ঠিকাদারকে মারধর করে রড ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭: ৩২
Thumbnail image

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদা না পেয়ে ঠিকাদারকে মারধর ও কাজ বন্ধ করে রড নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতেই দুমকি সদর থানা এবং আজ উপাচার্য বরাবর নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার ছাত্রলীগের সভাপতি সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, ‘আমি গত দুই দিন পর্যন্ত ঢাকায়, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’ 

দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন ‘আমাদের কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছে এবং এটির তদন্ত চলমান আছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, পবিপ্রবির শেখ হাসিনা হল ও শেখ রাসেল হলের নির্মাণাধীন ভবনের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি ভবন নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকেই পবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক এনামুল হকের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। তবে চাঁদা না দেওয়ায় বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থাপককে হুমকি–ধামকিও দেন। 

গতকাল মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে শেখ রাসেল হলের নির্মাণাধীন ভবনের রড ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিল ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি গোলাম রব্বানী সুরিদ, ইমরান হোসেনসহ আরও কয়েকজন। এ সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তারা জানান, ‘ছাত্রলীগ সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর রড নিয়ে যেতে বলেছেন’। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক এনামুল হক ঘটনাস্থলে এসে বাঁধা দিয়ে সময় চাইলে সুরিদ ও তার লোকজনেরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ সময় এনামুল হকের মোবাইলটিও নিয়ে যায় তারা। পরে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে চাইলে সেখানেও বাঁধা দেয় ছাত্রলীগের ওই নেতারা। 

ভুক্তভোগী মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. এনামুল হক বলেন, ‘আমাকে এবং আমাদের স্টাফদের বেধড়ক মারধর করেছে ছাত্রলীগ সভাপতি সাগরের লোক সুরিদসহ কয়েকজন। এ সময় আমার মোবাইলটাও নিয়ে যায়। শুধু আজ না, সাগর বিভিন্ন সময়ে আমাকে হুমকি–ধামকি দিয়ে আসছে। চাঁদা না দেওয়ায় আমাকে মেয়েদের দিয়ে ইভটিজিং করাবে বলেও হুমকি দেয়। ও চাঁদা চেয়েছে ভিডিও রেকর্ড সহ প্রমাণ আছে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রব্বানী সুরিদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ সভাপতি ক্যাম্পাসে নেই এবং সে জানেও না। এ ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে কনস্ট্রাকশনের কাজে লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলে, এ কারণে গতকাল জিজ্ঞেস করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের ওপর উত্তেজিত হয়ে উল্টো ঘটনা ঘটাল।’ 

লাইসেন্স চেক করার দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে জিজ্ঞেস করার অধিকার আছে। এ ছাড়া প্রক্টর স্যারকে জানিয়েছি তিনি বলেছেন, লাইসেন্সবিহীন গাড়ি পেলে থামিয়ে রাখতে।’ 

এ ব্যাপারে পবিপ্রবির রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর সন্তোষ কুমার বসু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি এ রকম একটি অভিযোগ দিয়েছে, আমরা ইন্টারনাল সমাধান করার চেষ্টা করছি। তবে তদন্ত করা হবে এবং তদন্তে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পবিপ্রবির উপাচার্য ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তও ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত