বরগুনার সাবেক এমপি রিমনসহ ১০৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা 

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ২০: ৫৪

২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি তাঁর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করতে নিজ এলাকা পাথরঘাটায় প্রবেশের সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হামলার শিকার হন। এতে তিনিসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ও অর্ধ শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

এ ঘটনার জেরে আজ বৃহস্পতিবার পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মন্ডলের আদালতে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন নুরুল ইসলাম মনির বড় ভাইয়ের ছেলে সোলায়মান।

এতে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন এবং বর্তমান ও সাবেক ৯ ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০৫ জনে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। 

এ ছাড়াও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ মোহাম্মদ মুবিন।

এর আগে একই ঘটনার জেরে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯৯ জনকে আসামি করে মামলা মিথ্যা মামলা করেছিলেন কাকচিড়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দীন পল্টু। এতে আরও অজ্ঞাত আড়াইশ থেকে তিনশনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছিল।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফরাত আহসান ইপু আজকের পত্রিকাকে জানান, বাদী সোলায়মানের আপন চাচা নুরুল ইসলাম মনি বরগুনা-২ আসনের ৩ বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি ঢাকায় অবস্থান করে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করেন এবং রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।  তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময় পাথরঘাটাসহ বরগুনার সকল মানুষের জনপ্রিয় প্রতিনিধি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন পূর্ব থেকেই খুন করে দুনিয়া থেকে শেষ করার পরিকল্পনা করছিল। 

২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বাদীর চাচা তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করার জন্য ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। এ সময় বাদীসহ কয়েক শত মানুষ তাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পাথরঘাটার মঠবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কের সিএন্ডবি এলাকায় আসলে তৎকালীন এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বাদীর চাচা নুরুল ইসলাম মনিসহ শতাধিক বিএনপির নেতা কর্মীরা আহত হন। 

ঘটনার সময় গুরুতর আহত পাথরঘাটা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন কাজী আজকের পত্রিকাকে জানান, রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে আ.লীগ এলাকায় সমাজ বিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী, নারী-নির্যাতন ও অবৈধভাবে ভূমি দখল করে নিরীহ মানুষকে নিঃস্ব করেছে। উপজেলায় তারা সব সময় ত্রাস সৃষ্টি করে রাখতো। আমার ওপর অন্তত পাঁচ বার হামলা করে রক্তাক্ত করেছে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার পাত বসানো রয়েছে। তারাই আমাদের ওপর হামলা করে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছে। এখন বিলম্বে হলেও স্বৈরাচারী সরকারের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ হয়েছে।

পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ মুবিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মামলার এফআইআর গ্রহণের জন্য পাথরঘাটা থানার ওসিকে আদালত থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত