Ajker Patrika

মাহুতের মমতায় বেড়ে উঠছে ‘বীর বাহাদুর’

বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার) 
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ৫০
মাহুতের মমতায় বেড়ে উঠছে ‘বীর বাহাদুর’। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাহুতের মমতায় বেড়ে উঠছে ‘বীর বাহাদুর’। ছবি: আজকের পত্রিকা

চারদিকে গর্জনগাছ ঘেরা একটি হাসপাতাল। প্রবেশ করতেই পশু-পাখির শব্দ কানে ভেসে আসে। সেখানে মানুষ নয়, প্রাণীদের চিকিৎসা হয়। এটি কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতাল।

এক মাস বয়সী একটি হস্তীশাবক কাদা মাটিতে আটকে পড়া থেকে উদ্ধার করে ঠাঁই হয় এ হাসপাতালে। পার্ক কর্তৃপক্ষ শাবকটির নাম রেখেছে ‘বীর বাহাদুর। শাবকটি এক বছর তিন মাস ধরে হাসপাতালের শেডে বড় হচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বীর বাহাদুর খুনসুটি, দৌড়াদৌড়ি ও খেলতে পছন্দ করে। এক মাস বয়স থেকে মাহুতের কাছে বড় হচ্ছে। এ শাবকের লালন-পালন করছেন পার্কের মাহুত সুশীল। ছোট থেকে মায়া–মমতায় বড় হওয়ায় শাবকটির মা-বাবা এই মাহুত।

পার্ক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর বনের ভেতর কাদা মাটিতে আটকে পড়া এক মাস বয়সী শাবকটি চট্টগ্রাম বাঁশখালী উপজেলার জলদি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জের একটি দল উদ্ধার করে। এরপর লালন–পালনের জন্য সাফারি পার্কে পাঠান। চিকিৎসা শেষে হাসপাতালটির শেডে বীর বাহাদুরকে রাখা হয়।

মাহুত সুশীল চাকমা বলেন, ‘২০০৫ সাল থেকে হাতির মাহুত হিসেবে কাজ করছি। মা ছাড়া হাতিকে লালন–পালন করা খুবই কষ্টের। একদম একটি শিশুর মতো আদর-স্নেহ দিয়ে বড় করতে হয়। পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ১৪ মাস ধরে আছে। সারা দিন লাফালাফি ও খুনসুটিতে দিন পার করে বীর বাহাদুর। নিয়ম মেনে প্রতিদিন গোসল, খাবার ও ব্যায়াম করানো হয়। এখন শাবকটি স্বাস্থ্যবান হয়েছে। আরও ১ বছর নিয়মিত দুধ পান করাতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘শাবকটি যখন পার্কে আনা হয়, তখন শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল ছিল। পরিচর্যা করে সুস্থ করতে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। শাবকের “বীর বাহাদুর” নামে নামকরণ করা হয়। এখন বয়স হয়েছে এক বছর চার মাস। শাবকটি প্রায় এক মাস বয়সে পার্কে আনা হয়েছিল।’

মাহুতের মমতায় বেড়ে উঠছে ‘বীর বাহাদুর’। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাহুতের মমতায় বেড়ে উঠছে ‘বীর বাহাদুর’। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি আরও বলেন, ‘হস্তীশাবককে প্রতিদিন ল্যাকট্রোজেন-২ খাওয়ানো হয় ৮ প্যাকেট। এ ছাড়া ১ কেজি গাজর, ৫ কেজি মিষ্টি কুমড়া, ২ কেজি শসা ও ৫০টি কলা খাবার তালিকায় রাখা হয়। পার্কের হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আরও একটি হস্তীশাবক বড় হচ্ছেন।’

মাজহারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘টেকনাফের বনাঞ্চলে গত ৫ জানুয়ারি প্রসবকালীন একটি মা হাতি মারা গেলে এক দিন বয়সী পুরুষ লিঙ্গের একটি হস্তীশাবক পার্কে হাসপাতালে প্রেরণ করে বন বিভাগ। বর্তমানে হাতি শাবকটি সুস্থ রয়েছে। নিয়মিত দুধ পান করানো হচ্ছে। পার্কের হাসপাতালে এক দিনের হস্তীশাবক লালন–পালনের অভিজ্ঞতা এই প্রথম। শাবকটির নামকরণও এখনো করা হয়নি।’

২ হাজার ২৫০ একর বনাঞ্চলে গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম এই সাফারি পার্ক। ২০০১ সালের ১৯ জানুয়ারি দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৮০ সালে এটি হরিণ প্রজননকেন্দ্র ছিল। বর্তমানে পার্কের বিভিন্ন বেষ্টনীতে বাঘ, সিংহ, জেব্রা, ওয়াইল্ড বিস্ট, জলহস্তী, ময়ূর, কুমির, হাতি, ভালুক, হরিণ, লামচিতা, শকুন, অজগর, কচ্ছপ, রাজ ধনেশ, কাক ধনেশ, ইগল, সাদা বক, রঙিলা বক, সারস, মথুরা, নিশিবক, কানিবক, বন গরুসহ নানা প্রজাতির প্রাণী আবদ্ধ অবস্থায় আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এপ্রিলে আসছে সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসন, প্রস্তুত মডেল–লোগো

এ কে খন্দকারের নামে কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটির নামকরণ

বিয়ের ১০ দিন আগে গয়না-নগদ টাকাসহ মেয়ের হবু স্বামীর সঙ্গে পালালেন মা

পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল

পাঠানো ছবি ও ভিডিও অন্যের ফোনে সেভ হওয়া ঠেকাতে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত