আব্দুর রহমান
পাকিস্তানের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে আলোচিত মুখ নিঃসন্দেহে ইমরান খান। গতকাল পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে লং মার্চে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এই নেতার দিকে গুলি চালানো হয়। যদিও তিনি গুরুতর আহত হননি, তাঁর পায়ে গুলি লেগেছে। তবু কর্মসূচি চলাকালে প্রকাশ্যে এমন হামলা নড়বড়ে পাকিস্তানের রাজনীতিকে আরও নাড়িয়ে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কোন পথে যাচ্ছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে ‘আহত’ পাকিস্তান?
গতকাল বিকেলে ওয়াজরিবাদের গুজরানওয়ালায় ইমরান খান তাঁর দলের ‘হাকিকি আজাদি’ লং মার্চে গুলিবিদ্ধ হন। তখন তাঁর দলের আরও ছয়জন আহত হন, মৃত্যু হয় একজনের। ইমরানকে হত্যা করতেই এই প্রচেষ্টা চালানো হয় বলে দাবি করেছেন তাঁর দলের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, ‘ইমরান খানকে হত্যা করতেই এই হামলা চালানো হয়।’ তবে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কজনক মন্তব্য এসেছে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ উমরের কাছ থেকে। ‘এই বন্দুক হামলার পেছনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল দায়ী’ বলে ইমরান খানকে উদ্ধৃত করে তিনি জানিয়েছেন।
অবশ্য পিটিআইয়ের সেনাবাহিনীবিরোধী অবস্থান নতুন নয়। চলতি বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই সরকার ও সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ইমরানের দল। হয়রানির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এক বিচারপতির বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর’ বক্তব্য দিয়ে বেশ নাকানিচুবানিও খেয়েছেন ইমরান। তোশাখানা মামলায় পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি এখনো আদালতে বিবেচনাধীন হলেও তাঁর জন্য যে অস্বস্তিকর, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
ইমরান খানের সঙ্গে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সম্পর্ক যে ভালো নয়, তা আসাদ উমরের বক্তব্যের অনেক আগেই গত এপ্রিলে স্পষ্ট হয়ে যায়। পরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) প্রধান জেনারেল নাদিম আনজুমের বক্তব্যে তা আরও খোলাসা হয়। তাঁর দাবি, ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইমরান সেনাবাহিনীর কাছে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ সহায়তা চেয়েছিলেন।
সব মিলিয়ে যদি বলতে হয়, ইমরান খান তাঁর রাজনীতিতে পাকিস্তানের ‘স্টাবলিশমেন্ট’ খ্যাত সশস্ত্র বাহিনীকে আস্থায় নিতে পারেননি বা তারাও তাঁকে আস্থায় নিতে পারেনি। দেশটির রাজনৈতিক প্রক্রিয়াও জোরালো নয়। এর ফলাফল হিসেবেই হয়তো ইমরান খানকে এমন হামলার মুখে পড়তে হলো।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের থিংকট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের ফেলো সুজা নওয়াজ বলেন, ‘পাকিস্তানে প্রকৃতপক্ষে কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নেই। দলগুলো কেবলই একে অপরের অতীত নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। এ ঘটনা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।’
পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। পিটিআইয়ের তরফ থেকে হামলার জন্য দায়ী করার বিষয়টি সেনাবাহিনী তো ভালো চোখে দেখবেই না, সরকারও নাখোশ হবে। পাকিস্তানি সাংবাদিক মোশাররফ জাইদির বলেছেন, ‘এই সংকট ঘনীভূত হলে তা থেকে প্রকাশ্যে বা গোপনে সব দিক থেকেই কেবল সামরিক স্বৈরশাসনের ধারণা জয়ী হবে।’
এই হামলাকে ইমরান খানের ‘তৎপরতার কারণে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া’ পাকিস্তানের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের ‘চেষ্টা’ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষ করে ইমরানের লং মার্চ ও জনসমাবেশ ক্ষমতাসীনদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে।
এরই মধ্যে তাঁর সমর্থকেরা ‘স্টাবলিশমেন্টের’ বিরুদ্ধে ইমরানকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, এদের ষড়যন্ত্রের কারণেই ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। ফলে ইমরান খানের ওপর এই হামলায় তার সমর্থকেরা আরও বিক্ষুব্ধ হবেন।
যা হোক, এই মাসের শেষ দিকেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া অবসরে যাবেন। তাঁর উত্তরসূরি যিনি হবেন, তিনি রাজনীতিতে নাক গলানো থেকে বিরত থাকবেন বলে অনেকেই আশা প্রকাশ করছেন। এমনটা হলে হয়তো ইমরান খান সেনাবাহিনীর ওপর অভিযোগ করা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সম্পূর্ণরূপে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করবেন। তবে হামলার পর সেনাবাহিনীর প্রতি ইমরান খানের দৃষ্টিভঙ্গি কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাজওয়ার অবসরের সময় যত ঘনিয়ে আসছে এবং ইমরান খানের আন্দোলন তত বেশি বেগবান হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করা সামরিক আধিপত্য বজায় রাখা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান রুখে দাঁড়াবে বলে অনেকে আশা করছেন।
তবে ইমরান খানের ইসলামপন্থী মনোভাব এবং পশ্চিমাবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি এই বিষয়টি অর্জনে খুব বেশি আত্মবিশ্বাস জোগায় না। তার পরও তাঁর সমর্থকেরা দাবি করতেই পারেন যে, পাকিস্তানিরা পশ্চিমা উদ্বেগকে পাত্তা দেয় না, তাঁদের সমর্থন আর দরকার নেই।
তবে অর্থনৈতিক সংকট ও দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় ‘বিপর্যস্ত’ পাকিস্তান কি আসলেই রাজনৈতিক ধকল সামলানোর সক্ষমতা রাখে? বিশেষত, প্রায় দেউলিয়া অনুৎপাদনশীল অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জর্জরিত অর্থনীতি কি বাইরের সহায়তা ছাড়া বাঁচতে পারবে? সহজ উত্তর হলো—না।
তবে দেরিতে হলেও পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। সেই প্রতিশ্রুতি এবং আইএমএফের ‘স্বল্প’ ঋণ পাকিস্তানকে কতটা সুস্থ করতে পারবে তা জানতে হলে ধৈর্য ধরতেই হবে। সেই সঙ্গে এখানে আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির রাজনীতিবিদেরা আসন্ন রাজনৈতিক সংকট কীভাবে মোকাবিলা করবেন, পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ মূলত নির্ভর করছে তার ওপর।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট প্রলম্বিত হওয়ার অন্যতম বড় কারণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর দেশটিতে কোনো প্রধানমন্ত্রীই পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন দেশটির বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। এই অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর হামলা দেশটির রাজনীতিকে আরও সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
দেশটিতে বারবার রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার আরও একটি বড় কারণ বোধ হয় হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে অনীহা। যেমন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বেনজীর ভুট্টোকে হত্যায় কারা দায়ী, তা দেড় দশকেও জানা যায়নি। আর তাই বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশটির রাজনীতি ও অর্থনীর সংকটকে আরও বিপৎসংকুল ও ভয়াবহ করে তুলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য ডন, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ান
পাকিস্তানের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে আলোচিত মুখ নিঃসন্দেহে ইমরান খান। গতকাল পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে লং মার্চে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এই নেতার দিকে গুলি চালানো হয়। যদিও তিনি গুরুতর আহত হননি, তাঁর পায়ে গুলি লেগেছে। তবু কর্মসূচি চলাকালে প্রকাশ্যে এমন হামলা নড়বড়ে পাকিস্তানের রাজনীতিকে আরও নাড়িয়ে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কোন পথে যাচ্ছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে ‘আহত’ পাকিস্তান?
গতকাল বিকেলে ওয়াজরিবাদের গুজরানওয়ালায় ইমরান খান তাঁর দলের ‘হাকিকি আজাদি’ লং মার্চে গুলিবিদ্ধ হন। তখন তাঁর দলের আরও ছয়জন আহত হন, মৃত্যু হয় একজনের। ইমরানকে হত্যা করতেই এই প্রচেষ্টা চালানো হয় বলে দাবি করেছেন তাঁর দলের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, ‘ইমরান খানকে হত্যা করতেই এই হামলা চালানো হয়।’ তবে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কজনক মন্তব্য এসেছে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আসাদ উমরের কাছ থেকে। ‘এই বন্দুক হামলার পেছনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল দায়ী’ বলে ইমরান খানকে উদ্ধৃত করে তিনি জানিয়েছেন।
অবশ্য পিটিআইয়ের সেনাবাহিনীবিরোধী অবস্থান নতুন নয়। চলতি বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই সরকার ও সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ইমরানের দল। হয়রানির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এক বিচারপতির বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর’ বক্তব্য দিয়ে বেশ নাকানিচুবানিও খেয়েছেন ইমরান। তোশাখানা মামলায় পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি এখনো আদালতে বিবেচনাধীন হলেও তাঁর জন্য যে অস্বস্তিকর, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
ইমরান খানের সঙ্গে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সম্পর্ক যে ভালো নয়, তা আসাদ উমরের বক্তব্যের অনেক আগেই গত এপ্রিলে স্পষ্ট হয়ে যায়। পরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) প্রধান জেনারেল নাদিম আনজুমের বক্তব্যে তা আরও খোলাসা হয়। তাঁর দাবি, ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইমরান সেনাবাহিনীর কাছে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ সহায়তা চেয়েছিলেন।
সব মিলিয়ে যদি বলতে হয়, ইমরান খান তাঁর রাজনীতিতে পাকিস্তানের ‘স্টাবলিশমেন্ট’ খ্যাত সশস্ত্র বাহিনীকে আস্থায় নিতে পারেননি বা তারাও তাঁকে আস্থায় নিতে পারেনি। দেশটির রাজনৈতিক প্রক্রিয়াও জোরালো নয়। এর ফলাফল হিসেবেই হয়তো ইমরান খানকে এমন হামলার মুখে পড়তে হলো।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের থিংকট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের ফেলো সুজা নওয়াজ বলেন, ‘পাকিস্তানে প্রকৃতপক্ষে কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নেই। দলগুলো কেবলই একে অপরের অতীত নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। এ ঘটনা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।’
পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। পিটিআইয়ের তরফ থেকে হামলার জন্য দায়ী করার বিষয়টি সেনাবাহিনী তো ভালো চোখে দেখবেই না, সরকারও নাখোশ হবে। পাকিস্তানি সাংবাদিক মোশাররফ জাইদির বলেছেন, ‘এই সংকট ঘনীভূত হলে তা থেকে প্রকাশ্যে বা গোপনে সব দিক থেকেই কেবল সামরিক স্বৈরশাসনের ধারণা জয়ী হবে।’
এই হামলাকে ইমরান খানের ‘তৎপরতার কারণে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া’ পাকিস্তানের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের ‘চেষ্টা’ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষ করে ইমরানের লং মার্চ ও জনসমাবেশ ক্ষমতাসীনদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে।
এরই মধ্যে তাঁর সমর্থকেরা ‘স্টাবলিশমেন্টের’ বিরুদ্ধে ইমরানকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, এদের ষড়যন্ত্রের কারণেই ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। ফলে ইমরান খানের ওপর এই হামলায় তার সমর্থকেরা আরও বিক্ষুব্ধ হবেন।
যা হোক, এই মাসের শেষ দিকেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া অবসরে যাবেন। তাঁর উত্তরসূরি যিনি হবেন, তিনি রাজনীতিতে নাক গলানো থেকে বিরত থাকবেন বলে অনেকেই আশা প্রকাশ করছেন। এমনটা হলে হয়তো ইমরান খান সেনাবাহিনীর ওপর অভিযোগ করা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সম্পূর্ণরূপে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করবেন। তবে হামলার পর সেনাবাহিনীর প্রতি ইমরান খানের দৃষ্টিভঙ্গি কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাজওয়ার অবসরের সময় যত ঘনিয়ে আসছে এবং ইমরান খানের আন্দোলন তত বেশি বেগবান হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করা সামরিক আধিপত্য বজায় রাখা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান রুখে দাঁড়াবে বলে অনেকে আশা করছেন।
তবে ইমরান খানের ইসলামপন্থী মনোভাব এবং পশ্চিমাবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি এই বিষয়টি অর্জনে খুব বেশি আত্মবিশ্বাস জোগায় না। তার পরও তাঁর সমর্থকেরা দাবি করতেই পারেন যে, পাকিস্তানিরা পশ্চিমা উদ্বেগকে পাত্তা দেয় না, তাঁদের সমর্থন আর দরকার নেই।
তবে অর্থনৈতিক সংকট ও দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় ‘বিপর্যস্ত’ পাকিস্তান কি আসলেই রাজনৈতিক ধকল সামলানোর সক্ষমতা রাখে? বিশেষত, প্রায় দেউলিয়া অনুৎপাদনশীল অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জর্জরিত অর্থনীতি কি বাইরের সহায়তা ছাড়া বাঁচতে পারবে? সহজ উত্তর হলো—না।
তবে দেরিতে হলেও পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। সেই প্রতিশ্রুতি এবং আইএমএফের ‘স্বল্প’ ঋণ পাকিস্তানকে কতটা সুস্থ করতে পারবে তা জানতে হলে ধৈর্য ধরতেই হবে। সেই সঙ্গে এখানে আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির রাজনীতিবিদেরা আসন্ন রাজনৈতিক সংকট কীভাবে মোকাবিলা করবেন, পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ মূলত নির্ভর করছে তার ওপর।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট প্রলম্বিত হওয়ার অন্যতম বড় কারণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর দেশটিতে কোনো প্রধানমন্ত্রীই পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন দেশটির বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। এই অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর হামলা দেশটির রাজনীতিকে আরও সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
দেশটিতে বারবার রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার আরও একটি বড় কারণ বোধ হয় হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে অনীহা। যেমন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বেনজীর ভুট্টোকে হত্যায় কারা দায়ী, তা দেড় দশকেও জানা যায়নি। আর তাই বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশটির রাজনীতি ও অর্থনীর সংকটকে আরও বিপৎসংকুল ও ভয়াবহ করে তুলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য ডন, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ান
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
৫ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগে