‘১৫ আগস্টের নাটের গুরু আ. লীগের মোশতাক, দায় চাপানো হচ্ছে জিয়ার ওপর’ 

রাশেদ নিজাম, বরিশাল থেকে
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২২, ১৬: ৩৪

বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। তার নাটের গুরু আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমেদ। এখন দায় চাপানো হচ্ছে জিয়াউর রহমানের ওপর। ৩ নভেম্বর চার নেতা হত্যা হয় জেলখানায়। জিয়া তখন গৃহবন্দী ছিলেন। আওয়ামী লীগের চেলা চামুণ্ডারা বলছে, তিনি জড়িত ছিলেন।’

আজ শনিবার বরিশাল মহানগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (পুরোনো বেলস পার্ক) বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মেজর (অব.) হাফিজ এই বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ এখন জেগে উঠেছে। বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সবাই এসেছেন। এই সরকারই শেষ সরকার নয়। আগামী সময়ে জনগণের সরকার কায়েম হবে। আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই।’

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। সবার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। আগেই মানুষ সরকারকে লালকার্ড দেখিয়েছে। ভারতের সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।’ তিনি প্রশ্ন রাখেন, কি ধরনের ব্যক্তিরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন? তিনি বলেন, ‘ভারত নাকি স্বামী বাংলাদেশ নাকি স্ত্রী। তাঁরা এই সমাজের গ্রহের মানুষ বলে মনে হয় না।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং প্রধান বক্তা মির্জা আব্বাস।

সমাবেশে বিএনপির নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘সরকারকে ধন্যবাদ, আমাদের উপকার করেছেন—ক্ষতি করতে যেয়ে তিন দিন ধরে সমাবেশের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। মাঠে মাঠে যে স্থাপনা করেছেন তাতে আমাদের লোকজন রেস্ট নিতে পেরেছে। আপনাদের ধন্যবাদ না দিলে অকৃতজ্ঞা হয়ে যাবে।’

সরকারকে হুমকি দিয়ে আলাল বলেন, ‘দখল করব—বঙ্গ ভবন, গণভবন—জনগণ নিয়ে। তখনো ১১টি সেক্টর থাকবে। ১০টি ঘোষণা হয়েছে, আরেকটা হবে মুক্তিযুদ্ধের মতো।’ তিনি ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘কাদের কাক্কু যেভাবে কথা বলেন যেন কাউয়া। আমি চুলকানির কথা বলতে চাই না তবে হাসান মাহমুদকে কাতুকুতু দিতে চাই। সকাল থেকে মিথ্যে বলা শুরু করে, রাত পর্যন্ত বলে। আপনাদের তালিকা প্রস্তুত করা আছে। বিচার করা হবে।’

বরিশালের সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান সারোয়ার বলেন, ‘গণতন্ত্র দুরূহ ব্যাপার। ১৪ এবং ১৮ সালে চুরি করেছে। ইভিএম এনেছে। রাষ্ট্র, সরকার, দল একীভূত হয়ে গেছে। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে একটি দল। বরিশালের কোনো উন্নয়ন নাই। সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ফান্ড নাই। সব খেয়ে ফেলেছে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় না আসলে উন্নয়ন হবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটিয়ে ঘরে ফিরব।’

সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে দিয়েছিলেন, কোন আইনগত বৈধতা দিয়ে নিয়েছিলেন? ফরমায়েশি রায়ে আটকে রেখেছেন।’ শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘আপনি বলেন জেলে নেবেন, জেগে উঠেছে মানুষ। বেগম জিয়া জেল থেকে বেরিয়ে আসবেন। আপনি জেলে যাবেন।’ এ সময় তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সমাবেশ ঘিরে যে মামলা হবে জেলা আদালতে যাবেন আইনজীবীরা লড়বেন, উচ্চ আদালতেও কোনো খরচ লাগবে না।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত