Ajker Patrika

সওজের জমি দখল করে সাইনবোর্ড, মাটি ভরাট

অরূপ রায়, সাভার 
সওজের জমি দখল করে সাইনবোর্ড, মাটি ভরাট

ঢাকার ধামরাইয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের কয়েক বিঘা জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডাউটিয়া সেতু এলাকার ওই জমিতে সাইনবোর্ড ঝোলানোর পাশাপাশি মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয় বাজারদর অনুযায়ী জমিগুলোর দাম প্রায় ৬ কোটি টাকা।

মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নয়ারহাট উপবিভাগের আওতাধীন ডাউটিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ‘এ ওয়ান ফার্নিচার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান সেতুর কয়েক শ ফুটের মধ্যে কয়েক জায়গায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে। সেতুর পাশে বেশ কিছু অংশ মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। অনেকে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন, আবার কেউ কেউ চাষাবাদ করছেন।

ডাউটিয়ার ব্যবসায়ী ফাইজুর রহমান বলেন, কয়েক মাস আগে সওজের জমিসহ নিজেদের মালিকানাধীন জায়গায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় এ ওয়ান ফার্নিচার কর্তৃপক্ষ। সাইনবোর্ড ঝোলানোর কিছু দিন পর তারা মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে। এ ছাড়া রুবেল নামের স্থানীয় এক যুবক বছর দেড়েক আগে সওজের জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করে দোকান দিয়েছেন। পাশাপাশি সিদ্দিক মিয়াসহ গ্রামের কয়েক ব্যক্তি সওজের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করছেন।

সিদ্দিক যে জমিতে ধান চাষ করেন, এর পরিমাণ প্রায় এক বিঘা এবং জমির অবস্থান সওজের সীমানা খুঁটির ভেতরে। তবে সিদ্দিকের দাবি, তিন যে জমি চাষ করেন, ওই জমি সওজের নয়। তবে জমিটি কার, জানতে চাইলে এড়িয়ে যান তিনি।

অন্যদিকে এ ওয়ান ফার্নিচারের মালিক সৈয়দ শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘ডাউটিয়া সেতুর পাশে মহাসড়ক থেকে ৪০০ ফুট পর্যন্ত সওজের জমি রয়েছে, যা মহাসড়ক থেকে নিচু ও চাষের উপযোগী। এর পাশে আমাদের জমি রয়েছে, যা ফার্নিচার কারখানার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে। আর ভুল করে সওজের জমিতে কয়েকটি সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। সাইনবোর্ড দেওয়ার পর সওজের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন কিছু না বলায় এগুলো রয়ে গেছে।’

শাহিনুজ্জামানের এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন সওজের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, পিলার দিয়ে সওজের জমি চিহ্নিত করা আছে। এরপরও ভুল করে সওজের জমিতে সাইনবোর্ড দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ ওয়ান ফার্নিচার কর্তৃপক্ষ দখলের উদ্দেশ্যেই এই সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছে। সওজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সপ্তাহে পাঁচ দিন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচল করেন। এরপরও এ ওয়ান ফার্নিচারের সাইনবোর্ড ও মাটি ভরাট নিয়ে তাঁরা কোনো তৎপরতা দেখাননি। আরও অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সওজের জমি দখল করেছে।

এ বিষয়ে কথা হলে সওজের নয়ারহাট উপবিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দেবাশীষ সাহা বলেন, ‘ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক নির্মাণের সময় এসব জমি হুকুম দখল করা হয়েছিল। সড়ক নির্মাণের পর অনেক স্থানে বেশ কিছু জমি পতিত পড়ে রয়েছে। ডাউটিয়া সেতুর পাশেও সওজের কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। আপনার মাধ্যমে জানার পর স্টাফ পাঠিয়ে মাটি ভরাট বন্ধ করা হয়েছে। সাইনবোর্ডও নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।’

যোগাযোগ করা হলে মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘ডাউটিয়া সেতুর পাশে সওজের জমি দখল বা সাইনবোর্ড দেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। এমন হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত