Ajker Patrika

অবৈধভাবে পাথর তুলছেন আ.লীগ-বিএনপির নেতারা

  • লামার কাঁঠালছড়া চংবট ম্রোপাড়ার পশ্চিমে মুরুংঝিরি থেকে পাথর তোলা হচ্ছে।
  • পাচারের জন্য স্তূপ করে রাখা হয়েছে ২০ হাজার ঘনফুট পাথর।
  • অভিযোগ অস্বীকার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই নেতার।

এস বাসু দাশ, বান্দরবান 
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২: ১৩
ঝিরি থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে রাখা পাথর। এতে হুমকিতে পড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। সম্প্রতি বান্দরবানের লামার চিলেরতুয়া এলাকায়। আজকের পত্রিকা
ঝিরি থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে রাখা পাথর। এতে হুমকিতে পড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। সম্প্রতি বান্দরবানের লামার চিলেরতুয়া এলাকায়। আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের লামা উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা ঐক্যের ভিত্তিতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ। পাথর বিলীন হওয়ার কারণে নদী, খাল ও ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে খাওয়ার পানির তীব্র সংকটে পড়ছে পাহাড়িরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লামা উপজেলার সদর ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ড চিলেরতুয়া এলাকায় কাঁঠালছড়া চংবট ম্রোপাড়ার পশ্চিমে মুরুংঝিরি থেকে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। আর উত্তোলিত পাথরগুলো ট্রাকে করে পাচার হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। দিনের পর দিন পাথর উত্তোলনের ফলে গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির সংকটে পড়ছে পাহাড়িরা।

লামার চংবট ম্রোপাড়ার বর্তমান কার্বারি মাংডং ম্রো বলেন, পাথর উত্তোলন হচ্ছে মাস দুয়েক আগে থেকে। কারা উত্তোলন করছেন, এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন তিনি। পরে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে কথা বললে আমি ঝামেলায় পড়ব, সবাই প্রভাবশালী।’

অভিযোগ উঠেছে, লামা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. মিরাজ, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জালাল আহম্মেদ হেন্জু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রাসেল ইসলাম, শহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন মিলে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছেন। পাচারের জন্য স্তূপ করে রাখা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ঘনফুট পাথর। বাজারে প্রতি ঘনফুট (কংক্রিট) পাথর বিক্রি হয় ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লামার কাঁঠালছড়া চংবট ম্রোপাড়ার এক ব্যক্তি বলেন, যেভাবে এখান থেকে পাথর উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে ঝিরি ও ঝরনাতে আর পানি নেই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. মিরাজের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে বলেন, ‘পাথর উত্তোলন করছে বলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়নি। কে, কোথায় কী ব্যবসা করছে, তাতে সাংবাদিকেরা মাথা ঘামাবে কেন?’

এ বিষয়ে লামার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জালাল আহম্মেদ হেন্জু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বর্ষায় পাথর উত্তোলনের কারণে আমার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলা করেছে। সেই মামলা চলমান। বর্তমানে আমি কোনো ধরনের পাথর উত্তোলন করছি না।’

জানা গেছে, বান্দরবান পার্বত্য জেলার সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী এবং নদীর পার্শ্ববর্তী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ঝরনা, ঝিরি ও ছড়া থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের একটি টিম গেছে, শুনানি হয়েছে সম্ভবত। তারপরও পাথর উত্তোলন করলে আমি আবার যাব সেখানে।’

স্থানীয়রা জানান, অবৈধ পাথর উত্তোলনে তাঁরা বাধা দিতে পারছেন না, বাধা দিলে বিভিন্নভাবে হেনস্তা ও মারধরের শিকার হতে হয়।

এ বিষয়ে জেলার লামা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপায়েন দেব বলেন, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিষয়টি জানা ছিল না। এ বিষয়ে অতি দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ দুদক: আইনজীবী

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত