বর্ণিল আয়োজনে খাগড়াছড়িতে ফুল বিজু

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১৭: ৫৮

খাগড়াছড়িতে নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চাকমাদের অন্যতম প্রধান উৎসব বিজু। আজ মঙ্গলবার সকালে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদী সংলগ্ন বৃহত্তর খবংপুড়িয়া বিজু উদ্‌যাপন কমিটির উদ্যোগে ফুল বিজু উদ্‌যাপিত হয়। 

চেঙ্গী ও মাইনী নদীতে ভোর ৬টা থেকে ফুল ভাসানো শুরু করে চাকমারা। রীতি অনুযায়ী পুরোনো বছরের দুঃখ ভুলে নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় নদীর জলে দেবী গঙ্গার উদ্দেশে এই ফুল ভাসানো হয়। চৈত্র মাসের ২৯ তারিখ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ফুল ভাসানো শুরু হয়। চাকমা তরুণ-তরুণীরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বন থেকে সংগ্রহ করা নানা রকমের ফুল নদীর জলে ভাসায়। পরে নদীর পাড়ে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে করজোড়ে প্রার্থনা করা হয়। 

নদীতে ফুল ভাসাতে আসা তরুণী মেপি চাকমা, রূপা চাকমা, পায়েল ত্রিপুরা জানান ‘পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে ফুল বিজু। পুরোনো বছরের দুঃখ, গ্লানি দূর করতে ফুল ভাসানো হয়। নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা।’ 
 
বন থেকে সংগ্রহ করা বিজু ফুল ছাড়াও মাধবীলতা, অলকানন্দা, রঙ্গন, জবা ফুলসহ বাহারি ফুল কলাপাতায় করে নদীর জলে ভাসানো হয়। ঐতিহ্যবাহী সাজ-পোশাকে চাকমা তরুণ-তরুণীরা ফুল বিজুতে অংশ নেয়। বিজুতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য মঙ্গল কামনা করছে পুণ্যার্থীরা। 

চাকমা তরুণ-তরুণীরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ফুল বিজুতে অংশ নেয়হত্তর খবংপুড়িয়া বিজু উদ্‌যাপন কমিটির প্রধান ধীমান খীসা জানান, ‘ফুল বিজুর মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়েছে। আগামী বছর যাতে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনে সেই প্রার্থনা করি। আমরা আমাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী প্রতিবছর নদীর বেদিতে ফুল দিয়ে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে পূজা করে থাকি।’ 

ফুল ভাসানো বা ফুল বিজু চাকমাদের উৎসব হলেও সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধনে এই উৎসব সর্বজনীন রূপ নেয়। 

খাগড়াছড়িতে বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণে উদ্‌যাপন করা হয় বৈসাবি উৎসব। মঙ্গলবার সকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বৈসাবি উপলক্ষে বর্ণিল শোভাযাত্রা বের করা হয়। জেলার চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা নিজস্ব পোশাক পরে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, বৈসাবি উৎসব পাহাড়ে বসবাসরত মানুষের মাঝে সম্প্রীতি আরও জোরদার করবে।

এ সময় বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আজিজ ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুপ্রু চৌধুরী। এ ছাড়া সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত