Ajker Patrika

আশুলিয়ায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিয়ারক্যাপ শাটার ভেঙে সড়কে, যান চলাচল বন্ধ

সাভার(ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২৩: ৪২
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণাধীন একটি পিলারের পিয়ারক্যাপের শাটার (নির্মাণসামগ্রী) ভেঙে পড়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একটি কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওই গাড়ির ওপরেই শাটারের একাংশ এবং বাকি অংশ পদচারী-সেতুর ওপর পড়ে। এতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের উভয় লেনে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, গাড়ির ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটেনি।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহাসড়কটির আশুলিয়ার বলিভদ্র বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ বিকট শব্দে ওপর থেকে সবকিছু ভেঙে পড়ে। পরে আশপাশে থাকা মানুষ ছুটে যায়। পাইপগুলো সড়কের মাঝ বরাবর পড়েছে। এতে নবীনগরমুখী লেনে থাকা একটি কাভার্ড ভ্যানের ওপর একাংশ পড়ে। বাকি অংশ পদচারী-সেতুর ওপর পড়ে।

দুর্ঘটনাকবলিত লরি বা কাভার্ড ভ্যানটি (চট্ট মেট্রো-ঢ ৮১-২০৭১) মহাসড়কের নবীনগরমুখী লেনে ছিল। আর পদচারী-সেতুর একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চন্দ্রামুখী লেনের পাশে। ঘটনার পর পদচারী-সেতুতেও মানুষের চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।

ঘটনার সময় ঘটনাস্থলের পাশে থাকা পথচারী কামাল বলেন, ‘আমরা শব্দ শুনে দৌড়ে যাই। দেখি সব ভেঙে পড়ছে। তখন এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। গাড়ির চালক একটু আহত হয়েছেন।’

ঘটনাস্থলের পাশের চা-দোকানি বাদশাহ মিয়া বলেন, শব্দ শুনে সবাই দৌড়ে যায়। কোনো মানুষের ওপর কিছু পড়েনি।

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি কাভার্ড ভ্যানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে ফুটপাতে ধাক্কা লাগে। পরে বিমের পাইপে ধাক্কা লাগার পরে শাটারের একটা পার্ট খুলে কাভার্ড ভ্যানের ওপরে পরে। আমাদের ক্রেন আছে ওখানে। সব রেসকিউ করা হচ্ছে। এতে এই বিমের কিংবা রাস্তার অথবা কোনো মানুষের কোনো ক্ষতি হয়নি।’

গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হয়েছেন, জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমাদের লোক ওখানে আছে। তারা সার্বক্ষণিক থাকে। তারা ট্রাফিক কন্ট্রোলও করে। তারা জানিয়েছে।’

মূলত কী ঘটেছে সেখানে, জানতে চাইলে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই পিলারের পিয়ারক্যাপ ঈদের আগে ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাই করার আগে যে শাটারিং করা হয়, সেটাকে ফর্মওয়ার্ক বলে। সেই ফর্মওয়ার্কগুলো এক দিনে খোলা যায় না। পার্ট পার্ট করে জোড়া দিয়ে কাজ করতে হয়। আজকের মতো কাজ করে শ্রমিকেরা চলে গেছেন। এই অবস্থাতেই ছিল। সেখানেই কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা লাগে। এরপর দুর্ঘটনা ঘটে।

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

তবে গাড়ির ধাক্কায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছে ফায়ার সার্ভিস। ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর আব্দুস সালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাড়ি ধাক্কা দেওয়ার মতো কিছু আমরা বুঝতে পারিনি। ওখানে তো টিন দিয়ে ঘেরা আছে। সেখানে ধাক্কা লাগার কোনো সুযোগই নেই। সেটি তো পিলারের ওপর আরেকটা পিলার। সেই পিলারটা মাঝখানে। সেখানে গাড়ি যাওয়ার সুযোগ নাই। ওটার দুই সাইডে টিন-সিকিউরড করা আছে। ব্যারিকেডের ভেতর পিলার। ধাক্কা লাগলে তো ব্যারিকেডটা আগে ভাঙত। ব্যারিকেডটা অক্ষত আছে। আশপাশের জনগণ বলেছে, লরিটা (কাভার্ড ভ্যান) রানিং ছিল। তবে গাড়িটির ড্রাইভার কিংবা হেলপার কাউকে আমরা পাইনি।’

রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সওগাতুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানি, ওপর থেকে ভেঙে পড়েছে কিছু অংশ। কোনো গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে কি না, এখনই বলতে পারছি না। এখন মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমাদের টিমও সেখানে আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত