নাসিরনগরে কৃষক নিহতের ঘটনায় বাড়ি ছাড়া অর্ধশতাধিক, মাঠের ধান কাটতে সম্প্রীতি কমিটি 

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৬: ৫৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের খাগালিয়া গ্রামে ‘খলা’ স্থাপনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে কৃষক নিহতের ঘটনায় বাড়ি ছাড়া প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। প্রতিপক্ষের হামলা ও পুলিশের গ্রেপ্তারের আতঙ্কে বাড়ি ফিরতে না পারায় জমিতেই নষ্ট হচ্ছে ৬০টি পরিবারের ৪০০ বিঘা জমির পাকা ধান। এ সমস্যা সমাধানে আজ শনিবার স্থানীয়দের নিয়ে ধান কাটতে গঠন করা হয়েচে সম্প্রীতি কমিটি। 

এর আগে চলতি মাসের ২৬ তারিখ জমিতে ফসল নষ্ট হওয়ায় প্রতিকার চেয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ভলাকুট ইউনিয়নের বীর মুক্তিযুদ্ধা কার্তিক চন্দ্র দাস। পরে সংসদ সদস্য পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে বিবাধ এড়িয়ে ওই পরিবারগুলোর ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে সহযোগীতার পরামর্শ দেন। 

গত ২২ এপ্রিল ঈদের দিন বিকেলে খাগালিয়া ৩ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রব মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদের পক্ষের লোকজন উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া নতুন বাজার এলাকায় সরকারি খাস জায়গায় ধান মাড়াইয়ের ‘খলা’ স্থাপনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ালে জামাল মিয়া নামে এক কৃষক নিহত হয়। এর পরই শুরু হয় প্রতিপক্ষের বাড়িতে লুটপাট। লুট হওয়া ২২টি গরু উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের কাছে ফেরত দিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন। 

আজ শনিবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিন খাগালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল এলাকা জুড়ে পাকা ধান পড়ে আছে। কয়েকদিন গেলেই পাকা ধান খেতেই নষ্ট হয়ে যাবে। 

স্থানীয় জরিফা বেগম জানান, ‘কৃষিই আমাদের আয়ের একমাত্র ভরসা। সারা বছরের মধ্যে শুধু ধান চাষ করেই আমাদের পেট চলে। কিন্তু এবার যদি ধান না কাটতে পারি আগামী একবছর কীভাবে চলব। আজ ইউএনও স্যার আইসা কমিটি গঠন করে দিয়ে গেছে। আশা করছি দ্রুতই পাকা ধান কাটতে পারব।’ 

সম্প্রীতি কমিটির প্রধান ও ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত ২২টি লুট হওয়া গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। পাকা ধান কাটার জন্য একটি সম্প্রীতি গঠন করা হয়েছে।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, ‘চলতি মাসের সমন্বয় সভায় কৃষক ধান কাটতে না পারার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিষয়টি সমাধানে উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় কৃষকের পাকা ধান কাটার অনিশ্চিয়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। আজ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে ধান কাটার বিষয়ে একটি সম্প্রীতি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আশা করছি পাকা ধান কাটতে সমস্যা হবে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত