তবে কি ইউলিয়াই পুতিনের নতুন চ্যালেঞ্জ

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

পুতিনবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে স্বামী নাভালনির সার্বক্ষণিক সহচর হলেও রাজনীতিতে অনাগ্রহী ছিলেন ইউলিয়া নাভালনায়া। কিন্তু কারাগারের ভেতর নাভালনির মৃত্যু ইউলিয়াকে পুতিনবিরোধী মঞ্চের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে পারে। স্বামীর মৃত্যুর পর পুতিনকে উদ্দেশ করে ইউলিয়ার হুংকারে সেই আভাসই পাওয়া যাচ্ছে। নাভালনির অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার বিবিসি জানিয়েছে, স্বামী নাভালনির স্টাইলেই একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন ইউলিয়া। ভিডিওর শুরুতেই তিনি স্বামীর মতো করে বলেছেন, ‘হাই!’

সরাসরি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ইউলিয়া বলেন, ‘আমার এই স্থানটিতে আরেকজনের থাকার কথা ছিল। কিন্তু সেই লোকটিকে ভ্লাদিমির পুতিন খুন করেছেন।’

স্বামী হারানোর শোকে ইউলিয়ার কণ্ঠ কিছুটা ভাঙা ভাঙা শোনালেও তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর কথাগুলো বলে গেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আর্কটিক সার্কেলের বাইরে কোনো একটি কারাগারে পুতিন শুধু একজন ব্যক্তি হিসাবে আলেক্সি নাভালনিকে হত্যা করেননি, তিনি আমাদের আশা, আমাদের স্বাধীনতা এবং ভবিষ্যৎকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন।’

এ সময় রাশিয়ার জনগণকে নিজের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান ইউলিয়া। তিনি বলেন বলেন, ‘আমাদের যা দরকার, তা হলো—একটি মুক্ত, শান্তিপূর্ণ এবং সুখী রাশিয়া। ভবিষ্যতের যে বিস্ময়কর রাশিয়ার স্বপ্ন আমার স্বামী দেখেছিলেন, এটাই আমাদের প্রয়োজন।’

তিনি অভিযোগ করেছেন, কর্তৃপক্ষ এখন নাভালনির মৃতদেহ লুকিয়ে রেখেছে এবং অপেক্ষা করছে যেন মৃতদেহ থেকে বিষাক্ত নার্ভ এজেন্টের নমুনা মিলিয়ে যায়।

রাশিয়ানদের নিজের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ইউলিয়া এ সময় তাঁর স্বামীর রাজনৈতিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভয় পাই না। আপনারাও ভয় পাবেন না।’

রাজনৈতিক সমাবেশে হোক কিংবা ২০২০ সালে নোভিচকের বিষক্রিয়ার পর হাসপাতালের বিছানা হোক—সর্বত্রই স্বামী নাভালনির পাশে ছিলেন ইউলিয়া। ১৯৭৬ সালে তিনি রাশিয়ার মস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন। একজন ব্যাংকার এবং অর্থনীতিবিদ হিসেবে কর্মজীবন শুরুর আগে তিনি রাশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ ইকোনমিকসে পড়াশোনা করেছেন।

১৯৯৮ সালে তুরস্কে ছুটি কাটাতে গিয়ে তৎকালীন উচ্চাকাঙ্ক্ষী তরুণ আইনজীবী আলেক্সি নাভালনির সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা হয় ইউলিয়ার। দুই বছর পর তারা বিয়ে করেন এবং পরবর্তী বছরগুলোতে তারা দুই সন্তানের জন্ম দেন।

অতীতে রাজনীতি করার ইচ্ছা না থাকলেও স্বামীর মৃত্যুর পর সেই চিন্তা থেকে ইউলিয়া বেরিয়ে এসেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভিডিও বার্তায় তিনি সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলা যায়, পুতিনবিরোধী রাজনীতিতে নাভালনির চেয়েও এখন তাঁর স্ত্রী ইউলিয়ার ত্যাগ আরও বেশি। যেহেতু এই লড়াইয়ে তিনি তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন। সামনের দিনগুলোতে ইউলিয়ার হাত ধরে নাভালনির সংগ্রাম আরও বড় আকার ধারণ করবে এমনটাই বিশ্বাস করছেন অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত