Ajker Patrika

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে মধু সংগ্রহের নতুন সম্ভাবনা

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) 
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, ২১: ৩৫
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কুমারী মৌজায় লিচুবাগানে বসানো বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কুমারী মৌজায় লিচুবাগানে বসানো বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির পাহাড়ি এলাকায় ছোট পরিসরে বাড়ি বাড়ি কিছু মধু চাষ হলেও বাক্স বসিয়ে বড় আকারে মৌ চাষের প্রচলন ছিল না। তবে সম্প্রতি মানিকছড়ি উপজেলায় ফলবাগান থেকে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন মাগুরার একদল মৌয়াল। তাঁরা গত ১৫ দিনে ১৫০ বাক্স থেকে ৭০০ কেজি মধু আহরণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

পাহাড়ের লিচু, আম, ড্রাগন ও সরিষা ফুলের মধু স্বাদে-গুণে অসাধারণ হওয়ায় এখানে মধু চাষের ভালো সম্ভাবনা দেখছেন মৌয়ালেরা। অন্যদিকে কৃষিবিদেরা বলছেন, বাগানে মধু চাষের ফলে পরাগায়ন অধিক হওয়ায় গাছে ফলন বেশি হয়।

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কুমারী মৌজায় লিচুবাগানে বসানো বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কুমারী মৌজায় লিচুবাগানে বসানো বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপজেলার কুমারী মৌজার এফ কে অ্যাগ্রো ফার্মে গত মঙ্গলবার গিয়ে দেখা গেছে, নানা প্রজাতির আম ও লিচুবাগানে একদল মৌয়াল মধু আহরণ করছেন। বাগানের ৫ হাজার লিচুগাছ ঘিরে এই প্রথম মধু উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে বাগানমালিক সমতলের মৌয়ালদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে মার্চ মাসে মাগুরা থেকে মিরাজ হোসেন ও আল মামুন নামের দুই মৌয়াল দুই সহযোগী ও ১৫০ বাক্স মৌমাছি নিয়ে এখানে কাজ শুরু করেন। তাঁরা দুই দফায় মধু সংগ্রহ করেছেন। এখন বাতাস বেড়ে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত ফুল না থাকায় আর আশানুরূপ মধু পাওয়া যাবে না বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

মৌয়াল দলের প্রধান মিরাজ বলেন, ‘পাহাড়ে মধু চাষের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আগে আসা সম্ভব হয়নি। এবার লিচুবাগানে ফুল আসার অনেক পরে আসা হলেও দুই দফায় এখন পর্যন্ত ৭০০ কেজি মধু আহরণ করতে পেরেছি। এখানকার মধু স্বাদে-গুণে ভরপুর। ভবিষ্যতে আগেভাগে লিচু ও ড্রাগনবাগানে আসার চেষ্টা থাকবে।’

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কুমারী মৌজায় লিচুবাগানে বসানো বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কুমারী মৌজায় লিচুবাগানে বসানো বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাক্সের চাক মেশিনে দিয়ে ঘুরিয়ে মধু সংগ্রহ করতে থাকা মামুন বলেন, ‘প্রতি বাক্সে ৬-৯টি চাক থাকে। প্রতি চাকে গড়ে ১ কেজি মধু আহরণ করা যায়। সপ্তাহে একবার মধু আহরণ করা হয়। আমরা সাধারণত চাক প্রক্রিয়াজাত করে মধু ড্রামে সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করি। পাহাড়ের মধু নির্ভেজাল ও স্বাদ বেশি।’

বাগানের ব্যবস্থাপক আবদুল মজিদ বলেন, ‘মধু চাষ বা আহরণ আমাদের উদ্দেশ্য না। আমাদের টার্গেট ফুলে পরাগায়ন। পরাগায়ন যত বেশি হবে, গাছে ফল তত বেশি আসবে।’

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার নাথ বলেন, ফল বেশি উৎপাদনে পরাগায়নের বিকল্প নেই। মধু চাষে পরাগায়ন বেশি হওয়ায় ফলও বেশি পাওয়া যায়। অনেকটা পরীক্ষামূলকভাবে এবার এফ কে অ্যাগ্রো ফার্মে সুদূর মাগুরা থেকে একদল মৌয়াল এসে মধু উৎপাদন করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। ভবিষ্যতে এখানকার অন্য লিচু ও ড্রাগনবাগানে এভাবে মৌয়ালেরা মধু আহরণে এলে বাগানে ফল উৎপাদন বাড়বে এবং স্বাদে-গুণে ভরপুর মধুর বাজারজাত বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার আমলে গভর্নর হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলাম: আহসান এইচ মনসুর

আলোচনায় ড. ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রী দেখার আকাঙ্ক্ষা, আইনি পথ কী

এক দশক পর প্রকাশ্যে গায়িকা ডাফি, শোনালেন অপহরণ ও ধর্ষণের ভয়াবহ বর্ণনা

তিস্তায় বড় প্রকল্প নিয়ে সতর্ক থাকার তাগিদ

জাতীয় ঈদগাহে যাবেন না রাষ্ট্রপতি, ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়বেন বঙ্গভবনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত