মোহাম্মাদ জাকারিয়া
শ্রাবণ মাসেতে যেন কালো মেঘ সাজে
দাগল-দীঘল কেশ বায়েতে বিরাজে।।
কখন খোঁপা বান্ধে কন্যা কখন বান্ধে বেনি
কূপে রঙ্গে সাজে কন্যা মদনমোহিনী।।
(কমলা—দ্বিজ ঈশান)
১
অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু। পুরুষ মানুষের খালি ডাকাডাকি। আশরাফুল মধুমাখা কণ্ঠে জবাব দেয়, একটা খুব ভালো কথা মনে পইড়ছে, এই দিক আইসো। নিজের অনিচ্ছায়, স্বামীর ইচ্ছায় কাছে যায়। আশরাফুল ভাত খাওয়া বন্ধ করে স্ত্রীকে দেখে আগে থেকে ঠিক করা হাসি হাসে। এই হাসি ডাবল মিনিংয়ের হাসি। এই হাসির দুটো অর্থ আছে। ইন্টারমিডিয়েট ফেল স্ত্রী তা বুঝতে পেরে থমকে যায়। বিএ ফেল স্বামীর মুখের দিকে তবু তাকিয়ে থাকে। আশরাফুল রোমান্টিক সিনেমার কাহিনি বলার ভঙ্গিতে স্ত্রীর দিকে তাকায়। চোখে চোখ। কী আর বলবে মুখে? এমন করে তাকিয়ে থাকার সময় এবং বয়স দুটোই পেরিয়ে গেছে। বিয়ের বয়স তিনে পড়ল। নাহার বলে, কী কইবা কও। অমন কইরা ভ্যাদা মাছের মতো তাকাইয়া থাইকো না তো!
আশরাফুল এইবার মুখে জবাব না দিয়ে, ভাতের প্লেট থেকে লম্বা একটা চুল বের করে নাহারের চোখের সামনে ধরে। নাহার মস্তক অবনত করে ফেলে। আশরাফুল বলে, যাও এইবার। নাহার হেঁটে যাওয়ার কালে পেছন থেকে আশরাফুল বলে ওঠে, ভাবতাছি একখান ফ্রিজ কিনমু। নাহারের জবাবের আগেই সে আবার বলে, ক্যা, ফ্রিজে কি খালি মাংস-টাংস, ফল-ফ্রুটস আপেল, কমলাই রাইখতে অয়? আর কিছু রাখা যায় না? শেষমেশ নাহার কিছুটা আদুরে, কিছুটা শাসনের স্বরে বলে, অভাবের সময়ে কি ট্যাকায় কামড়ায়?
‘আহ!’ শব্দ উচ্চারিত হলে নাহার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আশরাফুল গাল ধরে বসে আছে। গালে অথবা জিহ্বায় কামড় লেগেছে।
২
ফ্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শিরিন। কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজটা খোলা ছিল। ফ্রিজের ঠান্ডা হাওয়ার স্পর্শ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যরাতে বরকত ফিরলে শিরিনের ভাষায় ‘একলা থাকার অবসান হয়’। এই দুনিয়ায় স্বামী ছাড়া আর কেউ না থাকা শিরিনের এমন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে যখন একা থাকে। হাজার মানুষের ভিড়ে বেশি কথা বলা যায় না। শিরিন তো একাই। তার কথা আছে কিন্তু এই শহরে তার কথা শোনার মানুষ নেই। না সে পয়সাওয়ালা মানুষের বউ, না সে ক্ষমতাওয়ালা মানুষের বউ। সে সামান্য একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের বউ। শিরিন নিজেও চিত্রশিল্পী। এখন কোনো ছবি সে আঁকে না। আঁকতে পারে না। এখন কথা জমিয়ে রাখাই তার কাজ। ভালো কথা, মন্দ কথা। মনের কথা, বনের কথা। এর কথা, ওর কথা। এ কথা-সে কথা। বরকতের বুকে মাথা গুঁজে শিরিন বলে, শোন, মন দিয়ে শোন একটা কথা। জানি, তুমি মন থেকে এ কাজ করছ না, বাধ্য হয়েই করছ। তবুও বলি, ফ্রিজটা কি না বেচলেই নয়? বরকত স্ত্রীর মুখের দিকে না তাকিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে বলে, ওই ফ্রিজ কী কাজে লাগছে শুনি? খাচ্ছি তো কেবল আলু, ডিম আর ডাল। মাছ-মাংস কি জুটছে? আপেল-কমলা? বলো? শুধু শুধু ফ্রিজটা রেখে লাভ কী? দুহাতে পাশ ফিরিয়ে স্বামীর বুকে গলার চেইনটা ছুঁইয়ে শিরিন বলে, তবুও, প্রয়োজনে আমার গলার চেইনটা তুমি বিক্রি করো।
না, এটা সম্ভব নয়, আমি তা পারব না—বলে বালিশে মুখ গুঁজে বরকত।
শিরিন শক্ত করে বরকতকে জড়িয়ে ধরলে টের পায়, শিরিনের গা প্রচণ্ড গরম।
৩
অ্যাঁই নাহার—বলে রাগাশ্রিত ডাক আজকেও দেয় আশরাফুল। দৌড়ে আসে নাহার। স্বামীর মুখের দিকে না তাকিয়ে প্লেটের দিকে তাকায়। আশরাফুল বলে, তোমার যে মাথাভর্তি চুল তা তো আমিও জানি, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানে। প্রতিটি দিন ভাতের মইধ্যে চুল দিয়া নতুন কইরা প্রমাণ করার কী আছে? অ্যাঁ?
ক্যামনে যে মনের অজান্তে ভাতের মইধ্যে চুল যায়—তা ভাবতে ভাবতে নাহার দ্রুত পা বাড়ায়।
অসুবিধা নাই, নতুন না হইলেও ছেকেন্যান [সেকেন্ড হ্যান্ড] ফ্রিজ তো কিনতেই পারি। তুমি কী কও নাহার?
ডিম, আলু, ডাল রাখার জন্য ফ্রিজ না হইলেও চলে। নতুন ফ্রিজই কী, আর ছেকেন্যান ফ্রিজই কী—নাহার ভেজা চুল মুছতে মুছতে স্বামীর কথার জবাব দেয়।
৪
শিরিনের অনিচ্ছায় বরকত ফ্রিজটা বিক্রি করে দিল। আর নাহারের অনিচ্ছায় আশরাফুল ফ্রিজটা কিনে নিল।
৫
বাসায় ফ্রিজ না থাকায় শিরিন মনের কথাগুলো জমা করে আর রাখতে না পেরে এক সময় বোবাই হয়ে গেল। এখন তার মুখ থেকে কেবল গোঁ-গোঁ আওয়াজ ভেসে আসে। শিরিন সারা দিনের কথাগুলো ফ্রিজে জমা রাখত, মধ্যরাতে স্বামী ফিরলে জমা করা কথা থেকে কিছু কথা স্বামীকে শোনাত। মধ্যরাতে ঘুমন্ত শিরিনকে দেখে বরকতের মায়া হলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে। শিরিনের গা যেন হিমশীতল—ডিপ ফ্রিজ।
৬
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই অবস্থায় তোমার ফ্রিজ কিনা আনাই লাইগব ক্যান? ফুটানি মারার আর...
চুপ থাক কইলাম।
ক্যান চুপ করমু?—নাহারকে থামিয়ে দিয়ে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় আশরাফুল বলে,
নাহার, বউ রে, এই শহরে সবাই খেলে। সবাই ছড়ি ঘোরায়। রাস্তা কও, অফিস কও, পাড়া কও, মহল্লা কও, মুদির দোকান কও—কোথাও ভালোবাসা নাই। তোমার-আমার এই জীবনে ভালোবাসার পরিমাণ খুব কম। খেয়াল কইরা দেখ, তোমার মাথা থেইকা ঝইরা যাওয়া একটা চুলের মতো এতই কম। আমি তো ওই ভালোবাসাটারেই ফ্রিজে রাখবার চাই।
ভাতের মইধ্যে যে চুল পাও আর পাইয়া যে তুমি আমারে ডাক দিয়া হাসো, ওই হাসি রাগ কইরা না তাইলে?—বাচ্চা মেয়ের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে নাহার।
নবীন ছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আশরাফুল বলে, না। ভাতের মইধ্যে যে চুল পাই তা আমার কাছে ভালোবাসার গোলাপ ফুল। আমি তোমার মাথা থেইকা পইড়া যাওয়া চুলগুলাই ফ্রিজে রাখতে চাই। বিশ্বাস করো, আমার আপেল-কমলা, মাছ, গোস্ত ফ্রিজে রাখা লাইগব না। জীবনের এই চুল পরিমাণ ভালোবাসাটাও যদি জমাইয়া না রাখতে পারি, তাইলে বাঁচমু ক্যামনে ভালোবাসার এই আকালে? নাহার তুমি কও, কও তুমি নাহার!
এর পর থেকে আশরাফুল-নাহার দম্পতির ফ্রিজে রাখা চুলগুলো রোজ সকালে গোলাপ ফুল হয়ে যায়।
শ্রাবণ মাসেতে যেন কালো মেঘ সাজে
দাগল-দীঘল কেশ বায়েতে বিরাজে।।
কখন খোঁপা বান্ধে কন্যা কখন বান্ধে বেনি
কূপে রঙ্গে সাজে কন্যা মদনমোহিনী।।
(কমলা—দ্বিজ ঈশান)
১
অ্যাঁই, নাহার?—বলে রাগাশ্রিত ডাক দেয় আশরাফুল। এমন ডাকে কাছে আসার সম্ভাবনা কম দেখে পরবর্তী সময়ে সে মুখটা দরজার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, একটা ভালো কথা, এই দিক আইসো। ভেজা চুল গামছা দিয়ে মুছতে মুছতে ব্যালকনি থেকে নাহার জবাব দেয়, ভালো কথার কাল এখন আছেনি? বুঝলাম না কিছু। পুরুষ মানুষের খালি ডাকাডাকি। আশরাফুল মধুমাখা কণ্ঠে জবাব দেয়, একটা খুব ভালো কথা মনে পইড়ছে, এই দিক আইসো। নিজের অনিচ্ছায়, স্বামীর ইচ্ছায় কাছে যায়। আশরাফুল ভাত খাওয়া বন্ধ করে স্ত্রীকে দেখে আগে থেকে ঠিক করা হাসি হাসে। এই হাসি ডাবল মিনিংয়ের হাসি। এই হাসির দুটো অর্থ আছে। ইন্টারমিডিয়েট ফেল স্ত্রী তা বুঝতে পেরে থমকে যায়। বিএ ফেল স্বামীর মুখের দিকে তবু তাকিয়ে থাকে। আশরাফুল রোমান্টিক সিনেমার কাহিনি বলার ভঙ্গিতে স্ত্রীর দিকে তাকায়। চোখে চোখ। কী আর বলবে মুখে? এমন করে তাকিয়ে থাকার সময় এবং বয়স দুটোই পেরিয়ে গেছে। বিয়ের বয়স তিনে পড়ল। নাহার বলে, কী কইবা কও। অমন কইরা ভ্যাদা মাছের মতো তাকাইয়া থাইকো না তো!
আশরাফুল এইবার মুখে জবাব না দিয়ে, ভাতের প্লেট থেকে লম্বা একটা চুল বের করে নাহারের চোখের সামনে ধরে। নাহার মস্তক অবনত করে ফেলে। আশরাফুল বলে, যাও এইবার। নাহার হেঁটে যাওয়ার কালে পেছন থেকে আশরাফুল বলে ওঠে, ভাবতাছি একখান ফ্রিজ কিনমু। নাহারের জবাবের আগেই সে আবার বলে, ক্যা, ফ্রিজে কি খালি মাংস-টাংস, ফল-ফ্রুটস আপেল, কমলাই রাইখতে অয়? আর কিছু রাখা যায় না? শেষমেশ নাহার কিছুটা আদুরে, কিছুটা শাসনের স্বরে বলে, অভাবের সময়ে কি ট্যাকায় কামড়ায়?
‘আহ!’ শব্দ উচ্চারিত হলে নাহার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আশরাফুল গাল ধরে বসে আছে। গালে অথবা জিহ্বায় কামড় লেগেছে।
২
ফ্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শিরিন। কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজটা খোলা ছিল। ফ্রিজের ঠান্ডা হাওয়ার স্পর্শ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যরাতে বরকত ফিরলে শিরিনের ভাষায় ‘একলা থাকার অবসান হয়’। এই দুনিয়ায় স্বামী ছাড়া আর কেউ না থাকা শিরিনের এমন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে যখন একা থাকে। হাজার মানুষের ভিড়ে বেশি কথা বলা যায় না। শিরিন তো একাই। তার কথা আছে কিন্তু এই শহরে তার কথা শোনার মানুষ নেই। না সে পয়সাওয়ালা মানুষের বউ, না সে ক্ষমতাওয়ালা মানুষের বউ। সে সামান্য একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের বউ। শিরিন নিজেও চিত্রশিল্পী। এখন কোনো ছবি সে আঁকে না। আঁকতে পারে না। এখন কথা জমিয়ে রাখাই তার কাজ। ভালো কথা, মন্দ কথা। মনের কথা, বনের কথা। এর কথা, ওর কথা। এ কথা-সে কথা। বরকতের বুকে মাথা গুঁজে শিরিন বলে, শোন, মন দিয়ে শোন একটা কথা। জানি, তুমি মন থেকে এ কাজ করছ না, বাধ্য হয়েই করছ। তবুও বলি, ফ্রিজটা কি না বেচলেই নয়? বরকত স্ত্রীর মুখের দিকে না তাকিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে বলে, ওই ফ্রিজ কী কাজে লাগছে শুনি? খাচ্ছি তো কেবল আলু, ডিম আর ডাল। মাছ-মাংস কি জুটছে? আপেল-কমলা? বলো? শুধু শুধু ফ্রিজটা রেখে লাভ কী? দুহাতে পাশ ফিরিয়ে স্বামীর বুকে গলার চেইনটা ছুঁইয়ে শিরিন বলে, তবুও, প্রয়োজনে আমার গলার চেইনটা তুমি বিক্রি করো।
না, এটা সম্ভব নয়, আমি তা পারব না—বলে বালিশে মুখ গুঁজে বরকত।
শিরিন শক্ত করে বরকতকে জড়িয়ে ধরলে টের পায়, শিরিনের গা প্রচণ্ড গরম।
৩
অ্যাঁই নাহার—বলে রাগাশ্রিত ডাক আজকেও দেয় আশরাফুল। দৌড়ে আসে নাহার। স্বামীর মুখের দিকে না তাকিয়ে প্লেটের দিকে তাকায়। আশরাফুল বলে, তোমার যে মাথাভর্তি চুল তা তো আমিও জানি, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানে। প্রতিটি দিন ভাতের মইধ্যে চুল দিয়া নতুন কইরা প্রমাণ করার কী আছে? অ্যাঁ?
ক্যামনে যে মনের অজান্তে ভাতের মইধ্যে চুল যায়—তা ভাবতে ভাবতে নাহার দ্রুত পা বাড়ায়।
অসুবিধা নাই, নতুন না হইলেও ছেকেন্যান [সেকেন্ড হ্যান্ড] ফ্রিজ তো কিনতেই পারি। তুমি কী কও নাহার?
ডিম, আলু, ডাল রাখার জন্য ফ্রিজ না হইলেও চলে। নতুন ফ্রিজই কী, আর ছেকেন্যান ফ্রিজই কী—নাহার ভেজা চুল মুছতে মুছতে স্বামীর কথার জবাব দেয়।
৪
শিরিনের অনিচ্ছায় বরকত ফ্রিজটা বিক্রি করে দিল। আর নাহারের অনিচ্ছায় আশরাফুল ফ্রিজটা কিনে নিল।
৫
বাসায় ফ্রিজ না থাকায় শিরিন মনের কথাগুলো জমা করে আর রাখতে না পেরে এক সময় বোবাই হয়ে গেল। এখন তার মুখ থেকে কেবল গোঁ-গোঁ আওয়াজ ভেসে আসে। শিরিন সারা দিনের কথাগুলো ফ্রিজে জমা রাখত, মধ্যরাতে স্বামী ফিরলে জমা করা কথা থেকে কিছু কথা স্বামীকে শোনাত। মধ্যরাতে ঘুমন্ত শিরিনকে দেখে বরকতের মায়া হলে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে। শিরিনের গা যেন হিমশীতল—ডিপ ফ্রিজ।
৬
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই অবস্থায় তোমার ফ্রিজ কিনা আনাই লাইগব ক্যান? ফুটানি মারার আর...
চুপ থাক কইলাম।
ক্যান চুপ করমু?—নাহারকে থামিয়ে দিয়ে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় আশরাফুল বলে,
নাহার, বউ রে, এই শহরে সবাই খেলে। সবাই ছড়ি ঘোরায়। রাস্তা কও, অফিস কও, পাড়া কও, মহল্লা কও, মুদির দোকান কও—কোথাও ভালোবাসা নাই। তোমার-আমার এই জীবনে ভালোবাসার পরিমাণ খুব কম। খেয়াল কইরা দেখ, তোমার মাথা থেইকা ঝইরা যাওয়া একটা চুলের মতো এতই কম। আমি তো ওই ভালোবাসাটারেই ফ্রিজে রাখবার চাই।
ভাতের মইধ্যে যে চুল পাও আর পাইয়া যে তুমি আমারে ডাক দিয়া হাসো, ওই হাসি রাগ কইরা না তাইলে?—বাচ্চা মেয়ের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে নাহার।
নবীন ছেলের মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে আশরাফুল বলে, না। ভাতের মইধ্যে যে চুল পাই তা আমার কাছে ভালোবাসার গোলাপ ফুল। আমি তোমার মাথা থেইকা পইড়া যাওয়া চুলগুলাই ফ্রিজে রাখতে চাই। বিশ্বাস করো, আমার আপেল-কমলা, মাছ, গোস্ত ফ্রিজে রাখা লাইগব না। জীবনের এই চুল পরিমাণ ভালোবাসাটাও যদি জমাইয়া না রাখতে পারি, তাইলে বাঁচমু ক্যামনে ভালোবাসার এই আকালে? নাহার তুমি কও, কও তুমি নাহার!
এর পর থেকে আশরাফুল-নাহার দম্পতির ফ্রিজে রাখা চুলগুলো রোজ সকালে গোলাপ ফুল হয়ে যায়।
আকাশি রঙের বাড়ি। দোতলায় দুটি কক্ষে আলো জ্বলছে। সন্ধ্যার আবছা আঁধারে ছেয়ে আছে বাড়িটির চারদিকের গাছগুলো। সন্ধ্যার নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। বাড়ির সামনে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় জলাশয়ে প্রকৃতির এই মোহনীয় ছবি প্রতিফলিত হয়েছে।
২ দিন আগেচারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
১৩ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
২০ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
২০ দিন আগে