মা ইলিশ ধরতে গিয়ে আটক হলে জেলে কার্ড বাতিল: চাঁদপুরের ডিসি

চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ০৩
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ১৮

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বলেছেন, ‘আজ থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সরকার ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ সময় যেসব জেলে অবসর থাকবেন, তাঁদের জন্য সরকার খাদ্যসহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চালের ব্যবস্থা করেছে। আইন অমান্য করে যেসব জেলে নদীতে নেমে মা ইলিশ ধরবেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি জেলে কার্ড বাতিল করা হবে। এটি আমরা স্থানীয়ভাবে চিন্তা করছি।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেড বঙ্গবন্ধু পর্যটন কেন্দ্রে ইলিশ সম্পদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে সচেতনতামূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিসি এসব কথা বলেন।

কামরুল হাসান বলেন, ‘আপনারা (জেলেরা) যদি সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলেন, তাহলে আমাদের কঠোর হতে হবে না এবং আইন প্রয়োগ করা লাগবে না। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, এ বছর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য বিভাগ, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশসহ সবাই সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা নেব। কারণ, গত বছর জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে বহু জেলে আটক হয়েছেন এবং তাঁদের জেল-জরিমানা হয়েছে। আপনারা যদি আইন না মানেন, তাহলে আমরা সর্বোচ্চ সাজা দিতে বাধ্য হব।’

চাঁদপুরের ডিসি আরও বলেন, ‘এ বছর কোস্ট গার্ডকে আমরা বলেছি, মতলব উত্তর উপজেলায় একটি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করতে। শিগগিরই সেখানে ক্যাম্প স্থাপন হবে। হাইমচর মৎস্য বিভাগ নতুন স্পিড বোর্ড পেয়েছে। এখন থেকে অভিযানে জনপ্রতিনিধিরা সম্পৃক্ত হবেন।’

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা নদীতে অভিযান না চালালেও স্থলভাগে পুলিশ কাজ করবে। পরিবহন অবস্থায় যাকে পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে বাজার ও আড়তে যাদের পাওয়া যাবে, তারাও আইনের আওতায় আসবে। কারণ, অবৈধ কোনো কিছু বাজারেও বিক্রি করা যাবে না।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘গত তিন বছর কাজ করে আমার কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রতিটি অভিযানে জেলেরা নদীতে নামবে না বললেও পরে দেখা যায় দলে দলে নেমে মাছ ধরেন। আইন অমান্য করে জেলার বাইরে থেকেও জেলেরা আসেন। তাঁরা আমাদের তাঁদের শত্রু মনে করেন। মারমুখী হয়ে আমাদের পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করেন। বিগত অভিযানে আমাদের তিনজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। ইলিশ সম্পদ সবার, বিশেষ করে বড় হলে ইলিশ জেলেরাই ধরবেন। তাঁদের জন্য আমাদের এত কষ্ট করে অভিযান করা। আমি আশা করব, আপনারা সবাই মিলে এই অভিযান সফল করতে সহযোগিতা করবেন।’

হাইমচর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রশীদের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াছ, সিনিয়র মৎস্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রুমানা ইসলাম, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সফিকুল ইসলাম, আব্দুল মালেক দেওয়ান, শাহ আলম মল্লিক, তছলিম বেপারী প্রমুখ।

সভা শেষে অতিথিদের অংশগ্রহণে মোলহেড থেকে একটি নৌ শোভাযাত্রা তিন নদীর মোহনা ও আশপাশের এলাকা ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত