Ajker Patrika

কৃষক লীগ নেতার দখলকৃত নার্সারি ও গুদাম এখন বিএনপি সমর্থকের

  • প্রতি মাসে মসজিদের গচ্চা তিন লাখ টাকা
  • জায়গাটি আদৌ দখলমুক্ত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়
  • ২০১৮ সালে ৩৮ হাজার বর্গফুট জায়গা দখল করেন উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম
আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কৃষক লীগ নেতা ভাড়া ছাড়াই দখলে নেন চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্সের ৩৮ হাজার বর্গফুট জায়গা। সেখানে নার্সারিও গড়ে তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিএনপির ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী এক ব্যক্তি মসজিদের সিঁডির নিচে ৩০৩৪ বর্গফুটের গুদাম দখলে নিয়েছেন। এতে নার্সারি ও গুদামের ভাড়া মিলিয়ে প্রতি মাসে মসজিদ কর্তৃপক্ষের ৩ লাখ টাকা গচ্চা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০১৮ সাল থেকে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্সের মালিকানার ৩৮ হাজার বর্গফুটের জায়গা দখল করে ‘আরণ্যক’ নামে একটি নার্সারি গড়ে তুলেছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গুনিয়ার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। এরপর থেকে ভাড়া দেন না এই নেতা। পরিশোধ করেননি ভাড়া বাবদ বকেয়া প্রায় ১৫ লাখ টাকা। উল্টো সেই জায়গা আরেকজনের কাছে ভাড়া দেওয়া হলেও মসজিদের ফান্ডে কোনো টাকা জমা হয় না। এতে প্রতি মাসে মসজিদের গচ্চা যাচ্ছে বর্তমানে ২ লাখ টাকা।

এদিকে মসজিদের এ জায়গা দখলমুক্ত ও ইজারার টাকা আদায় করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২০২২ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর দুই দফা চিঠি দেয়। ২০২৩ সালের প্রথম দিনও উচ্ছেদ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু রাঙ্গুনিয়ার সাবেক এমপি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের প্রত্যক্ষ চাপে কৃষক লীগ নেতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন। বরং ২০২২ সালে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদের টেলিফোনে স্ট্যান্ড রিলিজ হয়েছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের তৎকালীন পরিচালক তৌহিদুল আনোয়ার। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও একই অবস্থায় রয়েছে জায়গাটি। এ অবস্থায় জায়গাটি আদৌ দখলমুক্ত হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

জায়গা দখল করে নার্সারি ব্যবসা পরিচালনা প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে যে পাওনা আছে, সেটা পরিশোধের জন্য আমি এক মাস সময় নিয়েছি। সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকার মতো বকেয়া রয়েছে।’ তবে কত মাস বকেয়া রয়েছে, তা জানা নেই বলে দাবি তাঁর।

অন্যদিকে মসজিদের পূর্বপাশে ৩০৩৪ বর্গফুট জায়গা গুদাম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভাড়া নেন মাহবুব মহিউদ্দিন নামের একজন। তিনি আবার সেই জায়গা ভাড়া দেন বিএনপির ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী খোরশেদুর রহমানকে। সেই থেকে গুদামটি খোরশেদুর রহমানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। গুদামটি বর্তমান বাজারে ১ লাখ টাকা ভাড়া হলেও ৩৫ হাজার টাকা নিজ উদ্যোগে মসজিদ কর্তৃপক্ষের অ্যাকাউন্টে জমা দিচ্ছেন খোরশেদ। যদিও তাঁর সঙ্গে মসজিদ কর্তৃপক্ষের কোনো চুক্তি নেই।

মসজিদের গুদাম দখলে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে খোরশেদুর রহমান দাবি করেন, মসজিদের সঙ্গে তাঁর চুক্তি রয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে চুক্তি আছে দাবি করে মাহবুব মহিউদ্দিন বলেন, ‘খোরশেদুর রহমান আমার ব্যবসায়িক পার্টনার।’

বিএনপির প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিতি খোরশেদুর রহমান সম্পর্কে নগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপন বলেন, ‘খোরশেদুর রহমান নামে আমাদের দলীয় কেউ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত