৫৭ দিনের লড়াই শেষে মারা গেলেন ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরিফ

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ২২
Thumbnail image

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সাইফুল ইসলাম আরিফ (১৬) ৫৭ দিন চিকিৎসাধীন পর মারা গেছেন। আজ সোমবার ঢাকার সিএমএস হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায় বাবা-মা। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তাঁরা। 

আরিফ দাগনভূঞা উপজেলার ১ নম্বর সিন্দুরপুর ইউনিয়নের মধ্যম কৌশলাপুর গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেনের ছেলে। নিহত সাইফুল ইসলাম আরিফের বাবা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিন মেয়ে এক ছেলের মধ্যে আরিফ সবার বড়। আরিফ দরবেশহাট ফাজিল মাদ্রাসার দাখিলে লেখাপড়া করত। 

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল চট্টগ্রামে চাচার বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত ৪ আগস্ট চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মারধর ও গুলিবিদ্ধ হন সাইফুল। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১ মাস ১৫ দিন চিকিৎসার পর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। 

নিহতের চাচা আমজাদ হোসেন বলেন, পরিবারে চার সন্তানের মধ্যে সাইফুল বড় ছিল। সে মূলত চট্টগ্রামে চাচার বাসায় বেড়াতে গিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন। সেদিন তাকে আওয়ামী লীগের লোকজন বেধড়ক মারধর করে। তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। 

আরিফের বাবার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এ সময় কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ঘরে বাতি দেওয়ার মতো আর কেউ রইল না। আমার একমাত্র ছেলেকে আল্লাহ তুলে নিয়ে গেল। আমি এখন কি নিয়ে বাঁচব।’ 

ফেনী জেলার সমন্বয়ক আব্দুল আজিজ বলেন, ফেনীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ঘটনাস্থলে আটজন নিহত হয়। বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে আরও তিনজন, এ ছাড়া আজকে একজনসহ সর্বমোট ১২ জন নিহত হয়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়ে মোট ১২ জনের শহীদের তালিকা পাঠিয়েছি। 

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবেদিতা চাকমা বলেন, ‘নিহত আরিফের পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে চলেছি। ঢাকা থেকে লাশ নিয়ে আসা হলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন সম্পন্ন হবে।’ 

প্রসঙ্গত, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট আটটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। এতে ফেনী জেলা সাবেক সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী, সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন নাসিম ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীসহ জেলার সিনিয়র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের আসামি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত