অনলাইন ডেস্ক
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশত্যাগের কয়েক মাস পর শেখ হাসিনাকে ‘বিচার প্রক্রিয়ার’ মুখোমুখি করতে তাঁকে দেশে ফেরানোর জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার পক্ষ থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি ‘নোট ভারবাল’ (ভারবাল নোট সাধারণত কূটনৈতিক যোগাযোগের সর্বনিম্ন স্তর এবং এটি কোনো একটি বিষয়ে একটি দেশের অগ্রাধিকার নির্দেশ করে) পাঠানো হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব বলেছেন, ‘আমরা চাই ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ন্যায্যতা, সমতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে গড়ে উঠুক।’ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সফরের প্রাক্কালে এই মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ঢাকা ত্যাগ করার পর আদালতে আত্মসমর্পণ না করায় তাঁকে পলাতক ঘোষণা করা হয়। ১৩ আগস্ট তাঁর এবং তাঁর অন্য সাবেক সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাত্রদের নির্মূল করার পরিকল্পনা এবং শত শত বিক্ষোভকারীকে নির্যাতন ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অপরাধকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটিকে শক্তিশালী করা এবং এতে জয়ী হওয়ার জন্য বিশ্বাসযোগ্য ও প্রমাণযোগ্য তথ্য সংগ্রহে কাজ করছে। গত ১৭ অক্টোবর ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাঁদের মধ্যে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টা, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা আছেন। ১৮ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থাকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেন। শিগগিরই অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
সাধারণ আইনের বিচারব্যবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম শুরু করা যায় না। তাই বাংলাদেশে এই বিচার শুরু করতে হলে শেখ হাসিনাকে শারীরিকভাবে বা ভার্চ্যুয়ালি আদালতে উপস্থিত হতে হবে।
তবে এটি না হলে কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনজীবীকে ‘গঠনমূলক উপস্থিতি’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এটি সাধারণ আইনের বিচারব্যবস্থায় বিতর্কিত বিষয়। যদিও বাংলাদেশের ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৩৩৯-বি অনুযায়ী, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতেও বিচার চলতে পারে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিসি) অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে শুনানির সাম্প্রতিক নজির রয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর আইসিসির প্রি–ট্রায়াল চেম্বার–৩ উগান্ডার কুখ্যাত জোসেফ কোনির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য যে শুনানি হয়, সেটি তাঁর অনুপস্থিতিতেই করার সিদ্ধান্ত নেয়। কোনি উগান্ডায় ৩৬টি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত। তিনি ১৯ বছর ধরে পলাতক।
বাস্তবিক বিবেচনায়, বাংলাদেশে এই বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়াই যথাযথ। কারণ যেসব অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো সেখানেই সংঘটিত হয়েছে এবং সেখানে প্রমাণ ও ভুক্তভোগীরাও হাজির।
বাংলাদেশ কূটনৈতিক চ্যানেলে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানালেও, ভারত সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইনের ‘অভিযুক্তকে হয় প্রত্যর্পণ, নয়তো বিচার’ নীতির আওতায় গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ, যেমন—গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গুম বা নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ বা বিচার করা যেকোনো রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তবে, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর বিষয়ে ভারত বাধ্য নয়।
কারণ, শেখ হাসিনার ওপর যেসব অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলোর কোনোটিতে কোনো সাহায্য, উৎসাহ, প্ররোচনা বা সহযোগিতা করেনি ভারত। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। ভারতের প্রত্যর্পণ আইন ১৯৬২–এর মাধ্যমে দেশের নাগরিক বা নাগরিক নয় এমন ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণের কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনুরোধকারী রাষ্ট্র এবং ভারত অনুরোধ পাওয়া রাষ্ট্র। অনুরোধ পাওয়া রাষ্ট্র নিজের অবস্থান বজায় রাখতে দুটি যুক্তি তুলে ধরতে পারে, যা শেখ হাসিনাকে ফেরানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে বাধা হতে পারে। প্রথমত, ভারত যুক্তি দিতে পারে যে—শেখ হাসিনা রাজনৈতিক অপরাধ করেছেন, যা প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করার একটি বৈধ কারণ হতে পারে।
তবে, এই যুক্তি আপাতদৃষ্টিতে ন্যায়সংগত বলে মনে হয় না। প্রাথমিকভাবে, শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডকে রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি পাওয়া যাবে না। তাঁর অপসারণের অনেক আগে থেকেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অন্য অনেক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, তাঁর শাসনামলে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ব্যবহার করে সহিংসতা—যেমন নির্যাতন, গুম, নিপীড়ন এবং অন্যান্য গুরুতর অমানবিক কর্মকাণ্ড ঘটেছে। তাই, তিনি এমন অপরাধ করেছেন কিনা, তা শুধু একটি ন্যায্য বিচারের মাধ্যমেই নির্ধারণ তথা সমাধা করা সম্ভব।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে সাধারণত ‘রুল অব নন–ইনকোয়ারি’ বা অনুসন্ধানে নিষেধাজ্ঞার নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এর অর্থ হলো—ঐতিহাসিকভাবে প্রত্যর্পণ কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের বিবেচনাধীন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যে দেশে আছেন সেখানকার স্থানীয় আদালতের হস্তক্ষেপ চাইতে পারেন না। তবে, এই চর্চা এখন আর তেমন হয় না। তা ছাড়া শেখ হাসিনা ভারতের নাগরিক না হলেও ভারতীয় সংবিধানের ২০ এবং ২১ অনুচ্ছেদের আওতায় সুরক্ষা পেতে পারেন।
১৯৯৬ সালের ভারতের ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন বনাম অরুণাচল রাজ্য—মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন, ২১ অনুচ্ছেদে ‘ব্যক্তি’ শব্দটি ব্যবহার করার কারণে, একজন অ–নাগরিকও এর সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী। বাংলাদেশের নির্যাতন এবং কারাগারের অবস্থার পূর্ববর্তী ইতিহাস এবং বর্তমান পরিস্থিতির ভিত্তিতে আদালত হাসিনাকে সুরক্ষা দেওয়ার যৌক্তিক অধিকার রাখে এবং ভারত সরকারও তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা থেকে বিরত থাকার যৌক্তিকতা দেখাতে পারে।
এ ক্ষেত্রে একটি অন্য বিকল্পও আছে। ভারত সরকার হাসিনাকে তাঁর বর্তমান অবস্থার মতো একটি ‘গৃহবন্দী’ অবস্থায় রাখার অনুমতি দিতে পারে এবং তাঁকে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের আদালতে একজন আইনজীবীর উপস্থিতিতে যুক্ত করার সুযোগ দিতে পারে। এরপর, ভারত বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করতে পারে যে, তদন্ত এবং প্রমাণ সংগ্রহে তারা পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
এ ছাড়া, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে পূর্ব নোটিশের ভিত্তিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। যদি তাঁর বিরুদ্ধে রায় হয়, তবে দণ্ড সংক্রান্ত চুক্তির ভিত্তিতে শেখ হাসিনা ভারতেই তাঁর দণ্ড ভোগ করতে পারেন। এই পদক্ষেপটি ভারতের পক্ষ থেকে আন্তরিকতা প্রদর্শনেরই নিদর্শন হবে এবং সেই সঙ্গে এটি জাতিসংঘ সনদের ২–এর ৪ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এমন পদক্ষেপ অভিযুক্তের ঝুঁকি এবং উদ্বেগগুলোও প্রশমিত করে।
শেখ হাসিনা আর ক্ষমতায় নেই এবং তিনি এখন বয়োবৃদ্ধ (৭৭) ও শারীরিকভাবে দুর্বলতা— এই বিবেচনায় তাঁর কল্যাণের জন্য কোনো অপ্রাসঙ্গিক আচরণ ন্যায়সংগত নয়। তাঁর মানবাধিকার রক্ষার দায় রয়েছে। এটি যুক্তি এবং দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে। আবেগপ্রবণ বিতর্ক এবং তিক্ততাপূর্ণ যুক্তি ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি এবং গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশকে বুঝতে হবে যে, হাসিনার বিচার গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তাঁকে প্রতিশোধের শিকারে পরিণত করা উচিত হবে না। একই সঙ্গে, ভারতের উচিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিচার প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ করে দেওয়া। এটি সম্ভব হলে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ন্যায়বিচারের জন্য সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে উপস্থাপিত হবে।
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠনের চুক্তি ‘রোম স্ট্যাটিউটের’ ১১১ তম স্বাক্ষরকারী দেশ। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আইসিসির অধীনে বিচারের বিষয় হতে পারে রোম স্ট্যাটিউটের ৫, ১১ এবং ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী। আইসিসির এখতিয়ারের মানদণ্ড পূরণের জন্য (শেখ হাসিনার অপরাধ)—উপাদানগত, ব্যক্তিগত, স্থানিক এবং কালগত শর্তগুলো পূরণ করে কিনা, যেমন: এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করেছে কিনা (উপাদানগত); এটি রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীনদের সংশ্লিষ্ট নাগরিক দ্বারা সংঘটিত কিনা (ব্যক্তিগত); বাংলাদেশে সংঘটিত কিনা (স্থানিক); এবং ২০০২ সালের পর সংঘটিত হয়েছে কিনা (কালগত)।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা আইসিসির এখতিয়ারের মানদণ্ড পূরণ করে। তবে আইসিসি মূলত শেষ আশ্রয়স্থল এবং এটি (বিচার প্রক্রিয়ায়) জাতীয় এখতিয়ারের ক্ষেত্রে সম্পূরক ভূমিকা পালন করতে পারে, প্রতিস্থাপনযোগ্য হতে পারে না। রোম স্ট্যাটিউটের ১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইসিসির এখতিয়ার পরিপূরকতার নীতির ওপর ভিত্তি করে গঠিত। যেহেতু বাংলাদেশ এই বিচার প্রক্রিয়া দেশীয় স্তরে শুরু করেছে তাই এখানে আইসিসির হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।
তবে রোম স্ট্যাটিউটের ৫৩ অনুচ্ছেদকে ১৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে মিলিয়ে পড়লে দেখা যায় যে, যদি অভিযুক্তের অধিকার ঝুঁকির মধ্যে থাকে এবং বিচারিক প্রক্রিয়া স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত না হয় বলে প্রতীয়মান হয় এবং এমন পদ্ধতিতে পরিচালিত হয় যা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ইচ্ছার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তবে অভিযুক্তের স্বার্থ গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ থাকে। হাসিনা রোম স্ট্যাটিউটের ২১ (৩) অনুচ্ছেদ এবং ইন্টারন্যাশনাল কোভন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটসের ১৪ অনুচ্ছেদের অধীনে (দেশের বাইরে) স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারিক কর্তৃপক্ষ অর্জনের অধিকার রাখেন না।
এমন ক্ষেত্রে, আইসিসির কৌঁসুলির কার্যালয় রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে একটি প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করতে পারে। তাই—প্রথম প্রস্তাবের বিকল্প হিসেবে—এটি সম্ভব যে, রোম স্ট্যাটিউটের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ এই বিষয়টি নিজে থেকে আইসিসির কাছে পাঠাতে পারে, অথবা ১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইসিসির কৌঁসুলির কার্যালয় নিজ উদ্যোগে একটি প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করতে পারে। (অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা যৌক্তিক প্রতীয়মান হলে) এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাও আইসিসির কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারেন এই নিশ্চয়তার শর্তে যে, তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা হবে না।
লেখক: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক একলব্য আনন্দ এবং রয়্যাল হলওয়ে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের আইন ও অপরাধবিদ্যা বিভাগের লেকচারার শৈলেশ কুমার।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশত্যাগের কয়েক মাস পর শেখ হাসিনাকে ‘বিচার প্রক্রিয়ার’ মুখোমুখি করতে তাঁকে দেশে ফেরানোর জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার পক্ষ থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি ‘নোট ভারবাল’ (ভারবাল নোট সাধারণত কূটনৈতিক যোগাযোগের সর্বনিম্ন স্তর এবং এটি কোনো একটি বিষয়ে একটি দেশের অগ্রাধিকার নির্দেশ করে) পাঠানো হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব বলেছেন, ‘আমরা চাই ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ন্যায্যতা, সমতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে গড়ে উঠুক।’ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সফরের প্রাক্কালে এই মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ঢাকা ত্যাগ করার পর আদালতে আত্মসমর্পণ না করায় তাঁকে পলাতক ঘোষণা করা হয়। ১৩ আগস্ট তাঁর এবং তাঁর অন্য সাবেক সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাত্রদের নির্মূল করার পরিকল্পনা এবং শত শত বিক্ষোভকারীকে নির্যাতন ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অপরাধকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটিকে শক্তিশালী করা এবং এতে জয়ী হওয়ার জন্য বিশ্বাসযোগ্য ও প্রমাণযোগ্য তথ্য সংগ্রহে কাজ করছে। গত ১৭ অক্টোবর ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাঁদের মধ্যে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টা, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা আছেন। ১৮ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থাকে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেন। শিগগিরই অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
সাধারণ আইনের বিচারব্যবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম শুরু করা যায় না। তাই বাংলাদেশে এই বিচার শুরু করতে হলে শেখ হাসিনাকে শারীরিকভাবে বা ভার্চ্যুয়ালি আদালতে উপস্থিত হতে হবে।
তবে এটি না হলে কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনজীবীকে ‘গঠনমূলক উপস্থিতি’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এটি সাধারণ আইনের বিচারব্যবস্থায় বিতর্কিত বিষয়। যদিও বাংলাদেশের ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৩৩৯-বি অনুযায়ী, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতেও বিচার চলতে পারে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিসি) অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে শুনানির সাম্প্রতিক নজির রয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর আইসিসির প্রি–ট্রায়াল চেম্বার–৩ উগান্ডার কুখ্যাত জোসেফ কোনির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য যে শুনানি হয়, সেটি তাঁর অনুপস্থিতিতেই করার সিদ্ধান্ত নেয়। কোনি উগান্ডায় ৩৬টি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত। তিনি ১৯ বছর ধরে পলাতক।
বাস্তবিক বিবেচনায়, বাংলাদেশে এই বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়াই যথাযথ। কারণ যেসব অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো সেখানেই সংঘটিত হয়েছে এবং সেখানে প্রমাণ ও ভুক্তভোগীরাও হাজির।
বাংলাদেশ কূটনৈতিক চ্যানেলে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানালেও, ভারত সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইনের ‘অভিযুক্তকে হয় প্রত্যর্পণ, নয়তো বিচার’ নীতির আওতায় গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ, যেমন—গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গুম বা নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ বা বিচার করা যেকোনো রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তবে, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর বিষয়ে ভারত বাধ্য নয়।
কারণ, শেখ হাসিনার ওপর যেসব অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলোর কোনোটিতে কোনো সাহায্য, উৎসাহ, প্ররোচনা বা সহযোগিতা করেনি ভারত। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। ভারতের প্রত্যর্পণ আইন ১৯৬২–এর মাধ্যমে দেশের নাগরিক বা নাগরিক নয় এমন ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণের কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনুরোধকারী রাষ্ট্র এবং ভারত অনুরোধ পাওয়া রাষ্ট্র। অনুরোধ পাওয়া রাষ্ট্র নিজের অবস্থান বজায় রাখতে দুটি যুক্তি তুলে ধরতে পারে, যা শেখ হাসিনাকে ফেরানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে বাধা হতে পারে। প্রথমত, ভারত যুক্তি দিতে পারে যে—শেখ হাসিনা রাজনৈতিক অপরাধ করেছেন, যা প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করার একটি বৈধ কারণ হতে পারে।
তবে, এই যুক্তি আপাতদৃষ্টিতে ন্যায়সংগত বলে মনে হয় না। প্রাথমিকভাবে, শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডকে রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি পাওয়া যাবে না। তাঁর অপসারণের অনেক আগে থেকেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অন্য অনেক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, তাঁর শাসনামলে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ব্যবহার করে সহিংসতা—যেমন নির্যাতন, গুম, নিপীড়ন এবং অন্যান্য গুরুতর অমানবিক কর্মকাণ্ড ঘটেছে। তাই, তিনি এমন অপরাধ করেছেন কিনা, তা শুধু একটি ন্যায্য বিচারের মাধ্যমেই নির্ধারণ তথা সমাধা করা সম্ভব।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে সাধারণত ‘রুল অব নন–ইনকোয়ারি’ বা অনুসন্ধানে নিষেধাজ্ঞার নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এর অর্থ হলো—ঐতিহাসিকভাবে প্রত্যর্পণ কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের বিবেচনাধীন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যে দেশে আছেন সেখানকার স্থানীয় আদালতের হস্তক্ষেপ চাইতে পারেন না। তবে, এই চর্চা এখন আর তেমন হয় না। তা ছাড়া শেখ হাসিনা ভারতের নাগরিক না হলেও ভারতীয় সংবিধানের ২০ এবং ২১ অনুচ্ছেদের আওতায় সুরক্ষা পেতে পারেন।
১৯৯৬ সালের ভারতের ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন বনাম অরুণাচল রাজ্য—মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন, ২১ অনুচ্ছেদে ‘ব্যক্তি’ শব্দটি ব্যবহার করার কারণে, একজন অ–নাগরিকও এর সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী। বাংলাদেশের নির্যাতন এবং কারাগারের অবস্থার পূর্ববর্তী ইতিহাস এবং বর্তমান পরিস্থিতির ভিত্তিতে আদালত হাসিনাকে সুরক্ষা দেওয়ার যৌক্তিক অধিকার রাখে এবং ভারত সরকারও তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা থেকে বিরত থাকার যৌক্তিকতা দেখাতে পারে।
এ ক্ষেত্রে একটি অন্য বিকল্পও আছে। ভারত সরকার হাসিনাকে তাঁর বর্তমান অবস্থার মতো একটি ‘গৃহবন্দী’ অবস্থায় রাখার অনুমতি দিতে পারে এবং তাঁকে বিচার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের আদালতে একজন আইনজীবীর উপস্থিতিতে যুক্ত করার সুযোগ দিতে পারে। এরপর, ভারত বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করতে পারে যে, তদন্ত এবং প্রমাণ সংগ্রহে তারা পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
এ ছাড়া, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে পূর্ব নোটিশের ভিত্তিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। যদি তাঁর বিরুদ্ধে রায় হয়, তবে দণ্ড সংক্রান্ত চুক্তির ভিত্তিতে শেখ হাসিনা ভারতেই তাঁর দণ্ড ভোগ করতে পারেন। এই পদক্ষেপটি ভারতের পক্ষ থেকে আন্তরিকতা প্রদর্শনেরই নিদর্শন হবে এবং সেই সঙ্গে এটি জাতিসংঘ সনদের ২–এর ৪ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এমন পদক্ষেপ অভিযুক্তের ঝুঁকি এবং উদ্বেগগুলোও প্রশমিত করে।
শেখ হাসিনা আর ক্ষমতায় নেই এবং তিনি এখন বয়োবৃদ্ধ (৭৭) ও শারীরিকভাবে দুর্বলতা— এই বিবেচনায় তাঁর কল্যাণের জন্য কোনো অপ্রাসঙ্গিক আচরণ ন্যায়সংগত নয়। তাঁর মানবাধিকার রক্ষার দায় রয়েছে। এটি যুক্তি এবং দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে। আবেগপ্রবণ বিতর্ক এবং তিক্ততাপূর্ণ যুক্তি ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি এবং গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশকে বুঝতে হবে যে, হাসিনার বিচার গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তাঁকে প্রতিশোধের শিকারে পরিণত করা উচিত হবে না। একই সঙ্গে, ভারতের উচিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিচার প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ করে দেওয়া। এটি সম্ভব হলে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ন্যায়বিচারের জন্য সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে উপস্থাপিত হবে।
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠনের চুক্তি ‘রোম স্ট্যাটিউটের’ ১১১ তম স্বাক্ষরকারী দেশ। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আইসিসির অধীনে বিচারের বিষয় হতে পারে রোম স্ট্যাটিউটের ৫, ১১ এবং ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী। আইসিসির এখতিয়ারের মানদণ্ড পূরণের জন্য (শেখ হাসিনার অপরাধ)—উপাদানগত, ব্যক্তিগত, স্থানিক এবং কালগত শর্তগুলো পূরণ করে কিনা, যেমন: এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করেছে কিনা (উপাদানগত); এটি রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীনদের সংশ্লিষ্ট নাগরিক দ্বারা সংঘটিত কিনা (ব্যক্তিগত); বাংলাদেশে সংঘটিত কিনা (স্থানিক); এবং ২০০২ সালের পর সংঘটিত হয়েছে কিনা (কালগত)।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা আইসিসির এখতিয়ারের মানদণ্ড পূরণ করে। তবে আইসিসি মূলত শেষ আশ্রয়স্থল এবং এটি (বিচার প্রক্রিয়ায়) জাতীয় এখতিয়ারের ক্ষেত্রে সম্পূরক ভূমিকা পালন করতে পারে, প্রতিস্থাপনযোগ্য হতে পারে না। রোম স্ট্যাটিউটের ১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইসিসির এখতিয়ার পরিপূরকতার নীতির ওপর ভিত্তি করে গঠিত। যেহেতু বাংলাদেশ এই বিচার প্রক্রিয়া দেশীয় স্তরে শুরু করেছে তাই এখানে আইসিসির হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।
তবে রোম স্ট্যাটিউটের ৫৩ অনুচ্ছেদকে ১৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে মিলিয়ে পড়লে দেখা যায় যে, যদি অভিযুক্তের অধিকার ঝুঁকির মধ্যে থাকে এবং বিচারিক প্রক্রিয়া স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত না হয় বলে প্রতীয়মান হয় এবং এমন পদ্ধতিতে পরিচালিত হয় যা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ইচ্ছার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তবে অভিযুক্তের স্বার্থ গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ থাকে। হাসিনা রোম স্ট্যাটিউটের ২১ (৩) অনুচ্ছেদ এবং ইন্টারন্যাশনাল কোভন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটসের ১৪ অনুচ্ছেদের অধীনে (দেশের বাইরে) স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারিক কর্তৃপক্ষ অর্জনের অধিকার রাখেন না।
এমন ক্ষেত্রে, আইসিসির কৌঁসুলির কার্যালয় রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে একটি প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করতে পারে। তাই—প্রথম প্রস্তাবের বিকল্প হিসেবে—এটি সম্ভব যে, রোম স্ট্যাটিউটের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ এই বিষয়টি নিজে থেকে আইসিসির কাছে পাঠাতে পারে, অথবা ১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইসিসির কৌঁসুলির কার্যালয় নিজ উদ্যোগে একটি প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করতে পারে। (অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা যৌক্তিক প্রতীয়মান হলে) এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাও আইসিসির কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারেন এই নিশ্চয়তার শর্তে যে, তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা হবে না।
লেখক: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক একলব্য আনন্দ এবং রয়্যাল হলওয়ে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের আইন ও অপরাধবিদ্যা বিভাগের লেকচারার শৈলেশ কুমার।
গত বছরটি ছিল এমন এক বছর, যেখানে সারা বিশ্বে ক্ষমতাসীনেরা হয় নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন অথবা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রিপরিষদ বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ আল গারজাভির একটি কথা গুরুত্বপূর্ণ, ‘সরকারের কাজ হলো এমন এক ভবিষ্যৎ তৈরি করা, যা নাগরিকদের আশার আলো দেয়।’
২ দিন আগেডাচ রাষ্ট্রদূতের নিবন্ধে রোহিঙ্গা সংকটের নতুন বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোগে ২০২৫ সালে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিবন্ধে আরাকান আর্মির উত্থান, রাখাইন রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চ্যালেঞ্জসহ বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় স
২ দিন আগেবাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় কী কী জরুরি তার ইঙ্গিত মিলবে ২০২৪ সালে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী ড্যারন আসেমোগলোর নিবন্ধ থেকে। প্রজেক্ট সিন্ডিকেটে প্রকাশিত নিবন্ধটি অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান।
২ দিন আগেঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান সামুদ্রিক ও সামরিক সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার পরিস্থিতিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। এই বিষয়টি নয়াদিল্লির কৌশলগত স্বার্থ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে
২ দিন আগে