সিরিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন রাশিয়া, খেলোয়াড়ের ভূমিকায় তুরস্ক

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩: ৩৮
Thumbnail image
সিরিয়ার একজন কুর্দি যোদ্ধা, উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় দমাস্কাসের পতনের পর বিজয়ের চিহ্ন দেখান। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পতন হয়েছে। পতন হয়েছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে আল-আসাদ দামেস্ক ছেড়ে চলে গেছেন। তবে তারা উল্লেখ করেনি আসাদ বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন।

বাশার আল-আসাদের পতনের পর বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণকে ঘিরে কূটনৈতিক লড়াই আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

এক দিন আগেই দোহা ফোরামের একটি বৈঠকে রাশিয়া, ইরান, তুরস্কসহ পাঁচটি আরব রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়েছিলেন দামেস্কের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে। কিন্তু এই বৈঠকের ফলাফল ভেস্তে গেছে। মাত্র ১২ ঘণ্টা পর, দামেস্ক থেকে এসেছে বিদ্রোহীদের বিজয়ের বার্তা। যা দোহার কূটনৈতিক আলোচনাকে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। সেই সঙ্গে আসাদের পতন রাশিয়া ও ইরানকে তাদের প্রভাবশালী অবস্থান হারানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।

দামেস্কের পতনের পর কূটনীতিকদের উদ্বেগ বেড়েছে। বিশেষ করে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির উদ্বেগ বেড়েছে বেশি। কারণ, এত দিন বাশার আল-আসাদ নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সিরিয়ার সেনাবাহিনী, ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া এবং রাশিয়ার সহায়তায় বিরোধীদের দমন করতে ব্যাপক বোমা হামলা এবং বিধিনিষেধ ব্যবহার করেন।

তবে আসাদ সরকারের অবস্থা নিয়ে আগে থেকেই উদ্বেগ ছিল রাশিয়ার। আসাদের বিদায়ের খবর শুনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মুখভার করে বলেছিলেন, ‘আমরা কি সিরিয়ায় হেরেছি? যদি আপনার জানার প্রয়োজন হয়, তাহলে হ্যাঁ। আমরাও হারতে পারি।’ লাভরভের এমন কথা প্রমাণ করে, ইরান এবং রাশিয়ার কূটনীতিকরা সিরিয়ায় ব্যর্থ।

রাশিয়ার কূটনীতিকেরা আগেই জানিয়েছিলেন, আসাদ কোনো রাজনৈতিক সমঝোতায় অংশ নিতে আগ্রহী ছিলেন না এবং তিনি তুরস্কের সঙ্গেও কোনো আলোচনায় রাজি হননি।

অন্যদিকে, তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ‘দামেস্কের পতন তুরস্কের জন্য সবচেয়ে বড় সুফল হতে পারে। তুরস্কের হাতে আছে সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মির মতো সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং হায়াত তাহরির আল-শামের সঙ্গে সুসম্পর্ক। যা ভবিষ্যতে সিরিয়ার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

তবে ইরানের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল। কারণ, তুরস্ক ও রাশিয়ার সঙ্গে একীভূতভাবে কাজ করা ইরানের দীর্ঘদিনের কৌশল ভেস্তে যাচ্ছে। লেবানন ও হিজবুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ইরানের নিরাপত্তা কৌশল এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

অর্থাৎ, আসাদের পতনের পর সিরিয়ার পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় কূটনীতির দিক থেকে রাশিয়া ও ইরানের প্রভাব খর্ব হবে। তবে তুরস্কের ভূমিকা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দামেস্কের পতনে সিরিয়া ও তুরস্কের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা হলো। এখন সিরিয়ায় একটি গণতান্ত্রিক, স্বাধীন সরকারের প্রতিষ্ঠা করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিতে হবে তুরস্ককে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত