পরাগ মাঝি
ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে, চাঁদের বুকে এক খণ্ড জমি কিনে স্ত্রীকে উপহার দিয়েছেন সঞ্জয় মাহাতো নামে পশ্চিমবঙ্গের এক বাঙালি। বিয়ের আগে স্ত্রীকে তিনি কথা দিয়েছিলেন—একদিন চাঁদ এনে দেবেন হাতে। কিন্তু এমন কথা তো আর রাখা সম্ভব না। তাই এক টুকরো জমি কিনেই স্ত্রীর হাতে দলিল তুলে দিয়ে কিছুটা মান রক্ষা করেছেন সঞ্জয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বন্ধুর সহযোগিতায় ‘লুনা সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে চাঁদের ওই জমিটুকু কিনেছেন সঞ্জয়। শুধু কি সঞ্জয়? তাঁর মতো চাঁদের জমি কেনার আরও উদাহরণ ভূরি ভূরি।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, চাইলেই কি চাঁদে জমি কেনা যায়? এই জমির বাজার দরই-বা কেমন? এটি কি লাভজনক বিনিয়োগ হতে পারে? কারা বেচে এই জমি?
এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে প্রথমেই হোঁচট খেতে হলো, সম্প্রতি চন্দ্র জয় করা ভারতের ‘দ্য হিন্দু’সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবর পড়ে। দেশটির ‘রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড’ পত্রিকার একটি বিশ্লেষণে চাঁদে জমি কেনার বিষয়টিকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, চাঁদে জমি কেনা কিংবা কারও কাছে চাঁদের জমি বিক্রি করা সম্পূর্ণ অবৈধ একটি বিষয়।
বিষয়টি সম্পর্কে আরও পরিষ্কারভাবে জানতে আমরা একটু অতীতে ফিরে যাই, সেই ১৯৬৭ সালে। সে সময় পৃথিবীর তিনটি শক্তিশালী রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মহাকাশ নিয়ে একটি চুক্তি করেছিল। এই চুক্তিতে পরে বিশ্বের আরও ১০৯টি দেশ স্বাক্ষর করে। সম্প্রতি চাঁদ জয় করা ভারতও চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেছিল।
চুক্তিটির মূল বক্তব্যটি হলো এমন—পৃথিবীর বাইরের মহাকাশ এমন কোনো বিষয় নয় যেখানে সার্বভৌমত্ব দাবি কিংবা অন্য কোনো উপায়ে জাতীয় দখলদারত্বের দাবি করা যেতে পারে।
এই চুক্তিটি সদস্য দেশগুলোকে মহাকাশে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত রাখে।
যা হোক, কোনো ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও সঞ্জয় মাহাতো সহ আরও অনেকেই ইতিমধ্যে জমি কিনে দলিল দস্তাবেজ নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন। তাঁরা যে প্রতারণার শিকার হননি তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় যারা চাঁদে জমির মালিকানা দাবি করেন তাঁরা হয়তো ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সম্পদ অনুসন্ধান ও ব্যবহার আইনের ৪০২ ধারাটির প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সেই ধারা মতে, একজন মার্কিন নাগরিক বাণিজ্যিক কাজে নিযুক্ত কোনো গ্রহাণু বা মহাকাশ সম্পদকে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা সহ প্রযোজ্য আইন অনুসারে এটির মালিকানা, পরিবহন, ব্যবহার এবং বিক্রয় করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে যারা মার্কিন নাগরিক নন তাঁরা মার্কিন নাগরিকত্ব আছে এমন ব্যক্তি কিংবা বাণিজ্যিক অধিকার রাখে এমন প্রতিষ্ঠানের বিকল্প বা এজেন্ট হিসেবে চুক্তি করে চাঁদে সম্পদের অধিকারী হতে পারেন। তবে বেশ কিছু প্রতিবেদন অনুসারে—মার্কিন পার্লামেন্টে ওই বিলটি কখনোই পাশ হয়নি।
উপরন্তু আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী, মহাকাশ কিংবা চাঁদে অনুসন্ধানের মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য কোনো সম্পদ আবিষ্কৃত হলে তা সমস্ত মানবজাতির কল্যাণে ব্যয় করা হবে। স্পষ্ট করে আরও বলা আছে, আলাদা কিংবা এককভাবে কোনো ব্যক্তি কখনোই চাঁদের জমি কিনতে পারবে না।
মহাকাশ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তির বরাতে পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তিগত মালিকানায় চাঁদের জমি রেজিস্ট্রি এবং কেনা-বেচা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসম্ভব। তারপরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান চাঁদ, এমনকি মঙ্গল গ্রহের জমি কেনার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে যাচ্ছে। এমন ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হওয়ার উৎকৃষ্ট উদাহরণ—স্ত্রীকে চাঁদের জমি কিনে সঞ্জয়ের উপহার দেওয়ার বিষয়টি।
এ ধরনের প্রতারণায় পা না দিতে পরামর্শ রইল।
ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে, চাঁদের বুকে এক খণ্ড জমি কিনে স্ত্রীকে উপহার দিয়েছেন সঞ্জয় মাহাতো নামে পশ্চিমবঙ্গের এক বাঙালি। বিয়ের আগে স্ত্রীকে তিনি কথা দিয়েছিলেন—একদিন চাঁদ এনে দেবেন হাতে। কিন্তু এমন কথা তো আর রাখা সম্ভব না। তাই এক টুকরো জমি কিনেই স্ত্রীর হাতে দলিল তুলে দিয়ে কিছুটা মান রক্ষা করেছেন সঞ্জয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বন্ধুর সহযোগিতায় ‘লুনা সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে চাঁদের ওই জমিটুকু কিনেছেন সঞ্জয়। শুধু কি সঞ্জয়? তাঁর মতো চাঁদের জমি কেনার আরও উদাহরণ ভূরি ভূরি।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, চাইলেই কি চাঁদে জমি কেনা যায়? এই জমির বাজার দরই-বা কেমন? এটি কি লাভজনক বিনিয়োগ হতে পারে? কারা বেচে এই জমি?
এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে প্রথমেই হোঁচট খেতে হলো, সম্প্রতি চন্দ্র জয় করা ভারতের ‘দ্য হিন্দু’সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবর পড়ে। দেশটির ‘রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড’ পত্রিকার একটি বিশ্লেষণে চাঁদে জমি কেনার বিষয়টিকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, চাঁদে জমি কেনা কিংবা কারও কাছে চাঁদের জমি বিক্রি করা সম্পূর্ণ অবৈধ একটি বিষয়।
বিষয়টি সম্পর্কে আরও পরিষ্কারভাবে জানতে আমরা একটু অতীতে ফিরে যাই, সেই ১৯৬৭ সালে। সে সময় পৃথিবীর তিনটি শক্তিশালী রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মহাকাশ নিয়ে একটি চুক্তি করেছিল। এই চুক্তিতে পরে বিশ্বের আরও ১০৯টি দেশ স্বাক্ষর করে। সম্প্রতি চাঁদ জয় করা ভারতও চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেছিল।
চুক্তিটির মূল বক্তব্যটি হলো এমন—পৃথিবীর বাইরের মহাকাশ এমন কোনো বিষয় নয় যেখানে সার্বভৌমত্ব দাবি কিংবা অন্য কোনো উপায়ে জাতীয় দখলদারত্বের দাবি করা যেতে পারে।
এই চুক্তিটি সদস্য দেশগুলোকে মহাকাশে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত রাখে।
যা হোক, কোনো ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও সঞ্জয় মাহাতো সহ আরও অনেকেই ইতিমধ্যে জমি কিনে দলিল দস্তাবেজ নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন। তাঁরা যে প্রতারণার শিকার হননি তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় যারা চাঁদে জমির মালিকানা দাবি করেন তাঁরা হয়তো ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সম্পদ অনুসন্ধান ও ব্যবহার আইনের ৪০২ ধারাটির প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সেই ধারা মতে, একজন মার্কিন নাগরিক বাণিজ্যিক কাজে নিযুক্ত কোনো গ্রহাণু বা মহাকাশ সম্পদকে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা সহ প্রযোজ্য আইন অনুসারে এটির মালিকানা, পরিবহন, ব্যবহার এবং বিক্রয় করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে যারা মার্কিন নাগরিক নন তাঁরা মার্কিন নাগরিকত্ব আছে এমন ব্যক্তি কিংবা বাণিজ্যিক অধিকার রাখে এমন প্রতিষ্ঠানের বিকল্প বা এজেন্ট হিসেবে চুক্তি করে চাঁদে সম্পদের অধিকারী হতে পারেন। তবে বেশ কিছু প্রতিবেদন অনুসারে—মার্কিন পার্লামেন্টে ওই বিলটি কখনোই পাশ হয়নি।
উপরন্তু আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী, মহাকাশ কিংবা চাঁদে অনুসন্ধানের মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য কোনো সম্পদ আবিষ্কৃত হলে তা সমস্ত মানবজাতির কল্যাণে ব্যয় করা হবে। স্পষ্ট করে আরও বলা আছে, আলাদা কিংবা এককভাবে কোনো ব্যক্তি কখনোই চাঁদের জমি কিনতে পারবে না।
মহাকাশ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তির বরাতে পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তিগত মালিকানায় চাঁদের জমি রেজিস্ট্রি এবং কেনা-বেচা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসম্ভব। তারপরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান চাঁদ, এমনকি মঙ্গল গ্রহের জমি কেনার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে যাচ্ছে। এমন ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হওয়ার উৎকৃষ্ট উদাহরণ—স্ত্রীকে চাঁদের জমি কিনে সঞ্জয়ের উপহার দেওয়ার বিষয়টি।
এ ধরনের প্রতারণায় পা না দিতে পরামর্শ রইল।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
১ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৭ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
১২ দিন আগে