খান রফিক, বরিশাল
বরিশাল নগরীর চহুতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জনেরই কোনো খোঁজ নেই। করোনা মহামারির গত দেড় বছরে এই শিক্ষার্থীদের কে কোথায় আছে এখন তার খোঁজ জানেন না প্রতিষ্ঠান প্রধান। এদের কেউ বিভিন্ন পেশায়, কেউ বিয়ের ফাঁদে আটকা পড়েছে বলে শুধু ধারণা করা হচ্ছে। শুধু এই প্রতিষ্ঠান নয়, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চিত্রই এমন। সঙ্গে রয়েছে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় তৈরি হওয়া অবকাঠামোগত সংকট। ফলে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করার প্রস্তুতি বরিশালের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই নেই।
প্রাণঘাতী করোনায় টানা দেড় বছর বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি উদ্যোগে সারা দেশের মতো বরিশালেও তোড়জোড় শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তো অনেক আগে থেকেই শ্রেণিকক্ষে ফিরতে মুখিয়ে আছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরও তাই চেষ্টার কমতি নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন অচল থাকায় জেলার স্কুল-কলেজগুলোর অনেক কিছুই যেন অচল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কোনোটার অবকাঠামোর অবস্থা বেহাল। কোনোটার আবার খেলার মাঠ বেদখল হয়ে গেছে বা অব্যবস্থাপনায় তছনছ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বরিশালের ২ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এত স্বল্প বিরতিতে নানা সংকট কাটিয়ে চালু হতে প্রস্তুত হওয়াটাও কঠিন। এর মধ্যে এ সম্পর্কিত কোনো দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়নি তাদের।
এদিকে করোনা মহামারির এই দেড় বছরে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়নি। বন্ধ হয়েছে বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও। চাকরি হারিয়েছেন অনেক মানুষ। বহু পরিবার আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে পরিবারের সন্তানদের ওপর। অনেক শিশু-কিশোরকেই এই দুঃসময়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উপার্জনের উপায় খুঁজতে হচ্ছে। অনেকে এরই মধ্যে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছে। সবচেয়ে হতাশাজনক ঘটনা ঘটেছে মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে। দেশে এই সময়ে বাল্যবিবাহ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এরা সবাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়াদের দলে। বরিশাল জেলার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বরিশাল ইসলামীয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ঝান্ডা বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফরম পূরণ কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে। এতে কলেজের ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেনি। কলেজ খুললে অনেককেই আর পাওয়া যাবে না। কলেজের অবকাঠামো নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেড় বছরে দরজা জানালায় মরিচা জমেছে, ঘুণে ধরেছে আসবাবপত্রের। কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞানাগারের উপকরণ নষ্ট হয়েছে অনেকাংশেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশালের উজিরপুর গুঠিয়া আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজের খেলার মাঠের ঘাস অনেক বড় হয়েছে। এর মধ্যে পানি জমে পুরো মাঠ ব্যবহারের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা মেহেন্দীগঞ্জের কাজিরহাট থানার বিদ্যানন্দপুর এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সন্তোষপুর শেরে বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। সদর উপজেলার চরবাড়িয়া উত্তরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গত দেড় বছরে নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। নগরীর সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে দেখা গেছে গভীর রাতে তড়িঘড়ি করে ভবনে রং করা হচ্ছে। করোনায় বন্ধ থাকায় এমন বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে বরিশালের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার অবকাঠামো ও খেলার মাঠের। এই দীর্ঘ সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো সংস্কার বা তা দেখভাল করা হয়নি ঠিকমতো। ফলে অনেক কিছুই ব্যবহার উপযোগিতা হারিয়েছে।
বরিশাল প্রধান শিক্ষক পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক এবং সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন আলহাজ আ মজিদ খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম গোলাম মোস্তফা বলেন, ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়। এরই মধ্যে করোনায় গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীরা কেউ পরিবারের পেশা বদলে অন্যত্র চলে গেছে, আবার কারও বিয়ে হয়ে গেছে। জেলার স্কুলগুলোতে ঝরে পড়ার এই হার ১০ থেকে ২০ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘দেড় বছরে কোনো কোনো স্কুলের দরজা-জানালা-বেঞ্চ ঘুণে খেয়েছে। স্কুল মাঠ ঘাস গজিয়ে ঢেকে গেছে। জেলার ৪৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশেরই একই অবস্থা।’
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) বরিশাল আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নগরীর চহুতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্চয় কুমার খান বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জনের খোঁজ নেই। করোনায় জেলার এমন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজের জন্য কিংবা বিয়ের ফাঁদে আটকে গেছে। স্কুলগুলোর খেলার মাঠের অবস্থা বেহাল। করোনার আগে জেলার সব স্কুলের পরীক্ষাগারে ২ লাখ টাকার রাসায়নিক উপকরণ দেওয়া হয়। এত দীর্ঘ ছুটিতে তা নষ্ট হয়ে গেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। এমনিতেই দেশের প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক ধরনের অবহেলার শিকার। করোনায় তাই সবচেয়ে বড় ধকল গেছে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর দিয়ে। বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ মজুমদার বলেন, জেলায় মোট ১ হাজার ৬৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুলে দেড় বছরে যাওয়া হয়নি। ফলে স্কুল খুললে অনেক সমস্যা সামনে আসবে।
গত সপ্তাহে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া উত্তরচর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান মো. আবদুল লতিফ মজুমদার। স্কুলটি যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি সরকারকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও প্রাথমিক পর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া থামানো কষ্টসাধ্য হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যফ্রন্টের বরিশালের আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, খুলতে হলে বরিশালের প্রায় ৬০০ স্কুল-কলেজের অবকাঠামো, খেলার মাঠ প্রস্তুত এবং ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, স্কুল কলেজ খোলার জন্য প্রস্তুতির বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে খুললে হয়তো রেশনিং করে দিতে পারে কিংবা শিফট করতে পারে অথবা শ্রেণিভিত্তিক করে দিতে পারে। তিনি বলেন, অবকাঠামো সমস্যা কিছুটা হতে পারে। প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার অনীহাও সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘স্কুল-কলেজের আইসিটি ল্যাব, বিজ্ঞানাগারের উপকরণ নষ্ট হওয়া কাম্য নয়। লকডাউনেও এগুলো সচল রাখতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
বরিশাল নগরীর চহুতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জনেরই কোনো খোঁজ নেই। করোনা মহামারির গত দেড় বছরে এই শিক্ষার্থীদের কে কোথায় আছে এখন তার খোঁজ জানেন না প্রতিষ্ঠান প্রধান। এদের কেউ বিভিন্ন পেশায়, কেউ বিয়ের ফাঁদে আটকা পড়েছে বলে শুধু ধারণা করা হচ্ছে। শুধু এই প্রতিষ্ঠান নয়, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চিত্রই এমন। সঙ্গে রয়েছে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় তৈরি হওয়া অবকাঠামোগত সংকট। ফলে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করার প্রস্তুতি বরিশালের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই নেই।
প্রাণঘাতী করোনায় টানা দেড় বছর বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি উদ্যোগে সারা দেশের মতো বরিশালেও তোড়জোড় শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তো অনেক আগে থেকেই শ্রেণিকক্ষে ফিরতে মুখিয়ে আছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরও তাই চেষ্টার কমতি নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন অচল থাকায় জেলার স্কুল-কলেজগুলোর অনেক কিছুই যেন অচল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কোনোটার অবকাঠামোর অবস্থা বেহাল। কোনোটার আবার খেলার মাঠ বেদখল হয়ে গেছে বা অব্যবস্থাপনায় তছনছ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বরিশালের ২ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এত স্বল্প বিরতিতে নানা সংকট কাটিয়ে চালু হতে প্রস্তুত হওয়াটাও কঠিন। এর মধ্যে এ সম্পর্কিত কোনো দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়নি তাদের।
এদিকে করোনা মহামারির এই দেড় বছরে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়নি। বন্ধ হয়েছে বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও। চাকরি হারিয়েছেন অনেক মানুষ। বহু পরিবার আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে পরিবারের সন্তানদের ওপর। অনেক শিশু-কিশোরকেই এই দুঃসময়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উপার্জনের উপায় খুঁজতে হচ্ছে। অনেকে এরই মধ্যে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছে। সবচেয়ে হতাশাজনক ঘটনা ঘটেছে মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে। দেশে এই সময়ে বাল্যবিবাহ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এরা সবাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়াদের দলে। বরিশাল জেলার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বরিশাল ইসলামীয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ঝান্ডা বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফরম পূরণ কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে। এতে কলেজের ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেনি। কলেজ খুললে অনেককেই আর পাওয়া যাবে না। কলেজের অবকাঠামো নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেড় বছরে দরজা জানালায় মরিচা জমেছে, ঘুণে ধরেছে আসবাবপত্রের। কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞানাগারের উপকরণ নষ্ট হয়েছে অনেকাংশেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশালের উজিরপুর গুঠিয়া আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজের খেলার মাঠের ঘাস অনেক বড় হয়েছে। এর মধ্যে পানি জমে পুরো মাঠ ব্যবহারের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা মেহেন্দীগঞ্জের কাজিরহাট থানার বিদ্যানন্দপুর এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সন্তোষপুর শেরে বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। সদর উপজেলার চরবাড়িয়া উত্তরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গত দেড় বছরে নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। নগরীর সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে দেখা গেছে গভীর রাতে তড়িঘড়ি করে ভবনে রং করা হচ্ছে। করোনায় বন্ধ থাকায় এমন বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে বরিশালের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার অবকাঠামো ও খেলার মাঠের। এই দীর্ঘ সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো সংস্কার বা তা দেখভাল করা হয়নি ঠিকমতো। ফলে অনেক কিছুই ব্যবহার উপযোগিতা হারিয়েছে।
বরিশাল প্রধান শিক্ষক পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক এবং সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন আলহাজ আ মজিদ খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম গোলাম মোস্তফা বলেন, ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়। এরই মধ্যে করোনায় গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীরা কেউ পরিবারের পেশা বদলে অন্যত্র চলে গেছে, আবার কারও বিয়ে হয়ে গেছে। জেলার স্কুলগুলোতে ঝরে পড়ার এই হার ১০ থেকে ২০ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘দেড় বছরে কোনো কোনো স্কুলের দরজা-জানালা-বেঞ্চ ঘুণে খেয়েছে। স্কুল মাঠ ঘাস গজিয়ে ঢেকে গেছে। জেলার ৪৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশেরই একই অবস্থা।’
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) বরিশাল আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নগরীর চহুতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্চয় কুমার খান বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জনের খোঁজ নেই। করোনায় জেলার এমন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজের জন্য কিংবা বিয়ের ফাঁদে আটকে গেছে। স্কুলগুলোর খেলার মাঠের অবস্থা বেহাল। করোনার আগে জেলার সব স্কুলের পরীক্ষাগারে ২ লাখ টাকার রাসায়নিক উপকরণ দেওয়া হয়। এত দীর্ঘ ছুটিতে তা নষ্ট হয়ে গেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। এমনিতেই দেশের প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক ধরনের অবহেলার শিকার। করোনায় তাই সবচেয়ে বড় ধকল গেছে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর দিয়ে। বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ মজুমদার বলেন, জেলায় মোট ১ হাজার ৬৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুলে দেড় বছরে যাওয়া হয়নি। ফলে স্কুল খুললে অনেক সমস্যা সামনে আসবে।
গত সপ্তাহে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া উত্তরচর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান মো. আবদুল লতিফ মজুমদার। স্কুলটি যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি সরকারকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও প্রাথমিক পর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া থামানো কষ্টসাধ্য হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যফ্রন্টের বরিশালের আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, খুলতে হলে বরিশালের প্রায় ৬০০ স্কুল-কলেজের অবকাঠামো, খেলার মাঠ প্রস্তুত এবং ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, স্কুল কলেজ খোলার জন্য প্রস্তুতির বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে খুললে হয়তো রেশনিং করে দিতে পারে কিংবা শিফট করতে পারে অথবা শ্রেণিভিত্তিক করে দিতে পারে। তিনি বলেন, অবকাঠামো সমস্যা কিছুটা হতে পারে। প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার অনীহাও সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘স্কুল-কলেজের আইসিটি ল্যাব, বিজ্ঞানাগারের উপকরণ নষ্ট হওয়া কাম্য নয়। লকডাউনেও এগুলো সচল রাখতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
সনাতন সম্মিলিত জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে বিক্ষোভ হয়। সেই বিক্ষোভে আদালতের মুন্সি সমিতি (অ্যাডভোকেটস ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশন) সহায়তা করেছে এমন দাবি তুলে কার্যালয় ভাঙচুর
৩ ঘণ্টা আগেশেরপুরের মুর্শিদপুর দরবার শরীফে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আহত হাফেজ উদ্দিন (৩৯) নামে একজন মারা গেছেন। আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
৬ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার বিচারের দাবিতে এবং সারাদেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি-উন্মাদনা-হামলা রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ বুধবার বিকেলে বাসদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে নগরের আম্বরখানার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
৬ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহরের একটি গাড়িকে ধাক্কা দিয়েছে একটি ট্রাক। ওই বহরে থাকা চট্টগ্রামের আরেক সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি অভিযোগ করেছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা।
৬ ঘণ্টা আগে