Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে বাবার বাড়ির পুকুরে গৃহবধূর লাশ, স্বামী-ভাশুর আটক

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে বাবার বাড়ির পুকুরে গৃহবধূর লাশ, স্বামী-ভাশুর আটক

লক্ষ্মীপুরে বাবার বাড়ির পুকুর থেকে ফাতেমা বেগম নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নিহতের স্বামী রাজু হোসেন ও ভাশুর মোহাম্মদ বাবলুকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। 

নিহত ফাতেমা বেগম মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদ নগর এলাকার মৃত সাইফুল্লাহর মেয়ে। তাঁর স্বামী রাজু হোসেনের বাড়ি একই ইউনিয়নের মাইজের বাড়ি এলাকায়। তাঁদের সংসারে রুবি আক্তার নামের চার বছরের এক মেয়েসন্তান আছে। রাজু পেশায় অটোরিকশা চালক। তাঁর আরও একজন স্ত্রী রয়েছেন। ফাতেমা বেগম রাজুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী। 

লাশ উদ্ধারের বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় নিহতের স্বামী ও ভাশুরকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানান, পাঁচ বছর আগে ফাতেমা বেগমের সঙ্গে রাজু হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রাজসহ তাঁর পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য ফাতেমার ওপর চাপ দিয়ে আসছিলেন। একপর্যায়ে ফাতেমার বাবা জমি বিক্রি করে রাজুকে বিদেশে পাঠান। বিদেশে মাসখানেক থেকে বাড়িতে চলে আসেন রাজু। এরপর থেকে পারিবারিক বিরোধ লেগেই ছিল। ১৫ দিন আগে যৌতুকের জন্য চাপ দিলে ফাতেমা অপারগতা প্রকাশ করে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। একপর্যায়ে রাজুও শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। গতকাল রোববার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। 

আজ সকালে ফাতেমার লাশ বাবার বাড়ির পুকুরে ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। এ সময় রাজু ও বাবুলকে সন্দেহ হলে তাঁদেরকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পুলিশে দেন এলাকাবাসী। 

নিহত ফাতেমার বড় বোন রাবেয়া আক্তার বলেন, যৌতুকে জন্য নির্যাতন করেই ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতন করা হতো। আজ ভোরে বাবার বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে ফাতেমার মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। যৌতুক না পাওয়ায় তাঁকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে ফাতেমার স্বামী রাজু হোসেন ও ভাশুর বাবলু। তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। 

শ্বাসরোধে গৃহবধূর মৃত্যু হওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা। তিনি জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত