময় ‘দেশপ্রেমিক’ ছদ্মনামে ‘রাজনৈতিক পরিক্রমা’ ও ‘বিশ্বকর্মা’ ছদ্মনামে ‘বিচিত্র কথা’ শীর্ষ  উপসম্পাদকীয় লিখতেন। এসব লেখায় ফুটে উঠত শোষিত ও নিপীড়িত বাঙালির স্বাধিকারের আকাঙ্ক্ষা। 

’৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা গড়িয়ে আসছে। পুরান ঢাকার কায়েতটুলির বাসায় তিনি বিবিসি শোনার জন্য অপেক্ষা করছেন। এ সময়ই পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর ফেরেননি। রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে বুদ্ধিজীবীদের অনেকের লাশ চিহ্নিত করা গেলেও পাওয়া যায়নি শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের লাশ। তিনি মনে করতেন, মানুষের চূড়ান্ত মুক্তিপথের দরজা খুলে দিতে পারে মার্কসবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত