মারুফ ইসলাম
গত ছয় বছর ধরে যা ঘটছে, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের ইতিহাসে এমনটি আর ঘটেনি। একের পর এক প্রধানমন্ত্রী প্রবেশ করছেন, আর বের হচ্ছেন এর সদর দুয়ার দিয়ে। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রবেশ করেছিলেন লিজ ট্রাস, আর বের হয়ে গেলেন ঠিক ৪৫ দিনের মাথায়। ডাউনিং স্ট্রিটের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রেকর্ড গড়লেন। এর আগে ১৮২৭ সালে জর্জ ক্যানিং ১১৯ দিন ক্ষমতায় থেকে ওই রেকর্ডের অধিকারী হয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে পরিচিত ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট। এত ঘন ঘন এর বাসিন্দা পরিবর্তন এর আগে হতে দেখা যায়নি। ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা পরিবর্তন হওয়া—অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হওয়া যুক্তরাজ্যে এতটা ছেলেখেলা ছিল না কখনোই। বরং স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য শাসনের সমার্থক ছিল ডাউনিং স্ট্রিট। সেখানে কী এমন হলো যে, মাত্র ছয় বছরে চারজন প্রধানমন্ত্রী এল আর গেল এই ভবনে এবং আরও একজন অতি শিগগিরই প্রবেশ করতে যাচ্ছেন?
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ত্রুটিপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা, দুর্বল নেতৃত্ব, দলীয় ও ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে দেশের ওপরে স্থান দেওয়া, রাজনৈতিক মেরুকরণ, জনপ্রিয় ভাবনা থেকে অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়া ইত্যাদি কারণে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে এবং ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সদর দরজা কার্যত ‘ঘূর্ণমান দরজা’ হয়ে উঠেছে।
ঘটনার শুরু ২০১৬ সালে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে (ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোট থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার আন্দোলন) গণভোটের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তিনি ভেবেছিলেন, নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির গৃহবিবাদ ঠেকাতে এবং দলকে ক্ষমতায় রাখতে তাঁর এ গণভোট রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু তাঁর আশার গুড়ে বালি পড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি।
ব্রিটিশ জনগণ অবিশ্বাস্যভাবে ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। ফলে ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়তে হয়েছিল ডেভিড ক্যামেরনকে। কারণ, তিনি ছিলেন ইইউ জোটের সঙ্গে থাকার পক্ষে।
সে সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদেরা কপালে ভাঁজ ফেলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ব্রেক্সিটের ফলে ব্রিটিশদের মধ্যে বিভাজন বাড়বে। একই সঙ্গে ব্রিটেনের বৈদেশিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যনীতির গতিপথও পরিবর্ত হবে। দেশটি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিকভাবে অচ্ছুত হয়ে পড়বে এবং দারিদ্র্য তুলনামূলকভাবে বাড়বে।
ব্রেক্সিটের ছয় বছর পর সেসব ভবিষ্যদ্বাণীর অনেকটাই ফলতে দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, ব্রেক্সিট ভোটের রূপকার ও ব্রেক্সিটের পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার কণ্ঠ বরিস জনসনসহ অন্য নেতাদের কারও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ফলে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা চরমে ওঠে।
যা হোক, ব্রেক্সিট গণভোটে হেরে যাওয়ার পর ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করেন। এর পর প্রধানমন্ত্রী হোন থেরেসা মে। ২০১৭ সালে তিনি আরেকটি ভুল করে বসেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের আগেই ‘আগাম ভোট’ করে ফেলেন। এতে হাউস অব কমন্সে থেরেসা মে নিয়ন্ত্রণ হারান।
থেরেসা মে চেয়েছিলেন, পার্লামেন্টের মাধ্যমে ব্রেক্সিট চুক্তি এগিয়ে নিতে। কিন্তু তাঁর সে চেষ্টা ব্যর্থ করেছিলেন তাঁরই দলের বিরোধী শাখার এমপিরা। তারা স্পষ্টভাবে ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত এই ব্রেক্সিট ইস্যুই মেকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামায়।
এর পর কনজারভেটিভ পার্টি বরিস জনসনের দিকে আশীর্বাদের হাত বাড়ায়। ফলে ব্রিটেন পায় আরও একজন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ২০১৯ সালে বিপুল ভোটে প্রধানমন্ত্রী হন। পরের বছরেই তিনি ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন এবং ব্রেক্সিট আন্দোলনকে সফল করেন। ব্রিটিশরা ভেবেছিল, এবার বুঝি ডাউনিং স্ট্রিটে স্থিতিশীলতা এল। কিন্তু সে আশাও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
করোনা মহামারি বরিসের জন্য শিরে সংক্রান্তি হয়ে আসে। ব্রিটেনে দুই লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায় করোনায়। এটি ইউরোপে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু। ফলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন বরিস জনসন। এর মধ্যে সামাজিক দূরত্ব না মেনে পার্টির আয়োজন করে সে সমালোচনার আগুনে আরও ঘি ঢালেন ‘খামখেয়ালি’ বরিস। এ ঘটনার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে এবং জরিমানা দিতে বাধ্য হন। তাতেও শেষ রক্ষা হয় না। তীব্র অসন্তোষের মুখে শেষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
এর পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বরিসের স্থলাভিষিক্ত হন লিজ ট্রাস। তিনি মূলত ধনীদের কর কমিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু ১০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, পাউন্ডের পতন, বন্ধকের হার বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণগুলো ট্রাসকে অথই সাগরে ফেলে দেয়।
গত মাসে সাবেক অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টং ‘মিনি বাজেট’ ঘোষণা করেছিলেন। ওই বাজেটে করপোরেশন কর কমানো, সবার জন্য প্রযোজ্য আয়করে ১ শতাংশ ছাড় এবং জাতীয় বিমার চাঁদা বাড়ানোর আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। ব্যাংকারদের বোনাসের সীমা তুলে দেওয়া হয়।
এসব সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। সেই বিক্ষোভের জেরেই শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয় তাঁকে।
লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক টিম বেল বলেছেন, জনসন ও ট্রাসের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর একটি বড় কারণ হচ্ছে, তাঁরা জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করতে পারেননি।
গত মার্চে প্রকাশিত ‘দ্য কনজারভেটিভ পার্টি আফটার ব্রেক্সিট’ বইয়ে টিম বেল বলেছেন, রাজনীতিবিদেরা এখনো পৌরাণিক কাহিনি খাওয়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা হাস্যকর।’
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও পাবলিক পলিসির ইমেরিটাস অধ্যাপক প্যাট্রিক ডানলেভি বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সরকার ব্যবস্থার ত্রুটি ও কনজারভেটিভ পার্টি যেভাবে তার নেতাদের বেছে নেয়, সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে এই বিশৃঙ্খলার বীজ নিহিত আছে। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীরা অবাধে এবং কোনো তদারকি ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ পদে লোক নিয়োগ দিতে পারেন। এই ক্ষমতা ব্যবহার করেই কোয়াসি কোয়ার্টংকে চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ট্রাস। কিন্তু পরে তাঁর মিনি বাজেট নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
ডানলেভি আরও বলেছেন, আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, পার্টির নেতৃত্ব সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় না।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, দ্য ইকোনমিস্ট ও এনপিআর
গত ছয় বছর ধরে যা ঘটছে, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের ইতিহাসে এমনটি আর ঘটেনি। একের পর এক প্রধানমন্ত্রী প্রবেশ করছেন, আর বের হচ্ছেন এর সদর দুয়ার দিয়ে। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রবেশ করেছিলেন লিজ ট্রাস, আর বের হয়ে গেলেন ঠিক ৪৫ দিনের মাথায়। ডাউনিং স্ট্রিটের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রেকর্ড গড়লেন। এর আগে ১৮২৭ সালে জর্জ ক্যানিং ১১৯ দিন ক্ষমতায় থেকে ওই রেকর্ডের অধিকারী হয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে পরিচিত ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট। এত ঘন ঘন এর বাসিন্দা পরিবর্তন এর আগে হতে দেখা যায়নি। ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা পরিবর্তন হওয়া—অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হওয়া যুক্তরাজ্যে এতটা ছেলেখেলা ছিল না কখনোই। বরং স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য শাসনের সমার্থক ছিল ডাউনিং স্ট্রিট। সেখানে কী এমন হলো যে, মাত্র ছয় বছরে চারজন প্রধানমন্ত্রী এল আর গেল এই ভবনে এবং আরও একজন অতি শিগগিরই প্রবেশ করতে যাচ্ছেন?
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ত্রুটিপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা, দুর্বল নেতৃত্ব, দলীয় ও ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে দেশের ওপরে স্থান দেওয়া, রাজনৈতিক মেরুকরণ, জনপ্রিয় ভাবনা থেকে অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়া ইত্যাদি কারণে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে এবং ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সদর দরজা কার্যত ‘ঘূর্ণমান দরজা’ হয়ে উঠেছে।
ঘটনার শুরু ২০১৬ সালে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে (ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোট থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার আন্দোলন) গণভোটের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তিনি ভেবেছিলেন, নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির গৃহবিবাদ ঠেকাতে এবং দলকে ক্ষমতায় রাখতে তাঁর এ গণভোট রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু তাঁর আশার গুড়ে বালি পড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি।
ব্রিটিশ জনগণ অবিশ্বাস্যভাবে ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। ফলে ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়তে হয়েছিল ডেভিড ক্যামেরনকে। কারণ, তিনি ছিলেন ইইউ জোটের সঙ্গে থাকার পক্ষে।
সে সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদেরা কপালে ভাঁজ ফেলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ব্রেক্সিটের ফলে ব্রিটিশদের মধ্যে বিভাজন বাড়বে। একই সঙ্গে ব্রিটেনের বৈদেশিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যনীতির গতিপথও পরিবর্ত হবে। দেশটি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিকভাবে অচ্ছুত হয়ে পড়বে এবং দারিদ্র্য তুলনামূলকভাবে বাড়বে।
ব্রেক্সিটের ছয় বছর পর সেসব ভবিষ্যদ্বাণীর অনেকটাই ফলতে দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, ব্রেক্সিট ভোটের রূপকার ও ব্রেক্সিটের পক্ষে সবচেয়ে সোচ্চার কণ্ঠ বরিস জনসনসহ অন্য নেতাদের কারও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ফলে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা চরমে ওঠে।
যা হোক, ব্রেক্সিট গণভোটে হেরে যাওয়ার পর ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করেন। এর পর প্রধানমন্ত্রী হোন থেরেসা মে। ২০১৭ সালে তিনি আরেকটি ভুল করে বসেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের আগেই ‘আগাম ভোট’ করে ফেলেন। এতে হাউস অব কমন্সে থেরেসা মে নিয়ন্ত্রণ হারান।
থেরেসা মে চেয়েছিলেন, পার্লামেন্টের মাধ্যমে ব্রেক্সিট চুক্তি এগিয়ে নিতে। কিন্তু তাঁর সে চেষ্টা ব্যর্থ করেছিলেন তাঁরই দলের বিরোধী শাখার এমপিরা। তারা স্পষ্টভাবে ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত এই ব্রেক্সিট ইস্যুই মেকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামায়।
এর পর কনজারভেটিভ পার্টি বরিস জনসনের দিকে আশীর্বাদের হাত বাড়ায়। ফলে ব্রিটেন পায় আরও একজন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ২০১৯ সালে বিপুল ভোটে প্রধানমন্ত্রী হন। পরের বছরেই তিনি ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন এবং ব্রেক্সিট আন্দোলনকে সফল করেন। ব্রিটিশরা ভেবেছিল, এবার বুঝি ডাউনিং স্ট্রিটে স্থিতিশীলতা এল। কিন্তু সে আশাও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
করোনা মহামারি বরিসের জন্য শিরে সংক্রান্তি হয়ে আসে। ব্রিটেনে দুই লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায় করোনায়। এটি ইউরোপে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু। ফলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন বরিস জনসন। এর মধ্যে সামাজিক দূরত্ব না মেনে পার্টির আয়োজন করে সে সমালোচনার আগুনে আরও ঘি ঢালেন ‘খামখেয়ালি’ বরিস। এ ঘটনার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে এবং জরিমানা দিতে বাধ্য হন। তাতেও শেষ রক্ষা হয় না। তীব্র অসন্তোষের মুখে শেষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
এর পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বরিসের স্থলাভিষিক্ত হন লিজ ট্রাস। তিনি মূলত ধনীদের কর কমিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু ১০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, পাউন্ডের পতন, বন্ধকের হার বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণগুলো ট্রাসকে অথই সাগরে ফেলে দেয়।
গত মাসে সাবেক অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টং ‘মিনি বাজেট’ ঘোষণা করেছিলেন। ওই বাজেটে করপোরেশন কর কমানো, সবার জন্য প্রযোজ্য আয়করে ১ শতাংশ ছাড় এবং জাতীয় বিমার চাঁদা বাড়ানোর আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। ব্যাংকারদের বোনাসের সীমা তুলে দেওয়া হয়।
এসব সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। সেই বিক্ষোভের জেরেই শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয় তাঁকে।
লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক টিম বেল বলেছেন, জনসন ও ট্রাসের প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর একটি বড় কারণ হচ্ছে, তাঁরা জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করতে পারেননি।
গত মার্চে প্রকাশিত ‘দ্য কনজারভেটিভ পার্টি আফটার ব্রেক্সিট’ বইয়ে টিম বেল বলেছেন, রাজনীতিবিদেরা এখনো পৌরাণিক কাহিনি খাওয়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা হাস্যকর।’
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও পাবলিক পলিসির ইমেরিটাস অধ্যাপক প্যাট্রিক ডানলেভি বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সরকার ব্যবস্থার ত্রুটি ও কনজারভেটিভ পার্টি যেভাবে তার নেতাদের বেছে নেয়, সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে এই বিশৃঙ্খলার বীজ নিহিত আছে। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীরা অবাধে এবং কোনো তদারকি ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ পদে লোক নিয়োগ দিতে পারেন। এই ক্ষমতা ব্যবহার করেই কোয়াসি কোয়ার্টংকে চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ট্রাস। কিন্তু পরে তাঁর মিনি বাজেট নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
ডানলেভি আরও বলেছেন, আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, পার্টির নেতৃত্ব সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় না।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, দ্য ইকোনমিস্ট ও এনপিআর
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
২ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগে